ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প। সোমবার এই ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশে আঘাত হানার সময় আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অধীনে দুর্যোগ-প্রতিরোধী বাড়িগুলোতেই ছিল উপকূলের চার লাখ মানুষ। তাদের ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়ণ কেন্দ্রে যাওয়ার প্রয়োজন হয়নি।
ভূমিহীনদের বাড়িগুলো উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
গত দুই বছরে চার দফায় ১৯টি উপকূলীয় জেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ৬১ হাজার ৩৭৮টি আশ্রয়ণ বাড়ি দেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর সময় কয়েক হাজার প্রতিবেশী আধা-পাকা বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল।
দুর্যোগ-প্রতিরোধী ঘরগুলো ঘূর্ণিঝড়ের সময় গৃহপালিত পশু এবং অন্যান্য সম্পত্তির ক্ষতির পরিমাণ কমাতেও সাহায্য করেছিল।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: জলাবদ্ধতা, যানজটে চরম ভোগান্তিতে রাজধানীবাসী
পিএমওর মনিটরিং সেলের তথ্যানুসারে, ঘূর্ণিঝড়ের সময় ১৯টি উপকূলীয় জেলায় মোট দুই লাখ ১৯ হাজার ৬৯০ জন মানুষ এবং ৪৫ হাজার ৪৪৫টি গবাদি পশুকে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল। কিন্তু উপকূলীয় এলাকায় মোট ধারণক্ষমতার প্রায় ৪৩ লাখ লোকের জন্য সাত হাজার ৪৯০টি আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে।
আশ্রয়ণ প্রকল্প হলো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একটি আবাসন প্রকল্প। যা সারাদেশে গৃহহীন ও বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য ঘর নির্মাণের লক্ষ্যে বাস্তবায়িত হচ্ছে।
এই প্রকল্পের আওতায় পটুয়াখালী জেলায় ছয় হাজার ৯৪১, বরিশালে চার হাজার ৮৩৪, বরগুনায় দুই হাজার ৬০০, ঝালকাঠিতে এক হাজার ৮৪২, পিরোজপুরে চার হাজার ৮৬৭, ভোলায় তিন হাজার ৫২৯, শরীয়তপুরে দুই হাজার ৬৬২, গোপালগঞ্জে তিন হাজার ৮০৫, বাগেরহাটে দুই হাজার ৭৯৪, নড়াইলে ৮২৯, খুলনায় তিন হাজার ৯৫০, যশোরে দুই হাজার ১৫৩, সাতক্ষীরায় দুই হাজার ৯০৬, ফেনীতে এক হাজার ৬৫৯, নোয়াখালীতে তিন হাজার ৬৮৮, লক্ষ্মীপুরে তিন হাজার ২২৮, চাঁদপুরে ৪০৮, চট্টগ্রামে পাঁচ হাজার ৪৩ এবং কক্সবাজারে তিন হাজার ৬৪০ বাড়ি দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: মুন্সীগঞ্জে গাছ চাপায় মা-মেয়ের মৃত্যু
সিত্রাংয়ে ১০ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত: প্রতিমন্ত্রী
২ বছর আগে
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: জলাবদ্ধতা, যানজটে চরম ভোগান্তিতে রাজধানীবাসী
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে প্রবল বর্ষণের কারণে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে যাত্রীরা যানজটের কবলে পড়ে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক ইউএনবিকে জানান, মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
