আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেট
আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেটে তালিকাভুক্ত ২৩ কোম্পানি থেকে উন্মুক্ত দরপত্রে এলএনজি কিনবে সরকার
আলোচনার পরিবর্তে এখন উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিইএ) বৈঠকে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবে নীতিগতভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তীকালীন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, সরকার উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে এলএনজি সংগ্রহ করবে।
আরও পড়ুন: গ্যাস সরবরাহ বাড়াতে ৩ কার্গো এলএনজি আমদানি করবে সরকার
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজ বিভাগ আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেটে তালিকাভুক্ত ২৩টি কোম্পানির কাছ থেকে এলএনজি আমদানির অনুমোদন চেয়ে এ প্রস্তাব দেয়।
উপদেষ্টা বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারে এ ধরনের ২৩ কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত করে মাস্টার সেলস অ্যান্ড পারচেজ চুক্তি করলেও সেগুলো অপরিবর্তিত থাকবে।
তিনি বলেন, দ্রুত জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ (বিশেষ) আইন ২০১০ প্রয়োগের পরিবর্তে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন ২০০৮ অনুসরণ করবে।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'সরবরাহকারীদের মধ্যে যথাযথ প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করে আমরা দ্রুত এলএনজি আমদানি করতে চেয়েছিলাম বলে আমরা এগুলো পরিবর্তন করতে চাই না।’
কমিটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফার্টিগ্লোব ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য জিটুজি ভিত্তিতে ইউরিয়া সার আমদানির চুক্তি সইয়ের জন্য নীতিগতভাবে আরেকটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।
এদিকে অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিজিপি) বৈঠকে মসুর ডাল ও সার আমদানিতে ৩টি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
প্রস্তাব অনুযায়ী, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) স্থানীয় প্রতিষ্ঠান সাহারা এন্টারপ্রাইজের কাছ থেকে ৯৮ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কিনবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বৈঠকে টিসিবির পক্ষ থেকে উত্থাপিত প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়, সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে নির্বাচন করা হয়েছে।
সিসিজিপি শিল্প মন্ত্রণালয়ের পৃথক দুটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে, যার আওতায় বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন ১২১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফার্টিগ্লোব ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড থেকে স্টেট টু স্টেট চুক্তিতে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক দানাদার ইউরিয়া সার আমদানি করবে।
প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম পড়বে ৩৪৩ দশমিক ১৭ ডলার।
স্থানীয় কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) থেকে ১১৬ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয়ে আরও ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগ দানাদার ইউরিয়া সার সংগ্রহ করা হবে। এর প্রতি মেট্রিক টন ৩৩০ দশমিক ৫০ ডলার ব্যয়ে সরবরাহ করা হবে।
আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরের আগে সামিটের এলএনজি টার্মিনালের কার্যক্রম শুরুর সম্ভাবনা নেই
এলএনজি কার্গো ও মসুর ডাল আমদানির অনুমোদন মন্ত্রিসভা ক্রয় কমিটির
৩ মাস আগে
এলএনজি আমদানি স্থগিত সত্ত্বেও সরবরাহকারী সংখ্যা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত সরকারের
আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেট থেকে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি স্থগিত থাকা সত্ত্বেও তালিকাভুক্ত এলএনজি সরবরাহকারীর সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিইএ) ভার্চুয়াল বৈঠকে এ বিষয়ে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়।
১৬টি কোম্পানির বিদ্যমান তালিকায় নতুন আটটি কোম্পানি যুক্ত হয়েছে। নতুন কোম্পানিগুরো হলো-জাপানের দুটি কোম্পানি এলএনজি জাপান করপোরেশন ও ইনপেক্স করপোরেশন;সোকার ট্রেডিং ইউকে লিমিটেড; কোরিয়ার পিওএসসিও ইন্টারন্যাশনাল কর্পোরেশন; কাতার এনার্জি ট্রেডিং এলএলসি; সিঙ্গাপুরের তিনটি কোম্পানি প্যাভিলিয়ন এনার্জি ট্রেডিং অ্যান্ড সাপ্লাই পিটিই লিমিটেড ;পেট্রোচায়না ইন্টারন্যাশনাল পিটিই লিমিটেড এবং পিটিটি ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং পিটিই লিমিটেড।
আরও পড়ুন: এলএনজি আমদানিতে জিডিএফ থেকে ২০০০ কোটি টাকা পাবে পেট্রোবাংলা
তবে,সরকার তাৎক্ষণিকভাবে আমদানি স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করবে কি না,তা স্পষ্ট নয়।
এর আগে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষিতে অত্যাধিক দাম বৃদ্ধির কারণে জুলাই মাসে আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি স্থগিত করে সরকার।
যুদ্ধের আগে বাংলাদেশ স্পট মার্কেট থেকে প্রতি এমএমবিটিইউ ছয় থেকে দশ ডলারের মধ্যে এলএনজি কিনতো। এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর প্রতি এমএমবিটিইউ দাম ৩৭ মার্কিন ডলার অতিক্রম করে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আবার দাম হ্রাস প্রবণতা শুরু হয়েছে।
গত মাসে,দাম এমএমবিটিইউ প্রতি ২৪ ডলারের নিচে নেমে এসেছে।
স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানির পাশাপাশি, তুলনামূলকভাবে অনেক কম দামে গ্যাস আমদানির জন্য কাতার ও কুয়েতের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি রয়েছে।
যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আন্তর্জাতিক বাজারে তরল জ্বালানির দামের ওপর নির্ভর করে প্রতি এমএমবিটিইউ ১১ থেকে ১৭ মার্কিন ডলারের মধ্যে পরিবর্তিত হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে বাণিজ্যিকভাবে এলএনজি সরবরাহে সহায়তার আশ্বাস সৌদি আরবের
এলএনজি আমদানি অব্যাহত থাকবে, আরও টার্মিনাল স্থাপন হবে: জ্বালানি উপদেষ্টা
২ বছর আগে