দৌলতদিয়া
ঘূর্ণিঝড় মোখা: দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া, আরিচা-কাজিরহাট রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র প্রভাব না থাকলেও শনিবার ভোর থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
প্রতিদিনের মতো শুক্রবার দিবাগত রাত ৯টার পর থেকে লঞ্চ বন্ধ রাখা হয়। সকালে চলার কথা থাকলেও ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তার অংশ হিসেবে সারা দেশের ন্যায় এই নৌপথও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত জানায় কর্তৃপক্ষ।
একই সঙ্গে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে দৌলতদিয়া-মানিকগঞ্জের আরিচা এবং আরিচা ও পাবনার কাজিরহাট নৌরুটেও লঞ্চ বন্ধ রাখা হয়েছে। এই তিন রুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় সাময়িকভাবে যাত্রীরা দুর্ভোগের শিকার হন।
আরও পড়ুন: খুলনায় বাস-লঞ্চ চলাচল বন্ধের ২য় দিনে ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ
আরিচা লঞ্চ মালিক সমিতির দৌলতদিয়া ঘাট শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক নুরুল আনোয়ার মিলন জানান, দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে স্বাভাবিকভাবে প্রতিদিন রাত ৯টার পর থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়। রাত শেষে পরদিন ভোর ৬টার পর থেকে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক থাকে।
আজও নদী শান্ত রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের কোনো প্রভাব নেই। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় মোখার সতর্কবার্তা হিসেবে সারা দেশের ন্যায় এই নৌপথেও সকল প্রকার লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সকাল থেকে বহু যাত্রী নদী পাড়ি দিতে দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটে আসেন। তাদেরকে ফেরিতে নদী পাড়ি দিতে অনুরোধ জানানো হয়। এছাড়া দৌলতদিয়া ঘাট পন্টুনে দুই-তিনটি ছাড়া বাকি সবকটি লঞ্চ পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় নিরাপদ স্থানে সরিয়ে রাখা হয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে নদী খুবই শান্ত থাকায় লঞ্চ চলাচলে তেমন সমস্যা নেই বলে তিনি মনে করেন।
শনিবার সকালে দৌলতদিয়া ঘাটে দেখা যায়, লঞ্চ ঘাটের পন্টুনে দুইটি লঞ্চ বাধা রয়েছে। বাকি কোনো লঞ্চ ঘাটে না থাকায় পন্টুন এক প্রকার ফাঁকা অবস্থায় রয়েছে।
যাত্রীদের অনেকে পন্টুনে এসে লঞ্চ বন্ধ পাওয়ায় ফিরে যাচ্ছে। একই সঙ্গে ঘাটে দায়িত্বরত লোকজন তাদেরকে ফেরিতে নদী পাড়ি দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।
এ সময় লঞ্চের স্টাফ বা কর্মচারীদের বিভিন্ন স্থানে জটলা হয়ে বসে আড্ডা দিয়ে অলস সময় পার করতে দেখা যায়।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মোখা: চাঁদপুর রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ
এদিকে লঞ্চ বন্ধ থাকায় ফেরিতে যানবাহনের পাশাপাশি যাত্রীর চাপ দেখা যায়। ঢাকামুখী ও দক্ষিণাঞ্চলমুখী উভয় দিকের ফেরিতে যাত্রীদের চাপ দেখা যায়।
অনেকে ঘূর্ণিঝড়ের হাত থেকে নিরাপদ স্থানে ছুটে চলছেন বলে আলাপকালে কয়েকজন ফেরি যাত্রী জানান।
হজরত আলী শেখ নামের এক লঞ্চের কর্মচারী বলেন, এমনিতে প্রতিদিন রাত ৯টার পর থেকে আমাদের এই রুটে লঞ্চ বন্ধ থাকে। পরদিন সকাল থেকে পুনরায় লঞ্চ চলাচল শুরু হয়। লঞ্চ চললে আমরা বেতন ঠিকমতো পাই। এখন নদী পথ খুবই শান্ত থাকলেও কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বন্ধ থাকায় আমরা ঘুরে বোড়াচ্ছি।
