পাসপোর্ট নবায়ন
প্রবাসী বাংলাদেশিরা কিভাবে ই-পাসপোর্ট করবেন: দেশের বাইরে থেকে পাসপোর্ট নবায়নের উপায়
একজন নাগরিকের জন্য তার পাসপোর্টটি তার নিজের দেশে যতটা না দরকার তার চেয়েও বেশি দরকার অভিবাসনের মাধ্যমে তিনি যে দেশে যাচ্ছেন সেই দেশে। সেখানে তার অভিবাসনের কারণ ও উদ্দেশ্যের পাশাপাশি দেশে প্রত্যাবর্তনের জন্য একমাত্র অবলম্বন এই পাসপোর্ট। তাই সেই দেশে থাকার মুহূর্তগুলোতে পাসপোর্টের কার্যকারীতার ব্যাপারে যথেষ্ট খেয়াল রাখা উচিত।
বর্তমানে বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাইরের দেশের দূতাবাসগুলোতেও ধীরে ধীরে শুরু হচ্ছে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম। সেই দেশগুলোতে বাংলাদেশের মতই পাসপোর্টের নবায়নকারীদের দেয়া হচ্ছে নতুন ই-পাসপোর্ট। চলুন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেশের বাইরে থেকে পাসপোর্ট নবায়ন করার উপায় জেনে নেয়া যাক।
ই-পাসপোর্ট-এর জন্য আবেদনের যোগ্যতা
বাংলাদেশে অবস্থানকারী পাসপোর্টধারীদের ন্যায় বিদেশ- বিভুঁইয়ে থাকা বাংলাদেশিদেরকেও পাসপোর্ট নবায়ন এবং নতুন ই-পাসপোর্ট আবেদনের জন্য একই পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। এজন্য পূর্বশর্তগুলো হলো-
আবেদনকারীর অবশ্যই একটি বৈধ বাংলাদেশি এনআইডি(জাতীয় পরিচয়পত্র) কার্ড এবং অনলাইনে নিবন্ধিত জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র থাকতে হবে।
জন্ম নিবন্ধন সনদের ক্ষেত্রে, আবেদনকারীর নিজের ও পিতামাতার নামের সঙ্গে যেন অবশ্যই আবেদনের সংশ্লিষ্ট তথ্যের মিল থাকে। নতুবা আগে প্রয়োজনীয় সংশোধন করে জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র ঠিক করতে হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও খরচ
উপরন্তু, আবেদনকারী মার্কিন নাগরিক হয়ে থাকলে, তাকে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক জারি করা দ্বৈত জাতীয়তা সনদপত্র দেখাতে হবে। অন্যথায়, আবেদনকারীর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করার জন্য থাকতে হবে বৈধ কাগজপত্র যেমন- বৈধ ভিসা বা স্থায়ী বাসিন্দা কার্ড।
বাংলাদেশি পাসপোর্টের সঙ্গে এক বছরের বেশি মেয়াদ থাকলেও আবেদন করা যাবে না যদি না সেই পাসপোর্টধারীদের যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের স্বপক্ষে কোন বৈধ প্রমাণপত্র থাকে।
প্রবাসীদের পুরাতন পাসপোর্ট নবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- বারকোড এবং অ্যাপয়েন্টমেন্টের তারিখসহ পাসপোর্ট নবায়নের জন্য আবেদনের সারাংশ
- অনলাইনে জমাকৃত আবেদনের প্রিন্ট কপি
- পাসপোর্ট নবায়ন ফি পরিশোধের মানি অর্ডার/ক্যাশিয়ার চেক/অফিসিয়াল চেক
- বর্তমান বাংলাদেশি পাসপোর্টের মূল কপি
- বাংলাদেশি এনআইডি কার্ড কপি অথবা জন্ম সনদের অনলাইনে নিবন্ধনের যাচাইকরণ ওয়েবপৃষ্ঠার কপি সহ জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র
