আওয়ামী লীগ
ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে আওয়ামী লীগ অঙ্গীকারবদ্ধ: প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগ সরকার ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব নাগরিকের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নিবেদিত প্রাণ বলে পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, 'আমরা আমাদের দেশকে গড়ে তুলতে চাই, এখানে ধর্ম বা জাতপাতের কিছু নেই। আমরা জনগণের জন্য কাজ করি, সব মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করি।’
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে ধর্মীয় নেতা এবং বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কুশল বিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
গৌতম বুদ্ধের জন্ম, সিদ্ধিলাভ ও মহানির্বাণ লাভ—এই তিন স্মৃতিবিজড়িত বৈশাখী পূর্ণিমা বিশ্বের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কাছে বুদ্ধপূর্ণিমা নামে পরিচিত।
আরও পড়ুন: 'সুন্দর জীবনের' জন্য উন্নত ঢাকা গড়ার অঙ্গীকার প্রধানমন্ত্রীর
এ সময় অগ্রগতি ও ঐক্যের প্রতি তার সরকারের অঙ্গীকারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। বাংলাদেশে সব সময় বিভিন্ন ধর্মের মানুষ মিলেমিশে বসবাস করে আসছে। আমি বিশ্বাস করি, সৌহার্দ্যপূর্ণ চেতনা নিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়নে আমরা বিশ্বের সামনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘অনেকে আবার বাংলাদেশকে ভিন্ন পথে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু নিতে পারছে না। আমাদের মানসিকতা, বাংলাদেশের মানুষ অনেক উদার। আমরা সবাই একসঙ্গে এগিয়ে যেতে পছন্দ করি। এভাবেই আমরা এগোচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, গৌতম বুদ্ধের ভাষায় ‘প্রত্যেক ধর্মের মূল নীতি হলো মানবকল্যাণ।’
পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের অন্যান্য অঞ্চলে বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নেও সরকার কাজ করছে বলে জানালেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি পৃথক তহবিল রয়েছে যেখান থেকে অন্যান্য ধর্মীয় ব্যক্তিদের কেবল ধর্মীয় কর্মকাণ্ডই নয়, অন্যান্য সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও উন্নয়নের জন্যও বিশেষ সহায়তা দেওয়া হয়।
দেশে মুসলমান ছাড়াও বিভিন্ন ধর্মের উপাসনালয় স্থাপনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আসলে জীবিকার জন্য আমাদের প্রায়োগিক শিক্ষা প্রয়োজন। সবাই শুরু থেকেই ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। ধর্মীয় উপাসনার স্থানে বসে তারা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানও অনুশীলন করতে পারে এবং ব্যবহারিক প্রয়োজনীয়তাগুলো শিখতে পারে। তার জন্য আমরা এই পদক্ষেপ নিয়েছি।’
নেপালের লুম্বিনী ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্টের সঙ্গে সরকারের চুক্তি রয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘তারা সেখানে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একটি বুদ্ধ মন্দির নির্মাণ করবে কারণ আমরা গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থানে বাংলাদেশের একটি প্রতীক রাখতে চাই।’
ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলোর মধ্যে একটি লুম্বিনিতে। বুদ্ধের জন্মস্থান শান্তির আবাস এবং বিশ্বজুড়ে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এবং শান্তিপ্রেমীদের জন্য একটি চূড়ান্ত তীর্থস্থান।
বুদ্ধ ৬২৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এখানে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং শান্তি ও করুণার সার্বজনীন বার্তা প্রচার করেছিলেন। এটি বৌদ্ধ ধর্মে বিশ্বাসী ব্যক্তিদের জন্য অন্যতম পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচিত হয়।
অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন- ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, ধর্ম সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, একুশে পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. জিনবোধি ভিক্ষু, বেদান্ত শিলভদ্র ভিক্ষু এবং বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান সুপ্ত ভূষণ বড়ুয়া বক্তৃতা করেন।
আরও পড়ুন: ডিএসসিসির ৪ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগের দুঃশাসনে জনগণ বিরক্ত: ফখরুল
আওয়ামী লীগ সরকারের ‘নিষ্ঠুর আচরণ ও নিষ্ঠুর দুঃশাসনে’ দেশের মানুষ বিরক্ত হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
