আন্তর্জাতিক ডায়াবিটিস ফেডারেশ
প্রধানমন্ত্রী সম্মানসূচক “গ্লোবাল এম্বাসেডর ফর ডায়াবিটিস”-এর উপাধিতে ভূষিত
আন্তর্জাতিক ডায়াবিটিস ফেডারেশন (আই ডি এফ) বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রথম “গ্লোবাল এম্বাসেডর ফর ডায়াবিটিস” হিসেবে ঘোষনা করেছে।
সোমবার (৫ ডিসেম্বর ২০২২) সন্ধ্যায় পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ডায়াবিটিস সম্মেলন-২০২২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে পর্তুগালে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান, আন্তর্জাতিক ডায়াবিটিস ফেডারেশনের সদ্য নির্বাচিত সভাপতি অধ্যাপক আকতার হোসেন-এর নিকট হতে সম্মাননা পত্রটি গ্রহন করেন।
অনুষ্ঠানে আইডিএফ-এর বিদায়ী প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক অ্যান্ড্রু বোল্টন; আইডিএফ-এর অন্যান্য প্রতিনিধি এবং সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী্ সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ থেকে আগত ডাক্তার, স্বাস্থ্য পেশাদার ও স্বাস্থ্য কর্মীগণ, বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ, পর্তুগালে প্রবাসী বাংলাদেশী নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিকবৃন্দ ও অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ডায়াবিটিস নিয়ে জীবনযাপনকারীদের জীবনমান উন্নয়নে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ কোন ব্যক্তিকে “গ্লোবাল এম্বাসেডর ফর ডায়াবিটিস” এর সম্মানসুচক উপাধি প্রদান করা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী দুই বছর “গ্লোবাল এম্বাসেডর ফর ডায়াবিটিস” হিসাবে বিশ্বব্যাপী ডায়াবিটিস নিয়ে জীবনযাপনকারী মানুষের মুখপাত্র হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে বিএনপির র্যালি ‘মিডিয়া কার্ডে’ খালেদা-তারেকের ছবি ব্যবহারে সাংবাদিকদের সমালোচনা
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সম্মাননা গ্রহণকালে রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান, তাঁর বক্তব্যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জনকেন্দ্রিক উন্নয়েনর একজন প্রবক্তা হিসাবে উল্লেখ করেন।
তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশেষতঃ স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও নারীর ক্ষমতায়নে অগ্রাধিকার দিয়ে মানবোন্নয়নের মাধ্যমে অভূতপূর্ব উন্নয়ন অর্জন করে উন্নয়নশীল বিশ্বের জন্য একটি রোল মডেলে পরিণত হয়েছে বলেও রাষ্ট্রদূত মত প্রকাশ করেন।
তিনি আরও বলেন, মানব উন্নয়ন নিশ্চিতকল্পে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবরই স্বাস্থ্যখাতে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন।
এ প্রসংঙ্গে তিনি তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা পৌছে দেবার লক্ষ্যে তাঁর উদ্ভাবিত কমিউনিটি ক্লিনিক সারা দেশে প্রতিষ্ঠা, কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় বিচক্ষন নেতৃত্বদান এবং স্বাস্থ্যখাতে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তাঁর MDG Award, South-South Award, Vaccine Hero Award সহ অনান্য আন্তর্জাতিক পুরষ্কার ও সম্মাননা প্রাপ্তির কথা উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত এক ভিডিও বার্তায়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক ডায়াবিটিস ফেডারেশনকে এ সম্মাননার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং সশরীরে উপস্থিত হতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে শিশুসহ প্রায় ৮৫ লাখ আর সমগ্র পৃথিবীতে প্রায় ৪২ কোটি মানুষ ডায়াবিটিস এবং এ সম্পর্কিত অনান্য জটিলতা নিয়ে বসবাস করছেন।
খাদ্যাভাস পরিবর্তন এবং জনসচেতনতার উপর গুরুত্বারোপ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনবান্ধব স্বাস্থ্যনীতির বাস্তবায়ন এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ ডায়াবিটিস প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রনে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। বাংলাদেশ সকল ডায়েবেটিস রোগীদের বিনামূল্যে সাস্থ্যসেবা দিচ্ছে এবং বিনামূল্যে ইনসুলিন সরবরাহ কার্যক্রমও শুরু করেছে।
দেশব্যাপী ১৮০০ এর বেশি সুসজ্জিত কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেন্টারে প্রশিক্ষিত চিকিৎসাকর্মীরা ডায়াবিটিস রোগীদের সেবা প্রদান করে চলেছে।
ডায়াবিটিস এর মতো নানা অসংক্রামক রোগকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-২০৩০ অর্জনের পথে বড় চ্যালেঞ্জ হিসাবে চিহ্নিত করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ডায়াবিটিস প্রতিরোধ, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা এবং এ সংক্রান্ত গবেষণায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
এ সময় তিনি ডায়াবিটিস এর গ্লোবাল এম্বাসেডর হিসাবে বিশ্ব নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
এছাড়াও বিশ্ব শান্তির প্রতি তার অব্যাহত সমর্থন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ডায়াবিটিস নিয়ে জীবনযাপনকারী বিশ্বের সকল মানুষ এবং তাদের শুভানুধ্যায়ীদের পক্ষ থেকে আমি বিশ্বনেতাদের কাছে এখনই ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের সবাইকে অবশ্যই অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে হবে এবং যুদ্ধের বদলে আমাদের নাগরিকদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সে সম্পদ ব্যবহার করতে হবে।
আরও পড়ুন: চলন্ত বাসে যাত্রী উঠানামা বন্ধ ও মানসম্পন্ন সাংবাদিকতা করতে হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
২ বছর আগে