সোমবার রাতে সিত্রাং দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানলে রাজধানীসহ বাংলাদেশের প্রায় সমস্ত অঞ্চলে ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ের সম্মুখীন হয়। এছাড়া গাছ উপড়ে পড়ে, মানুষ নিহত এবং বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন বিচ্ছিন্ন হয়।
সকালে সিটি করপোরেশনের কর্মীদের ঢাকার মহাসড়কগুলো থেকে উপড়ে পড়া গাছগুলোকে সরাতে দেখা গেছে।
জলাবদ্ধতার কারণে যানবাহন চলাচল শ্লথ হওয়ায় সকালে অফিসগামীসহ অন্যান্যরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকা পড়েন।
সরেজমিনে দেখা যায় উত্তরখান, দক্ষিণখান, ভাটারা, মোহাম্মদপুর, বাড্ডা, আজিমপুর, ডেমরা, যাত্রাবাড়ী, জুরাইনসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তা-ঘাট বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে।
খিলক্ষেত থেকে আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা রয়েছে এবং বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের চলমান কাজ কেবল যাতায়াতে দুর্ভোগ বাড়িয়েছে।
সকালে বিআরটি প্রকল্পের কাজ চলায় টঙ্গীর নিকটবর্তী আবদুল্লাহপুর এলাকায় চলাচল অত্যন্ত ধীর হওয়ায় হোটেল লে মেরিডিয়ান থেকে ঢাকা বিমানবন্দর সড়ক পর্যন্ত দীর্ঘ সারিতে বাস ও ব্যক্তিগত যানবাহনগুলো আটকে থাকে।
এদিকে, বাংলাদেশ নৌবাহিনী সদর দপ্তরের সামনের রাস্তা সকালে জলাবদ্ধ ছিল- যা ফ্লাইওভার দিয়ে খিলক্ষেত এলাকা থেকে বনানী অভিমুখী যাত্রীদের জন্য আরেকটি দীর্ঘ সারি তৈরি করেছিল।
র্যাডিসন ব্লু হোটেলের দিকে কুড়িল ফ্লাইওভার নামার অংশও পানির নিচে ছিল এবং বনানীর দিকে যানবাহনের দীর্ঘ সারি তৈরি করে।
ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার ট্রাফিক (ঢাকা উত্তর) আবু রায়হান মো. সালেহ ইউএনবিকে বলেন, গতকালের টানা বৃষ্টিতে নৌবাহিনী সদর দপ্তরের সামনের সড়কসহ বেশ কয়েকটি স্থানে জলাবদ্ধতা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘মঙ্গলবার সকাল থেকে উত্তরা-মহাখালী পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটে লোকজন আটকে ছিল। তবে মিরপুর এলাকায় যান চলাচল নির্বিঘ্ন ছিল।’
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: রাজধানীতে বৃষ্টিতে জীবনযাত্রা ব্যাহত
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, কর্তৃপক্ষ রাস্তা থেকে ৪৭টি পড়ে যাওয়া গাছ সরিয়ে নিয়েছে।
এছাড়া মঙ্গলবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ১৭টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের গুদাম পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের সময় সারাদেশে ৩২৯টি গাছ উপড়ে গেছে এবং ৩৪টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে জানান তিনি।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং সোমবার মধ্যরাতে ভোলার কাছে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করে এবং বৃষ্টিপাত শুরু করে দ্রুত দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সিত্রাং এখন ঢাকা-কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় স্থল নিম্নচাপ হিসেবে অবস্থান করছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে গণতন্ত্র মঞ্চের সমাবেশ বিরোধীদের পক্ষে
রাজধানীতে গায়ে আগুন দিয়ে রিকশাচালকের আত্মহত্যা!
