কৌশলগত
বাংলাদেশের সঙ্গে আরও কৌশলগত সহযোগিতা-অংশীদারিত্ব চায় ফ্রান্স
জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসন, সাইবার নিরাপত্তা, আইসিটি, প্রতিরক্ষা, এভিয়েশন, মহাকাশ, অর্থনৈতিক সংস্কার এবং বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে আরও কৌশলগত সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত মেরি মাসদুপুই।
তিনি দু'দেশের জনগণের মধ্যে সংস্কৃতি, রন্ধনপ্রণালী ও শিল্পকলার মিল তুলে ধরেন এবং প্রত্নতাত্ত্বিক মিশন ও সাংস্কৃতিক দল বিনিময়ে সহযোগিতা বাড়ানোর অনুরোধ করেন।
আগামী বছর প্যারিসে বাংলাদেশি সংস্কৃতি ও শিল্পকলা নিয়ে দুই সপ্তাহব্যাপী একটি উৎসবের আয়োজন করবে ফ্রান্স।
বৃহস্পতিবার(২৫ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে অভিনন্দন জানান রাষ্ট্রদূত মাসদুপুই।
১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে ফ্রান্সের স্বীকৃতির কথা স্মরণ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে প্রথম স্বীকৃতি দেওয়া কয়েকটি দেশের মধ্যে ফ্রান্স অন্যতম। এসময় দু'দেশের মধ্যকার সম্পর্ককে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব হিসেবে আখ্যায়িত করেন হাছান মাহমুদ।
আরও পড়ুন: কসমস অ্যাতেলিয়ার ৭১ পরিদর্শন করলেন ফরাসি রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপুই
তিনি ২০২১ সালের নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফ্রান্স সফর এবং ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানেল ম্যাক্রোঁর বাংলাদেশ সফরের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এটি আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে কৌশলগত সম্পর্কের দিকে রূপান্তরিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনর্নির্বাচিত হওয়ায় ফরাসি প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে তাকে অভিনন্দন পত্র দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের জলবায়ু সংকট মোকাবিলা, দারিদ্র্য বিমোচন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে আগামী তিন বছরে ১ বিলিয়ন ইউরোর আর্থিক প্রতিশ্রুতিসহ উন্নয়ন সহযোগিতার জন্য ফরাসি সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উত্থাপিত গভীর উদ্বেগের জবাবে ফরাসি রাষ্ট্রদূত তার সরকারের অব্যাহত মানবিক ও রাজনৈতিক সমর্থনের আশ্বাস দেন।
উভয় পক্ষই গাজার যুদ্ধের বিষয়ে মতামত তুলে ধরেন এবং সঙ্কটের দ্রুত অবসানের প্রত্যাশা করেছেন।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে তরুণরা দৃঢ়ভাবে কাজ করছে: রাষ্ট্রদূত মাসদুপুই
৯ মাস আগে
প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে সম্পর্ককে 'কৌশলগত' পর্যায়ে নিতে চায় ঢাকা-প্যারিস
শান্তি, সমৃদ্ধি ও জনগণের জন্য অংশীদারিত্বকে ‘কৌশলগত’ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।
সরকারের অসাংবিধানিক পরিবর্তন এবং যেকোনো দেশে বেআইনি সামরিক দখলের নিন্দা জানায় উভয় দেশ। একই সঙ্গে সংঘাত, সহিংসতা ও নৃশংস অপরাধের কারণে বাস্তুচ্যুতদের জন্য জরুরি এবং নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সহায়তার আহ্বান জানান দুই দেশের নেতা।
কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন, শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য অংশীদারিত্বের কথা তুলে ধরে, আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের প্রতি তাদের অটল প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স। বিশেষ করে সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানের নীতি ও বহুপাক্ষিকতাবাদে অবিচল বিশ্বাসের উপর তারা জোর দিয়েছেন।
সেক্ষেত্রে ফ্রান্স ও বাংলাদেশ সব জাতির আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।
২০২১ সালের নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফ্রান্স সফরের সময় দুই দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা ও সহযোগিতার বিষয়ে স্বাক্ষরিত লেটার অব ইনটেন্টের কথা স্মরণ করে দুই দেশ।
