পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি
পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে অর্জিত অগ্রগতিকে স্বাগত জানাল জাতিসংঘ
বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের অগ্রগতিকে স্বাগত জানিয়েছে আদিবাসী সংক্রান্ত জাতিসংঘের স্থায়ী ফোরাম।
নিউইয়র্কের জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ১৭ থেকে ২৮ এপ্রিল ২০২৩ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ২২তম অধিবেশনের প্রতিবেদনে এমন পর্যবেক্ষণ করেছে ফোরামটি।
অধিবেশন চলাকালে ফোরামের বিভিন্ন সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল তাদের বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকারের অর্জনগুলোকে তুলে ধরে।
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বকারী সুশীল সমাজের সদস্য এবং অন্যন্য ব্যক্তিবর্গও এ ফোরামের বিভিন্ন সভায় অংশগ্রহণ করেন।
অধিবেশন শেষে ফোরামটি এ চুক্তি বাস্তবায়নের অগ্রগতি বিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের উপস্থাপিত বিভিন্ন তথ্যকে স্বাগত জানায়।
একইসঙ্গে তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনা ও সহযোগিতার মাধ্যমে চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশকে আরও জোর প্রচেষ্টা চালানোর অনুরোধ করে।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের নারীর মর্যাদাবিষয়ক কমিশনে সর্বসম্মতিক্রমে সদস্য নির্বাচিত বাংলাদেশ
১ বছর আগে
পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে আস্থা হারালেন সন্তু লারমা
দীর্ঘ ২৫ বছরেও যখন পার্বত্য চুক্তি পূর্ণ বাস্তবায়ন হয়নি তা হলে পার্বত্য শান্তি চুক্তি আর বাস্তবায়ন হবে না বলে হতাশা প্রকাশ করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা।
শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৫ বছর বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জনসংহতি সমিতির সহযোগী ছাত্র সংগঠন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ আয়োজিত প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি এই চুক্তি এমনিতেই আর পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়িত হবে না। পার্বত্য চুক্তি বর্তমানে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। এই চুক্তি বাস্তবায়নে সংগ্রাম অনিবার্য, সংগ্রামের মাধ্যমে এই চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের পথ সৃষ্টি করতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক জিকো চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুমন মারমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসী লেখক ফোরামের সাবেক সভাপতি শিশির কুমার চাকমা, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনরে সাবেক সদস্য নিরূপা দেওয়ান প্রমুখ।
আরও পড়ুন: পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ২৫ বছর: সরকার চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন করবে বলে আশাবাদী পাহাড়ি নেতারা
অনুষ্ঠানে সন্তু লারমা আরও বলেন, নানান সংগ্রামের ও প্রতিকূল অবস্থার মধ্য দিয়ে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। পার্বত্য চুক্তি এটা সাধারণ কোনো দলিল নয়। এটি এই পার্বত্য এলাকার জুম্ম জনগণের অধিকারের সনদ। পাহাড়ের অধিকাংশ জুম্ম জনগণ পার্বত্য চুক্তি সম্পর্কে তাদের কোনো জ্ঞান নেই। তারা এই বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের আগ্রহও প্রকাশ করেন না। পার্বত্য শান্তিচুক্তির বিষয়ে প্রত্যেকের জানা দরকার। শুধু চুক্তি নয় সংবিধানে মানবাধিকার বিষয় সম্পর্কেও জানা অতীব প্রয়োজন। পাশাপাশি চুক্তি বাস্তবায়নের সংগ্রামে সকল জুম্ম জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে সন্তু লারমা বলেন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ যে বিষয় নিয়ে প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা করেছে আমি দেখেছি যারা এই প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করেছে তাদের আরও এই বিষয় নিয়ে পড়ালেখায় মনোনিবেশ করতে হবে। চুক্তি সম্পর্কে পার্বত্য এলাকা জুম্ম জনগণ আরও জানা দরকার। দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে পার্বত্য এলাকার জুম্ম জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন হয়েছে। চুক্তির পূর্বেও যে পরিস্থিতি ছিল এখনও তা বহাল হয়েছে। কোনো পরিবর্তন হয়েছে বলে আমি মনে করি না।
আরও পড়ুন: পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নে দুই বছর লাগতে পারে: বীর বাহাদুর উশৈ সিং
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরুপা দেওয়ান বলেন, ছাত্রদের নিজের অধিকার আদায়ের জন্য অবশ্যই রাজনীতি করার প্রয়োজন আছে। রাজনীতির পাশাপাশি অবশ্যই পড়ালেখায় মনোনিবেশ করতে হবে। আমাদের মধ্যে কয়জনে পার্বত্য চুক্তি সম্পর্কে জানে। এই বিষয়ে প্রত্যেকের জানা থাকা দরকার। শুধু চুক্তি নয় সংবিধানে মানবাধিকার বিষয়েও জানা জরুরি।
আলোচনা সভা শেষে প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিবৃন্দ।
আরও পড়ুন: বর্ণিল আয়োজনে খাগড়াছড়িতে পালিত হচ্ছে পার্বত্য শান্তিচুক্তির রজত জয়ন্তী
১ বছর আগে