নিরাপত্তার
মিয়ানমারের দীর্ঘস্থায়ী সংকট বাংলাদেশের জাতীয়-আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি তৈরি করছে: অধ্যাপক ইউনূস
রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও অধিকার নিয়ে রাখাইন রাজ্যে তাদের পৈতৃক বাড়িতে ফেরার পথ তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
রোহিঙ্গা সংকটের প্রতি বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, 'মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমিতে মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে।’
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলায় দেওয়া ভাষণে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী বলেন, মিয়ানমারের দীর্ঘায়িত সংকট বাংলাদেশের জাতীয় ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার সঙ্গে ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি তৈরি করেছে, যা প্রথাগত ও অপ্রথাগত উভয় ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, সাত বছর ধরে বাংলাদেশ মানবিক কারণে ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে এবং এর কারণে উল্লেখযোগ্য সামাজিক-অর্থনৈতিক-পরিবেশগত ক্ষতি হচ্ছে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, 'আমরা বাংলাদেশে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের সহায়তায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
তিনি বলেন, মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা এবং তাদের টেকসই প্রত্যাবাসনে রোহিঙ্গাদের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অব্যাহত সমর্থন প্রয়োজন।
তিনি বলেন, আইসিজে ও আইসিসিতে চলমান জবাবদিহিতা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাও সমান গুরুত্বপূর্ণ।
রোহিঙ্গারা যাতে মুক্ত ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারে সেজন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে জাতিসংঘ মহাসচিব ও জাতিসংঘের ব্যবস্থাপনা প্রচেষ্টার স্বীকার করে ও প্রশংসা করে বাংলাদেশ।
শান্তি বজায় রাখা :
বাংলাদেশ মনে করে, শান্তি বজায় রাখা এবং সংঘাত নিরসন করা জনগণের অগ্রগতির কেন্দ্রবিন্দু।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, 'সাম্প্রতিক বিপ্লবের সময় আমাদের বীর সশস্ত্র বাহিনী ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন সময়ে জনগণের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা পূরণে দৃঢ়ভাবে পাশে দাঁড়িয়ে শান্তির প্রতি তাদের অঙ্গীকার আবারও দেখিয়েছে।’
শান্তিরক্ষার কেন্দ্রবিন্দুতে মানবাধিকারকে স্থান দেওয়ার অঙ্গীকারের কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা নিয়ে ইউনূস-আইসিসির আলোচনা'জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কমিশনের জন্মলগ্ন থেকেই বাংলাদেশ শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রতি সমানভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ' উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে তারা বাংলাদেশের মূল্যবোধসম্পন্ন অবদান এগিয়ে নিতে ও বাড়াতে আগ্রহী।
তৃতীয় বৃহত্তম সৈন্য প্রেরণকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা ৪৩টি দেশের ৬৩টি মিশনে দায়িত্ব পালন করেছে।
বসনিয়া থেকে কঙ্গো পর্যন্ত ১৬৮ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী আত্মত্যাগ করেছেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, 'আমরা আশা করি, চ্যালেঞ্জ বা পরিস্থিতি যাই থাকুক না কেন, ভবিষ্যতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রতি আহ্বান অব্যাহত থাকবে।
গাজায় গণহত্যা