- মার্কিন নাগরিক হলে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত দ্বৈত জাতীয়তা সনদপত্রের অনুলিপি
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের প্রমাণপত্রের অনুলিপি, যেমন বৈধ ভিসা, স্থায়ী বাসিন্দা কার্ড, অথবা একটি নোটারাইজড হলফনামা যেখানে উল্লেখ থাকবে যে আবেদনকারী মার্কিন নাগরিক নন।
- প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বিবাহ/তালাক নিবন্ধন শংসাপত্রের অনুলিপি
- বর্তমান বাংলাদেশি এমআরপি(মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট)-এর তথ্যে কোনো পরিবর্তন প্রয়োজন হলে তার স্বপক্ষে প্রাসঙ্গিক কাগজপত্র
আরও পড়ুন: অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদনে ভুল হলে সংশোধনের নিয়ম
অনলাইনে প্রবাসীদের ই-পাসপোর্ট নবায়ন করার পদ্ধতি
প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য অনলাইনে পাসপোর্ট নবায়নের আবেদন পদ্ধতি
বাংলাদেশে অবস্থানরত নাগরিকদের মত প্রবাসী বাংলাদেশিরাও অনলাইনে পাসপোর্ট নবায়নের জন্য ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট বিভাগের ওয়েবসাইটে যেয়ে ডিরেক্টলি টু অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনে ক্লিক করবেন। শুরুতেই বাংলাদেশ থেকে আবেদন করা হচ্ছে কিনা জানতে চাওয়া হবে। এখানে না উত্তর দেয়ার পর বাছাই করতে হবে দেশ ও বাংলাদেশ দূতাবাসের নাম। তারপর নাম, মোবাইল নাম্বার, ইমেইল ঠিকানা এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে ওয়েবসাইটে নতুন একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।
নামটি অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্র বা অনলাইনে নিবন্ধিত জন্ম সনদ অনুসারে হতে হবে। ইমেইল ঠিকানা যাচাইয়ের মাধ্যমে নিবন্ধনের পর ইমেইল ও পাসওয়ার্ড দিয়ে ওয়েবসাইটে লগইন করতে হবে। তারপর শুরু হবে পাসপোর্ট নবায়নের মুল আবেদন।
এখানে ব্যক্তিগত সেকশন থেকে শুরু করে বিতরণের ধরণ পর্যন্ত যথাযথ তথ্যাবলি দিয়ে পূরণ করতে হবে। তন্মধ্যে আইডি ডকুমেন্ট সেকশনে ‘Yes, I have a Machine Readable Passport (MRP)’ অপশনটি বাছাই করতে হবে। এরপরে পাসপোর্ট আবেদনের কারণ হিসেবে Expired অপশনটি বাছাই করে বর্তমান পাসপোর্টের নাম্বার, ইস্যু ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ লিখে দিতে হবে।
আরও পড়ুন: পুরাতন পাসপোর্ট নবায়নের উপায়
অতঃপর পুরো আবেদনপত্রটি সফলভাবে শেষ হলে সাবমিট করার পর ডাউনলোড করে তার একটা প্রিন্ট নিয়ে নিতে হবে।
প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের বাইরে থেকে কিভাবে পাসপোর্ট নবায়ন ফি দিবেন
মানি অর্ডার/ক্যাশিয়ার/অফিসিয়াল চেক (অনুর্ধ্ব ৩০ দিন)-এর মাধ্যমে বাংলাদেশ দূতাবাস বরাবর নবায়ন ফি প্রদেয় করতে হবে। নগদ বা ব্যক্তিগত চেক বা অনলাইন পেমেন্ট গ্রহণ করা হয় না। তাই অনলাইন আবেদন করার সময় অফলাইন পেমেন্ট নির্বাচন করতে হবে। দূতাবাসে বায়োমেট্রিক তালিকাভুক্তির সময় আবেদনকারীকে মানি অর্ডার/ক্যাশিয়ার/অফিসিয়াল চেক ব্যক্তিগতভাবে জমা দিতে হবে।