২ বছর আগে
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: ওসমানী বিমানবন্দরে ৮ ফ্লাইটের জরুরি অবতরণ
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সৃষ্ট দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে সোমবার রাতে আটটি ফ্লাইটের যাত্রীদের নিয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করেছে বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের বিমান।
এরমধ্যে সাতটি ফ্লাইট আন্তর্জাতিক রুটের আর অপরটি অভ্যন্তরীণ। তবে মঙ্গলবার সকাল থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে গতকাল সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট উড্ডয়ন বন্ধ হয়ে যায়। সবমিলিয়ে তিনটি ফ্লাইটের নিয়মিত উড্ডয়ন বাতিল করা হয়।
তবে ফ্লাইট উড্ডয়ন বন্ধ থাকলেও অবতরণ বন্ধ রাখা সম্ভব হয়নি। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য বিমানবন্দরগুলোর পরিস্থিতি ওসমানী বিমানবন্দরের চেয়ে বিপজ্জনক ছিল।
আরও পড়ুন: বন্যা: ৬ দিন পর সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে ফ্লাইট উঠা-নামা শুরু
ফলে বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ফ্লাইটগুলো ওসমানীতে এসে জরুরি অবতরণ করে।
ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন,‘ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে ওসমানী থেকে ফ্লাইট উঠানামা বন্ধ ছিল। কিন্তু রাত সাড়ে ৯টা থেকে ১টা পর্যন্ত আটটি ফ্লাইট ওসমানীতে জরুরি অবতরণ করেছে। আমরা যাত্রীদের থাকার জন্য নিরাপদ ব্যবস্থা করেছি।
তিনি জানান, এদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট একটি ও বাকি সাতটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ছিল। অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটটি সৈয়দপুর থেকে উড্ডয়ন করেছিল যা ঢাকায় অবতরণ করার কথা ছিল। কিন্তু আবহাওয়া অনুকূল না থাকায় সিলেটে অবতরণ করে।
এছাড়াও, আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের মধ্যে আসা বিমানগুলোর মধ্যে সিঙ্গাপুর থেকে দুইটা, টরেন্টো থেকে একটা, ব্যাংকক থেকে একটা, কলকাতা থেকে একটা, চেন্নাই থেকে একটা, দুবাই থেকে একটা সহ মোট সাতটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সিলেট বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এ সকল বিমানের মধ্যে ইউএস বাংলার পাঁচটি উড়োজাহাজ ও বাংলাদেশ বিমানের তিনটি উড়োজাহাজ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আজ সকাল থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ফ্লাইটগুলো শিডিউল অনুসারে গন্তব্যে যাচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, সোমবার সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে বাংলাদেশ বিমানের সিলেট-ঢাকা রোডের রাত সাড়ে ৯টা ও ১০টা ১০ মিনিটের ফ্লাইট বাতিল করা হয়। তবে রাত সাড়ে ৯টা থেকে একটা পর্যন্ত একএক করে আটটি ফ্লাইট ইমার্জেন্সি ল্যান্ডিং করে ওসমানীতে।
আরও পড়ুন: বন্যা পরিস্থিতির অবনতিতে ওসমানী বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠা-নামা বন্ধ
শিগগিরই ওসমানী বিমানবন্দর থেকে বিভিন্ন দেশে সরাসরি ফ্লাইট চালু হবে
২ বছর আগে
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: দেশে ১৩ জনের মৃত্যু
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মঙ্গলবার ভোরে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করার ফলে বাংলাদেশের ছয় জেলায় অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসব জেলায় ঘূর্ণিঝড়টি তাণ্ডব চালিয়েছে।
উপকূলীয় অঞ্চল ও অন্যান্য জায়গা থেকে কুমিল্লা, নড়াইল, সিরাজগঞ্জ, ভোলা, বরগুনা ও গোপালগঞ্জের ইউএনবি সংবাদদাতাদের পাঠানো প্রতিবেদন অনুসারে, সোমবার সকাল থেকে গাছ উপড়ে যাওয়ার কারণে বেশিরভাগ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। কারণ এসময় দেশে দিনভর মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হয়।
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার হেসাখাল এলাকায় সোমবার রাতে বাড়ির ওপর বিশাল গাছ পড়লে এক দম্পতি ও তাদের চার বছরের মেয়ের মৃত্যু হয়। ঘটনাটি ঘটার সময় তারা ঘুমিয়ে ছিলেন।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: ভোলায় ২০ হাজারের বেশি মানুষ বিপর্যস্ত
নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রায়হান মেহবুব বলেন, এ ঘটনায় নিজাম উদ্দিন, তার স্ত্রী শারমিন আক্তার সাথী ও তাদের মেয়ে নুসরাত আক্তার লিজা নিহত হওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
