কর্মক্ষমতা
দেশে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি, নতুন আয়ের উৎস তৈরি এবং দক্ষতা বাড়াতে ভূমিকা রাখছে মোবাইল সংযোগ
কর্মক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে, ডিজিটাল ভবিষ্যতের জন্য দক্ষতা বৃদ্ধি করতে এবং ফ্রিল্যান্স থেকে বাড়তি উপার্জনের জন্য মোবাইল প্রযুক্তির সম্ভাবনাকে কাজে লাগাচ্ছে বাংলাদেশ।
’টেলিনর এশিয়া ডিজিটাল লাইভস ডিকোডেড’ শীর্ষক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
এশিয়া জুড়ে ৮ হাজার মানুষ এই সমীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।
সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ১০ জনের মধ্যে প্রায় ৬ জনই বলছেন, তারা দিনের অর্ধেকেরও বেশি সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন।
একইসঙ্গে ৬২ শতাংশ মানুষ বিশ্বাস করেন, আগামী ১ থেকে ২ বছরের মধ্যে তাদের মোবাইল ফোন ব্যবহারের হার আরও বাড়বে।
আরও পড়ুন: মোবাইল চুরির অপবাদে অটোরিকশাচালককে পিটিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ৩
মূলত কর্মক্ষেত্রের প্রয়োজনেই (৭৫ শতাংশ) মোবাইল ফোন ব্যবহারের মাত্রা বাড়ছে। এর পরেই কারণ হিসেবে রয়েছে দৈনন্দিন কেনাকাটা, রিটেইল ও ব্যাংকিংয়ের-এর মত অনলাইন সেবা গ্রহণ (৬৭%)।
সমীক্ষায় আরও উঠে আসে যে ৯৬ শতাংশ মানুষের মতে, মোবাইল ফোন তাদের কর্মক্ষেত্র ও ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্যকে উন্নত করেছে।
টেলিনর এশিয়ার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং হেড অফ এক্সটার্নাল রিলেশনস মনীষা ডোগরা বলেন, ‘মোবাইল প্রযুক্তি বাংলাদেশের মানুষের ক্ষমতায়নে ভূমিকা রাখছে এবং এই দেশে মোবাইল ফোন যেভাবে মানসম্মত ডিজিটাল জীবনধারার জন্য অপরিহার্য হয়েছে উঠছে তা আমাদের অনুপ্রাণিত করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডিজিটাল লাইভস ডিকোডেড সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, বাংলাদেশের মানুষ মোবাইল সংযোগের প্রভাব সম্পর্কে যথেষ্ট ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেছেন এবং নতুন সুযোগগুলোকে কাজে লাগাতে মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন। এই ইতিবাচক মানসিকতাকে কাজে লাগিয়ে একটি সমৃদ্ধ ডিজিটাল অর্থনীতি গড়ে তুলতে এবং ব্যক্তি, ব্যবসা ও সমাজের জন্য এআইয়ের মতো নতুন নতুন প্রযুক্তির সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগাতে আমাদের একসাথে কাজ করতে হবে।’
এই সমীক্ষায় ব্যবসায়িক অগ্রগতি এবং নতুন আয়ের পথ তৈরিতে মোবাইল ফোন এবং মোবাইল প্রযুক্তির প্রভাব স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।
আশ্চর্যজনকভাবে ৯৩ শতাংশ উত্তরদাতা বলেন, গত পাঁচ বছরে কর্মক্ষেত্রে কর্মক্ষমতা এবং কাজের মান উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়েছে। আর ৮২ শতাংশ মানুষ কর্মক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতার ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ইতিবাচক প্রভাবের কথা উল্লেখ করেন।
সমীক্ষায় জানা যায়, বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সার এবং অনলাইন পরামর্শদাতারা সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়েছেন। কারণ প্রতি ১০ জন উত্তরদাতাদের মধ্যে ৬ জনই বলেছেন, তারা অনলাইনে এই ধরনের সেবা প্রদানের জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন।
সমীক্ষায় আরও প্রকাশ করা হয় যে, বাংলাদেশের ব্যবসাগুলো জেনারেটিভ এআই-এর মতো নতুন ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত।
অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৬৫ শতাংশ মানুষ বলেছেন, তারা যে কোম্পানিতে কাজ করেন সে কোম্পানিগুলো নতুন প্রযুক্তি এবং জেনারেটিভ এআই ব্যবহারকে সমর্থন করেন এবং প্রায় অর্ধেক (৪৭ শতাংশ) বিশ্বাস করেন যে, আগামী ছয় মাসে জেনারেটিভ এআইয়ের ব্যবহার বাড়বে।
উত্তরদাতাদের ৮৬ শতাংশের মতে, মোবাইল প্রযুক্তির ব্যবহার তাদের কর্মজীবন এবং দক্ষতা বিকাশে সহায়ক হয়েছে এবং ৯১ শতাংশ উত্তরদাতা গত ১২ মাসে নতুন দক্ষতা অর্জনের জন্য তাদের মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছেন।
ডিজিটাল দক্ষতায় আত্মবিশ্বাসের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে থাকলেও, পুরুষ ও নারী উত্তরদাতাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের মাত্রা ভিন্ন।
সাধারণত পুরুষ উত্তরদাতারা তাদের ডিজিটাল দক্ষতার ওপর বেশি আত্মবিশ্বাসী (৭৩ শতাংশ পুরুষ বনাম ৫৮ শতাংশ নারী তাদের ডিজিটাল দক্ষতায় ’খুব আত্মবিশ্বাসী’) এবং ভবিষ্যতের প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে চলার বিষয়ে কম উদ্বিগ্ন (২৮ শতাংশ পুরুষ বনাম ১৫ শতাংশ নারীর কথায় বোঝা যায় যে, তারা এ ব্যাপারে ’ উদ্বিগ্ন নয়’)।
টেলিনর এশিয়ার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘এই ব্যবধান কমিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ডিজিটাল দক্ষতা বাড়ানো এবং ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি। ডিজিটাল পণ্য ও সেবা ব্যবহারে সবাই আত্মবিশ্বাসী ও স্বাচ্ছন্দ্যময় হয়ে উঠলে এবং সবাই নিরাপদে ডিজিটাল কনটেন্টের নির্মাতা ও ভোক্তা হয়ে উঠতে পারলেই তা সম্ভব হবে। সকল ব্যক্তি, সম্প্রদায় ও ব্যবসা যেন মোবাইল সংযোগ, উন্নত ডেটা সেবা এবং এআইয়ের মতো উদীয়মান প্রযুক্তির সাথে খাপ খাওয়াতে পারে এজন্য প্রয়োজন সম্মিলিত প্রচেষ্টা।’
