অবতরণ
ভারতের নাগপুরে ফ্লাইটের জরুরি অবতরণ ও ঘটনার বিষয়ে বিমানের ব্যাখ্যা
কারিগরি ত্রুটির কারণে ভারতের নাগপুরে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট অবতরণের ব্যাখ্যা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। গেল ১৯ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে এমন ঘটনা ঘটেছে। ওই বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজটিতে ২ জন বৈমানিক, ১০ জন কেবিন ক্রু এবং ৩৯৬ জন যাত্রী ছিলেন।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিমানের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক বোসরা ইসলামের সই করা এক ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বিমানের ঢাকা-দুবাই রুটের নির্ধারিত ফ্লাইট বিজি৩৪৭ ঢাকা থেকে সন্ধ্যা ৮টা বেজে ৪০ মিনিটে যাত্রা শুরু করে।
যাত্রা পথে ভারতের মহারাষ্ট্র প্রদেশের নাগপুর শহর অতিক্রান্ত হওয়ার সময় ক্যাপ্টেন পেছনের কার্গো কোম্পার্টমেন্ট থেকে ককপিটে ফায়ার সতর্কীকরণ সংকেত পান। এসময় যাত্রীদের নৈশভোজ পরিবেশন করা হচ্ছিল। এই ফ্লাইটের পাইলট-ইন-কমান্ড আইসিএও/বোয়িং/সিএএবি’র নিয়মানুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন এবং উড়োজাহাজ পরিচালনার দিক নির্দেশানুযায়ী নিকটবর্তী ভারতের নাগপুরের ‘ড. বাবা সাহেব আমবেদকা’ বিমানবন্দরে বাংলাদেশ সময় রাত ১১ বেজে ২৭ মিনিটে নিরাপদে অবতরণ করেন।
বৈমানিক নাগপুরে বিমান অবতরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরই সব যাত্রীকে ‘যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে নাগপুরে অবতরণের’ সিদ্ধান্তটি ইন-ফ্লাইট অ্যানাউন্সের মাধ্যমে অবহিত করেন। ফ্লাইটটি নাগপুরে অবতরণের পর সব যাত্রীর উড়োজাহাজ থেকে নামিয়ে নেওয়া হয়। ৩৯৬ জন যাত্রী এবং ১২ ক্রুসহ সর্বমোট ৪০৮ জনকে বিমানবন্দরে যাত্রীদের জন্য ব্যবহৃত বেশ কয়েকটি বাসে করে উড়োজাহাজটি থেকে আনুমানিক অর্ধ কিলোমিটার দূরে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এক ঘণ্টা ২০ মিনিটের বেশি সময় ওই ৪০৮ জনকে বিমানবন্দর টার্মিনালে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি। এসময় পানি এবং টয়লেট সুবিধার জন্য যাত্রীরা বার বার অনুরোধ করা সত্যেও ভারতের নাগপুর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা অনুমতির আনুষ্ঠানিকতার প্রসঙ্গ তুলে তা প্রদান করা থেকে বিরত থাকে। এতে করে বিশেষভাবে বৃদ্ধ এবং নারী যাত্রীরা সবচাইতে বেশি দুর্ভোগে পতিত হন। পরবর্তী সময়ে রাত একটায় টার্মিনালে যাত্রীদের লাউঞ্জে নেওয়ার অনুমতি দেন।
ইতোমধ্যে ভারতের নাগপুর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে ই-মেইলের মাধ্যমে যাত্রীদের সকালের নাশতা ও দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঢাকা থেকে নির্দেশনা প্রদান করা হয় এবং সেইসঙ্গে আশ্বস্ত করা হয় যে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স যাত্রীদের সুবিধার্থে সব বিষয়ের যাবতীয় খরচাদি বহন করবে। নাগপুর কর্তৃপক্ষ অবহিত করে যে, এই বিপুল সংখ্যক খাবার প্রস্তুতের জন্য তাদের ৩-৪ ঘণ্টা সময় প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, বোয়িং ৭৭৭ এর মতো এত বৃহদাকার যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ ওই বিমানবন্দরে নিয়মিত চলাচল করে না। বিমানের যাত্রীদের হোটেলে পাঠানের জন্য অনুরোধ করা হলে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের অস্থায়ী ল্যান্ডিং পারমিট প্রদানে অপরাগতা প্রকাশ করে। একারণে বাধ্য হয়ে যাত্রীদের টার্মিনালেই থাকতে হয়।
