সাগর নন্দিনী-২
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে তেলের ট্যাংকারে আবারও বিস্ফোরণ, আহত ১১
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে সোমবার সন্ধ্যায় ‘সাগর নন্দিনী-২’ নামের তেলের ট্যাংকারে আবারও বিস্ফোরণের পর ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তাসহ অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন।
প্রায় ১১ লাখ লিটার পেট্রোল ও ডিজেল বহনকারী সাগর নন্দিনী-২ নামের জাহাজটিতে শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে চারজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন। ট্যাংকারের এক কর্মী এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
আমাদের ঝালকাঠি সংবাদদাতার অনুসারে, শনিবারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর জাহাজ থেকে ৭ লাখ লিটার ডিজেল সরানো হয় এবং বড় ধরনের তেল ছড়িয়ে পড়া এড়ানো সম্ভব হয়। কিন্তু গতকালকের (সোমবার) বিস্ফোরণের পরে কিছু পেট্রোল নদীতে ছড়িয়ে পড়েছে। তাছাড়া, জেলার বাসিন্দারা এর প্রভাব এবং নিজেদের সাধারণ নিরাপত্তা নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন।
আরও পড়ুন: বরিশালে তেল ট্যাংকার বিস্ফোরণ: নিখোঁজ কাশেমের সন্ধান মেলেনি
আজ (সোমবার) সন্ধ্যা ৭টার দিকে অপর একটি জাহাজ সাগর নন্দিনী-৪ ট্যাংকার থেকে অবশিষ্ট ৪ লাখ লিটার পেট্রোল খালাসের প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখন আগুনের সূত্রপাত হয়।
এ সময় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) উদ্ধারকারী জাহাজটি সারাদিন উদ্ধার অভিযান শেষ করে নদীতে অপেক্ষা করছিল।
প্রচণ্ড বিস্ফোরণে আগুন লাগার পর সাগর নন্দিনী-৪ এর কর্মীরা পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করেন।
তবে এ ঘটনায় পুলিশসহ ১১ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. এইচএম জহিরুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে তেলের ট্যাংকার বিস্ফোরণ: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩
সর্বশেষ প্রতিবেদকের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, জেলা, উপজেলা ও নৌ ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে।
আইএসপিআর (আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে যে উদ্ধার অভিযানে সহায়তার জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি কন্টিনজেন্ট মোতায়েন করা হয়েছে এবং বরিশাল থেকে নৌবাহিনীর একটি জাহাজ ‘ডলফিন’ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।
এদিকে আগের ঘটনার জন্য জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিনের নেতৃত্বে তদন্ত দল তদন্ত শুরু করেছে এবং আজ জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিবেদন জমা দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে তেলের ট্যাংকার বিস্ফোরণ: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪
১ বছর আগে
ভোলায় ডুবে যাওয়া ‘সাগর নন্দিনী-২’ এর ৭০ ভাগ উদ্ধার
ভোলার মেঘনা নদী থেকে সাত দিন পর ডুবে যাওয়া তেলবাহী জাহাজ ‘সাগর নন্দিনী-২’এর উদ্ধার কাজ প্রায় ৭০ ভাগ শেষ হয়েছে।
রবিবার (১ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাহাজটিকে দুটি বার্জ ও জাহাজের সাহায্যে মেঘনার পানি নিচ থেকে টেনে ওপরে তোলা হয়।
আরও পড়ুন: মেঘনা নদীতে ডুবে থাকা বাল্কহেড থেকে নিখোঁজ ক্রু সদস্যের লাশ উদ্ধার