দেশের বাইরে বাংলাদেশি ই-পাসপোর্ট নবায়ন ফি
ই -পাসপোর্ট ৪৮ ও ৬৪ পৃষ্ঠার হয়ে থাক। প্রবাসীরা ৫-বছর বা ১০-বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করতে পারবেন। পাসপোর্ট ডেলিভারি রেগুলার, বা জরুরি ভিত্তিতে নিতে পারেন।
বিভিন্ন দেশের পাসপোর্ট নবায়ন ফী বিভিন্ন। প্রবাসীগণ যে দেশে অবস্থান করছেন বা যে দেশ থেকে পাসপোর্ট রিনিউ করতে চান সেই দেশের দূতাবাসের ওপর নির্ভর করে এই ফি ভিন্ন হয়।
আরও পড়ুন: ই-পাসপোর্টে ভুল তথ্য সংশোধন পদ্ধতি
পুরাতন পাসপোর্ট নবায়নের আবেদন কিভাবে ও কোথায় জমা দিবেন
যুক্তরাষ্ট্রে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম চালুর পূর্বে ইমেলের মাধ্যমে অ্যাপয়েন্টমেন্টের সময় জানানো হতো। কিন্তু এখন অনলাইনে আবেদন করার প্রক্রিয়া চলাকালীন অ্যাপয়েন্টমেন্টের সময় নির্ধারণ করতে হবে। আবেদনের প্যাকেজ বা পাসপোর্ট আবেদন সংক্রান্ত কোন নথি ডাকযোগে পাঠানো যাবে না।
আবেদনকারীকে অ্যাপয়েন্টমেন্টের নির্ধারিত তারিখে সশরীরে দূতাবাসে আসতে হবে। অতঃপর বায়োমেট্রিক তালিকাভুক্তির পরে আবেদনকারীর বর্তমান পাসপোর্ট ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে। তালিকাভুক্তি সম্পূর্ণ করার আগে খসড়া ডেলিভারি স্লিপ দেখানো হবে। সেখানে সমস্ত তথ্য যাচাই করার পর আবেদনকারী তাতে স্বাক্ষর করে তার নিজের কপিটি সঙ্গে নিয়ে আসবেন। আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানা কোন দূতাবাসের আওতায় পড়েছে তা জানা যাবে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ দূতাবাসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাসপোর্ট নবায়নে কত দিন সময় লাগে
সাধারণত এক্সপ্রেস ডেলিভারিতে ২১ কার্যদিবস, রেগুলার ডেলিভারিতে ৪৫ কার্যদিবস লাগে। তথ্য অসামঞ্জস্যতা বা সংশোধনের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট প্রক্রিয়াকরণের সময়ে আরো বেশি সময় লাগতে পারে। তাছাড়া ই-পাসপোর্ট ঢাকা থেকে প্রস্তুত হয়ে বিতরণ হয় বলে কমপক্ষে তিন সপ্তাহ সময় লেগে যায়।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ই-পাসপোর্ট হাতে পেতে আনুমানিক ৭৫ দিন সময় লাগে। জার্মানিতে ৮-১০ সপ্তাহ; কখনও কখনও এর চেয়েও বেশি সময় লেগে যায়।
আরও পড়ুন: পাসপোর্ট নবায়ন সমস্যা সমাধানে সৌদি-বাংলাদেশ যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ
নবায়নকৃত পাসপোর্ট সংগ্রহ
তালিকাভুক্তির সময় আবেদনকারী যদি একটি প্রিপেইড ও স্ব-ঠিকানাযুক্ত রিটার্ন খাম (শুধুমাত্র ইউএসপিএস) ট্র্যাকিং নম্বর এবং নিজের বাংলাদেশি এনআইডির অনুলিপি প্রদান করেন তাহলে তাকে নতুন পাসপোর্ট ডাকযোগে পাঠানো হবে।