রাজধানীর বনানী থানায় দায়ের করা ৪টি ‘মিথ্যা মামলায়’ ঢাকা উত্তর মহানগর বিএনপি নেতা রেজাউল রহমান ফাহিমকে কারাগারে পাঠানোর বিষয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে এ বিবৃতি দেন তিনি।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, জনসমর্থনের অভাবে ৭ জানুয়ারির প্রহসনমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আরও বেপরোয়া ও স্বৈরাচারী হয়ে উঠেছে।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘স্বৈরাচারী শাসনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য বিএনপি, এর সহযোগী সংগঠন এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলোর নেতা-কর্মীদের ওপর চরমভাবে দমন-পীড়ন শুরু হয়েছে।’
ফখরুল বলেন, ‘অবৈধ দখলদার’ আওয়ামী লীগ সরকারের মূল লক্ষ্য এখন বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো এবং আদালতকে ব্যবহার করে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া।
রেজাউল রহমান ফাহিমকে চারটি ‘মিথ্যা’ মামলায় জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো সরকারের সেই লক্ষ্যের অংশ বলে দাবি করেন তিনি।
ফখরুল বলেন, ‘সারাদেশে আদালতের মাধ্যমে জামিন নামঞ্জুর করে বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলের সদস্যদের কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় আমি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।’
বিএনপি নেতা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘জনগণ সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। আওয়ামী ডামি সরকারের দীর্ঘদিন ধরে জনগণ ও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর অত্যাচার করে অবৈধ ক্ষমতা ভোগ করার স্বপ্ন কোনোদিন পূরণ হবে না।’
ফাহিমের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব ‘মিথ্যা’ মামলা প্রত্যাহার করে অবিলম্বে তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন মির্জা ফখরুল।
বর্তমানে আওয়ামী লীগ সবচেয়ে শক্তিশালী দল: স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এখন দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী, বৃহত্তম ও সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য রাজনৈতিক দল।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের সবচেয়ে শক্তিশালী ও বৃহৎ সংগঠন। এটাই বাস্তবতা। জনগণের কাছে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য দল আওয়ামী লীগ।’
ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে দলীয় নেতাকর্মীরা গণভবনে শুভেচ্ছা জানাতে এলে এ কথা বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফেরার আগে তার অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই সময় আওয়ামী লীগের মতো একটি বড় দলের নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা তার ছিল না। আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দেওয়া নিঃসন্দেহে তার জন্য বড় দায়িত্ব ছিল।
আরও পড়ুন: দেশের মাটি ও মানুষের কথা বিবেচনা করে পরিকল্পনা করুন: অর্থনীতিবিদদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী
দল অনেক ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রতিবারই ষড়যন্ত্র হয় এবং আমরা তা অতিক্রম করি। এটা আমাদের ধরে রাখতে হবে।’
ছয় বছরের বাধ্যতামূলক নির্বাসন শেষে দেশে ফেরার দিনের কথা স্মরণ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, সেদিন ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ তাকে স্বাগত জানিয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, ১৯৮১ সালে তিনি যখন দেশে ফিরে আসেন, তখন দেশ পরিচালনা করছিল যুদ্ধাপরাধী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যের হত্যাকারীরা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশবাসী ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর তার আস্থা ছিল। সেকারণেই তাকে হত্যা করা হতে পারে জেনেও দেশে ফিরে এসেছেন।
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছেন, সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি। বরং জনগণের অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। তাই সে আকাঙ্ক্ষা পূরণের প্রত্যয় নিয়ে দেশে ফিরেছিলাম।’
বঙ্গবন্ধু যে ইচ্ছা ও চেতনা নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন, তার সরকার এখন কিছুটা হলেও বাস্তবায়ন করতে পেরেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: জনসংখ্যাকে দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তরে নীতিমালা যুগোপযোগী করবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, 'আমার সব শক্তি ও সাহস আমি পেয়েছি আমার বাবা-মায়ের কাছ থেকে।’
কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় আওয়ামী লীগের ভূমিকা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সুসংগঠিত রাজনৈতিক দল এবং এর সহযোগী সংগঠন থাকায় আমরা কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছি।’