যাত্রীদের দেখা-শোনা করার জন্য বিমানের দিল্লিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টেশন ম্যানেজারকে বলা হলে তিনি সেখানে ইনডিগো এয়ারে করে ৯টা ১৫ মিনিটে নাগপুরে পৌঁছান। অনুমানিক ভোর ৩টার দিকে যাত্রীদেরকে পানি সরবরাহ করা হয়। সকাল ৭টার দিকে পানি ও চা দেওয়া হয় এবং সকাল সাড়ে ১০টায় নাস্তা পরিবেশন করা হয়। নাগপুর ক্যাটারিং-এর সীমিত সক্ষমতা থাকার কারণে নাস্তা দিতে সময় বেশি লেগেছে।
আরও পড়ুন: ভারতে বাংলাদেশ বিমানের জরুরি অবতরণ
বিমানের ইঞ্জিনিয়ারিং টিম উড়োজাহাজের সব কার্গো ফায়ার এক্সটিংগুইসার ব্যবহৃত হওয়ায় ওই উড়োজাহাজে যাত্রীদের দুবাইতে পরিবহন করা সম্ভব নয় জানিয়ে মতামত প্রদান করে।
সেই মোতাবেক বিমান ঢাকা অপারেশন্স কন্ট্রোল উদ্ধারকারী ফ্লাইটের পরিকল্পনা হাতে নেয়, যা ঢাকা থেকে বিজি১২৬ (দোহা-চট্টগ্রাম-ঢাকা) সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে নামার পর সকাল সাড়ে ৯টায় এ যাত্রার সময় পরিকল্পনা করা হয়।
ভারতের প্রয়োজনীয় অনুমতিপ্রাপ্ত হওয়ার পর বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা বেজে ২৮ মিনিটে ঢাকা থেকে যাওয়া উদ্ধারকারী ফ্লাইটটি যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা বেজে ৪৯ মিনিটে নাগপুরে অবতরণ করে।
নাগপুর বিমানবন্দর রানওয়ে রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য দুপুর ১টা ৩০ মিনিট থেকে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত অবগত হয়ে নাগপুরে অবতরণের পরপরই যাত্রীদের উদ্ধারের ফ্লাইটটির ক্যাপ্টেন অপেক্ষমান যাত্রীদের বিমানে আসন গ্রহণ এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে যাত্রীদের ব্যাগেজবহনকারী কন্টেনারগুলো উদ্ধারকারী ফ্লাইটে লোড করার নির্দেশনা দেন।
যাত্রীরা উড়োজাহাজে আসন গ্রহণ করলেও নাগপুর একটি আঞ্চলিক বিমানবন্দর হওয়ায় বৃহদকার উড়োজাহাজের ব্যাগেজ কন্টেনার লোড করার জন্য শুধু একটি যন্ত্র এবং অপর্যাপ্ত কন্টেনার ট্রলির কারণে কল্পনাতীত সময়ক্ষেপণের পর কন্টেনার লোডিং সমাপ্ত হয়। এরই মধ্যে রানওয়ে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিমানবন্দর বন্ধ হয়ে যায়।
পুনরায় সিএএবি কর্তৃক অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বিকাল ৫টা ৪২ মিনিটে উদ্ধারকারী ফ্লাইটটি নাগপুর থেকে দুবাইয়ের উদ্দেশে যাত্রা করে এবং নিরাপদে দুবাইতে অবতরণ করে। নাগপুর বিমানবন্দরে অপেক্ষাকালীন সময়ে যাত্রীদের দুপুরের খাবার উড়োজাহাজের অভ্যন্তরে পরিবেশন করা হয়। উড্ডয়নের পর যাত্রীদের জন্য রাতের খাবারও পরিবেশিত হয়।
যাত্রীদের দুর্ভোগের সম্ভাব্য কারণ
১. ভারতের নাগপুর একটি আঞ্চলিক বিমানবন্দর। এই বিমানবন্দরের ধারণ ক্ষমতা সীমিত।
২. ভারতের নাগপুর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা অনুমতির দীর্ঘসূত্রতার কারণে যাত্রীদের টার্মিনালে না নিয়ে বহু সময় বাসে অবস্থানের কারণে পানি এবং টয়লেটের ব্যবস্থা থেকে যাত্রীরা বঞ্চিত হন।
৩. ভারতের নাগপুর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বিমানের যাত্রীদের অস্থায়ী অবতরণের অনুমতি প্রদানে অস্বীকৃতি। ফলে বাধ্য হয়েই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ যাত্রীদেরকে হোটেলে না পাঠিয়ে টার্মিনালে অপেক্ষমান রাখতে বাধ্য হয়।