আরও পড়ুন: ঢাকা-প্যারিস দুটি সমঝোতা স্মারক সই
জলবায়ু জরুরি অবস্থা
বাংলাদেশ ও ফ্রান্স জলবায়ু জরুরি পরিস্থিতিতে দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার শক্তিতে বিশ্বাসী।
উভয় দেশই চারটি মূল নীতি অনুসরণ করে বৈশ্বিক অর্থায়ন কাঠামোর আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসনপদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে: কোনো দেশকে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই এবং গ্রহ রক্ষণবেক্ষণের মধ্যে যেকোনো একটি বেছে নিতে হবে না- তা নিশ্চিত করা; স্থানান্তর কৌশলগুলোর দেশের মালিকানা নিশ্চিত করা; দুর্বল অর্থনীতিগুলোকে সমর্থন করার জন্য বর্ধিত এবং অনুমানযোগ্য সংস্থানগুলোর সঙ্গে একটি আর্থিক উদ্দীপনা সরবরাহ করা এবং গ্রিনহাউজ গ্যাস শূন্যের কাছে নামিয়ে আনার পাশাপাশি প্রকৃতিবান্ধব বিশ্ব অর্জনের জন্য অতিরিক্ত বেসরকারি মূলধন সংগ্রহ করা।
বাংলাদেশ ও ফ্রান্স মনে করে, উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য জলবায়ু অর্থায়নে প্রবেশাধিকার সহজতর করতে বৈশ্বিক প্রচেষ্টা আরও ত্বরান্বিত করা উচিত।
যেসব দেশ চরম বিপর্যয় মোকাবিলা করে এবং ক্ষয়ক্ষতি তহবিলে সাড়া দেয় সেসব দেশকে জলবায়ু-সহনশীল ঋণ ধারাগুলোর আরও বাস্তবায়নের মাধ্যমে সহায়তা অব্যাহত রাখবে ফ্রান্স। এর মধ্যে রয়েছে জলবায়ু ঝুঁকির বিরুদ্ধে ভি২০-জি-৭ গ্লোবাল শিল্ড, যার মধ্যে বাংলাদেশ একটি অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত দেশ।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের ঝুঁকিতে থাকা উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় সহায়তা করতে একটি তহবিলসহ নতুন অর্থায়ন ব্যবস্থা বাস্তবায়নে সহায়তা করে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স।
ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করতে তাদের ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেছে ফ্রান্স।
এ বছর দুবাইয়ে একটি ফলাফলভিত্তিক কপ-২৮ আয়োজনে যোগ দিতেও সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স।
নবায়নযোগ্য ও পরিচ্ছন্ন জ্বালানি খাতে বিনিয়োগসহ জলবায়ু সহনশীল বিশ্বে জরুরি রূপান্তরের লক্ষ্যে কপ-২৮-এ একটি পথ প্রণয়নের প্রত্যাশা করে দুই দেশ।
তারা জীবাশ্ম জ্বালানি ছাড়াই বৈশ্বিক শক্তি রূপান্তরকে ত্বরান্বিত করার প্রয়োজনীয়তা পুনর্ব্যক্ত করেন। একই সঙ্গে বিশ্বজুড়ে নাবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদন এবং জ্বালানি দক্ষতার জন্য উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ ও পূরণের প্রয়োজনীয়তার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জন এবং জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা থেকে সরে আসার লক্ষ্য পুনর্ব্যক্ত করেছে ফ্রান্স। অন্যদিকে বাংলাদেশ সাশ্রয়ী মূল্যের অর্থ ও প্রযুক্তির মাধ্যমে তার জ্বালানি রূপান্তর প্রচেষ্টাকে সমর্থন করার জন্য একটি টেকসই সহযোগিতামূলক পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তন ও সরবরাহ শৃঙ্খল বিঘ্ন বিশ্বব্যাপী খাদ্য সার্বভৌমত্ব, খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টির উপর বিপর্যয়কর প্রভাব ফেলছে বলে একমত প্রকাশ করেছে দুই দেশ।
এ ছাড়া নিয়মিত সংলাপের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তার সমর্থনে টেকসই ও স্থিতিশীল খাদ্য ও কৃষি ব্যবস্থায় সহযোগিতা জোরদারে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স।
এ প্রসঙ্গে ফ্রান্সের নেতৃত্বে ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার রেজিলিয়েন্স মিশনে (ফার্ম) বাংলাদেশের যোগদানের প্রশংসা করেছে ফ্রান্স।
পানি শোধন থেকে শুরু করে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি, নগর উন্নয়ন থেকে শুরু করে অন্তর্ভুক্তিমূলক স্বাস্থ্যসেবাসহ জলবায়ুভিত্তিক প্রকল্প এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে ফ্রান্সের উন্নয়ন সহযোগিতা সহায়তার ভূয়সী প্রশংসা করেছে বাংলাদেশ।