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বহু সংকটের এই বিশ্বে যুদ্ধ ও সংঘাত অধিকার খর্ব ও ব্যাপক অপব্যবহারের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ ও নিন্দা সত্ত্বেও গাজায় গণহত্যা অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনের পরিস্থিতি শুধু আরব বা মুসলমানদের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, বরং সমগ্র মানবতার সঙ্গে সম্পর্কিত।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, 'ফিলিস্তিনিরা গুরুত্বহীন কোনো জাতি নয়' ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী সবাইকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।’
ফিলিস্তিনি জনগণকে বিরুদ্ধে চালানো বর্বরতা থেকে বিশেষ করে শিশু ও নারীদের রক্ষার জন্য অবিলম্বে ও সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ হিসেবে রয়ে যাওয়া দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান বাস্তবায়নে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ইউক্রেনে আড়াই বছর ধরে চলা যুদ্ধে বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।
এই যুদ্ধ সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলেছে, এমনকি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলেছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা উভয় পক্ষকে মতপার্থক্য নিরসন এবং যুদ্ধের অবসান ঘটাতে সংলাপের আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও জনগণের আর্থ-সামাজিক মুক্তি ছাড়া শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অসম্ভব।
প্রায় এক দশক আগে বিশ্ব সর্বসম্মতিক্রমে 'এজেন্ডা ২০৩০' গ্রহণ করেছিল।
তিনি বলেন, ‘আমরা সার্বজনীন লক্ষ্যমাত্রার ওপর আমাদের সম্মিলিত আশা ও আস্থা পুনর্ব্যক্ত করেছি। তারপরও ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ১৭ শতাংশ অর্জনের পথে রয়েছে। স্পষ্টতই, অনেক উন্নয়নশীল দেশ পিছিয়ে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।’
প্রতিবছর উন্নয়নশীল দেশগুলো এসডিজি অর্থায়নে উল্লেখযোগ্য ঘাটতির মুখোমুখি হয়, যা আনুমানিক আড়াই থেকে ৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে থাকে।
উচ্চ ঋণের বোঝা, রাজস্ব আয় সংকুচিত হওয়া এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব বাংলাদেশের মতো দেশগুলোকে আরও বেশি ঝুঁকিতে ফেলেছে।
জটিল ও পদ্ধতিগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উন্নয়নের জন্য অর্থায়ন বিষয়ক চতুর্থ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের অপেক্ষায় রয়েছে বাংলাদেশ।
বহুপক্ষীয় অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গিতে চালিত হতে হবে, যেখানে সম্পদ ও সুযোগ-সুবিধা সবাই পেতে পারে। তারা যথাযথভাবে সামাজিক ব্যবসাকে নিজ নিজ কর্মসূচির মধ্যে স্থান দেবে। তারা যথাযথভাবে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর পরিস্থিতি মোকাবিলা করবে। উদ্যোক্তা উন্নয়নে উৎসাহিত করবে এবং ব্যক্তির সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করবে এবং তারা যাতে বঞ্চিতদের সমর্থন করে।
এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে অবৈধ আর্থিক প্রবাহ এবং সম্পদ পাচার প্রতিরোধে আরও বেশি মনোযোগের দাবি রাখে।
তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়াতে হলে উন্নয়নশীল দেশগুলোর কাছ থেকে পাচার করা বা চুরি হয়ে যাওয়া সম্পদ ফেরত পাঠাতে হবে। আমরা একটি আন্তর্জাতিক কর কনভেনশনের দ্রুত সমাপ্তির অপেক্ষায় রয়েছি যা কর ফাঁকি মোকাবিলা করতে পারে।’
আরও পড়ুন: দেশ সংস্কারে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই ও পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র
অভিবাসন এবং গতিশীলতা:
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আন্তঃসংযুক্ত বিশ্বে অভিবাসন ও গতিশীলতা একটি অনিবার্য বাস্তবতা।
অভিবাসীদের উৎপত্তিস্থল দেশ হিসেবে আমাদের ১ কোটি ১০ লাখেরও বেশি মানুষ বিশ্বব্যাপী বসবাস করে এবং কাজ করে।