৪. ভারতের নাগপুর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ৩৯৬ জন যাত্রীর খাদ্য প্রস্তুতে অন্যান্য বিমানবন্দরগুলোর তুলনায় বেশি সময় গ্রহণ করে।
৫. ভারতের নাগপুর বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড সাপোর্ট ইকুইপমেন্টের স্বল্পতার জন্য যাত্রীদের ব্যাগেজবাহী কন্টেনার লোডিং এ দীর্ঘ সময়ক্ষেপণ করে। ফলত, বিমানবন্দর বন্ধের পূর্বে উড্ডয়ন সম্ভব হয়নি।
৬. টার্মিনালের অভ্যন্তরে যাত্রী লাউঞ্জে বিমানের দিল্লির স্টেশন ম্যানেজার প্রবেশের পাশ ইস্যুতে নাগপুর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ কালক্ষেপণ করায় যাত্রীদের সঙ্গে সর্বক্ষণ যোগাযোগ প্রতিস্থাপন সম্ভব হয়নি।
ভারতের স্থানীয় বিধিনিষেধ এবং নাগপুর বিমানবন্দরের সীমাবদ্ধতার কারণে উপরোল্লিখিত উদ্ভুত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, যা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণের বাহিরে ছিল।
স্যোশাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারিত প্রোপাগান্ডার বিষয়ে প্রতিবাদ প্রসঙ্গে:
এয়ারক্রাফটের ভেতরে ভিডিও ধারণ নিষিদ্ধ থাকার পরেও নাগপুরের ওই উদ্ভূত পরিস্থিতিকে ব্যবহার করে বর্তমান সরকার এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে বিব্রত করার জন্য একজন নারী এবং একজন পুরুষ যাত্রী ফ্লাইটের ভেতরে যাত্রী সাধারণের প্রতি উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান করেন এবং ভিডিও ধারণ করে স্যোশাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন মাধ্যমে তা প্রচার করেন।
ওই দুই যাত্রী ফ্লাইটে ক্রমাগত উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান করলেও অন্য যাত্রীরা তাদের কথায় কর্ণপাত করেননি। তারা ধৈর্য নিয়ে ফ্লাইটে অবস্থান করে কর্মরত ক্রুদের সহযোগিতা করেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স যাত্রীদের ধৈর্য ধারণ এবং ফ্লাইটে ক্রুদের সহায়তা করার জন্য তাদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞাতা প্রকাশ করছে এবং উল্লিখিত প্রোপাগান্ডার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
সর্বোপরি নিয়ন্ত্রণবর্হিভূত পরিস্থিতির কারণে যাত্রীদের সঙ্গে সংঘটিত অসুবিধার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ গভীরভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে।
৫৫ দিন আগে
‘কক্সবাজার-সৈয়দপুরে অবতরণের সময় ঝাঁকুনির কবলে পড়ছে ফ্লাইট’
কক্সবাজার ও সৈয়দপুর বিমানবন্দরের অবতরণের পথে উঁচু উঁচু গাছ থাকায় অবতরণের সময় ফ্লাইটগুলো ঝাঁকুনির কবলে পড়তে হয় বলে জানিয়েছেন নভোএয়ারের চিফ অব সেফটি ক্যাপ্টেন আশফাক-উর-রহমান খান।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে নভোএয়ার-এভিয়েশন ও পর্যটন খাতের সাংবাদিকদের সংগঠন এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরামের (এটিজেএফবি) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক কর্মশালায় বিষয়টি তিনি তুলে ধরেন।
কক্সবাজারের লং বিচ হোটেলের কোজি রেস্টুরেন্টে 'এভিয়েশন ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যান্ড ইমপ্যারেটিভস ফর এভিয়েশন সেফটি' শীর্ষক এই কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।
এতে এটিজেএফবির সদস্য ও এভিয়েশন খাতের সাংবাদিকরা অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: এইচএমপিভি: শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নির্দেশনা