নতুন পাসপোর্ট ঢাকা থেকে এসে আনুষ্ঠানিকভাবে দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট সফ্টওয়্যারের মাধ্যমে গৃহীত হয়। এ সময় সাধারণ টেমপ্লেট সহ একটি সিস্টেম জেনারেট করা ইমেল ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট বিভাগ থেকে পাসপোর্ট সংগ্রহ করার জন্য আবেদনকারীর নিকট একটি ইমেইল যায়। এই বার্তাপ্রাপ্তির পর রিটার্ন খাম এবং এনআইডি এর কপি প্রদানকারীরা নিজের বর্তমান ঠিকানায় ডাকযোগে নতুন পাসপোর্ট পেয়ে যাবেন।
যাদের বাংলাদেশি এনআইডি নেই তাদেরকে যে কোনো কর্মদিবসে বিকাল ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে দূতাবাসে যেয়ে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে। ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট বিভাগের ওয়েবসাইট থেকেই পাসপোর্ট ইস্যু হওয়ার আপডেট পাওয়া যায়।
শেষাংশ
প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেশের বাইরে থেকে পাসপোর্ট নবায়ন করার উপায়টি আগের মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট নবায়ন থেকেও সহজ। কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্রটি অনলাইন নিবন্ধিত না থাকলে অথবা পাসপোর্টের তথ্যে সঙ্গে মিল না থাকলে অনেক বিড়ম্বনায় পড়তে হবে নবায়নের জন্য আবেদনকারীদের।
বিষয়টি খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে প্রবসীদের, কেননা প্রবাসে পাসপোর্টের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার ছয় মাস আগেই পাসপোর্টটি নবায়ন করা জরুরি। তাই ভবিষ্যতের কথা ভেবে অভিবাসনের সময়ে পাসপোর্টের সঙ্গে সম্পর্কিত যাবতীয় নথিপত্র দেশ থেকেই ঠিক করে যাওয়া উত্তম।
আরও পড়ুন: শিশুদের ই-পাসপোর্টের নিয়ম: কীভাবে আপনার অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানের পাসপোর্ট করবেন
১ বছর আগে
পুরাতন পাসপোর্ট নবায়নের উপায়
বাংলাদেশে ই-পাসপোর্টের কার্যক্রম শুরু হয় ২০২০ সালের ২২ জানুয়ারি। সেই থেকে ধীরে ধীরে সারা দেশে পাসপোর্টের আঞ্চলিক অফিসগুলোতে ই-পাসপোর্ট ইস্যুর ব্যবস্থা করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক নিজের এমআরপি বা মেশিন রিডেবল পাসপোর্টটি ই-পাসপোর্টে বদলে নিতে পারেন। ই-পাসপোর্টের সুবিধা হচ্ছে- এর মাধ্যমে ইমিগ্রেশনের সময় স্বয়ংক্রিয় ই-গেইটের কারণে ইমিগ্রেন্টদের কোনো রকম চেকিংয়ের সম্মুখীন হতে হবে না। ফলে অন্য দেশে যাওয়ার সময় দীর্ঘ সময় ধরে চেকিংয়ের জন্য দাঁড়িয়ে থাকার দরকার পড়বে না। চলুন, মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্ট বা এমআরপি থেকে নতুন ই-পাসপোর্ট বা পাসপোর্ট রিনিউ করার পদ্ধতি জেনে নেয়া যাক।
পুরাতন পাসপোর্ট নবায়নের পূর্বশর্ত
