সাঁওতালদের
গোবিন্দগঞ্জে হামলার ৬ষ্ঠ বার্ষিকী, তীর-ধনুক নিয়ে সাঁওতালদের শোক র্যালি
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও তিন সাঁওতাল হত্যার ৬ষ্ঠ বার্ষিকী উপলক্ষে শোক র্যালি ও সমাবেশ করেছেন সাঁওতালরা।
শনিবার গাইবান্ধা নাট্য সংস্থার সামনে এই সমাবেশ করা হয়।
আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদ, সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদ ও জনউদ্যোগ-গাইবান্ধা যৌথভাবে এই কর্মসূচি পালন করে।
সমাবেশে বক্তারা সাঁওতাল হত্যার বিচার, আসামিদের গ্রেপ্তার, গুলিতে আহত সাঁওতাল, বাড়িঘরে লুটপাট, অগ্নিসংযোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সাঁওতালদের ক্ষতিপূরণ এবং সাঁওতালদের রক্তভেজা তিন ফসলি জমিতে ইপিজেড নির্মাণ বন্ধের দাবি জানান।
আরও পড়ুন: গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল হত্যা দিবস উপলক্ষে বিক্ষোভ
বক্তারা বলেন, যে কোন এলাকার উন্নয়নে ইপিজেড স্থাপন সেই এলাকার মানুষের জন্য অবশ্যই সুখের খবর। কিন্তু সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্মের আদিবাসী ও বাঙালিদের বাপ-দাদার জমিতে সেখানকার ওয়ারিশদের সঙ্গে কোন ধরনের স্বাধীন, পূর্বাবহিত সম্মতি ছাড়াই ইপিজেড স্থাপনের ঘোষণা আদিবাসী-বাঙালি জনগণকে হতাশ করেছে।
তারা অবিলম্বে তিন ফসলি জমিতে ইপিজেড স্থাপনের প্রক্রিয়া বন্ধ করে জেলার অন্যত্র করা, চাষাবাদরত সাঁওতাল-বাঙালিদের সেচ সুবিধার জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান, সমতলের আদিবাসীদের ভূমি সংকট নিরসনে পৃথক ও স্বাধীন ভূমি কমিশন গঠনসহ সাত দফা বাস্তবায়নের দাবি জানান।
সমাবেশ শেষে দাবি-দাওয়া সংবলিত ব্যানার-ফেস্টুন ও কালো পতাকা হাতে পাঁচ শতাধিক সাঁওতাল-বাঙালি শোক র্যালিতে অংশ নেন। র্যালিতে সাঁওতালরা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে তীর-ধনুক ও বাদ্যযন্ত্রসহ তাদের ঐতিহ্য-সংস্কৃতি তুলে ধরেন।
আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক ও জেলা বারের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু’র সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন পরিবেশ আন্দোলন-গাইবান্ধার আহ্বায়ক ওয়াজিউর রহমান রাফেল, জেলা জাসদ সভাপতি গোলাম মারুফ মনা, সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাসকে, জনউদ্যোগের সদস্য সচিব প্রবীর চক্রবর্তী, আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদের সদর উপজেলা আহ্বায়ক গোলাম রব্বানী মুসা, আদিবাসী নেত্রী প্রিসিলা মুরমু, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ নেতা মৃণাল কান্তি বর্মণ, জাতীয় শ্রমিক জোটের সাধারণ সম্পাদক নূর মোহাম্মদ বাবু, রংপুর বিভাগীয় খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাথিয়াস মার্ডি, হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের জেলা কমিটির নেতা গৌর চন্দ্র পাহাড়ী, সাঁওতাল হত্যা মামলার বাদি থমাস হেমব্রম, মানবাধিকার কর্মী অঞ্জলী রানী দেবী, কাজী আব্দুল খালেক, অ্যাডভোকেট কুশলাশীষ চক্রবর্তী, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী প্রামানিক, অ্যাডভোকেট ফারুক কবির, অ্যাডভোকেট শাহনেওয়াজ খান, শহিদুল ইসলাম, জাসদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ কবির রানা, রবিদাস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক খিলন রবিদাস, রবিদাস ফোরামের উপদেষ্টা সুনীল রবিদাস, সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন শেখ প্রমুখ।
আরও পড়ুন: ‘২ সাঁওতাল কৃষকের মৃত্যু কীটনাশক পানেই’
জমিতে পানি না পেয়ে বিষপানে সাঁওতাল কৃষকের আত্মহত্যা!
২ বছর আগে