কর্মশালায় নভোএয়ারের চিফ অব সেফটি ক্যাপ্টেন আশফাক-উর-রহমান খান বলেন, ‘এই দুই এয়ারপোর্টে ফ্লাইট অবতরণের পথে গাছের কারণে তীব্র বাতাসের সৃষ্টি হয়। এতে প্লেনে টার্বুলেন্সের (তীব্র ঝাঁকুনি) সৃষ্টি হয়। অনেকেভাবে এই ঝাঁকুনি পাইলটের কারণে হয়। তবে প্রকৃতপক্ষে এটা প্রাকৃতিক কারণে হচ্ছে। এ বিষয়টি অবগত করে ইতোমধ্যে বেবিচককে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও প্রেজেন্টেশনে তিনি ফ্লাইট সেফটির সঙ্গে রানওয়ের সারফেস (পৃষ্ঠ) সমতল থাকা, উন্নত নেভিগেশন সিস্টেম সংশ্লিষ্ট বলে উল্লেখ করেন তিনি। পাশাপাশি ফ্লাইট চলাকালীন ফ্লাইট কর্মীদের এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের সম্পূর্ণ নিয়মগুলো তুলে ধরেন।
ফ্লাইট সেফটির বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মফিজুর রহমান বলেন, ‘বিমানবন্দরের সেফটির বিষয়ে বলতে গেলে বার্ড হিট ও লেজার লাইটের বিষয় চলে আসে। বিভিন্ন সময়েই বার্ড হিটের কথা শোনা যায়। এটি প্রতিরোধে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সাউন্ড গান ব্যবহারসহ নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। তবে বিমানবন্দরের আশপাশের এলাকাগুলো থেকে পাখির খাওয়ার উৎসস্থল বিভিন্ন কসাইখানা, মাছ চাষ ইত্যাদি বন্ধ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিমানবন্দরের আশপাশের এলাকা থেকে পাইলটদের চোখে লেজার লাইট মারার বিষয়টিও উল্লেখযোগ্য। বিভিন্ন দেশে এধরনের লেজারলাইট মারার ঘটনা ঘটলে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ১ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের ধরে ফেলে। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তা করতে পারে না।’
কর্মশালার সভাপতিত্ব করেন এটিজেএফবির সভাপতি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) বিশেষ প্রতিনিধি তানজিম আনোয়ার।
কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন নভোএয়ারের হেড অব মার্কেটিং মেজবাহ-উল ইসলাম।
কর্মশালা অংশগ্রহণকারীদের সার্টিফিকেট দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হলো অভিনেত্রী নিপুণকে
৯৩ দিন আগে
৪১৯ জন হজযাত্রী নিয়ে ঢাকায় অবতরণ করেছে প্রথম ফিরতি হজ ফ্লাইট
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রথম ফিরতি হজ ফ্লাইট সৌদি আরব থেকে ৪১৯ জন হজযাত্রী নিয়ে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) বুশরা ইসলামের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, শুক্রবার ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে হজযাত্রীদের নিয়ে 'বিজি ৩৩২' ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
আগামী ২২ জুলাই পর্যন্ত ফিরতি হজ ফ্লাইট চলবে।
আরও পড়ুন: শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ-কাবা শরিফ তাওয়াফ করে হজ শেষ করলেন হাজিরা
ফেরত আসা হজযাত্রীদের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বোর্ডিং গেটে ফুল দিয়ে স্বাগত জানানো হয় এবং প্রত্যেক হাজিকে বিমান এয়ারলাইন্সের স্থাপিত বিতরণ বুথ থেকে জমজমের পানি সরবরাহ করা হয়।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া পানি বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোহাম্মদ মফিদুর রহমান, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কাস্টমার সার্ভিস পরিচালক হায়াত-উদ-দৌলা খানসহ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের মধ্যেই পবিত্র হজ শুরু