পাসপোর্টের এই ডিজিটালকরণ সবেমাত্র শুরু হয়েছে, বিধায় পাসপোর্টের রিনিউ বলতে বর্তমানে এমআরপি থেকে ই-পাসপোর্টে রূপান্তরকেই বুঝায়। তাছাড়া এখন আর এমআরপি দেয়া হয় না। পাসপোর্ট রিনিউ বা নতুন হোক উভয় ক্ষেত্রেই ই-পাসপোর্ট সরবরাহ করা হয়। আবেদনকারির বয়স ১৮ বছরের নিচে হলে জন্ম নিবন্ধন দিয়ে ই-পাসপোর্ট রিনিউ করা যাবে। এক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধনটি অবশ্যই অনলাইনে লিপিবদ্ধ থাকতে হবে। নতুবা আগে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন করে তারপর ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে হবে। প্রাপ্তবয়স্ক অর্থাৎ ১৮ বছরের উপরের আবেদনকারীদের জাতীয় পরিচয় পত্র বা স্মার্ট আইডি(এনআইডি) কার্ড দিয়ে পাসপোর্ট রিনিউ করতে হবে। এক্ষেত্রে আবেদনের সময় এনআইডি কার্ডের তথ্যের হুবহু তথ্য সরবরাহ করতে হবে। কোনো গরমিল হলেই পাসপোর্ট অথবা এনআইডির যে কোনো একটির সংশোধন করতে হবে।
আরও পড়ুন: পাসপোর্ট নবায়ন সমস্যা সমাধানে সৌদি-বাংলাদেশ যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ
পুরাতন পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
→ মূল আবেদনের রঙিন মুদ্রিত কপি
→ অ্যাপয়েন্টমেন্টসহ আবেদনপত্রের সারাংশের প্রিন্ট কপি
→ জাতীয় পরিচয় পত্র বা অনলাইনে নিবন্ধিত জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি জমাদানকারীদের ক্ষেত্রে পিতামাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপিও জমা দিতে হবে।
→ পূর্ববর্তী পাসপোর্টের যে পৃষ্ঠাগুলোতে পাসপোর্টধারীর ব্যক্তিগত ও ইমিগ্রেশনের তথ্য দেয়া আছে সেগুলোর ফটোকপি
→ ব্যাংকের মাধ্যমে পাসপোর্টের ফি পরিশোধ করা হলে ফি জমা প্রদানের রশিদ
→ প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সরকারি চাকরিজীবীগণ সরকারি অধ্যাদেশ/অনাপত্তি সনদ সংযুক্ত করতে পারেন
→ যদি তথ্য সংশোধন করতে হয় তাহলে প্রাসঙ্গিক কাগজপত্র
অনলাইনে পাসপোর্ট রিনিউ করার পদ্ধতি
অনলাইনে পাসপোর্ট রিনিউয়ের আবেদন
অনলাইনে পাসপোর্ট রিনিউয়ের জন্য ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট বিভাগের ওয়েবসাইটে যেয়ে ডিরেক্টলি টু অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনে ক্লিক করতে হবে। এখান থেকে নতুন ও পাসপোর্ট রিনিউ দুইয়েরই জন্য আবেদন করা যায়।
প্রথমেই জেলা নির্বাচনের পর থানার নাম বাছাই করতে হবে। আর এর সাথে সাথে সেই থানার নিকটস্থ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের নাম দেখাবে। তারপর ইমেইল ঠিকানা ও পাসওয়ার্ড দিয়ে ওয়েবসাইটটিতে নিবন্ধন করতে হবে। এবার ইমেইল যাচাইয়ের পালা। এখানে আবেদনকারী যে ইমেইল ঠিকানা দিয়েছিলেন সেখানে এই ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে একটি বার্তা পাবেন। সেই বার্তায় প্রবেশ করে নির্দিষ্ট লিঙ্কে ক্লিক করলে আবেদনকারীকে পুনরায় পাসপোর্ট আবেদনের ওয়েবসাইটে নিয়ে আসা হবে। আর এভাবেই সম্পন্ন হবে ইমেইল যাচাই প্রক্রিয়া। এখন আবেদনকারি নিজের ইমেইল ঠিকানা ও পাসওয়ার্ড দিয়ে ওয়েবসাইটে লগইন করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: শিশুদের ই-পাসপোর্টের নিয়ম: কীভাবে আপনার অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানের পাসপোর্ট করবেন