অভিবাসন সবার জন্য লাভজনক করতে হলে আমাদের নিরাপদ, সুশৃঙ্খল, নিয়মিত ও দায়িত্বশীল অভিবাসন ও মানুষের চলাফেরার পথ তৈরি করতে হবে।
তিনি বলেন, 'আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মানবাধিকারের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা এবং অভিবাসীদের প্রতি মানবিক আচরণ নিশ্চিত করতে হবে, তাদের অভিবাসন অবস্থা নির্বিশেষে।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, 'বাংলাদেশ যেমন গ্লোবাল কমপ্যাক্ট অন মাইগ্রেশনের পূর্ণ বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তেমনি আমাদের সরকার অনিরাপদ অভিবাসনকে বন্ধ করতেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
প্রতিবছর প্রায় আড়াই লাখ বাংলাদেশি বাংলাদেশের শ্রমবাজারে প্রবেশ করে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ তরুণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে বাংলাদেশ আজ ও আগামীকালের চাহিদা পূরণের উপযোগী করে শিক্ষাকে উপযোগী করে তোলার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
‘তবুও, আমরা দেখতে পাচ্ছি যে কাজের জগৎ পরিবর্তিত হচ্ছে যেখানে একজন তরুণকে ক্রমাগত মানিয়ে নিতে হবে, পুনরায় দক্ষতা অর্জন করতে হবে, নতুন মনোভাব গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশ যেহেতু মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে উত্তরণের পথে যাত্রা করতে যাচ্ছে, তাই আমরা 'লার্নিং' ও 'টেকনোলজি' ক্ষেত্রে নিজেদের নিরাপদ রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করছি।’
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা:
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সরঞ্জাম ও অ্যাপ্লিকেশনের উত্থানে বিশেষভাবে উৎসাহী।
তিনি বলেন, ‘আমাদের তরুণরা দ্রুত জেনারেটিভ এআই উন্মোচনের সম্ভাবনা নিয়ে উচ্ছ্বসিত।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তারা বিশ্ব নাগরিক হিসেবে চলতে ও কাজ করতে চায়। বিশ্বকে নিশ্চিত করতে হবে যে, বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর কোনো তরুণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নেতৃত্বাধীন রূপান্তরের সুফল অর্থবহভাবে পেতে পিছিয়ে থাকবে না।’
তিনি বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশ যাতে মানব শ্রমের সুযোগ বা চাহিদা হ্রাস না করে তা বিশ্বকে নিশ্চিত করতে হবে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘যেহেতু বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায় এবং প্রযুক্তি বিশ্ব অব্যাহতভাবে 'স্বচালিত বুদ্ধিমত্তা' - কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যা মানুষের কোনও হস্তক্ষেপ ছাড়াই নিজেরাই প্রচার করতে পারে- আজ আমাদের সকলকে এবং আমাদের বাইরে, প্রতিটি মানুষ ব্যক্তি বা আমাদের সমাজের উপর সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে সতর্ক হওয়া দরকার।’
তিনি বলেন, অনেকের বিশ্বাস করার কারণ রয়েছে যে স্বচালিত বুদ্ধিমত্তা যদি দায়িত্বশীলভাবে বিকশিত না হয় তবে এটি মানব অস্তিত্বের জন্য হুমকি হতে পারে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে জলবায়ু অভিযোজনে শক্তিশালী সম্পদ ব্যবহারের আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসেরঅধ্যাপক ইউনূস বলেন, সম্মিলিত শক্তিকে কাজে লাগাতে, উদ্ভাবন এবং বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করতে তাদের প্রচেষ্টা, সামর্থ্য এবং সম্পদ একত্রিত করা তাদের জন্য ক্রমবর্ধমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
তিনি বলেন, 'অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জলবায়ু স্থিতিশীলতা বা সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমরা যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছি তা অভিন্ন প্রচেষ্টার মাধ্যমে পরিচালনা করতে হবে।’