এ ছাড়া বন ও জলাভূমি দ্বারা প্রদত্ত গুরুত্বপূর্ণ বাস্তুসংস্থান সেবার গুরুত্বের উপর জোর দেয় দুই দেশ। সেই সঙ্গে জীববৈচিত্র্য ও কার্বন উভয়ের গুরুত্বপূর্ণ মজুদ বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ম্যানগ্রোভ সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণে তাদের সহযোগিতা গভীর করার অঙ্গীকার করে দুই দেশের সরকার। এ ছাড়া ফ্রান্স দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ম্যানগ্রোভ বন ও এর জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে বাংলাদেশের অব্যাহত প্রচেষ্টার প্রশংসা করে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ আইসিটি ও ডিজিটাল প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছে ফ্রান্স। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাবিষয়ক গ্লোবাল পার্টনারশিপের মতো উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করার আমন্ত্রণও জানায় ফ্রান্স।
তারা আন্তর্জাতিক আইন দ্বারা পরিচালিত একটি বৈশ্বিক, উন্মুক্ত ও সুরক্ষিত সাইবার স্পেসের জন্য সাইবার নিরাপত্তা ইস্যুগুলোর বর্ধিত পরিচালনার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
সাইবার নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলায় বাংলাদেশকে কারিগরি সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে ফ্রান্স। একইসঙ্গে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে গ্লোবাল ডিজিটাল কম্প্যাক্টেও একসঙ্গে কাজ করবে দুই দেশ।
সুশীল সমাজসহ জনকেন্দ্রিক যোগাযোগের জন্য অংশীদারিত্বের কথা তুলে ধরে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স সংস্কৃতিকে একটি শক্তিশালী, জনকেন্দ্রিক সংযোগের জন্য একটি প্রধান সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করে।
এ ছাড়া প্রত্নতাত্ত্বিক ক্ষেত্রে, বিশেষত অনন্য মহাস্থানগড় প্রত্নতাত্ত্বিক মিশনের মাধ্যমে তাদের দীর্ঘদিনের সহযোগিতার প্রশংসা করেন এবং অন্যান্য সম্ভাব্য খনন ও পুনরুদ্ধার মিশন নিয়ে আলোচনা করতে সম্মত হন তারা।
উভয় দেশ তাদের সাংস্কৃতিক সহযোগিতা আরও উন্নয়নে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং এ ক্ষেত্রে ঢাকা ও চট্টগ্রামে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের প্রধান ভূমিকার কথা উল্লেখ করে।
উভয় দেশ বহুভাষিকতার গুরুত্ব স্বীকার করে বাংলাদেশে ফরাসি ভাষা এবং ফ্রান্সে বাংলা ভাষা শেখার প্রসারে প্রতিশ্রুতি দেয়।
পাশাপাশি বাংলাদেশের তরুণ কূটনীতিকদের জন্য ফ্রান্সে কূটনৈতিক ও ফরাসি ভাষার প্রশিক্ষণ দিতে সম্মত হয়েছে ফ্রান্স।
শান্তির সংস্কৃতির উন্নয়নসহ ইউনেস্কোর মধ্যে তাদের পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স।
পারস্পরিক বৈজ্ঞানিক, প্রযুক্তিগত ও গবেষণা সহযোগিতা জোরদার করতে চায় দুই দেশ। এই গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে গবেষণা সহযোগিতা জোরদার করার উপায় হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ওশান গভর্নেন্সে একজন ফরাসি সমুদ্রবিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ নিয়োগকে স্বাগত জানিয়েছে দেশটি।
স্থাপত্য, প্রকৌশল, চিকিৎসাবিজ্ঞান, সমুদ্রবিজ্ঞান, সিসমোলজি, ক্লাইমেট অ্যাকশন, টেকসই পর্যটন ও উন্নয়ন অধ্যয়নের মতো অগ্রাধিকারমূলক বিষয়গুলোতে মনোনিবেশ করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষা ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে মানবসম্পদ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উভয় দেশ আরও বেশি শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও শিক্ষাবিদ নিয়োগদানকে উৎসাহিত করার ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেছে।