তিনি আরও বলেন, রাত ১০টার দিকে যখন এই ঘটনা ঘটে তখন ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা কমপ্লেক্সে মাথায় গাছ পড়ে মর্জিনা বেগম নামে ৩৫ বছর বয়সী এক নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির উদ্দিন বলেন, বাগেরহাটের মর্জিনা উপজেলার রাজপুর গ্রামে গৃহকর্মীর কাজ করত।
ঘটনার সময় তার ১১ বছরের ছেলে তার সঙ্গে ছিল, তবে সে বেঁচে যায় বলে ওসি জানান।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় সোমবার রাতে যমুনা নদীর এক খালে নৌকা ডুবে মা ও তার ছেলের মৃত্যু হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, ‘নিহতরা হলেন- পূর্ব মোহনপুর গ্রামের খোকন শেখের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা (৩০) ও তার ছেলে আরাফাত রহমান (৫)।’
তিনি বলেন, দুর্ঘটনাস্থল থেকে আয়েশার স্বামী ও অপর দুই সন্তানকে উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার রাত ৮টার দিকে তারা একটি নৌকায় করে ওই খাল দিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলেন। তখন খারাপ আবহাওয়ার মধ্যে সেটি ডুবে যায়। ঘটনাস্থলেই আরাফাত মারা যায় এবং হাসপাতালে নেয়ার পর আয়শাকে মৃত ঘোষণা করা হয় বলে ওসি জানান।
ভোলায় সদর, দৌলতখান, লালমোহন ও চরফ্যাশনে গাছের নিচে চাপা পড়ে ও পানিতে ডুবে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন জানান, নিহতরা হলেন সদর উপজেলার মফিজুল ইসলাম (৬০), দৌলতখান উপজেলার বিবি খাদিজা (২০), লালমোহন উপজেলার রাবেয়া (৩০) ও চরফ্যাশন উপজেলার মনির (৩০)।
সোমবার রাতে সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নে নিজ বাড়িতে গাছ পড়ে মফিজুল এবং বিবি খাদিজাও গাছের নিচে চাপা পড়ে মারা যান। মনির মোটরসাইকেলে যাওয়ার সময় গাছের ডাল ভেঙে পড়লে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। অন্যদিকে রাবেয়া ডুবে যায়।
বরগুনা সদর উপজেলার সোনাখালী গ্রামে বাড়ির ওপর গাছ ভেঙে পড়লে রাতের খাবার খেতে গিয়ে ১১০ বছর বয়সী এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির জানান, তিনি বাড়িতে একা ছিলেন এবং ঘটনাস্থলেই মারা যান।
গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় গাছের নিচে পিষ্ট হয়ে দুই নারী নিহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন পাটগাতী ইউনিয়নের রেজাউলের স্ত্রী শারমিন (২৫) ও বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের হান্না তালুকদারের স্ত্রী রুমিসা (৬৫)।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মিনহাজুর রহমান বলেন, সোমবার রাতে ঝড়ের সময় পাঁচকাহনিয়া গ্রামে গাছ ভেঙে পড়ে শারমিনের মৃত্যু হয় এবং ডুমুরিয়া গ্রামের বাড়িতে গাছের নিচে চাপা পড়ে রুমিসা মারা যায়।
তিনি বলেন, তাদের পরিবারকে সহায়তা হিসেবে ২৫ হাজার টাকা, পুনর্বাসনের জন্য ৬ হাজার টাকা এবং টিন দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে যান চলাচল সচল
২ বছর আগে
সারাদেশে নৌযান চলাচল শুরু
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর প্রভাবে সৃষ্ট দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় প্রায় ২৪ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার সকালে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এর জনসংযোগ কর্মকর্তা মোবারক হোসেন জানান, বিআইডব্লিউটিএ সকাল ৯টা ৪৫ মিনিট থেকে নৌযান চলাচল পুনরায় শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে। নদীবন্দরগুলো এখন ১ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেতের আওতায় রয়েছে।
এর আগে সোমবার সকাল ১০টায় বিআইডব্লিউটিএ সারাদেশের সব নৌপথে নৌযান চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেয়।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: কক্সবাজারের উপকূলে ১৩ ট্রলারডুবি
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং সোমবার মধ্যরাতে ভোলার নিকটে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করলেও বৃষ্টিপাতের কারণে দ্রুত দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সিত্রাং খুব দ্রুত উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয় ও বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করে এবং বর্তমানে ঢাকা-কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও তৎসংলগ্ন এলাকায় স্থল নিম্নচাপ হিসেবে অবস্থান করছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: উপকূলবাসীর পাশে দাঁড়াতে আ.লীগ নেতাকর্মীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: তিন বিভাগের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা
২ বছর আগে
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: ভোলায় ২০ হাজারের বেশি মানুষ বিপর্যস্ত
