সবুজ কারখানা
টেকসই ফ্যাশন: ২০২৩ সালে ২৪টি নতুন এলইইডি সবুজ কারখানা নিয়ে বাংলাদেশের পোশাক খাত নেতৃত্বে
২০২৩ সালে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প টেকসই ফ্যাশনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে, যার মধ্যে ২৪টি কারখানা লিডারশিপ ইন এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন (এলইইডি) সার্টিফিকেশন অর্জন রয়েছে।
বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত গ্রিন বিল্ডিং রেটিং সিস্টেম, পরিবেশগত দায়বদ্ধতা ও জ্বালানি দক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারের উপর গুরুত্বারোপ করে এলইইডি।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল জানান, সম্প্রতি সনদপ্রাপ্ত নতুন ২৪টিসহ বর্তমানে বাংলাদেশে মোট ২০৬টি এলইইডি সনদপ্রাপ্ত সবুজ কারখানা রয়েছে। যা পোশাক খাতের মধ্যে সবুজ উদ্যোগের প্রতি দেশের নিষ্ঠার প্রমাণ।
৭৬টি সর্বোচ্চ প্ল্যাটিনাম রেটিং এবং ১১৬টি গোল্ড রেটিং নিয়ে রেকর্ড সার্টিফিকেশনের কথা জানিয়েছে বিজিএমইএ।
বৈশ্বিক পোশাক শিল্পের টেকসই অনুশীলনের উপর ক্রমবর্ধমান মনোযোগের প্রেক্ষাপটে এই অগ্রগতি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
আরও পড়ুন: বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী বাহ্যিক বিষয়গুলোর সঙ্গে বাণিজ্যকে জটিল না করার আহ্বান বিজিএমইএর
২৪টি নতুন এলইইডি সনদপ্রাপ্ত কারখানার মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ ১৬টি মর্যাদাপূর্ণ প্ল্যাটিনাম রেটিং পেয়েছে, বাকি ৮টি গোল্ড রেটিং অর্জন করেছে।
২০২৩ সালে স্ট্যান্ডআউট পারফর্মারদের মধ্যে এস এম সোর্সিং ১০৬ পয়েন্ট এবং ১০৪ পয়েন্ট অর্জন করেছে গ্রিন টেক্সটাইলস লিমিটেড ইউনিট-৪।
বিজিএমইএ'র তথ্য অনুযায়ী, ইন্টিগ্রা ড্রেসেস ও নিট এশিয়া লিমিটেড ৯৯ পয়েন্ট, লিডা টেক্সটাইল অ্যান্ড ডাইং লিমিটেড ৯৭ পয়েন্ট এবং লিজ ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড ৯৬ পয়েন্ট অর্জন করেছে।
বিশ্বব্যাপী ১০০টি এলইইডি সনদপ্রাপ্ত সবুজ কারখানার মধ্যে ৫৪টি দেশে অবস্থিত, এই অর্জন বাংলাদেশকে বৈশ্বিক টেকসই ফ্যাশন আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
বিজিএমইএ'র তথ্য অনুযায়ী, এর মধ্যে শীর্ষ ১০টির মধ্যে ৯টি এবং বিশ্বের শীর্ষ ২০টি এলইইডি সনদপ্রাপ্ত কারখানার মধ্যে ১৮টি রয়েছে।
বিজিএমইএ'র পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে বিনিয়োগ ও অংশীদারিত্বের সুযোগ বৃদ্ধিতে এটিকে সম্ভাব্য অনুঘটক হিসেবে তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: পোশাক খাতে নারী নেতৃত্বকে এগিয়ে নিতে সমন্বিত প্রচেষ্টার প্রয়োজন: আইএলও’র কান্ট্রি ডিরেক্টর
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এই সার্টিফিকেশনগুলোর ভৌগলিক বিস্তার স্থায়ীত্বের প্রতি তৈরি পোশাক শিল্পের ব্যাপক অঙ্গীকারের উপর গুরুত্বারোপ করে।
২০২৩ সালের সার্টিফিকেশনগুলোর বেশির ভাগই ছিল গাজীপুরে (১৫টি কারখানা), এরপর ঢাকায় ৪টি, চট্টগ্রামে ৩টি এবং ময়মনসিংহে ২টি। এর থেকেই বুঝা যায় এলইইডি নীতিমালা দেশব্যাপীই গ্রহণ করা হচ্ছে।
বর্তমানে ৫০০টিরও বেশি বাংলাদেশি কারখানা তাদের এলইইডি সার্টিফিকেশন পাওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে, যা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে সবুজ নীতি মেনে চলার শক্তপোক্ত ও চলমান প্রতিশ্রুতির ইঙ্গিত দেয়।
