বিশ্ব হার্ট ফাউন্ডেশন
চিকিৎসাবিজ্ঞান গবেষণায় বিশ্ব হার্ট ফাউন্ডেশনের সহযোগিতা চান প্রধানমন্ত্রী
চিকিৎসা বিজ্ঞানের মৌলিক গবেষণা ও স্বাস্থ্যখাতে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে বিশ্ব হার্ট ফাউন্ডেশনের (ডব্লিউএইচএফ) সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘চিকিৎসা বিজ্ঞানের ওপর মৌলিক গবেষণা পরিচালনায় আমাদের সহায়তা করুন এবং আমাদের জনশক্তির বিকাশের জন্য আধুনিক প্রশিক্ষণ দিন।’
শনিবার ডব্লিউএইচএফ-এর নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডা. জগৎ নারুলা গণভবনে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য লেখক এম নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: জিয়াং জেমিনের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য মৌলিক গবেষণাকে অত্যাবশ্যক উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার স্বাস্থ্যসেবা খাতের উন্নয়নে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ওপর গবেষণার ওপর অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে।
তার সরকারের আমলে কৃষি খাতে গবেষণার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফসল, দুধ, মাংস ও মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনসহ কৃষি খাতে বাংলাদেশের সাফল্যের পেছনে মূলত গবেষণা রয়েছে।
স্বাস্থ্য খাতের জন্য সরকারের পদক্ষেপের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকারের প্রধান লক্ষ্য হল স্বাস্থ্যসেবা দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া।
তিনি বলেন, তার সরকার ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করেছে, যেখানে ৩০ ধরনের বিনামূল্যে ওষুধ পাওয়া যায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার চিকিৎসা বিজ্ঞানে উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণার জন্য প্রতিটি বিভাগে একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইতোমধ্যেই বিভাগীয় সদরে পাঁচটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে।
তিনি বলেন, হৃদরোগ, কিডনি ও ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসার জন্য তার সরকারি উদ্যোগে সরকারি ও বেসরকারি খাতে অনেক বিশেষায়িত হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি অঞ্চলে বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণের লক্ষ্য তাদের রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ওষুধ খাতে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে। কারণ বর্তমানে বাংলাদেশ জীবনরক্ষাকারী সব ওষুধ উৎপাদন করে বিদেশে রপ্তানি করছে।
ডব্লিউএইচএফ-এর নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জগৎ নারুলা হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন, এই অগ্রগতিকে ‘চিত্তাকর্ষক অগ্রগতি’ বলে বর্ণনা করেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে আ.লীগের সমাবেশ: প্রধান অতিথির বক্তব্য দিবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রচুর প্রতিভাবান চিকিৎসক রয়েছে যাদের দক্ষতা বাড়াতে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও সহায়তা প্রয়োজন।
বিখ্যাত এই কার্ডিওলজি বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘আমি আগামী জানুয়ারিতে ডব্লিউএইচএফ-এর দায়িত্ব গ্রহণ করতে যাচ্ছি এবং হৃদরোগ নিয়ে প্রথমে বাংলাদেশ, ভারত ও মঙ্গোলিয়ার সঙ্গে কাজ করার লক্ষ্য আছে আমার।’
ডা. নারুলা অসংক্রামক রোগ সম্পর্কে মায়েদের সচেতন করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। কারণ তৃণমূলে দ্রুত এর সুবিধা পৌঁছে যাবে।
সভায় জানানো হয়, বাংলাদেশে প্রায় ৫০ শতাংশ মৃত্যুর কারণ অসংক্রামক রোগ, যার মধ্যে ১৭ শতাংশ মৃত্যুর জন্য দায়ী হৃদরোগ।
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মীর জামাল উদ্দিন বৈঠকে জানান, প্রধানমন্ত্রী দরিদ্র ও অসচ্ছল হৃদরোগীদের জন্য ভাল্ব, স্টেন্ট ও পেসমেকার সংগ্রহের জন্য তার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে প্রতিষ্ঠানটিকে সাত কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন।
তিনি বলেন, এ পর্যন্ত রোগীদের হার্টে ৩০০টি ভালভ, ৪৫০টি স্টেন্ট এবং ২৫০টি পেসমেকার স্থাপন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সোসাইটি ফর কার্ডিওভাসকুলার ইন্টারভেনশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. এ কে এম ফজলুর রহমান, জাতীয় অধ্যাপক প্রফেসর ব্রি. (অব.) আবদুল মালিক, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী অধ্যাপক চৌধুরী হাফিজ আহসান, অধ্যাপক এমজি আজম ও অধ্যাপক ফজিলা-তুন-নেসা মালিক, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা ইতিহাস সৃষ্টি করবে: আ.লীগ
১০৯৯ দিন আগে