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাস ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ভোলা জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ জলাবদ্ধ অবস্থায় আছে।
ভোলা জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীকে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষের জন্য পর্যাপ্ত শুকনো খাবার প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া ২৫ মেট্রিক টন চাল ও পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।’
এদিকে ভোলার জেলা প্রশাসক তৌফিক এলাহী চৌধুরী বলেন, ‘দুর্যোগ মোকাবিলায় মোট ৭৪৬টি ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সাত উপজেলায় আটটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।’
এছাড়া ১৩ হাজার ৬৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক ও ৭৬টি মেডিকেল টিম মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে।
সোমবার বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড (বিসিজি) ভোলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ চর পাতিলা থেকে ১১০ জনকে সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়েছে।
বিসিজি পূর্বাঞ্চলের মিডিয়া অফিসার কাজী আল আমিন বলেন, ‘দুর্যোগ পরবর্তী যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় কোস্ট গার্ডের উদ্ধারকারী দলও প্রস্তুত রয়েছে।’
২ বছর আগে
আবদুল্লাহপুর থেকে মহাখালী পর্যন্ত যানজটে অফিসগামীরা
রাজধানীতে অফিসগামীরা ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং পরবর্তী প্রভাবের কারণে দুর্ভোগের সম্মুখীন হচ্ছেন। মঙ্গলবার সকালে আবদুল্লাহপুর থেকে মহাখালী পর্যন্ত বেশ কিছু জায়গায় জলাবদ্ধতা দেখা যায় এবং টঙ্গীতে চলমান বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্প দুর্ভোগের মাত্রা আরও বাড়িয়েছে।
বিআরটি প্রকল্প এলাকার কারণে আবদুল্লাহপুর এলাকা থেকে যানবাহন খুব ধীরগতিতে চলাচল করায় হোটেল লে মেরিডিয়ান থেকে বিমানবন্দর সড়ক পর্যন্ত দীর্ঘ বাস, ব্যক্তিগত যানবাহনের সারির কারণে আটকা পড়তে হয় নগরবাসীদের।
এদিকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদর দপ্তরের সামনের সড়কে জলাবদ্ধতার কারণে ফ্লাইওভার দিয়ে খিলক্ষেত এলাকা থেকে বনানীগামী মানুষদের আরেকটি যানজটে পড়তে হচ্ছে।
অন্যদিকে কুড়িল ফ্লাইওভার থেকে নেমে রেডিসন ব্লু হোটেলের দিকে যেতেও জলাবদ্ধতা দেখা গেছে এবং ফ্লাইওভার থেকে বনানীর দিকে আরেকটি যানজট পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের।
ঢাকার উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক) আবু রায়হান মো. সালেহ ইউএনবিকে বলেন, গতকালের অবিরাম বৃষ্টির কারণে নৌবাহিনী সদর দপ্তরের সামনের সড়কসহ বেশ কয়েকটি স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘সকাল থেকে উত্তরা থেকে মহাখালী পর্যন্ত মানুষের ঢল নামে। তবে মিরপুর এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক।’
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং সোমবার মধ্যরাতে ভোলার নিকটে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করলেও বৃষ্টিপাতের কারণে দ্রুত দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর অনুসারে, সিত্রাং খুব দ্রুত উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয় ও বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করে এবং বর্তমানে ঢাকা-কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও তৎসংলগ্ন এলাকায় স্থল নিম্নচাপ হিসেবে অবস্থান করছে।
সিত্রাং দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত করা শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে উপড়ে যাওয়া গাছ ও এর ডালপালার আঘাতে মানুষ মারা যায়। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয় এবং অবিরাম বৃষ্টির কারণে শহর এলাকায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় প্রায় সমগ্র বাংলাদেশ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হয়।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সোমবার ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ এলাকায় মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হয়েছে।
এদিকে, রাজধানী ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী নারায়ণগঞ্জের অনেক এলাকা অন্ধকারে নিমজ্জিত। যেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহে ব্যাপক বিঘ্ন ঘটার কারণ হিসেবে কর্তৃপক্ষ ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংকে দায়ী করেছে।
২ বছর আগে