তিনি বলেন, করোনাকালে আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কোনো রাজনৈতিক দল জনগণের পাশে দাঁড়ায়নি এবং আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মী এ কাজে জীবন উৎসর্গ করেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, 'আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো সংগঠন বাংলাদেশের মানুষের জন্য এত ত্যাগ স্বীকার করেনি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার দেশকে বদলে দিতে সক্ষম হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘তবে ভবিষ্যতে আমাদের আরও এগিয়ে যেতে হবে।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রীর ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে সকালে গণভবনে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা।
এ সময় আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীরাও ছিলেন।
আরও পড়ুন: মেয়েদের কেবল ভুক্তভোগী নয়, পরিবর্তনের চালিকা শক্তি হিসেবে বিবেচনা করুন: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপির সমাবেশ মানেই অগ্নিসংযোগ-ধ্বংসযজ্ঞ-রক্তপাত: ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির সমাবেশ মানেই অগ্নিসংযোগ, ধ্বংসযজ্ঞ ও রক্তপাত।
তিনি আরও বলেন, ‘এজন্য জনগণের জানমাল রক্ষায় আমাদের সক্রিয় থাকতে হবে এবং মাঠে থাকতে হবে।’
শুক্রবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক যৌথসভায় এ কথা বলেন তিনি।
নির্বাচন বানচালে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি আবারও আন্দোলনের নামে দেশে বিশৃঙ্খলা ও ত্রাস সৃষ্টির চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
আরও পড়ুন: বিএনপিকে নির্বাচন ভীতি পেয়ে বসেছে: হাছান মাহমুদ
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ কোনো পাল্টা কর্মসূচি দেয় না বরং জনগণের নিরাপত্তার জন্য দলের নেতা-কর্মীদের মাঠে থাকতে হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে যারা রাজনীতি করতে পারে তারা দেশের বিরুদ্ধে অনেক কিছুই করতে পারে।
তাই এ বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বিএনপিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিৎ: কাদের
উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'এবারে যে ভোট পড়ছে খুব ভালো ভোট পড়েছে বলব না, মোটামুটি পড়েছে। বিএনপির অনেক নেতা দলের ভোট বর্জনকে প্রত্যাখ্যান করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। পার্টিতে কেউ কারো কথা শোনে না। বিএনপি প্রকৃতপক্ষে ভুল আর ব্যর্থতার চোরাবালিতে আটকে গেছে। ইতিবাচক রাজনীতিতে না ফেরা পর্যন্ত তারা কিছুই অর্জন করতে পারবে না।’
বিএনপির শাসনামলে কোনো নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে কি-না তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপ শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং সেখানে কোনো সংঘাতের খবর পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও বলেন, এই শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের কৃতিত্ব নির্বাচন কমিশন ও সরকারকে দিতে হবে।
'দেশের জনগণকে নয়, প্রতিবেশী দেশকে খুশি করেই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকে' বিএনপি নেতা গয়েশ্বরের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'ভারত আমাদের প্রতিবেশী দেশ ও পরীক্ষিত বন্ধু। তারা আমাদের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেনি। আওয়ামী লীগ জনগণের শক্তি নিয়েই ক্ষমতায় টিকে আছে, ভারতকে তুষ্ট করে নয়, ভারতের দয়ায় নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘৭৫-এর পর অনেক বছর আমরা ক্ষমতায় ছিলাম না, তখন ভারত কোথায় ছিল? ভারত কি আমাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে?’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা জনগণের ম্যান্ডেটে ক্ষমতায় আছি, ভারতকে খুশি করে নয়।’
সভায় আরও ছিলেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ ও ডা. দীপু মনি।
আরও পড়ুন: উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু পরিবেশে হবে: কাদের
উন্নয়নের নামে জনগণের টাকা লুটপাট করেছে আ. লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলো: রিজভী
আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলো কুইক রেন্টাল, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল ও ফ্লাইওভারের মতো উন্নয়নের নামে জনগণের অর্থ আত্মসাৎ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, শুধু আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগই নয়, যারা নির্লজ্জভাবে আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়েছে, বিরোধী দল দমনে সহযোগিতা করেছে তারাও এই লুটপাটের অংশ।
রবিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) আয়োজিত ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বিরোধী দলকে ঘায়েল করতে সিএসএ-কে অস্ত্র বানিয়েছে আ. লীগ: রিজভী
বিএনপির আন্দোলনের সময় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, তিনি (বেনজীর) বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আজ জাতি জানতে পেরেছে যে তিনি (বেনজির) একটি আশ্রয়স্থল তৈরি করেছেন যা আলিফ লায়লার গল্পকে হার মানায়।’
কীভাবে তিনি এত বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করলেন জানতে চেয়ে প্রশ্ন তোলেন রিজভী।
আরও পড়ুন: সরকার জনগণের কাছে সিন্ডিকেট ও লুটেরা হিসেবে পরিচিত: রিজভী
দ্রব্যমূল্যের আকাশছোঁয়া দামের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, চাল, ডাল, তেল, লবণ, মাছ ও মাংস কেনা সাধারণ মানুষের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে। লেবুর দাম তাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় রোজা ভাঙার জন্য পানীয়ের ব্যবস্থা করাও সম্ভব নয়।
রিজভী বলেন, প্রতি কেজি খেজুর ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে যা একজন দিনমজুর বা রিকশাচালকের পক্ষে কেনা একেবারেই অসম্ভব।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে 'ইন্ডিয়া আউট' প্রচারণা চালাচ্ছে জনগণ: রিজভী
আওয়ামী লীগ মনে করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা শুধু রাজনৈতিক দল দিয়ে অর্জিত হয়েছে: বিএনপি নেতা হাফিজ
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ ছিল গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। কিন্তু আজ গণতন্ত্র নেই। নেই কোনো মৌলিক অধিকার, বাকস্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা। বাংলাদেশকে পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে।
আসন্ন স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে বৃহস্পতিবার বিএনপির গঠিত কমিটির বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
মেজর (অব.) হাফিজ বলেন, যুদ্ধের ময়দানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কোনো কৃতিত্ব দিতে চায় না। রাজনৈতিক দলের অবদান ছিল; নির্বাচনে জয়ী হওয়ায় তাদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা রাখার অধিকার ছিল। কিন্তু পাকিস্তানি সামরিক শাসকরা গণতান্ত্রিক রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিল না।
আরও পড়ুন: মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করছে আওয়ামী লীগ: মেজর হাফিজ
বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ মনে করে, একমাত্র রাজনৈতিক দলই বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন করেছে। ছাত্র, যুবক, শ্রমিক, কৃষক ও সৈনিকসহ সর্বোচ্চ ত্যাগী সৈনিকসহ জনসাধারণের অবদানকে অস্বীকার করে তারা।
তিনি আরও বলেন, সে সময় দেশের সাত কোটি মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা মুক্তিযুদ্ধকে 'রাজনৈতিক দলের যুদ্ধ' হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে।
জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা চারদিক থেকে মানুষকে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে উদ্বুদ্ধ করেছিল, কিন্তু আজ আওয়ামী লীগ তাকে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) এজেন্ট হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করে।
আরও পড়ুন: কিংস পার্টি বিএনএম গঠনে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার মেজর হাফিজের
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করছে। তিনি বলেন, যুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ৮০ থেকে ১ লাখ, কিন্তু আজ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার সঙ্গে প্রায় আড়াই লাখ লোক ভাতা পাচ্ছেন।
পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি পুরোপুরি বন্ধ হবে না: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে পরিবহনে চাঁদাবাজি চলছে।
এটি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
শুক্রবার সকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, বাজারে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে।
আরও পড়ুন: ইহসানুল করিমের মৃত্যুতে ওবায়দুল কাদেরের শোক
তিনি বলেন, ‘আমরা কাজ করছি এবং ফলাফল একদিন আসবে।’
বিএনপি সম্পর্কে তিনি বলেন, বিএনপি অল্প সময়ের মধ্যে সরকার পরিবর্তনের দিবাস্বপ্ন দেখছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নির্বাচন ছাড়া সরকার পরিবর্তনের বিকল্প নেই। সুতরাং তারা (বিএনপি) যদি সরকার পরিবর্তন করতে চায় তবে তাদের আরেকটি নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বিএনপির আন্দোলনে জনগণের কোনো আগ্রহ নেই। শেখ হাসিনার ওপর মানুষ খুশি। শেখ হাসিনার নেতৃত্ব বিশ্বস্ত এবং এদেশের মানুষ তার সততা, পরিশ্রম ও নেতৃত্ব গ্রহণ করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের নেত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই।’
