হাসানাল বলকিয়া
ছাগল ‘উপহার’ পাচ্ছেন ব্রুনাইয়ের সুলতান
এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশ ব্রুনাইয়ের সুলতান হাসানাল বলকিয়াকে ‘উপহার’ হিসেবে বিশেষ জাতের বাংলাদেশি ছাগল ‘ব্ল্যাক ব্যঙ্গল’ উপহার দেবে। রবিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মোমেন বলেন, বাংলাদেশ সুলতানের জন্য মেনুতে মাটন (খাসির মাংস) দিয়ে তৈরি কাচ্চি বিরিয়ানি রেখেছে, যা তিনি ‘অনেক পছন্দ করেন’।
মোমেন হেসে সুলতানকে দেয়া ছাগলের সঙ্গে একজন শেফ দিয়ে দেয়ার সম্ভাব্য পরিকল্পনার কথাও জানান।
একজন কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানিয়েছেন, আজ সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে সুলতানের প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর শেষ হলেও তিনি আগামীকাল সকালে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকা ত্যাগ করবেন।
একটি চুক্তি ও তিনটি সমঝোতা স্মারক সইয়ের মাধ্যমে এই সফরকে ‘অত্যন্ত সফল’ বলে মনে করছে বাংলাদেশ।পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সুলতানকে বিদায় জানানোর কথা রয়েছে।
২ বছর আগে
ব্রুনাইয়ের সুলতান হাসানাল বলকিয়া ঢাকায় পৌঁছেছেন
ব্রুনাইয়ের সুলতান হাজী হাসানাল বলকিয়াহ বাংলাদেশে প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন। শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে একটি বিশেষ ফ্লাইটে সুলতান ঢাকায় আসেন।
বিমান থেকে নামার পর সুলতানকে লাল গালিচা অভ্যর্থনা জানানো হয়। এরপর তাকে গার্ড অব অনারের মাধ্যমে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিভিআইপি টার্মিনালে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে সুলতানের রাষ্ট্রীয় সফর বাংলাদেশ ও ব্রুনাইয়ের মধ্যে চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ‘একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে’।
১৪-১৬ অক্টোবর পর্যন্ত তার সফরের সময় নির্ধারিত ছিল, কিন্তু পরে এটি ১৫-১৭ অক্টোবর পুনর্নির্ধারণ করা হয়।
প্রচুর তেল ও গ্যাসের মজুদের কারণে ব্রুনাই বিশ্বের সর্বোচ্চ জীবনযাত্রার মানসম্পন্ন দেশগুলোর মধ্যে একটি।
ব্রুনাইয়ের সুলতান হাসানাল বলকিয়াহ হলেন বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘতম রাজত্বকারী রাজাদের একজন। তার বাবা স্যার হাজী ওমর আলী সাইফুদ্দিনের পদত্যাগের পর ১৯৬৮ সালের আগস্ট মাসে তিনি রাজা হন।
আরও পড়ুন: ব্রুনাইয়ের সুলতান আসছেন ১৫ অক্টোবর: মোমেন
বিমানবন্দর থেকে ব্রুনাই সুলতানের সরাসরি সাভারের জাতীয় শহীদ স্মৃতিসৌধে যাওয়ার কথা রয়েছে।
সেখানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী তাকে স্বাগত জানাবেন।
সুলতান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন, দর্শনার্থীদের বইয়ে স্বাক্ষর করবেন; এবং সেখানে একটি চারা রোপণ করবেন।
সুলতান হাসানাল বলকিয়া রবিবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করবেন।
খসড়া কর্মসূচি অনুযায়ী সেখানে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যরা তাকে স্বাগত জানাবেন।
ব্রুনাই সুলতান সফরকালে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করবেন।
সফরকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনও তার সঙ্গে সাক্ষাত করবেন।
আরও পড়ুন: প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে আসছেন ব্রুনাইয়ের সুলতান
মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ ও ব্রুনাই দুই দেশের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালুর চুক্তিসহ তিনটি দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার নথিতে স্বাক্ষর করতে পারে।
বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগ এবং দুই দেশের কর্মীদের সার্টিফিকেটের স্বীকৃতির বিষয়ে আরও দুটি সহযোগিতার নথি স্বাক্ষরিত হবে।
মোমেন বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি সফরটি সফল ও ফলপ্রসূ হবে।’
ব্রুনাইয়ের সঙ্গে জ্বালানি সহযোগিতার বিষয়ে মোমেন বলেন, বাংলাদেশ এই ক্ষেত্রে আলোচনা করছে এবং সম্ভাব্য সব বিকল্পের খোঁজ করছে।
২০১৯ সালের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রুনাই দারুসসালামে একটি ঐতিহাসিক সফর করেন, যা একটি নতুন মাইলফলক হিসাবে চিহ্নিত হয়েছিল। কারণ এসময় দুইদেশ গ্যাস সরবরাহ, মৎস্য, কৃষি, প্রাণিসম্পদ, শিল্প ও সংস্কৃতি, যুব ও খেলাধুলার মতো খাতসহ বিভিন্ন ধরণের সহযোগিতার জন্য বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।
আরও পড়ুন: ব্রুনাইয়ের সুলতানের সফরের অপেক্ষায় মোমেন
বর্তমানে ব্রুনাইয়ে প্রায় ১৫ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক থাকতে পারে।
দেশটি বাংলাদেশিসহ ব্রুনাইয়ে কাজ করার জন্য আসা বিদেশি কর্মীদের স্বাগত জানায়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন রবিবার সন্ধ্যায় সফর শেষে বিমানবন্দরে ব্রুনাই সুলতানকে বিদায় জানাবেন।
ব্রুনাই দারুসসালামের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এরিওয়ান ইউসুফ শুক্রবার রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের সঙ্গে দেখা করেন।
তাদের আলোচনার সময়, দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে মতবিনিময় করেন এবং দুই দেশের পারস্পরিক সুবিধার জন্য বাণিজ্য ও বিনিয়োগের স্তরকে আরও জোরদার করার গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
তারা আগামী দিনে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, পর্যটন, জনগণের মধ্যে যোগাযোগ প্রভৃতির জন্য সংযোগ বাড়ানোর জন্য সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্রগুলি অন্বেষণ করতে একমত হয়েছে।
তারা মহামারি ও ইউরোপে সংঘাত, বিশেষত খাদ্য ও শক্তির নিরাপত্তাহীনতা এবং সরবরাহ শৃঙ্খল বিঘ্নিত হওয়ার কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জের বিষয়েও মতবিনিময় করেন।
২ বছর আগে