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং সোমবার মধ্যরাতে ভোলার নিকটে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করলেও বৃষ্টিপাতের কারণে দ্রুত দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়। বিষয়টি আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ বুলেটিনে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর অনুসারে, সিত্রাং খুব দ্রুত উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয় ও বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করে এবং বর্তমানে ঢাকা-কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও তৎসংলগ্ন এলাকায় স্থল নিম্নচাপ হিসেবে অবস্থান করছে।
মোংলা, পায়রা ও চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এদিকে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
অমাবশ্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে তিন থেকে পাঁচ ফুটের অধিক উচ্চতায় বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের সামনের অংশটি সোমবার সন্ধ্যা থেকে বাংলাদেশে আঘাত হানতে শুরু করে এবং এর কেন্দ্র মঙ্গলবার ভোরে স্থলভাগে আছড়ে পড়ে।
ওই সময়ে ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ায় ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটারে পৌঁছেছিল।
সিত্রাং দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত করা শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে উপড়ে যাওয়া গাছ ও এর ডালপালার আঘাতে মানুষ মারা যায়। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয় এবং অবিরাম বৃষ্টির কারণে শহর এলাকায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় প্রায় সমগ্র বাংলাদেশ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হয়।
১৯টি উপকূলীয় জেলায় কর্তৃপক্ষ ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের আশেপাশের প্রায় সাত হাজার আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য জোর দিয়েছিল। সোমবার গভীর রাতের এক প্রতিবেদন অনুসারে, সিত্রাং আছড়ে পড়ার সময় পর্যন্ত দুই লাখেরও বেশি মানুষকে এইসব আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হয়।
ইতোমধ্যে দক্ষিণের তিনটি বিভাগের কর্তৃপক্ষ পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কিছু ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
নদীবন্দর সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ফরিদপুর, ঢাকা, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হাবিবগঞ্জ, বরিশাল সিলেট, ময়মনসিংহ ও কক্সবাজারকে ৩ নম্বর নদী বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সোমবার ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ এলাকায় মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ মানুষকে সরিয়ে নেয়ার জন্য সাত হাজারেরও বেশি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করেছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে সমস্ত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে নোঙর রাখতে বলা হয়েছে।
অবিরাম বর্ষণ অব্যাহত থাকলে ভূমিধস হতে পারে বলে সতর্ক করেছে চট্টগ্রাম ও অন্যান্য পার্বত্য জেলার কর্তৃপক্ষ।
দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চল জুড়ে ইউএনবি সংবাদদাতারা সোমবার সকাল থেকে ভারী বৃষ্টিপাত ও জলোচ্ছ্বাসের কথা জানিয়েছেন।
এদিকে, রাজধানী ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী নারায়ণগঞ্জের অনেক এলাকা অন্ধকারে নিমজ্জিত। যেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহে ব্যাপক বিঘ্ন ঘটার কারণ হিসেবে কর্তৃপক্ষ ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংকে দায়ী করেছে।
ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে সরবরাহ নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণকারী দুটি সংস্থা ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) ও ডেসকোর কর্মকর্তাদের মতে, সিমপুর, উলান ও মানিকনগর গ্রিড লাইনে ত্রুটির কারণে অনেক এলাকা ঘন্টার পর ঘন্টা ব্ল্যাকআউটের সম্মুখীন হয়েছে।
ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান ইউএনবিকে বলেন, ‘গ্রিড বিপর্যয়ের কারণে ঢাকার ধানমন্ডি, শেরেবাংলানগর, কাকরাইল, কাজলা ও নারায়ণগঞ্জ শহরের কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।’
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বিদ্যুৎ বিতরণ লাইনে গাছ ভেঙে পড়ায় অনেক এলাকায় ব্ল্যাকআউটও হয়েছে।
২ বছর আগে