ফেরত আসা হাজিরা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সার্বিক সেবায় সন্তোষ প্রকাশ করেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ১০৭টি হজ-পূর্ব ফ্লাইটের মাধ্যমে ৪০ হাজার ৯৬৭ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন।
হজ পরবর্তী সময়ে হাজিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে ১২৫টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে এয়ারলাইন্সগুলো।
এর মধ্যে মদিনা-চট্টগ্রাম রুটে ৯টি ও মদিনা-সিলেট রুটে ৫টিসহ মোট ৩৪টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। জেদ্দা থেকে জেদ্দা-চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে ১২টি এবং জেদ্দা-সিলেট-ঢাকা রুটে ৫টিসহ মোট ৯১টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে।
হজ ফিরতি ফ্লাইটের অর্ধেক যাত্রী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে এবং বাকিরা সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স ও ফ্লাইনাসে করে দেশে ফিরবেন।
গত ৯ মে প্রথম হজ ফ্লাইট ছেড়ে যায়। সৌদি আরবে ফ্লাইট চলবে ১২ জুন পর্যন্ত। হজযাত্রীদের জন্য মোট ২১৮টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হয়। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পরিচালিত ১০৬টি, সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের ৭৫টি এবং ফ্লাইনাসের ৩৭টি ফ্লাইট রয়েছে।
এ পর্যন্ত ২১ জন বাংলাদেশি হাজি ইন্তেকাল করেছেন। তাদের মধ্যে ১৮ জন পুরুষ ও তিনজন নারী। এদের মধ্যে মক্কায় ১৬ জন, মদিনায় ৪ জন ও জেদ্দায় ১ জন ইন্তেকাল করেন।
আরও পড়ুন: শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ-কাবা শরিফ তাওয়াফ করে হজ শেষ করলেন হাজিরা
৩০২ দিন আগে
চাঁদে ভারতীয় মহাকাশযানের সফল অবতরণ
চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে ভারতের একটি মহাকাশযান সফলভাবে অবতরণ করেছে। বিজ্ঞানীদের কাছে এটি একটি অজানা অঞ্চল। তবে তারা বিশ্বাস করেন এখানে হিমায়িত পানি এবং মূল্যবান উপাদানের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ মজুদ থাকতে পারে। এই সফল অবতরণের মধ্য দিয়ে দেশটি মহাকাশ এবং প্রযুক্তিতে তার ক্রমবর্ধমান দক্ষতাকে প্রদর্শন করেছে।
বুধবার স্থানীয় সময় ৬টা ৪ মিনিটে ল্যান্ডারের অভ্যন্তরে একটি রোভারসহ চন্দ্র পৃষ্ঠে অবতরণ করে। এসময় দক্ষিণ ভারতীয় শহর বেঙ্গালুরুতে মহাকাশ বিজ্ঞানীরা উল্লাস প্রকাশ করে করতালি দিতে থাকে। প্রায় চার বছর আগে তাদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। এরপর প্রায় অজানা দক্ষিণ মেরু অঞ্চলের কাছে চাঁদের মাটি স্পর্শ করে প্রথম দেশ হিসেবে ইতিহাস তৈরি করেছে ভারত। চাঁদে অবতরণকারী দেশ হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীনের সঙ্গে একই তালিকায় ভারত নিজেদের যুক্ত করল।
ভারতের সফল অবতরণের কিছু দিন আগে রাশিয়ার লুনা-২৫ একই চন্দ্র অঞ্চলের দিকে অবতরণের চেষ্টা করেছিল। যেটি কয়েকদিন আগে একটি অনিয়ন্ত্রিত কক্ষপথে ঘুরতে গিয়ে বিধ্বস্ত হয়। এটি ৪৭ বছর পর প্রথম সফল রাশিয়ান চন্দ্র অবতরণ হতে পারত। রাশিয়ার রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত মহাকাশ কর্পোরেশনের প্রধান রোসকসমস ১৯৭৬ সালে চাঁদে শেষ সোভিয়েত মিশন চালান। চন্দ্র গবেষণায় দীর্ঘ বিরতির কারণে দক্ষতার অভাবকে এ ব্যর্থতার জন্য দায়ী করেছেন।