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাজা বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে কি না- এ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি মনে করি না এটি দুই দেশের সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে।
এ সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আফজাল হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খানসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সিন্ডিকেট ও মজুদদারির সঙ্গে বিএনপির যোগসাজশ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে সরকার: কাদের
রমজানে আন্দোলন অব্যাহত রাখলে বিএনপি আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে: কাদের
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করছে আওয়ামী লীগ: মেজর হাফিজ
দেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দায়ী বলে অভিযোগ করেছেন সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) আসন্ন স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে বিএনপির এক সভায় এ অভিযোগে করেন তিনি।
মেজর হাফিজ বলেন, একাত্তরে অর্জিত স্বাধীনতা বাঙালি জাতির জন্য গর্বের বিষয়।
স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিতর্কিত করা হচ্ছে বলে আক্ষেপ করেন তিনি।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস প্রতিদিন গল্প-কবিতার মতো লেখা হচ্ছে।
হাফিজ বলেন, যুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ৮০ হাজার বা ১ লাখ, কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, প্রায় আড়াই লাখ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধ কীভাবে শুরু হয়েছিল তা নিয়ে জনগণকে অন্ধকারে রাখা হচ্ছে।
মেজর হাফিজ বলেন, ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের পর স্বাধীনতার সশস্ত্র যুদ্ধ শুরু হয়। স্বাধীনতা আনতে দেশের মানুষ প্রাণ উৎসর্গ করেছে। আওয়ামী লীগ এ নিয়ে কথা বলে না। কারণ স্বাধীনতা যুদ্ধে তাদের (আওয়ামী লীগের) কোনো অবদান নেই বলে দাবি করেন বিএনপির এ নেতা।
আরও পড়ুন: আ.লীগ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করেছে: মির্জা ফখরুল
তিনি আরও বলেন, মেজর জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা প্রতিটি প্রান্তের জনগণকে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে প্রভাবিত করেছিল। জিয়ার ঘোষণার পর বিশ্ব সম্প্রদায় জানতে পারে। কিন্তু শাসক মহল জিয়ার ঘোষণা নিয়ে রসিকতা করে বলেছিল যে ‘গার্ড বেল বাজাল’।
বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান বলেন, মেজর জিয়া ছিলেন একজন সাহসী মুক্তিযোদ্ধা এবং সেক্টর কমান্ডার যিনি যুদ্ধের ময়দানে অবস্থান করে যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আর অন্যান্য সেক্টর কমান্ডাররা ভারতে ছিলেন।
কিন্তু তরুণ প্রজন্মকে বিপথগামী করার জন্য আওয়ামী লীগ তাকে পাকিস্তানের ইন্টার সার্ভিস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) এজেন্ট হিসেবে চিত্রিত করেছে।
মেজর হাফিজ অভিযোগ করেন, লাখ লাখ ছাত্র, যুবক ও সৈনিকদের অবদানকে উপেক্ষা করে সব কৃতিত্ব দাবি করে স্বাধীনতা যুদ্ধকে বিকৃত করছে আওয়ামী লীগ।
তিনি আরও বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল যাদের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে কোনো অবদান ছিল না, তারা স্বাধীনতা ও সব অর্জনকে ছিনতাই করেছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি ভেঙে নতুন দল গঠনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেন মেজর হাফিজ
আওয়ামী লীগের পতন অনিবার্য মনে করে বিএনপি: নজরুল ইসলাম খান
‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের’ দাবিতে বিরোধী দলের চলমান আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকারে পরিবর্তন আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিএনপির সিনিয়র নেতা নজরুল ইসলাম খান।
বিএনপির আন্দোলনের সফলতা-ব্যর্থতা নিয়ে আওয়ামী লীগ কথা বলতে পারে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের পর তাদের ক্ষমতায় আসতে ২১ বছর লেগেছিল।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা ক্ষমতার পরিবর্তন চাই এবং বিশ্বাস করি যে এটি অনিবার্যভাবে ঘটবে।’
গত বছর গ্রেপ্তারের ছয় দিন পর হাসপাতালে মারা যাওয়া বিএনপি নেতা ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুলের গোপীবাগের বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির নেতা বুলবুল গত ৩০ নভেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
বিএনপির অভিযোগ, নির্যাতনের ফলে হেফাজতে বাবুলের মৃত্যু হয়েছে।