বাংলাদেশ ও ফ্রান্স তাদের অংশীদারিত্বের কৌশলগত মাত্রাকে আরও গভীর করতে নিয়মিত উচ্চ পর্যায়ের সংলাপ শুরু করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ১০-১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে দ্বিপাক্ষিক সফর করেন।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সোমবার ঢাকায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে শক্তিশালী করার জন্য সাক্ষাৎ করেছেন। বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা, স্থিতিস্থাপকতার সমর্থনে কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনের জন্য একটি বিশ্বস্ত এবং অর্থপূর্ণ অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার জন্য তাদের অভিন্ন প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
আরও পড়ুন: প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে ঢাকা-প্যারিস সম্মতিপত্র স্বাক্ষর
১ বছর আগে
ফ্রান্স বাংলাদেশকে বিমান চলাচল ও সমুদ্র নিরাপত্তায় সহযোগিতা করতে আগ্রহী: ফরাসি দূত
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, টেকসই উন্নয়নের অভিন্ন লক্ষ্যে পরিচালিত বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে সম্পর্ক কৌশলগত ও বস্তুনিষ্ঠ মাত্রার দিকে আরও প্রসারিত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ফ্রান্স সবসময়ই বাংলাদেশের একটি বিশ্বস্ত অংশীদার, এবং এই অংশীদারিত্ব আমাদের টেকসই উন্নয়নের অভিন্ন লক্ষ্য দ্বারা পরিচালিত একটি কৌশলগত ও উদ্দেশ্যমূলক মাত্রার দিকে আরও প্রসারিত হয়েছে।’
সোমবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে নবনিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপুয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ কথা বলেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, টেকসই উন্নয়নের অভিন্ন লক্ষ্য দ্বারা পরিচালিত বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে সম্পর্ক কৌশলগত ও বস্তুনিষ্ঠ মাত্রার দিকে আরও প্রসারিত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ফ্রান্স সবসময়ই বাংলাদেশের একটি বিশ্বস্ত অংশীদার, এবং এই অংশীদারিত্ব আমাদের টেকসই উন্নয়নের অভিন্ন লক্ষ্য দ্বারা পরিচালিত একটি কৌশলগত ও উদ্দেশ্যমূলক মাত্রার দিকে আরও প্রসারিত হয়েছে,’ তিনি বলেন।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে নবনিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপুয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ কথা বলেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিষ্ঠিত পথে গত পাঁচ দশকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতাসহ ক্রমবর্ধমান সম্পর্কের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন।
কক্সবাজার বিমানবন্দরের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ফরাসী রাষ্ট্রদূতকে বলেন, সরকার এটিকে এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে রিফিলিং এবং সংযুক্ত করার জন্য একটি আন্তর্জাতিক হাব হিসেবে রূপান্তরিত করছে।
রোহিঙ্গা সঙ্কটের কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকরা দেশের জন্য বোঝা হয়ে পড়ায় তাদের স্বদেশে ফিরে যেতে হবে।
বাংলাদেশে নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত বলেন, ফ্রান্স পারস্পরিক সুবিধার জন্য বিশেষ করে বিমান চলাচল, মহাকাশ ও সমুদ্র নিরাপত্তা খাতে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী।
এ প্রসঙ্গে মাসদুপুয় বলেন, তার দেশ বাংলাদেশের জন্য দ্বিতীয় স্যাটেলাইট নির্মাণে আগ্রহী।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, ফ্রান্স অভিযোজনসহ এ বিষয়ে কাজ করছে এবং তাদের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের সঙ্গে শেয়ার করতে পারে।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সালের নভেম্বরে তার ফ্রান্স সফর এবং প্যারিসে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে তার ফলপ্রসূ আলোচনার কথা স্মরণ করেন।
শেখ হাসিনা প্যারিসে ২২-২৩ জুন অনুষ্ঠেয় জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য ফরাসি প্রেসিডেন্টকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্যও ধন্যবাদ জানান।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: টেকসই উন্নয়নের জন্য দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিন: রাষ্ট্রপতি