আরও পড়ুন: সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে এক প্রবাসী চুরি করলেন আরেক প্রবাসীর মোবাইল-পাসপোর্ট
চিরকুটে মোবাইল নম্বর দিয়ে ১০টি বৈদ্যুতিক মিটার চুরি
৬ মাস আগে
ধূমপানে মানুষের কর্মক্ষমতা কমে যায়: এ মালিক
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) এ মালিক বলেছেন, ধূমপানে মানুষের কর্মক্ষমতা কমে যায়। এছাড়াও ধূমপান এবং তামাক পাতা ও জর্দ্দা সেবনে শরীরের প্রত্যেক অঙ্গে মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হয়।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সিলেট ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন-বিএমএ সিলেট শাখা ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুত ‘২০৪০ সালের তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জন ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে অগ্রগতি’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় বিদ্যমান ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন সংশোধন প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করলে তা প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে অত্যন্ত সহায়ক হবে।
তিনি আরও বলেন, সচেতনতা ও মূল্যবোধ বাড়িয়ে সিগারেট ও তামাক পাতার ক্রেতা কমাতে হবে এবং পাশাপাশি আইনের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
আরও পড়ুন: ‘ধূমপান নিয়ে অভিযোগ’ করায় ঢামেক কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন সিলেটের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ডা মো আমিনুর রহমান লস্করের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক আবু তালেব মুরাদের পরিচালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএমএর কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক অধ্যাপক ডা মোহাম্মদ শেখ শহীদ উল্লাহ, সিলেট বিভাগের বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা হিমাংশু লাল রায় ও সিভিল সার্জন ডা এস এম শাহরিয়ার।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রেজিস্ট্রার (ক্লিনিকাল রিসার্চ) ডা শেখ মো মাহবুবুস সোবহান।
মূল প্রবন্ধে ডা শেখ মো মাহবুবুস সোবহান উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে প্রায় পৌণে চার কোটি প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করে। কর্মক্ষেত্রসহ পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয় তিন কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ।
তামাকজাত দ্রব্যের বহুল ব্যবহার হৃদরোগ, ক্যান্সার, বক্ষব্যাধি ও অন্যান্য অনেক জটিল রোগ ও মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। এসব ক্ষতি থেকে জনস্বাস্থ্যকে রক্ষার জন্য তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে শক্তিশালী করতে হবে।
আরও পড়ুন: কোভিড-১৯: পরোক্ষ ধূমপান থেকে কি আপনি সংক্রমিত হতে পারেন?
বিশেষ অতিথি অধ্যাপক ডা মোহাম্মদ শেখ শহীদ উল্লাহ বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য স্বাস্থ্যকর বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুসারে ২০৪০ সালের মধ্যে দেশ থেকে তামাক ব্যবহার নির্মূল করতে হবে।
ডা হিমাংশু লাল রায় বলেন, ধূমপান মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।স্বাগত বক্তব্যে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব প্রফেসর খন্দকার আব্দুল আউয়াল (রিজভী) বলেন, ধূমপান সমাজের একটি ব্যাধি, যাতে একবার আসক্ত হয়ে গেলে ছেড়ে দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। যদিও এটা নির্ভর করে দৃঢ় মানসিকতার উপর। এ ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে হবে।
সভাপতির বক্তৃতায় প্রফেসর ডা মো আমিনুর রহমান লস্কর বলেন, দেশে ধূমপানের কারণে প্রতিদিন ৪৫০ জন অর্থাৎ বছরে এক লাখ ৩০ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে থাকে।
অন্যদের মতামত ব্যক্ত করেন ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইএনটি অ্যান্ড হেড-নেক সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা মনিলাল আইচ লিটু, রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা শেখ এএইচএম মিসবাহুল ইসলাম ও কার্ডিওলজি বিভাগের রেজিস্টার ডা প্রশান্ত সরকার, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন সিলেটের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ডা মোস্তফা শাহজামান চৌধুরী (বাহার) ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল সিলেটের উপপরিচালক ডা মো আব্দুল মুনিম চৌধুরী।
শেষ পর্যায়ে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল সিলেটের পরিচালক ও সিইও কর্নেল (অব) শাহ আবিদুর রহমান।
আরও পড়ুন: গেস্টরুমে ঢাবি ছাত্রকে জোর করে ধূমপান করানোর অভিযোগ
২ বছর আগে