ফসল উৎপাদন
বাংলাদেশের ফসল উৎপাদনের সাফল্য আজ বিশ্বস্বীকৃত: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কৃষি উৎপাদনে বাংলাদেশের সাফল্য আজ বিশ্বস্বীকৃত। বিভিন্ন ফসল উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের শীর্ষ দশ দেশের তালিকায় উঠে এসেছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানের হোটেল আমারির বলরুমে নেদারল্যান্ডসের দূতাবাস আয়োজিত বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডসের কৃষি বাণিজ্য মিশনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে হবে: কৃষিমন্ত্রী
তিনি বলেন, সম্প্রতি জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার একটি প্রতিবেদনে বলেছে, চাল, আলু, আম, সবজিসহ ২২টি কৃষিপণ্য উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন শীর্ষ দেশের একটি। কিন্তু কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণে ও কৃষিপণ্যের রপ্তানিতে আমরা অনেকটা পিছিয়ে আছি, অথচ এখানে অপার সম্ভাবনা রয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, চারটি খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে কৃষিখাতে বিনিয়োগ পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এরমধ্যে আমরা কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, কোল্ড স্টোরেজ স্থাপন ও সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা, ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার এবং সেচ ব্যবস্থাপনাকে অগ্রাধিকার খাত হিসাবে চিহ্নিত করেছি। এসব খাতে নেদারল্যান্ডসের প্রযুক্তিগত সহযোগিতা ও বিনিয়োগ প্রয়োজন।
বাংলাদেশে বিনিয়োগের অবকাঠামো ও সরকারি সুযোগ-সুবিধার বিস্তারিত তুলে ধরে নেদারল্যান্ডসের এগ্রি ট্রেড মিশনকে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে কৃষিতে বিনিয়োগের জন্য এ খাতগুলো খুবই সম্ভাবনাময় এবং তা লাভজনক হবে। দেশে বিনিয়োগের সুষ্ঠু পরিবেশ রয়েছে। কাজেই আপনারা বিনিয়োগে এগিয়ে আসুন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া, ফরেন ইনভেস্টমেন্ট চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির সভাপতি নাসের এজাজ বিজয়, নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স থিজ উডস্ট্রা, নেদারল্যান্ডসের এগ্রি ট্রেড মিশনের প্রধান উইস ভ্যান লিউভেন, নেদারল্যান্ডসের কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিশেষ দূত ফ্রেডেরিক ভসেনার প্রমুখ বক্তব্য দেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের মধ্যে কৃষি ও ডেইরি খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে এ মিশন কাজ করবে। ৩ দিনব্যাপী এই মিশনে নেদারল্যান্ডসের ৯টি কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, বিশেষজ্ঞ ও কৃষি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন এবং বিনিয়োগ ও সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো শনাক্ত করবেন।
আরও পড়ুন: কৃষি গবেষণায় জি২০'র বিনিয়োগ প্রয়োজন: কৃষিমন্ত্রী
মাশরুম চাষ ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশে দারিদ্র্য থাকবে না: কৃষিমন্ত্রী
১ বছর আগে
গ্রামে ফিরে যান, ফসলের উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করুন: যুবলীগ নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুবলীগের নেতাকর্মীদের গ্রামে গিয়ে ফসল উৎপাদন বাড়াতে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন,‘আমি যুবলীগের প্রতিটি কর্মী ও নেতাকে গ্রামে যেতে বলব এবং কোনও জমি যেন অনাবাদি না থাকে তা নিশ্চিত করুন।’
শুক্রবার রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুব সংগঠন বাংলাদেশ যুবলীগের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত যুব মহাসমাবেশে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে শেখ ফজলুল হক মণি বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ গঠন করেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন,ইউক্রেন যুদ্ধ,নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্ববাজারে প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাকার বাচ্চারা ফ্ল্যাটে থেকে ফার্মের মুরগির মতো হয়ে যাচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘আমাদের অন্যের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে আত্মনির্ভরশীল হওয়া উচিত। তাই,আমি এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি না রাখার আহ্বান জানিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা কোভিড-১৯ মহামারিতে তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে কৃষকদের ফসল তুলতে সাহায্য করেছেন।