টেকসই উন্নয়নে সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহ্বান এলজিআরডি মন্ত্রীর
১ বছর আগে
বাংলাদেশের সঙ্গে ‘কৌশলগত’ অংশীদারিত্ব চায় জাপান
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেছেন, ক্রমবর্ধমান সম্পর্কের সঙ্গে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার মতো আরও কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে একটি ‘কৌশলগত’ পর্যায়ে উন্নীত করতে চায় জাপান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন জাপান সফরের সময় এই বিষয়ে সম্ভাব্য আলোচনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের ব্যাপক অংশীদারিত্ব রয়েছে। আমরা এটিকে বৃদ্ধি করতে চাই। আশা করি আমরা আমাদের অংশীদারিত্বকে একটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব বলতে আমরা একমত হতেই পারি।’
সোমবার ঢাকার একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘মিট দ্য অ্যাম্বাসেডর’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: জাপান দূতাবাসে শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন উদযাপিত
সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) ফ্রেডরিখ-এবার্ট-স্টিফটুং (এফইএস) বাংলাদেশের সহযোগিতায় এটি আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান।
রাষ্ট্রদূত নাওকি বাংলাদেশে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রপ্তানির বিষয়ে তার দেশের আগ্রহের কথা জানিয়ে তিনি বলেন যে এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আরও আলোচনা হবে।
ফ্রি অ্যান্ড ওপেন ইন্দো-প্যাসিফিক (এফওআইপি)নিয়ে জাপানের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত বলেন, এটি খুব ব্যাপক, তবে কোনও দেশের বিরুদ্ধে নয় বা কোনও দেশের পক্ষেও না।
তিনি বলেন, জাপান বাংলাদেশকে এফওআইপি এর অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করে। ‘আমরা আমাদের ব্যবহারিক সহযোগিতার প্রচার চালিয়ে যাব।’
রাষ্ট্রদূত নাওকি বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, সংযোগ, সামুদ্রিক নিরাপত্তা এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি হচ্ছে বাস্তব সহযোগিতার অংশ; যা তারা প্রচার করে।
বিনিয়োগ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বলেন যে চ্যালেঞ্জ আছে, তবে বিনিয়োগের পরিবেশের উন্নতি হবে বলে আশা করছি।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগামী ২৯শে নভেম্বর-১ ডিসেম্বর, ২০২২ জাপান সফরে যাবে। সেসময় বৃহৎ প্রকল্পে ‘বিনিয়োগ ও অর্থায়নের’ মাধ্যমে উন্নয়ন প্রচেষ্টায় জাপানের ‘শক্তিশালী সম্পৃক্ততা’ চাইবে বাংলাদেশ।
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ইউএনবিকে বলেন যে জাপান বাংলাদেশের জন্য একটি ‘উত্তম বিনিয়োগকারী’ এবং তারা অনেকগুলো বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
মোমেন বলেন, ‘মূল কথা হল জাপান অর্থায়নে সক্ষম এবং তারা সবসময় কোনো কঠিন শর্ত ছাড়াই অর্থায়ন করে। তাদেরও প্রযুক্তি আছে।’
২০১৪ সালের মে মাসে জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে টোকিওতে শেখ হাসিনার সঙ্গে একটি শীর্ষ বৈঠক করেন এবং তারা যৌথভাবে ‘বাংলাদেশ-জাপান ব্যাপক অংশীদারিত্ব’ শুরু করেন।
একই বছরের সেপ্টেম্বরে আবে ঢাকায় শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন।
১৯৭২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি জাপান বাংলাদেশকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং ২০২২ সাল বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০ তম বার্ষিকী উদযাপন করে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানকে পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফর: বিনিয়োগ ও বড় প্রকল্পে অর্থায়ন খুঁজবে বাংলাদেশ
২ বছর আগে