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: উপকূলবাসীর পাশে দাঁড়াতে আ.লীগ নেতাকর্মীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবিলায় জনগণের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা উপকূলীয় অঞ্চলের জনগণকে সরিয়ে নিতে প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তাও প্রদান করতে বলেন।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং আরও ঘণীভূত হয়ে সোমবার মধ্যরাত থেকে মঙ্গলবার ভোরের মধ্যে খেপুপাড়ার কাছে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সব ধরনের প্রশাসনিক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানান ওবায়দুল কাদের।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সিত্রাং-এর পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি মনিটরিং সেল খোলা হয়েছে এবং ১৯টি উপকূলীয় জেলার স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ বজায় রাখা হচ্ছে।
ইতোমধ্যেই ওই এলাকার লোকজনকে সরিয়ে নেয়া শুরু হয়েছে এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
বিবৃতিতে কাদের আরও বলেন, দুর্যোগ কবলিত মানুষদের প্রয়োজনীয় সহায়তার জন্য আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক উপ-কমিটির অধীনে বেশ কয়েকটি দল ইতোমধ্যে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
তিনি তার নেতাকর্মীদের পাশাপাশি উপকূলীয় এলাকার সাধারণ মানুষকে প্রয়োজনে আওয়ামী লীগের মনিটরিং টিমের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ের মনিটরিং টিমের ফোন নম্বরগুলো হলো-
০২-২২৩৩৬৭৮৮০, ০২-২২৩৩৬৭৮৮২, ০১৭৭৩২৬৬৬৬৬, ০১৯১৫৫৫৫৮৩০ এবং ০১৭১১৫৮২৪৭৫।
আরও পড়ুন: ৫-৮ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসসহ মধ্যরাতে আঘাত হানতে পারে সিত্রাং
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল
২ বছর আগে
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংকে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এর সঙ্গে তাদের সার্বক্ষণিক কর্মস্থলে অবস্থানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সোমবার বিকালে সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে কৃষিতে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় জরুরি প্রস্তুতিমূলক সভায় এ নির্দেশ দেয়া হয়। এসময় ৮০ শতাংশ পরিপক্ব হলেই ধান কাটার নির্দেশও দেয়া হয়।
কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলাম সভাপতিত্বে সভায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, (সম্প্রসারণ) রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া, অতিরিক্ত সচিব (গবেষণা), অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা), মহাপরিচালক (বীজ)সহ মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, সংস্থা প্রধান, ঘূর্ণিঝড়প্রবণ জেলাগুলোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনা হলো-
১. জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন সকল দপ্তর/সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল এবং সার্বক্ষণিক কর্মস্থলে অবস্থানের নির্দেশ।
২. সকল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কৃষি বিভাগের অফিসে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা।
৩. ঘূর্ণিঝড় পূর্ব প্রস্তুতি ও পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য কৃষকদেরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান।
৪. উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষি কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক মাঠে অবস্থান করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করা।
৫. ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করে জরুরি ভিত্তিতে মন্ত্রণালয়ে রিপোর্ট প্রদান।
৬. ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পুনর্বাসন পরিকল্পনা অগ্রিম প্রস্তুত করে রাখা যাতে করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কৃষকদের পুনর্বাসন সহায়তা প্রদান করা যায়।
৭. যেসব এলাকায় আমন ধান ৮০% পেকেছে সেগুলো কর্তনের জন্য পরামর্শ প্রদান।
৫. উপকূলীয় এলাকায় ফসল খেতে পানি প্রবেশ করলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে পানি নিস্কাশনের জন্য ব্যবস্থা করা।
৯. জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে কৃষি কর্মকর্তাগণ সার্বক্ষণিক সমন্বয় সাধন করা।
১০. স্লুইচ গেট অপারেশনের মাধ্যমে লবণাক্ত পানি শস্য খেতে প্রবেশ রোধ করতে হবে। অধিক উচ্চতায় জোয়ারের কারণে লবণাক্ত পানি প্রবেশ করলে তা নিষ্কাশনের দ্রুত ব্যবস্থা করতে হবে। এ বিষয়ে কৃষি বিভাগ নিয়মিতভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করবে।
আরও পড়ুন: করতোয়ায় ট্রলারডুবি: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৬, এখনও নিখোঁজ ৪০
করতোয়ায় ট্রলারডুবি: নিহত বেড়ে ৩৬
২ বছর আগে