গাজীপুর কারাগারে পাঠানোর ছয় দিন পর ৩০ নভেম্বর মারা যান ঢাকার সমাজকর্মী ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুল।
আরও পড়ুন: বিএনপি রোজা-রমজান, ঈদ কোনোটাই মানে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো সময়ের দাবি অনুযায়ী তাদের বিভিন্ন কর্মসূচি ও কৌশল প্রণয়ন করে।
তিনি বলেন, ‘১৯৯০ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধেসহ অতীতে বিভিন্ন আন্দোলনে তাদের দল বিজয়ী হয়েছে। ২০০৭ সালে সরকার রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থার সময় নির্বাচন করতে চেয়েছিল কিন্তু আমাদের বাধার মুখে তা করতে ব্যর্থ হয়েছিল। আমরা এখন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছি।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ প্রবর্তিত একদলীয় শাসন বাকশাল বাতিল করে তাদের দল বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। বিএনপিও সামরিক স্বৈরাচারের অবসান ঘটিয়ে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। সেজন্য এই বিএনপি আগামীতে বাংলাদেশে আবারও গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী দল দীর্ঘদিন ধরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য যুগপৎ আন্দোলন করছে।
তিনি বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) আমাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে পারছে না বলে অভিযোগ করছে। বিএনপি ১৭ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে। তারা ১০-১২ বছর আগে থেকেই বলে আসছে, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার মতো শক্তি বিএনপির নেই। তারা (আওয়ামী লীগ) ২১ বছর ক্ষমতার বাইরে ছিল। এ সময় তাদের মেরুদণ্ড ভেঙে গিয়েছিল নাকি সোজা ছিল?’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ২১ বছর পর যখন ক্ষমতায় আসতে সময় লেগেছিল, তখন বিএনপির গতিবিধি নিয়ে প্রশ্ন তোলার অধিকার আওয়ামী লীগের নেই।
সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষমতা দখলের অভিযোগ তুলে তিনি সুশাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান, যাতে কোনো ব্যক্তির স্বজনরা বিনা অপরাধে স্বজন হারানোর বেদনায় কান্নাকাটি করতে না পারে। কেউ অপরাধ করলে তাকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। কিন্তু এখন কী হচ্ছে?
বিএনপি নেতা বুলবুলের হেফাজতে মৃত্যুকে ‘হত্যার ঘটনা’ আখ্যায়িত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।
বিএনপির হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে নজরুল বুলবুলের শোকসন্তপ্ত স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের সান্ত্বনা দেন।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ-জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা 'জনবিরোধী', নিষ্ঠুর: বিএনপি
সুসময় এলে সব গুম-হত্যার বিচার করবে বিএনপি: মিজানুর রহমান মিনু
‘বিএনপি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিলে আমরা বাধা দেব কেন?’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দেবে না সরকার। তবে আন্দোলনে সহিংসতার উপাদান যুক্ত হলে বাধা আসবে।
আজ মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘বাধা দেওয়ার মতো সহিংস তৎপরতা, সন্ত্রাস, অগ্নিসন্ত্রাস- এসব উপাদান যদি আন্দোলনে যুক্ত হয় তাহলে বাধা আসবে। তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিলে আমরা বাধা দেব কেন?’
বিএনপির বর্তমান রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে বিরোধী দলের যে রাজনীতি, এর মূল ইস্যুই হচ্ছে যত দোষ নন্দ ঘোষ সরকারের। সরকারই সব অপরাধে অপরাধী। তারা নালিশ করতে যায় যুক্তরাষ্ট্রকে।’
আরও পড়ুন: মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতি বাংলাদেশের গুরুত্ব তুলে ধরেছে: ওবায়দুল কাদের
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি নেতা মঈন খান মার্কিন দূতাবাসে গিয়ে নালিশ করেছেন- দেশে মানবাধিকার নেই, গণতন্ত্র নেই। এ হচ্ছে আমাদের প্রধান বিরোধী দলের অবস্থা।’
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হেরেছে, বিএনপি জিতেছে- বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের বিষয়ে কাদের বলেন, ‘সবাই জানে নির্বাচনে কারা জিতেছে। নির্বাচনে অংশ না নিয়েই বিএনপি জিতে গেল? এটা পাগলের প্রলাপ ছাড়া আর কি?’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ব্যবস্থা হচ্ছে, নতুন করে চিন্তা-ভাবনা করছি। দলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে যত কঠোর হওয়া দরকার হব।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
আরও পড়ুন: উগ্রবাদের মূল উৎস বিএনপি: ওবায়দুল কাদের
বিএনপিকে পরবর্তী আন্দোলনের পরিবর্তে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ কাদেরের