টেকসই ফ্যাশনের দিকে এই পদক্ষেপ কেবল বৈশ্বিক পরিবেশগত লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, বরং সবুজ উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে একটি অগ্রগামী নেতৃত্ব হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত করছে।
২০২৩ সালে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে এলইইডি সনদপ্রাপ্ত সবুজ কারখানার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি টেকসই ফ্যাশনের প্রতি শিল্পের অঙ্গীকারের একটি স্পষ্ট সূচক।
বাংলাদেশের পোশাক শিল্প এলইইডি রেটিং অর্জনের জন্য সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে এটি পরিবেশগত তত্ত্বাবধানেরও একটি মানদণ্ড এবং আরও টেকসই উৎপাদন অনুশীলনের বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টায় নেতৃত্বের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি মূল্যের পোশাক কিনতে কেয়ারফোরের প্রতি বিজিএমইএ সভাপতির আহ্বান
১০ মাস আগে
বিজিএমইএ’র আরও দুটি সবুজ কারখানার স্বীকৃতি ইউএসজিবিসি’র
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) অধীনে পরিচালিত দু’টি নতুন তৈরি পোশাক (আরএমজি) কারখানা ইউনাইটেড স্টেটস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি) থেকে এলইইডি সার্টিফিকেশন তথা সবুজ কারখানার (নিরাপদ কারখানার সনদ) স্বীকৃতি পেয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের বর্ণালী কালেকশনস লিমিটেড ১১০ এর মধ্যে ৬৪ পয়েন্ট এবং গাজীপুরের বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি লিমিটেড (বেক্সিমকো) ১১০ এর মধ্যে ৮৫ পয়েন্ট পেয়ে সবুজ কারখানার সনদ পায়।
শনিবার বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল এ তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: পোশাক কারখানায় দিনে ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং হচ্ছে: বিজিএমইএ সভাপতি
রুবেল বলেন, ‘দুটি নতুন কারখানা এলইইডি সার্টিফিকেশন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশে এখন মোট নিরাপদ হিসেবে স্বীকৃত সবুজ কারখানার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭৮টি। এই অর্জন আমাদের আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের কাছে আমাদের ব্র্যান্ডের ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। মোট ৫৮টির মধ্যে ১৩টি কারখানা ইতোমধ্যে এই বছর প্ল্যাটিনাম সার্টিফিকেশন অর্জন করেছে।
রুবেল আরও বলেছেন, সবুজ কারখানাগুলো বাংলাদেশ থেকে আরএমজি পণ্য কেনার ব্যাপারে ক্রেতাদের আস্থা বাড়ায়।
রুবেল বলেন, ‘চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে আমাদের অর্ডার যখন ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কমেছে, ঠিক সেসময়ে আমাদেরকে আবার নিরাপদ কারখানার জন্য স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। যা আমাদের ব্যবসাকে বাড়িয়ে তুলবে। এছাড়াও সবুজ কারখানাগুলোতে অন্যান্য সাধারণ কারখানার তুলনায় কম জ্বালানি খরচ হয়।’
রুবেল আরও বলেন, এলইইডি সার্টিফিকেশন দেশের আরএমজি উৎপাদকদের বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা করতে এবং সেরা দাম পেতে সাহায্য করবে।
আরও পড়ুন: আমরা বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না, তবে রপ্তানি বাড়াতে চাই: বিজিএমইএ সভাপতি
৩০ হাজার গার্মেন্টস শ্রমিকের সুস্থতায় বিজিএমইএ-আয়াত এডুকেশনের চুক্তি
১ বছর আগে