আবেদনের প্রথমেই ব্যক্তিগত তথ্যাবলি পূরণ করতে হবে। এরপরের স্ক্রিণে আসবে পাসপোর্ট নতুন না রিনিউ তার স্বীকারক্তির সেকশন প্রিভিয়াস পাসপোর্ট। এখানে Yes, I have a Machine Readable Passport (MRP) এই অপশনটি সিলেক্ট করতে হবে। এরপরে পাসপোর্ট আবেদনের কারণ হিসেবে Expired অপশনটি বাছাই করতে হবে। অতঃপর একে একে পূর্ববর্তী পাসপোর্টের নাম্বার, ইস্যূ ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ উল্লেখ করতে হবে। পাসপোর্ট ওপর-নীচ করে খুলে ওপরের পৃষ্ঠায় ডানদিকে উল্লম্ব ভাবে ইংরেজি অক্ষর ও সংখ্যা সম্বলিত নাম্বারটিই পাসপোর্ট নাম্বার।
আর পাসপোর্টের ছবির পৃষ্ঠায় পাওয়া যাবে তারিখগুলো। এরপর ঠিকানা, পিতা মাতার তথ্য, স্বামী/স্ত্রীর তথ্য, জরুরি যোগাযোগ, মোবাইল নাম্বার, পাসপোর্টের ধরণ ও সবশেষে প্রদানের ধরণ সেকশনগুলোতে সঠিকভাবে তথ্য সরবরাহ করে আবেদটি সম্পন্ন করতে হবে। প্রদানের ধরনে ক্যালেন্ডার থেকে সশরীরে আবেদন জমাপূর্বক ছবি তোলা ও ফিঙ্গাপ্রিন্ট দেয়ার তারিখ বাছাই করতে হবে। এখানে সাধারণত কমপক্ষে দেড় থেকে দুই মাস দূরত্বে যে কোন তারিখ বাছাইয়ের সুযোগ থাকে।
অতঃপর পূরণকৃত আবেদনপত্রটি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিতে হবে।
পাসপোর্ট রিনিউ ফি প্রদান
ই-পাসপোর্ট রিনিউ ফি অনলাইনে এবং অফলাইন তথা সশরীরে ব্যাংকে গিয়ে উভয়ভাবেই পরিশোধ করা যায়। ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট বিভাগের নির্ধারিত করা ব্যাংকগুলো হলো- ওয়ান ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, ঢাকা ব্যাংক এবং সোনালী ব্যাংক। এই ব্যাংকগুলোর যে কোনো শাখায় পাসপোর্ট রিনিউয়ের ফি জমা দেওয়া যাবে। এ সময় আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র এবং প্রিন্ট করা ই-পাসপোর্টের আবেদনপত্রটি অবশ্যই সঙ্গে থাকতে হবে।
আর অনলাইনে ফি পরিশোধের ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ড, ভিসা কার্ড, কিউ-ক্যাশ, বিকাশ, ডাচ বাংলা মোবাইল ব্যাংকিং এবং সোনালী ব্যাংকের পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করা যাবে।
আরও পড়ুন: যেভাবে পাসপোর্টের ভুল তথ্য সংশোধন করবেন
পাসপোর্ট রিনিউ ফি-এর তালিকা
ই-পাসপোর্ট রিনিউয়ের ক্ষেত্রে নতুন ই-পাসপোর্ট করার মতো একই খরচ লাগবে।
→ পাঁচ বছরের মেয়াদের ৪৮ পাতার পাসপোর্ট চার হাজার ২৫ টাকায় পাওয়া যাবে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে, ছয় হাজার ৩২৫ টাকায় পাওয়া যাবে সাত কার্যদিবসের মধ্যে এবং আট হাজার ৬২৫ টাকায় পাওয়া যাবে দুই কার্যদিবসের মধ্যে।
→ পাঁচ বছর মেয়াদের ৬৪ পাতার পাসপোর্ট ছয় হাজার ৩২৫ টাকায় পাওয়া যাবে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে, আট হাজার ৩২৫ টাকায় পাওয়া যাবে সাত কার্যদিবসের মধ্যে এবং ১২ হাজার ৭৫ টাকায় পাওয়া যাবে দুই কার্যদিবসের মধ্যে।
→ ১০ বছরের মেয়াদের ৪৮ পাতার পাসপোর্ট পাঁচ হাজার ৭৫০ টাকায় পাওয়া যাবে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে, আট ৫০ টাকায় পাওয়া যাবে সাত কার্যদিবসের মধ্যে এবং ১০ হাজার ৩৫০ টাকায় পাওয়া যাবে দুই কার্যদিবসের মধ্যে।