কুষ্টিয়া থেকে আসা ঢাকাগামী একটি দূরপাল্লার পরিবহনের ঘাট তত্বাবধায়ক ফিরোজ শেখ বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে আসা ঢাকাগামী অনেক দূরপাল্লার পরিবহনের যাত্রীরা আজ লঞ্চে নদী পাড়ি দিতে পারছে না। তাদেরকে লঞ্চ ঘাট থেকেই ফেরি ঘাটের দিকে ঘুরে যেতে বলা হচ্ছে।
আবার কেউ কেউ মুঠোফোনেই পরিবহনের তত্বাবধায়ককে লঞ্চ বন্ধের খবর জানিয়ে দেয়া হচ্ছে। আমরা সকালে ঘাটে এসে লঞ্চ বন্ধ দেখতে পাচ্ছি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) দৌলতদিয়া ঘাটের দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রাফিক পরিদর্শক আফতাব হোসেন বলেন, শনিবার সকাল থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া, দৌলতদিয়া-আরিচা ও আরিচা-কাজিরহাট রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বরিশাল-ঢাকা রুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ
ঘূর্ণিঝড় মোখার সতর্কবার্তা হিসেবে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সারা দেশের ন্যায় এই নৌপথেও লঞ্চ বন্ধ রাখা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত এসব রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকবে।
লঞ্চ না চললেও আমরা সতর্কবার্তা হিসেবে ঘাটে অবস্থান করছি বলে জানান এই কর্মকর্তা।
১ বছর আগে
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট রুটে ৬ ঘণ্টা পর ফেরি চলাচল শুরু
অষ্টম দিনের মতো কুয়াশায় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটার পর থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। একই কারণে মানিকগঞ্জের আরিচা ও পাবনার কাজিরহাট নৌপথেও ভোর সাড়ে চারটার পর থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ থাকে। দুর্ঘটনা এড়াতে কর্তৃপক্ষ এই দুই রুটের ফেরি চলাচল বন্ধ রাখে।
ফেরি বন্ধ থাকায় দৌলতদিয়ায় চারটি, পাটুরিয়ায় ছয়টি ও মাঝ নদীতে একটি ফেরি আটকা পড়ে। আরিচা ও কাজিরহাট থেকে ছেড়ে যাওয়া দুটি ফেরি মাঝ নদীতে আটকা পড়ে। বেলা পৌনে ১১টার পর থেকে কুয়াশা কম থাকায় ফেরিগুলো নির্দিষ্ট ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। দীর্ঘ সময় ফেরি বন্ধ থাকায় উভয় ঘাটে বিভিন্ন যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় আটকা পড়ে। এরমধ্যে বেশিরভাগ ছিল পণ্যবাহী গাড়ি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় জানায়, মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ভারী কুয়াশা পড়তে থাকে। রাত শেষে বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটার পর থেকে সামান্য কয়েকগজ দূরের কিছুই দেখা যাচ্ছিলনা। দুর্ঘটনা এড়াতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরিসহ সকল নৌযান চলাচল বন্ধ করে।
এসময় দৌলতদিয়ায় রো রো (বড়) ফেরি ভাষা শহীদ বরকত, শাহ জালাল, এনায়েতপুরী ও ইউটিলিটি (ছোট) হাসনা হেনা এবং পাটুরিয়ায় রো রো ফেরি কেরামত আলী, শাহ মখদুম, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান, খানজাহান আলী, ইউটিলিটি চন্দ্র মল্লিকা ও কেটাইপ ফেরি কুমিল্লা যানবাহন বোঝাই করে নোঙর করে থাকে। পাটুরিয়া থেকে ছেড়ে আসা ইউটিলিটি ফেরি রজনী গন্ধ্যা মাঝ নদীতে কুয়াশার কবলে পড়লে নোঙর করতে বাধ্য হয়। দৌলতদিয়া থেকে ছেড়ে যাওয়া রো রো ফেরি শাহ জালাল মাঝ নদীতে দীর্ঘক্ষণ আটকা থাকে। বেলা পৌনে ১১টার পর কুয়াশা কমতে থাকলে নোঙর করে থাকা ফেরিগুলো ছাড়তে থাকে।
আরও পড়ুন: ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ও আরিচা-কাজিরহাটে ফেরি চলাচল ব্যাহত
১ বছর আগে