উদ্ধারকারী দল আট দিন কাজ করে রবিবার জাহাজটির দৃশ্যমান অংশ উত্তোলন করতে সক্ষম হয়েছে।
এছাড়া বাকিটুকু রবিবার সন্ধ্যার আগেই উদ্ধার কাজ শেষ করে জাহাজটি নারায়ণগঞ্জ ডকে নিয়ে মেরামত করার কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এর আগে শুক্রবার দুটি উদ্ধারকারী বার্জ জোহুর ও হুমায়ারার পাশাপাশি কোস্টগার্ড ও বিআইডব্লিউটিএ’র ডুবুরির সমন্বয় একটি টিম এ উদ্ধার কাজে শুরু করে।
সর্বশেষ নদীতে ছড়িয়ে পড়া তেল অপসারণের জন্য নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে মোংলা বন্দর থেকে অত্যাধুনিক নিঃসৃত তেল অপসারণকারী জলযান 'পশুর ক্লিনার-১' এবং একটি সহায়তাকারী জলযান ‘এমটি অগ্নিপ্রহরী’ ভোলায় পাঠায়।
এরপর বিআইডব্লিউটিএ, কোস্টগার্ড ও মালিক পক্ষের যৌথ প্রচেষ্টায় তিন দিনে ডুবে যাওয়া জাহাজের নিচে চারটি সিলিং মেশিন বসিয়ে সেন্টারিং করা হয়।
এরপর উদ্ধারকারী বার্জ জাহাজ জোহুর ও হুমায়ারা দিয়ে টেনে তোলা হয় জাহাজটি। এতে ১১ লাখ ৫০ হাজার ডিজেল ও অকটেন ছিল।
পুরো জাহাজটি উত্তোলনের পর জানা যাবে জাহাজে এখনও কি পরিমাণ তেল রয়েছে। তবে জাহাজে থাকা তেল যাতে নদীতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তেল অপসারণের কাজ করেছে কোস্টগার্ড ও বিআইডব্লিউটিএ।
উদ্ধার হওয়া জাহাজের পুরো তেল অপসারণ করে খালি হওয়ার পরে কারগো ম্যাসেলের সাহায্যে সাগর বধূ-৩ জাহাজের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ ডকে নিয়ে মেরামত করার কথা জানালেন বিআইডব্লিউটিএ যুগ্ম পরিচালক (উদ্ধার) মো. আবদুস ছালাম।
বর্তমানে জাহাজটি থেকে জ্বালানি তেল অপর একটি ট্যাংকার সাগর নন্দিনী-৩ এ নেয়া হচ্ছে।
এ ছাড়া আরেকটি ট্যাংকার রিজার্ভ রাখা হয়েছে।
এদিকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করতে এখন কাজ করছে জাহাজ কর্তৃপক্ষ। পুরোপুরি উদ্ধার কাজ শেষে হিসাব নিকাশ করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানানো হবে বলে জানিয়েছেন এস.এইচ.আর নেভিগেশন কোম্পানি লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মাহতাবুর রহমান।
ভোলা কোস্ট গার্ড দক্ষিণ জোনের জোনাল কমান্ডার ক্যাপ্টেন এম সাহেদ সাত্তার (ট্যাজ) পিএসসি, বিএন জানান, কয়েক ঘন্টার মধ্যে ডুবে যাওয়া জাহাজটি উদ্ধারের পর নারায়ণগঞ্জ এর উদ্দেশ্যে রওনা হবে।
উল্লেখ্য, রবিবার (২৫ ডিসেম্বর) ভোর রাতে চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুরের উদ্দশ্যে যাচ্ছিল পদ্ম ওয়েল কোম্পানির সাগর নন্দিনী-২ নামের কার্গো জাহাজ।
ঘন কুয়াশার কারণে সেটি ভোলার তুলাতলী মাঝে চর পয়েন্টে অপর একটি জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে যায়। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এছাড়া মালিক পক্ষ ভোলা সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে।
আরও পড়ুন: মেঘনা নদীতে সাড়ে ৩ হাজার বস্তা চিনিবোঝাই ট্রলার ডুবি
ভোলায় মেঘনা নদীতে বালু বোঝাই বাল্কহেড ডুবি
১ বছর আগে
মেঘনায় ডুবে যাওয়া তেলবাহী জাহাজের উদ্ধার কাজ শুরু
ভোলার মেঘনা নদীতে ১১ লাখ লিটার জ্বালানি তেলসহ ডুবে যাওয়া সাগর নন্দিনী-২ এর উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে দুটি উদ্ধারকারী বার্জ জোহুর ও হুমায়ারা দিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু হয়। সকাল থেকে নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড ও বিআইডব্লিউটিএ, ডুবুরির সমন্বয় একটি টিম এ উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। তবে উদ্ধার করতে কতো সময় লাগবে তা এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। জোয়ার- ভাটার ওপর নির্ভর করে ও জাহাজের ভিতর জ্বালানি তেল থাকায় উদ্ধার কাজে সময় কিছুটা বেশি লাগবে বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ।
