আফরিন আক্তার
অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: আফরিন আখতার
বাংলাদেশে 'অবাধ ও সুষ্ঠু' নির্বাচনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন সফররত মার্কিন ডেপুটি অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আখতার। মঙ্গলবার(১৭ অক্টোবর) বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় তিনি বিষয়টির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হওয়া দরকার।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত প্রতিশ্রুতিকে সমর্থন করার জন্য অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন পরিচালনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
সোমবার ঢাকায় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠকের পর আফরিন কোনো মন্তব্য না করলেও তিনি বলেন, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম এবং অন্যান্য সব পক্ষের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অবাধে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ার বিষয়েও তারা আলোচনা করেছেন।
তিনি বলেন,‘আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, আমাদের দীর্ঘদিনের উন্নয়ন অংশীদারিত্ব, নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নসহ বিস্তৃত বহুমুখী সম্পর্কসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে কীভাবে নির্বাচন হবে, তা সেই দেশের মানুষই নির্ধারণ করবে: অরিন্দম বাগচি
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে আখতারের বৈঠকের পর ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
তারা দু'দেশের মধ্যে 'শক্তিশালী বহুমুখী' দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এবং এর বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ ও বাণিজ্য, দীর্ঘদিনের উন্নয়ন অংশীদারিত্ব, মধ্যপ্রাচ্য, স্বাধীন ও নির্দলীয় নির্বাচন জরিপ দলের সাম্প্রতিক সফর এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সমর্থন নিয়ে আলোচনা হয়।
মঙ্গলবার আরআরআরসি’র মিজানুর রহমানের সঙ্গে তার বৈঠকের কথা উল্লেখ করে আখতার বলেন, রোহিঙ্গাদের যে কোনো প্রত্যাবাসন 'স্বেচ্ছায়, মর্যাদাপূর্ণ ও নিরাপদ' হতে হবে।
আরও পড়ুন: আইআরআই-এনডিআই মিশনের সুপারিশের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ‘প্রায় একমত’: পররাষ্ট্র সচিব
তিনি বলেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি এই মুহূর্তে প্রত্যাবাসনের জন্য অনুকূল না হওয়ায় প্রত্যাবাসনে জোরপূর্বক কোনো প্রচেষ্টা চালানো উচিত নয়।
আখতার বলেন, ‘তাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনসহ একটি স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করতে আমরা বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাব।’
তিনি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রচেষ্টা এবং 'অবিশ্বাস্য উদারতার' প্রশংসা করেন। ‘আমরা সত্যিই উদারতার প্রশংসা করি।’বলেন তিনি।
২০১৭ সালে দমন পীড়ন থেকে বাঁচতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: মাসুদ-আফরিন বৈঠক: বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র ‘অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ’ নির্বাচন চায়
১ বছর আগে
বাংলাদেশ সত্যিকারের গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার: মার্কিন উপ-সহকারী সচিব
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর (এসসিএ) উপ-সহকারী সচিব আফরিন আক্তার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে একটি ‘সত্যিকারের গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার’ হিসেবে দেখে এবং একটি শক্তিশালী সম্পর্কের জন্য আগামী ৫০ বছর কাজ করতে আগ্রহী।
তিনি বলেন, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক জনগণ, অর্থনীতি ও সরকারের মধ্যে অবিশ্বাস্য অগ্রগতি প্রত্যক্ষ করেছে। দুই দেশের মধ্যে জনগণের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর।
বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করে মার্কিন এই উপ-সহকারী সচিব বলেন, মাত্র কয়েক দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতি বৃহত্তর কৃষি সমাজ থেকে অর্থনৈতিক পাওয়ার হাউসে বিস্তৃত হয়েছে।
ওয়াশিংটনে বিজয় দিবসের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, এটি সত্যিই গর্ব করার মতো একটি বিষয় যে বাংলাদেশ কোটি কোটি মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে এনেছে এবং দেশ মধ্যম আয়ের মর্যাদা অর্জন করবে, যা সত্যিই অসাধারণ।
আরও পড়ুন: ঢাকায় কিশোর মাহবুবনী: যুক্তরাষ্ট্র-চীন দ্বৈরথে ভূ-রাজনীতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে
অর্থনৈতিক সহযোগিতার বাইরেও আফরিন কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সরবরাহ এবং জলবায়ু পরিবর্তন সমস্যা মোকাবিলায় দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্বের কথা উল্লেখ করেন। তিনি মিয়ানমার থেকে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস বাংলাদেশের ৫২ তম বিজয় দিবস উদযাপন করেছে। দিবসটি স্মরণে দূতাবাস দিনব্যাপী কর্মসূচির আয়োজন করে।
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান সকালে চ্যান্সারি প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিনের প্রথম পর্বের কার্যক্রম শুরু হয়। পরে রাষ্ট্রদূত দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু কর্নারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের বাণী পাঠ করে শোনান মিশন উপপ্রধান ফেরদৌসী শাহরিয়ার, মন্ত্রী (বাণিজ্য) মো. সেলিম রেজা, কাউন্সেলর (পাবলিক কূটনীতি) আরিফা রহমান রুমা ও কাউন্সেলর (রাজনৈতিক-১) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান।
জাতির শান্তি, অগ্রগতি ও উন্নয়নের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের শহীদ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। পরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রাষ্ট্রদূত ইমরান গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি এবং বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তিনি ত্রিশ লাখ শহীদ ও ১৯৭১ সালে আত্মত্যাগকারী দুই লাখ নারীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় দিনের অন্য অনুষ্ঠান। বাংলাদেশি-আমেরিকান সাংস্কৃতিক সংগঠন ধ্রুপদীর শিল্পীরা দেশাত্মবোধক গানে দলগত নৃত্য পরিবেশন করেন।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন কাউন্সিলর শামীমা ইয়াসমিন স্মৃতি ও প্রথম সচিব মো. আতাউর রহমান। এদিন দূতাবাস একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীরও আয়োজন করেছে।
আরও পড়ুন: ঢাকায় ভয়ভীতি প্রদর্শন ও রাজনৈতিক সহিংসতায় উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র
শরণার্থী, অভিবাসন সমস্যা আলোচনায় বাংলাদেশ সফরে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী সচিব নয়েস
২ বছর আগে