→ ১০ বছরের মেয়াদের ৬৪ পাতার পাসপোর্ট আট হাজার ৫০ টাকায় পাওয়া যাবে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে, ১০ হাজার ৩৫০ টাকায় পাওয়া যাবে সাত কার্যদিবসের মধ্যে এবং ১৩ হাজার ৮০০ টাকায় পাওয়া যাবে দুই কার্যদিবসের মধ্যে।
পুরাতন পাসপোর্ট রিনিউয়ের আবেদন কোথায় জমা দিবেন
পাসপোর্ট রিনিউয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র একত্রিত করে সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র ও পুরাতন পাসপোর্টের মূল কপি সঙ্গে নিতে হবে। ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট বিভাগের ওয়েবসাইটে আবেদনের সময় যে তারিখ ঠিক করা হয়েছিল সেই তারিখে পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত হতে হবে কাগজপত্রসহ। ওয়েবসাইটে থানার নাম উল্লেখ করার পর যে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের নাম দেখিয়েছিল সেটিই হবে আবেদনকারীর নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিস।
অতঃপর নথিপত্র বিশেষত পুরাতন পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই করে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবেদনকারীর বায়োমেট্রিক তথ্য নিবেন। এখানে খেয়াল রাখা উচিত যে, ছবি তোলার সময় সাদা শার্ট ও চশমা পড়া যাবে না। সব কাজ শেষে অফিস কর্মকর্তা একটি ডেলিভারি স্লিপ প্রদান করবেন। এখানে উল্লেখ থাকবে নবায়নকৃত পাসপোর্ট সরবরাহের সম্ভাব্য তারিখ।
আরও পড়ুন: পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে করণীয়
নবায়নকৃত পাসপোর্ট কোথায় সংগ্রহ করবেন?
আবেদনকারীকে সশরীরে পাসপোর্ট অফিসে এসে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে। এসময় সঙ্গে থাকতে হবে সেই ডেলিভারি স্লিপ, পুরাতন এমআরপি ও জাতীয় পরিচয়পত্র। এসময় ই-পাসপোর্ট দেয়ার আগে আবেদনকারীর আঙ্গুলের ছাপ যাচাই করা হয়।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড করলে পাসপোর্ট বাতিল করা হবে: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী
শেষাংশ
পুরাতন পাসপোর্ট রিনিউ করার ক্ষেত্রে সময়ের কোনো বাধ্যবাধকতা বা জরিমানার কোনো ব্যাপার নেই। তবু মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই পাসপোর্ট রিনিউ করে নেয়া উচিত। মেয়াদ শেষ হওয়ার ন্যূনতম ৬ থেকে ৭ মাস আগেই এই নবায়নের কাজটি করে ফেলা উত্তম। কারণ দেশের বাইরে যাওয়ার কোনো উদ্দেশ্য থাকলে পাসপোর্টের মেয়াদ ন্যূনতম ছয় মাস না থাকলে কোনো এম্বেসি থেকে ভিসা পাওয়া যায় না। পাসপোর্ট রিনিউয়ের ক্ষেত্রে কোনো পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রয়োজন পড়ে না। এমনকি ভবিষ্যতে মেয়াদোত্তীর্ণ ই-পাসপোর্ট রিনিউয়ের ক্ষেত্রে নতুন করে ছবি ও ফিঙ্গারপ্রিণ্টের দরকার হবে না।
১ বছর আগে