সেই প্রেক্ষাপটে আমাদের অনন্য সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে দক্ষিণ-দক্ষিণ ও ত্রিমুখী সহযোগিতা আমাদের সহায়তা করতে পারে।
গ্লোবাল সাউথের জন্য আমাদের কণ্ঠস্বর শোনানোও ক্রমবর্ধমান প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক এজেন্ডা প্রণয়ন ও পরিচালনার ক্ষেত্রে গ্লোবাল সাউথ সমান স্থান ও গুরুত্বের দাবি রাখে।
এ বছর জাতিসংঘে বাংলাদেশের অংশীদারিত্বের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছে বাংলাদেশ।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এটি পারস্পরিক শিক্ষার একটি যৌথ যাত্রা ছিল। আমাদের পরিমিত উপায়ে বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার, সাম্য, মানবাধিকার, সামাজিক অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে। প্রকৃতপক্ষে একটি নিয়মভিত্তিক আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে।’
উদাহরণস্বরূপ, তিনি ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে অত্যন্ত স্বতঃস্ফূর্ততার সঙ্গে গঠিত ক্ষুদ্রঋণ প্রস্তাব এবং ক্ষুদ্রঋণের বন্ধুদের কথা স্মরণ করেন।
জাতিসংঘ ২০০৫ সালকে ক্ষুদ্রঋণ বর্ষ হিসেবে ঘোষণা করার ফলে বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্রঋণের প্রসার ঘটে।
তিনি বলেন, ২০০১ সাল থেকে শান্তির সংস্কৃতি বিষয়ক সাধারণ পরিষদের বার্ষিক রেজুলেশন বা নিরাপত্তা পরিষদে নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ক রেজ্যুলেশন ১৩২৫ স্মরণ করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা-গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে 'নতুন বাংলাদেশের' সঙ্গে নতুন করে সম্পৃক্ত হোন: জাতিসংঘে অধ্যাপক ইউনূসের আহ্বান
১ মাস আগে
সেনাবাহিনীর নিরাপত্তার আশ্বাসে বৃহস্পতিবার খুলছে সব পোশাক কারখানা: বিজিএমইএ
সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরাপত্তা দেওয়ার আশ্বাসের পর আগামীকাল বৃহস্পতিবার সব পোশাক কারখানা খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।
বুধবার(৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: পোশাক শিল্পের কাস্টমস ও বন্ড সমস্যা সমাধানে এনবিআরকে বিজিএমইএর আহ্বান
এর আগে বিজিএমইএ কর্মকর্তা, পোশাক কারখানার মালিক, সেনাবাহিনী, শিল্প পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
রফিকুল ইসলাম জানান, সাম্প্রতিক শ্রমিক অসন্তোষের কারণে ১৭০টি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে, যদিও কারখানার শ্রমিকরা সরাসরি বাধাদানের সঙ্গে জড়িত ছিল না। তিনি বহিরাগতদের আক্রমণকে শিল্পাঞ্চলে বিশৃঙ্খলার জন্য দায়ী করেছেন।
প্রতিক্রিয়ায়, সেনাবাহিনী, শিল্প পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কারখানাগুলোর জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। এসব আশ্বাস নিয়ে বিজিএমইএ কারখানাগুলো পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আরও পড়ুন: সাম্প্রতিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সহজ শর্তে ১৯০০ কোটি টাকা ঋণ চেয়েছে বিজিএমইএ
পদত্যাগ করলেন কচি, বিজিএমইএর নতুন সভাপতি খন্দকার রফিকুল
২ মাস আগে
ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য আইপিভি-৬ ভার্সন অপরিহার্য: টেলিযোগাযোগমন্ত্রী
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানিয়েছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য ইন্টারনেট প্রটোকল ভার্সন (আইপিভি)-৪ এর পরিবর্তে আইপিভি-৬ প্রচলন করা অপরিহার্য। এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যব্স্থা গ্রহণে সরকার বদ্ধপরিকর।
রবিবার ঢাকায় এক হোটেলে আইএসপিএবি আয়োজিত আইপিভি-৬ রাউটিং ডিপ্লয়মেন্ট শীর্ষক এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