বিশ্বের বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ ভারতের উদ্বিগ্ন ও আগ্রহী জনতা সারাদেশের অফিস, দোকান, রেস্তোরাঁ এবং বাড়িতে টেলিভিশনের চারপাশে ভিড় করে। উত্তর ভারতের পবিত্র শহরখ্যাত বারাণসীসহ মন্দির ও ধর্মীয় স্থানগুলোতে ও নদীর তীরে তেলের প্রদীপ জ্বালিয়ে মিশনের সাফল্যের জন্য মঙ্গলবার হাজার হাজার মানুষ প্রার্থনা করেছিল।
ভারতের চন্দ্রযান-৩ ১৪ জুলাই দক্ষিণ ভারতের শ্রীহরিকোটার একটি লঞ্চপ্যাড থেকে যাত্রা করেছিল।
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা বুধবার এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ভারতের মহাকাশ অনুসন্ধান গবেষণা আসন্ন চন্দ্রযান-৩ মিশনের মাধ্যমে একটি অসাধারণ মাইলফলক ছুঁয়েছে। যা চন্দ্র পৃষ্ঠে একটি নিরাপদ অবতরণ করার জন্য প্রস্তুত। এই কৃতিত্ব ভারতীয় বিজ্ঞান, প্রকৌশল, প্রযুক্তি ও শিল্পের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপকে চিহ্নিত করে। যা মহাকাশ অনুসন্ধানে আমাদের দেশের অগ্রগতির প্রতীক।’
তারা বলেছে, চন্দ্রযান-৩ এর সফল অবতরণ কৌতূহল জাগিয়ে তুলতে এবং যুবকদের মধ্যে অন্বেষণের আবেগ জাগিয়ে তুলবে।
সংস্থাটি বলেছে, ‘আমরা সম্মিলিতভাবে ভারতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির পরাক্রম উদযাপন করার সঙ্গে সঙ্গে এটি গর্ব এবং একতার গভীর অনুভূতি তৈরি করে। এটি বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান এবং উদ্ভাবনের পরিবেশ গড়ে তুলতে অবদান রাখবে।’
অনেক দেশ এবং বেসরকারি কোম্পানিগুলো দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে আগ্রহী। কারণ স্থায়ীভাবে ছায়াযুক্ত গর্তগুলোতে হিমায়িত পানি ধরে রাখতে পারে যা ভবিষ্যতের মহাকাশচারী মিশনে সহায়তা করতে পারে।
আরও পড়ুন: ভারতের চন্দ্রযান-২ অভিযান ব্যর্থ
চন্দ্রযান-৩ এর ছয় চাকার ল্যান্ডার এবং রোভার মডিউলটি পেলোডের সঙ্গে স্থাপন করা হয়েছে যা রাসায়নিক এবং উপাদানগুলোর বিন্যাসসহ চন্দ্রের মাটি এবং শিলার বৈশিষ্ট্যগুলোর বিষয়ে বিজ্ঞানীদের তথ্য সরবরাহ করবে।
এর আগে ২০১৯ সালে দক্ষিণ মেরুর কাছে চাঁদে প্রায় আজানা স্থানে ভারতের একটি রোবোটিক মহাকাশযান অবতরণের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল। এটি চন্দ্রের কক্ষপথে প্রবেশ করেছিল কিন্তু তার ল্যান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছিল। যা পানির চিহ্নগুলো অনুসন্ধান করতে একটি রোভার স্থাপন করতে চূড়ান্ত অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয়েছিল। ইসরোতে জমা দেওয়া একটি ব্যর্থতা বিশ্লেষণ প্রতিবেদন অনুসারে, একটি সফ্টওয়্যার ত্রুটির কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল।
২০১৯ সালে ১৪০ মিলিয়ন ডলারের মিশনটির উদ্দেশ্য ছিল স্থায়ীভাবে ছায়াযুক্ত চাঁদের গর্তগুলো অনুসন্ধান করা যেগুলোতে পানি জমা রয়েছে বলে মনে করা হয়। যা ২০০৮ সালে ভারতের চন্দ্রযান-১ অরবিটার মিশনের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছিল।
ভারত গত বছর বিশ্বের পঞ্চম-বৃহৎ অর্থনীতি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একটি প্রযুক্তি এবং মহাকাশ শক্তিধর দেশ হিসেবে নিজেদের ক্রমবর্ধমান অবস্থান প্রদর্শন করতে আগ্রহী।
