ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা
থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনে কক্সবাজারে পর্যটকদের ভিড়
এবারও নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত কক্সবাজার। ৩১ ডিসেম্বরকে ঘিরে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের শহর কক্সবাজার যেন পর্যটকের মেলায় পরিণত হবে।
বছরের এই দিনটিতে তরুণ-তরুণীরা হইচই আর আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠে। বাদ যান না শিশু আর প্রবীণরাও।
আর তাই শহরের হোটেল-মোটেল ও পর্যটন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো আলাদা করে প্রস্তুত রয়েছে। ইংরেজি নতুন বছরকে বরণে বিভিন্ন হোটেলে থাকছে ইনডোর আয়োজন। তবে কয়েক বছরের মতো এবারও সমুদ্রসৈকতসহ আউটডোরে কোনো আয়োজন নেই।
ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার (টোয়াক) সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম আনু জানান, ইংরেজি বছরের শেষ দিন মানে থার্টি ফার্স্ট। দেশের সব পর্যটকদের দৃষ্টি থাকে কক্সবাজারে। কারণ সৈকতে ২০২২ সালের শেষ সূর্যাস্ত উপভোগ এবং বিদায় জানাতে এবং নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে রোমাঞ্চকর অনুভূতি কক্সবাজার থেকে পাওয়া যায়। তাই ইতোমধ্যে কক্সবাজারে পর্যটকরা চলে এসেছে। পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত কক্সবাজারও।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাইরে বড় কোনো অনুষ্ঠান না থাকলেও বিভিন্নভাবে বড় পরিসরে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন হবে কক্সবাজারে। শেষ সূর্যাস্তকে বিদায় ও রাতে বিভিন্ন হোটেলের ইনডোরে নতুন বছরকে বরণ করতে থাকছে নানা আয়োজন।
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল ও গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে লাখো পর্যটকের সমাগম ঘটতে পারে। সে বিষয়কে কেন্দ্র করে হোটেল-মোটেল ও গেস্টহাউসগুলো আলাদা করে প্রস্তুতি নিয়েছে।
তিনি আরও জানান, নববর্ষের সাজসজ্জাসহ নানা ধরনের কারুকার্য সম্পন্ন করেছে। থার্টি ফাস্ট নাইটকে ঘিরে ২৯ ডিসেম্বর থেকে পর্যটকরা আসছেন। ৩০ ডিসেম্বর থেকে প্রায় ৭০ ভাগ হোটেলের রুম বুকিং হয়ে গেছে। তবে অন্যান্য বছর থার্টি ফাস্ট নাইটের, অর্থাৎ ৩১ ডিসেম্বরের আগে ২৭ ডিসেম্বরের মধ্যে শতভাগ বুকিং হয়ে যায়। আউটডোরে অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকলে শতভাগ পর্যটক ভরপুর থাকতো।
আবুল কাশেম সিকদার জানান, তারকামানের হোটেলগুলোতে বরাবরের মতোই ফুল বুকিংয়ের প্রত্যাশা রয়েছে। সবকটি তারকা হোটেল থার্টি ফার্স্ট নাইটের বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এসব অনুষ্ঠানের জন্য অগ্রিম টিকিটও বিক্রি শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
ইনানীর তারকা হোটেল রয়েল টিউলিপের এজিএম নাভেদ চৌধুরী বলেন, ১ জানুয়ারি পর্যন্ত আমাদের হোটেল শতভাগ অগ্রিম বুকিং রয়েছে। থার্টি ফার্স্ট নাইট ও নতুন বছর বরণে নানা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। দুইজন তারকা শিল্পী অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করবেন।
একইভাবে তারকামানের হোটেল ওশ্যান প্যারাডাইস, কক্স টুডে, সায়মন বিচ ও লং বিচেও নানা জমকালো আয়োজন থাকবে বলে জানা গেছে। এছাড়া আরও কিছু বড় মানের হোটেলেও নানা অনুষ্ঠান থাকবে।
জেলা প্রশাসন ও পুলিশ জানিয়েছে, নতুন বছর বরণকে কেন্দ্র করে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। একইভাবে জেলা প্রশাসন বিশেষ মনিটরিং সেল গঠন করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকবে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান বলেন, সরকারিভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে এবারও উন্মুক্ত স্থানে থার্টি ফার্স্ট নাইটের কোনো আয়োজন করা যাবে না। তাই কক্সবাজারেও কাউকে উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান জানান, কক্সবাজারে সাড়ে চারশ’ আবাসিক হোটেলে প্রায় দেড় লাখ লোক রাত্রিযাপন করতে পারেন। নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিটি হোটেলে সিসিটিভি ক্যামেরা নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি জানান, ১ জানুয়ারি থেকে সেন্টমার্টিন জাহাজ চলাচল শুরু হলে সেখানে ও হিমছড়ি, ইনানী ও পাটুয়ারটেক জোনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে।
জেলা প্রশাসক মো. শাহীন ইমরান বলেন, কক্সবাজার শুধু দেশের নয় পৃথিবীর একটি আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র। তাই যেকোনো বিশেষ দিন উপলক্ষে কক্সবাজারে পর্যটকের ভিড় থাকে। এবারও পর্যটকরা থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে কক্সবাজারমুখী হবে বলে প্রত্যাশা করছি।
তিনি আরও বলেন, পর্যটকদের সেবার মান বাড়াতে এবং সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মনিটরিং কমিটি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করবে।
আরও পড়ুন: নিঝুম দ্বীপ ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
বড়দিন উদযাপনে পাহাড়ে খ্রিস্টান পল্লীতে উৎসবের আমেজ
১ বছর আগে