তিনি যুবলীগ নেতাদেরও নিজের জমি চাষ করতে এবং অন্যদের জমিতে ফসল ফলাতে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়ে বলেন,‘এখন আমাদেরকেও সেভাবে জনগণের পাশে দাঁড়াতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘আপনাদেরকে দেশ ও জনগণের সেবা করতে হবে।’
শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতিমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে যুবলীগের সদস্যদের কাজ করার আহ্বান জানান। যাতে তরুণরা এ ধরনের সামাজিক ব্যাধি থেকে দূরে থাকে।
তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক নেতাকর্মীকে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে এবং সেই অনুযায়ী কাজ করতে হবে। সেই সঙ্গে অন্যান্য যুবকদের মধ্যেও এ বিষয়ে এমন মনোভাব গড়ে তুলতে হবে।’
আমাদের অর্থনীতি এখন যথেষ্ট শক্তিশালী: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী তাদের সমালোচনা করেছেন যারা আগে ভেবেছিলেন যে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে।
তিনি বলেছিলেন,‘আমাদের অর্থনীতি এখন যথেষ্ট শক্তিশালী। অনেক মানুষ বাংলাদেশকে শ্রীলঙ্কা ভেবেছিল... কিন্তু তাদের মুখে ছাই পড়ে গেছে।’
বিএনপির কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপির নেতা তারেক রহমান অর্থপাচার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হলেও এখন অনেক নেতাই অর্থপাচার, লুণ্ঠন ও দুর্নীতির কথা বলছেন।
তিনি বলেন, তারেক জিয়াকে মানি লন্ডারিং মামলায় ৭ বছর কারাদণ্ড ও ২০ কোটি টাকা জরিমানা এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যাদের নেতা হত্যা, মানি লন্ডারিং, অবৈধ অস্ত্র চোরাচালানের মামলায় অভিযুক্ত তাদের পক্ষে আওয়ামী লীগের সমালোচনা করা শোভনীয় নয়।’
বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদি কোনও দেশ এমন কোনও ব্যক্তির দ্বারা পরিচালিত হয় যিনি অষ্টম শ্রেণি পাশ এবং যিনি ম্যাট্রিক (ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায়) পাশ করতে ব্যর্থ হন। তবে সেদেশটি এগিয়ে যায় না।
আরও পড়ুন: জলবায়ু অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ধনী দেশগুলো ব্যর্থ: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, গত ১৪ বছরে বাংলাদেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে কেউ অবহেলা করতে পারবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আজ অনেক বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা মাথাপিছু আয় দুই হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, বিএনপি শাসনামলে জাতীয় বাজেটের আকার ছিল মাত্র ৬৪ হাজার কোটি টাকা, যা এখন ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছয় লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকার ওপরে।
তিনি আরও বলেন, কোনও উন্নয়ন না হলে আমরা এত বড় বাজেট কিভাবে রাখতে পারি?
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মইনুল হোসেন খান নিখিল তাকে স্বাগত জানান।
এরপর পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সমাবেশের সূচনা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা।
তিনি একটি বিশেষ প্রকাশনা উন্মোচন করেন এবং সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে একটি লোগো উন্মোচন করেন। পাশাপাশি যুবলীগের ওয়েবসাইটও উদ্বোধন করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীকে সুবর্ণজয়ন্তী ক্রেস্ট এবং বঙ্গবন্ধুর দু’টি পৃথক চিত্রকর্ম প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান আমির হোসেন আমু, ফজলুল করিম সেলিম, জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রমুখ।
শেখ ফজলে শামস পরশের সভাপতিত্বে সমাবেশ পরিচালনা করেন মইনুল হোসেন খান নিখিল।
আরও পড়ুন: টানা ক্ষমতায় থাকায় দেশের উন্নয়ন দৃশ্যমান হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
২ বছর আগে