একটি সফল চন্দ্র মিশন মোদি ও ভারতের ইমেজকে বৃদ্ধি করে, যা বিশ্বব্যাপী অভিজাতদের মধ্যে তার স্থান নিশ্চিত করে। আগামী বছরের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ নির্বাচনের আগে তার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে এটি।
আরও পড়ুন: ভারতীয় চন্দ্রযানের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেয়েছে নাসা
রাশিয়ার ব্যর্থ প্রচেষ্টা এবং ভারতের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী চীন মহাকাশে নতুন মাইলফলক ছুঁয়ে যাওয়ার পরে ভারতের সফল অবতরণের প্রত্যাশা বেড়ে যায়। মে মাসে চীন তার প্রদক্ষিণকারী মহাকাশ স্টেশনের জন্য তিন ব্যক্তির ক্রু চালু করেছে। একই সঙ্গে দশকের শেষের আগে চাঁদে মহাকাশচারীদের রাখার আশা করছে। ২০২০ সালে মারাত্মক সীমান্ত সংঘর্ষের পর থেকে ভারত ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক ভেঙে গেছে।
অনেক দেশ এবং বেসরকারি সংস্থাগুলো সফলভাবে চন্দ্রপৃষ্ঠে একটি মহাকাশযান অবতরণ করার জন্য চেষ্টা করছে। এপ্রিলে জাপানি একটি কোম্পানির মহাকাশযান দৃশ্যত চাঁদে অবতরণের চেষ্টা করার সময় বিধ্বস্ত হয়। ২০১৯ সালে অনুরূপ অলাভজনক একটি ইসরাইলি মহাকাশযান কৃতিত্ব অর্জন করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু এর মহাকাশযানটি আঘাতে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।
জাপান একটি এক্স-রে টেলিস্কোপ মিশনের অংশ হিসেবে সপ্তাহের শেষে চাঁদে একটি লুনার ল্যান্ডার চালু করার পরিকল্পনা করেছে এবং দুটি মার্কিন সংস্থাও বছরের শেষ নাগাদ লুনার ল্যান্ডার স্থাপনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। তাদের মধ্যে একটি দক্ষিণ মেরুতে। আগামী বছরগুলোতে নাসা গর্তে জমা হিমায়িত পানির সুবিধা নিতে নভোচারীদের চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করার পরিকল্পনা করেছে।
আরও পড়ুন: আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল চন্দ্রযান-৩: ইসরো
৬০৫ দিন আগে
ইন্দোনেশিয়ার সৈকতে আরও ১৮৩ রোহিঙ্গার অবতরণ
দুই দিনের মধ্যে রোহিঙ্গাদের আরেকটি দল কয়েক সপ্তাহ সাগরে ভেসে বেড়ানোর পর সোমবার ইন্দোনেশিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় আচেহ প্রদেশের একটি সৈকতে অবতরণ করেছে। বিষয়টি সরকারি কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেন।
স্থানীয় পুলিশ প্রধান ফৌজি বলেন, ‘আচেহের পিডি জেলার উপকূলীয় গ্রাম মুয়ারা টিগায় উজং পাই সমুদ্র সৈকতে সন্ধ্যার সময় কমপক্ষে ১৮৫ জন পুরুষ, মহিলা ও শিশু একটি কাঠের নৌকা থেকে স্থলে নামে।’
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ার সৈকতে ৫৮ রোহিঙ্গার অবতরণ
তিনি আরও বলেন, ‘সমুদ্রে কয়েক সপ্তাহ থাকার কারণে পানিশূন্যতা ও ক্লান্তিতে তারা খুব দুর্বল ছিল।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত একটি ভিডিও দেখা যায় যে ১৮৫ জন পানিশূন্যতা ও ক্লান্তিতে কাতর রোহিঙ্গার অনেকেই সাহায্যের জন্য কাঁদছেন।
৮৩ জন পুরুষ, ৭০ জন নারী ও ৩২ জন শিশুকে সোমবার মধ্যরাতের আগে একটি গ্রামের হল থেকে সামরিক ট্রাকযোগে একটি স্কুলে স্থানান্তরিত করা হয়।
আরও পড়ুন: অবিলম্বে ২০০ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বহনকারী নৌকা উদ্ধার করুন: দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় সংসদ সদস্যদের আহ্বান
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে পিইউআইসি প্রতিনিধিদলকে কাজ করার আহ্বান মোমেনের
৮৪৪ দিন আগে