সিভিল সোসাইটি
জলবায়ু পরিবর্তন: ঝুঁকিতে থাকা নারী ও কিশোরীদের রক্ষার আহ্বান সিভিল সোসাইটির
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকা নারী ও কিশোরীদের জীবন ও জীবিকা রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন অধিকার-ভিত্তিক সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
শনিবার পালিতব্য আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবসের প্রাক্কালে শুক্রবার আয়োজিত ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানান।
আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস উদযাপন জাতীয় কমিটি এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপকূলীয় অঞ্চল, নিচু এলাকা ও পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য, জীবিকা ও পরিবেশ।
আরও পড়ুন: ‘জলবায়ু পরিবর্তনের বোঝা বাংলাদেশকে একা বহন করতে হবে না’
তারা আরও বলেন, খাদ্য, পুষ্টি, জীবিকার পাশাপাশি নারী ও মেয়েদের স্বাস্থ্যের ওপর এর মারাত্মক প্রভাব রয়েছে।
বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত লবণাক্ত পানির ব্যবহারকে জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম ক্ষতিকর প্রভাব হিসেবে চিহ্নিত করেন বক্তারা।
বক্তারা বলেন, লবণাক্ত পানির অত্যধিক ব্যবহারে জরায়ুর বিভিন্ন রোগ, মেয়েদের মাসিকের স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা ব্যাহত এবং চর্মরোগ হয়। বন উজাড়ের কারণে পর্বতমালায় সুপেয় পানির অভাবও নারী ও মেয়েদের জন্য এ ধরনের বিপদের সৃষ্টি করে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে লবণাক্ত এলাকায় সরকারি খরচে পানি বিশুদ্ধকরণ প্লান্ট স্থাপন, কমিউনিটি ক্লিনিকে নারী ও মেয়েদের বিশেষায়িত সেবা প্রদান এবং বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি জোরদারের আহ্বান জানানো হয়।
তামান্না রহমান তার মূল বক্তব্যে নারী ও মেয়েকে যেকোনো দুর্যোগের প্রথম শিকার হিসেবে অভিহিত করেন।
তামান্না বলেন, ‘গবেষণা অনুসারে, পানি পানের সঙ্গে নারীদের শরীরে যে পরিমাণ লবণ প্রবেশ করে তা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় উপকূলীয় অঞ্চলে মহিলাদের বেশি গর্ভপাত ঘটাচ্ছে। বিশুদ্ধ পানির অভাবের কারণে বেশিরভাগ মেয়েরা তাদের মাসিকের কাপড় নোনা পানি দিয়ে ধুতে বাধ্য হয়, যা তাদের জরায়ুতে বিভিন্ন রোগের কারণ হয়।’
তামান্না আরও বলেন, পাহাড়ি এলাকায় বসবাসকারী নারীরা অপুষ্টিতে ভোগেন।
তামান্না বলেন ‘তাদের মধ্যে অনেকেই (পাহাড়ে বসবাসকারী নারী) পাহাড়ি এলাকায় পানি সংগ্রহ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসব বাস্তবতা বিবেচনা করে এ অঞ্চলের মানুষের জন্য বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন জরুরি। বিশেষ করে সরকারকে পাহাড়ে বসবাসকারী নারীদের স্বাস্থ্য, পুষ্টি, জীবিকা এবং জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে।’
ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানটিতে সভাপতিত্ব করেন আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস উদযাপন জাতীয় কমিটির চেয়ারপারসন শামীমা আক্তার এবং সঞ্চালনা করেন ফেরদৌস আরা রুমি। তামান্না রহমানের মূল বক্তব্য উপস্থাপনের পর অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন কমিটির সদস্য মাসুদা ফারুক রাতা ও মঞ্জু আরা বেগম।
আরও পড়ুন: 'জলবায়ু পরিবর্তন একটি নিরাপত্তাজনিত সমস্যা'
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ জরুরি: গুয়েন লুইস
২ বছর আগে