রিটের আদেশ
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে থাকার বৈধতা নিয়ে রিটের আদেশ সোমবার
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের মন্ত্রী পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিটের আদেশের জন্য সোমবার দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
রবিবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ আদেশের জন্য এ দিন ধার্য করেন।
এর আগে ৫ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী মো. এরশাদ হোসেন রাশেদ। রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সংসদ সচিবালয়ের সচিব ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিবাদী করা হয়।
একই অভিযোগে ২১ আগস্ট ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে স্বেচ্ছায় পদত্যাগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনকে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছিলেন ওই আইনজীবী। নোটিশের পরও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় রিট করেন তিনি।
আরও পড়ুন: বৈশ্বিক মন্দায় আমাদের তেমন সমস্যা হবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
নোটিশে আইনজীবী রাশেদ বলেন, ১৯ আগস্ট বিকালে গণমাধ্যমে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারতবিষয়ক বক্তব্যের তথ্য পান।
১৮ আগস্ট সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম শহরের জে এম সেন হলে জন্মাষ্টমী উৎসবের অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার সেটি করতে ভারত সরকারকে অনুরোধ করেছি। আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে।’
নোটিশে বলা হয়, এ বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) তার শপথ ভঙ্গ এবং সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। তার এ বক্তব্য সার্বভৌমত্বকে আঘাত করেছে। তাই নোটিশ পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে স্বেচ্ছায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পদত্যাগে অনুরোধ করা হয়। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়।
এই নোটিশের পরও পদত্যাগে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় হাইকোর্টে রিট করেন ওই আইনজীবী।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান আহাদ ও অ্যাডভোকেট এরশাদ হোসেন রাশেদ।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আব্বাস উদ্দিন ও সামসুন নাহার লাইজু।
আরও পড়ুন: নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে সহযোগিতা জোরদারে সম্মত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্কটিশমন্ত্রী
২ বছর আগে
মিছিল-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞার বৈধতা চ্যালেঞ্জের রিটের আদেশ রবিবার
মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স ১৯৭৬ এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ রুলস, ২০০৬ অনুসারে পুলিশ কমিশনারের ক্ষমতা সংক্রান্ত বিধানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ আদেশের জন্য আগামী রবিবার (৩০ অক্টোবর) দিন রেখেছেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল মোমেন চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও মোহাম্মদ আব্বাস উদ্দিন।
এর আগে ২০ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও গণফোরামের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুল মোমেন চৌধুরী, আইনজীবী কে এম জাবির, চাঁদুপর আইনজীবী সমিতির সদস্য সেলিম আকবর, রাজধানীর বাসিন্দা শাহ নুরুজ্জামান এবং একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের প্রিন্সিপাল মোহাম্মদ ইয়াসিন জনস্বার্থে এ রিট দায়ের করেন।
রিটে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অ্যর্ডিন্যান্স ১৯৭৬ এর সেকশন ২৯ ও ১০৫ এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (সভা,সমাবেশ,মিছিল এবং আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ) রুলস, ২০০৬ এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। রিটে আইন সচিব,স্বরাষ্ট্র সচিব,ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারসহ চারজনকে বিবাদী করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ১০ দেশের সঙ্গে চুক্তি করতে বিএফআইইউকে তিন মাসের সময় হাইকোর্টের
সেকশন ২৯ এ বলা হয়েছে, জনসাধারণের শান্তি বা নিরাপত্তা রক্ষার জন্য পুলিশ কমিশনার যখনই প্রয়োজন মনে করবেন এবং যতদিনের প্রয়োজন বিবেচনা করবেন লিখিত আদেশ দ্বারা কোনো জনসমাবেশ বা মিছিল নিষিদ্ধ করতে পারবেন। তবে শর্ত থাকে যে, অনুরূপ কোনো নিষেধাজ্ঞা সরকারের অনুমতি ব্যতীত ত্রিশ দিনের বেশি বলবৎ থাকবে না।
১০৫ এ বলা হয়েছে, এ অধ্যাদেশের কোনো বিধান অথবা আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইন বা তদুদ্দেশ্যে প্রণীত কোন বিধি, প্রবিধান আদেশ বা নির্দেশের অধীন সরল বিশ্বাসে কৃত কোন কাজ বা ক্ষতির জন্য কোন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন কারর্যধারা গ্রহণ করা যাবে না।
সমাবেশের স্বাধীনতা সংক্রান্ত সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, জনশৃঙ্খলা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধা নিষেধ-সাপেক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে ও নিরস্ত্র অবস্থায় সমবেত হইবার এবং জনসভা ও শোভাযাত্রায় যোগদান করিবার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকিবে।
আইনজীবী আবদুল মোমেন চৌধুরী বলেন, অধ্যাদেশের সেকশন ২৯ সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটি মৌলিক অধিকারের বিরোধী। কারণ সংবিধান বলছে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধা-নিষেধ সাপেক্ষে সমাবেশ করার কথা। আর অধ্যাদেশে পুলিশ কমিশনারকে দেয়া হয়েছে নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা। দুটি ভিন্ন জিনিস। তাই এটি সাংঘর্ষিক। এছাড়া রুলসে অস্ত্র ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু অস্ত্র কেন ব্যবহার করা হবে?অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ৩৭ অনুচ্ছেদ অনুসারে এটা (সভা-সমাবেশ) নিয়ন্ত্রিত অধিকার। আইনের দ্বারা আরোপিত বিধিনিষেধ সাপেক্ষে। দিস ইজ নট অ্যাবসুলেট পাওয়ার। সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদ অনুসারে, সংবিধান ও আইন মান্য করা, শৃঙ্খলা রক্ষা করা, নাগরিক দায়িত্ব পালন করা এবং জাতীয় সম্পত্তি রক্ষা করা প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য।
তিনি বলেন, শৃঙ্খলা রক্ষা করবে পুলিশ। অধ্যাদেশের ২৯ সেকশন হচ্ছে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে।
তখন আদালত বলেন, আবেদনকারী বলতে চাচ্ছেন ২৯ সেকশনে পুলিশকে বেশি ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।
জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, না। বেশি ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। জনশৃঙ্খলা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে ঢাকায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। যেমন মহানগরের বাইরে ১৪৪ ধারা দেওয়া হয়। আর অধ্যাদেশের সেকশন ১০৫ হলো দায়মুক্তির বিধান। এটা সব আইনে আছে। তাই রিট আবেদনটি সরাসরি খারিজ যোগ্য।
এরপর আদালত এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী রবিবার দিন রেখেছেন।
আরও পড়ুন: হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত বাংলাদেশ ব্যাংকের এডি নিয়োগ পরীক্ষায় বাধা নেই
জজ মিয়াকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের রুল
২ বছর আগে