এছাড়া মন্ত্রী ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারসহ সংশ্লিষ্টদের এ ব্যাপারে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারীদের মধ্যে সুস্থ্য ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, লাইসেন্সহীন আইএসপিদের অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে না পারলে এ খাতের বিশৃঙ্খলা বন্ধ করা যাবে না।
এ ব্যাপারে বিটিআরসি কাজ করছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এ খাতে যে কোন বিশৃঙ্খলা মেনে নেয়া যায় না। উপজেলা, জেলা, বিভাগ ও জাতীয় পর্যায়ের জন্য আইএসপি লাইসেন্স গ্রাহক চাহিদার অনুযায়ী ইস্যু করার বিষয়টিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বিদ্যমান আইএসপি লাইসেন্স সমূহের পারফর্মেন্সের ভিত্তিতে লাইসেন্স আপগ্রেডের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে বলে সংশ্লিষ্টদের আশ্বস্ত করেন।
আরও পড়ুন: প্রতিটি থানায় সাইবার ইউনিট গঠন করা প্রয়োজন: টেলিযোগাযোগমন্ত্রী
মন্ত্রী উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটকে ডিজিটাল বাংলাদেশ ও স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মহাসড়ক উল্লেখ করে বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে।
দেশে বর্তমানে তিন হাজার ৮৪০ জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যবহৃত হচ্ছে এবং ১৩ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। ২০০৮ সালে মাত্র সাড়ে সাত জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যবহৃত হতো এবং ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিলো মাত্র আট লাখ।
ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় ইন্টারনেটকে এক নম্বর জরুরি হাতিয়ার আখ্যায়িত করে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের এই অগ্রদূত বলেন, করোনাকালে প্রমাণিত হয়েছে বাংলাদেশের মানুষ প্রযুক্তি ব্যবহারে পিছিয়ে থাকে না। এমনকী প্রত্যন্ত ও দুর্গম অঞ্চলে বসেও ইন্টারনেট ব্যবহার করে হাজার হাজার ডলার আয় করছে আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে।
ইন্টারনেটের বর্ধিত চাহিদা মেটাতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ খুবই তৎপর উল্লেখ করে বলেন, আমরা খুব শিগিগিরই তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে বাংলাদেশকে সংযুক্ত করতে যাচ্ছি। এর ফলে আমরা আরও ১৩২০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউদথ পাব। এছাড়া পরবর্তীতে চতুর্থ সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে আমরা দেশকে সংযুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।
এর অতিরিক্ত আরও তিনটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগের জন্য লাইসেন্স দেয়া হয়েছে বলে মন্ত্রী জানান।
সেমিনারে অংশ গ্রহণকারীদেরকে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অগ্রযাত্রায় দক্ষ সৈনিক হিসেবে নিজেদের তৈরি করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা যে চ্যালেঞ্জ নিয়ে প্রশিক্ষণ নিতে আসছেন এটিকে আমরা খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। তিনি আইপিভি-৬ আপডেট করার জন্য দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
আইএসপিএবি সভাপতি ইমদাদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবদুর রহিম খান, অ্যাপনিক প্রশিক্ষক আবদুল আওয়াল এবং আইএসপিএবি সেক্রেটারি নাজমুল করিম ভূঞা প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বক্তারা ডিজিটাল নিরাপত্তার প্রয়োজনে আইপিভি-৬ ভার্সন এর প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন অত্যন্ত সময়োপযোগী একটি উদ্যোগ বলে উল্লেখ করেন। তারা এ ব্যাপারে দক্ষ মানব সম্পদের প্রয়োজনীয়তা ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
আরও পড়ুন: আমরা ডাকঘর ডিজিটাল করার কাজ শুরু করেছি: মোস্তাফা জব্বার
ডিজিটাইজেসন বা পদ্ধতিগত রূপান্তরের ফলে ‘লাল ফিতার দৌরাত্ম্য’ দূর হচ্ছে: মোস্তাফা জব্বার
২ বছর আগে