আরও পড়ুন:মেঘনায় ১১ লাখ লিটার জ্বালানিসহ ডুবল জাহাজ
অপরদিকে মেঘনা নদীতে তেল ছড়িয়ে পড়ায় মাছের মৃত্যু আশংকা রয়েছে। জেলেরা বলছে, ইতোমধ্যে তারা দুই চারটি অল্প পরিমাণ মরা মাছ ভাসতে দেখেছেন।
বিআইডব্লিউটিএ'র পরিচালক মো. শাজাহান মো. জানান, বুধবার দুপুরের পর থেকে তাদের উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নিমজ্জিত তেলবাহী জাহাজের উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছে। নদীতে ড্রেজিং করা হচ্ছে। জোয়ার ভাটার ওপর নির্ভর করে উদ্ধার কাজ চলছে। এক্সক্লুসিভ মেটিরিয়াল থাকায় কোন ঝুঁকি নেয়া হচ্ছে না। এর জন্য সময় বেশি লাগছে। ওই জাহাজের ভিতরে থাকা তেল আগে উদ্ধার করা হবে। তবে আগামী রবিবারের মধ্যে উদ্ধার করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
নদীর তীরবর্তী মাছ ধরা জেলেরা জানান, তেলের জাহাজডুবির পর প্রথম দুই তিন দিন ওই এলাকার পানিতে তেল ভাসতে দেখা গেছে। তেলের ঝাঝালো গন্ধে জেলেরা মাছ ধরতে পারেনি। নদীর পানি ব্যবহার করা যায়নি।তবে এখন আর নদীতে তেল ভাসতে দেখা যাচ্ছে না। নদীর পানিও স্বাভাবিক হয়ে আসছে।
জেলে হোসেন জানান, তিনি গত পরশু মেঘনা নদীতে দুই চারটি ছোট ছোট ইলিশ ও পোয়া মাছ মরা ভাসতে দেখেছেন।
জেলেরা আরও জানান, এখনও ওই এলাকার নদীতে মাছ কম পাওয়া যাচ্ছে। ভোলা সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. এরশাদ বলেন, নদীতে যে পরিমাণ তেল ভাসতে দেখা গেছে, তাতে এখনও তুলনামূলক ক্ষতি দেখছেন না।
আরও পড়ুন:মেঘনায় তেল ছিটকে পরিবেশ বিপন্ন, ৩৬ ঘণ্টা পরও উদ্ধার হয়নি জাহাজ
এদিকে পরিবেশ দূষণ থেকে রক্ষায় কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের একটি দল ল্যামট মেশিন বোট দিয়ে বিশেষ প্রযুক্তির ব্যবহার করে নদী থেকে তেল অপসারণের কাজ আজও চলমান রয়েছে বলে কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা শফিউল কিঞ্জল।
ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদ উল্লাহ জানান, নদীর পানিতে তেল ছড়িয়ে পড়ায় ছোট ইলিশ মাছসহ বিভিন্ন মাছ, মাছের ডিম, রেনুসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণীর ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোথাও কোন মাছ, মাছের পোনা কিংবা জলজ প্রাণী মারা গেছে বলে এমন কোন খবর পাওয়া যায়নি।
ভোলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক তোতা মিয়া সাংবাদিকদের জানান, মেঘনা নদীতে জাহাজ ডুবিতে মেঘনা নদীতে বিপুল পরিমাণ তেল ছড়িয়ে পড়েছে। সেই তেলযুক্ত পানির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য বরিশাল পাঠানো হয়েছে। এখনও নমুনার বিপোর্ট পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, গত রবিবার ভোর রাতে চট্রগ্রাম থেকে ১১ লাখ লিটার তেল নিয়ে চাঁদপুরের উদ্দেশে যাচ্ছিল পদ্মা ওয়েল কোম্পানির সাগর নন্দিনী-২ নামের একটি জাহাজ ঘন কুয়াশার কারণে সেটি ভোলার তুলাতলী মাঝের চর পয়েন্টে অপর একটি জাহাজের সঙ্গে থাক্কা লেগে ডুবে যায়।
আরও পড়ুন: মেঘনায় তেলবাহী জাহাজডুবি: ৩ দিনেও শুরু হয়নি উদ্ধারকাজ, আরও তদন্ত কমিটি গঠন
১ বছর আগে