রঙিন
ফুলের মালা দায়িত্ব আরও বাড়িয়ে দিয়েছে: ফেরদৌস
রঙিন থেকে সাদাকালো পোস্টারেও জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ফেরদৌস।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা ১০ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে জয়ী হয়ে এমনটা আবারও প্রমাণ দিলেন তিনি। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী থেকে প্রায় ৬৩ হাজার ভোট বেশি পেয়ে এই তারকা এগিয়ে ছিলেন।
নিজের এই জয়কে তার প্রতি জনগণের ভালোবাসা বলছেন ফেরদৌস। সেই সঙ্গে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তার চোখেও পানি চলে আসে।
আরও পড়ুন: ঢাকা-১০ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফেরদৌস
ফেরদৌস বলেন, ‘বাবাকে খুব মিস করছি। আমার শ্বশুর থাকলেও খুব খুশি হতেন। তিনি একজন সংসদ সদস্য ছিলেন। যিনি আমার অনুপ্রেরণা ছিলেন। কীভাবে মানুষকে ভালোবাসা যায়, তার কাছ থেকে শিখেছি। কীভাবে সাধারণ মানুষ হয়েও অসাধারণভাবে ভালোবাসা যায়, সেটাও জেনেছি। গণমানুষের নেত্রী শেখ হাসিনাকে দেখেছি। তাদের কাছ থেকে শেখার চেষ্টা করেছি।’
কর্মী ও সাধারণ মানুষের প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে ফেরদৌস বলেন, ‘এই ফুলের মালা আমার দায়িত্ব আরও বাড়িয়েছে। আমি সেবক হতে চেয়েছিলাম, সেবা করব। মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম সেবার করার, করেছিও। জনগণ মালা পরিয়ে দিয়েছে, এখন নিশ্চিত হয়ে তাদের পাশে দাঁড়াব। আমি নেতা-কর্মীদের প্রতি ভীষণ কৃতজ্ঞ। তারা ছাড়া এ জয় কোনোভাবেই সম্ভব ছিল না।’
আরও পড়ুন: সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করব: ফেরদৌস
এদিকে জয়ের পরেই নতুন কর্মসূচির ঘোষণা করেছেন ফেরদৌস আহমেদ। সোমবার (৮ জানুয়ারি) বিকাল তিনটার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিনি। এরপর তিনি তার নির্বাচনি এলাকার পোস্টার অপসারণ করার কথা জানান।
বিজয়ী হয়ে ফেরদৌস গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করার জন্য আমার নির্বাচনী এলাকার সব ভোটারদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এলাকার উন্নয়ন করতে চাই।’
আরও পড়ুন: ভাষানটেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন অভিনেতা ফেরদৌস
১১ মাস আগে
সরিষা ফুলের হলুদ হাসিতে রঙিন যশোরে দিগন্তজোড়া মাঠ
যশোরে সরিষা ফুলের হলুদ হাসিতে রঙিন হয়ে উঠেছে যশোরে দিগন্তজোড়া মাঠ। যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই হলুদের চাদরে ঢাকা বিস্তীর্ণ মাঠ। জেলার বিস্তীর্ণ মাঠগুলো যেন হলুদ বর্ণে ঘেরা স্বপ্নীল পৃথিবী। সরিষার সবুজ গাছের হলুদ ফুল সোনাঝরা রোদে যেন ঝিকিমিকি করছে।
কৃষি বিভাগ জানান, নিকট-অতীত যে কোনো সময়ের অপেক্ষা চলতি মৌসুমে যশোরাঞ্চলে রেকর্ড পরিমাণ রবি ফসলের আবাদ হয়েছে। এসব ফসলের সিংহভাগই জুড়ে আছে সরিষা আবাদ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরাঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে যশোরাঞ্চলের আওতাভুক্ত ছয় জেলা- যশোর, মাগুরা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। এই ছয় জেলায় ৫৪ হাজার ৯০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও সেখানে চাষ হয়েছে ৭২ হাজার ৯২৫ হেক্টর জমিতে।
এর মধ্যে যশোরে ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও সেটি প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে চাষ ২৪ হাজার ৮৪৮ হেক্টর জমিতে। এর বাইরে ঝিনাইদহে ৯ হাজার ৭৭৭ হেক্টরের বিপরীতে চাষ হয়েছে ১১ হাজার ১১২ হেক্টর, মাগুরায় ১৫ হাজার হেক্টরের বিপরীতে ১৬ হাজার ৩৫৫ হেক্টর, কুষ্টিয়ায় ৯ হাজার ১৫০ হেক্টরের বিপরীতে ১১ হাজার ৬৪৫ হেক্টর, চুয়াডাঙ্গায় ২ হাজার ৮০০ হেক্টরের বিপরীতে তিন হাজার ১৩৫ হেক্টর ও মেহেরপুর জেলায় চার হাজার ৩৭০ হেক্টরের বিপরীতে পাঁচ হাজার ৮৩০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ সুরমায় সাম্মাম ফসল কর্তন কর্মসূচির উদ্বোধন
কৃষি বিভাগ বলছে, অন্যান্য বছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম সরিষা আবাদ হলেও এবছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৮ হাজার ৮৩৫ হেক্টর জমিতে বেশি সরিষা আবাদ হয়েছে। সরিষা আবাদের জন্য আবহাওয়া ভালো হওয়ায় কৃষকরাও বেশ আশান্বিত।
যশোর সদর উপজেলার সুলতানপুর মাঠে কথা হয় চাষি আবু বক্কারের সঙ্গে তিনি বলেন, এবার তাদের মাঠে ১৭০ বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। এসব খেতে টরি-৭ ও টরি-১৪ নামের উন্নত জাতের সরিষার দু’টি জাত আবাদ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এবছর সরিষা চাষের জন্য আবহাওয়া শতভাগ অনুকূলে। সরিষা বপণের সময় প্রয়োজনী বৃষ্টি পাওয়ায় কোনো সমস্যা হয়নি। শেষমেষ ফুল ও ফল আসা পর্যন্তও কোনো বড় ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়ায় এবছর নিকট-অতীত যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো ফলন হবে বলে তিনি আশা করেন।
একই মাঠে কথা হয় চাষি হেমায়েত ও ইদ্রিস আলী সঙ্গে এ সময় তারা বলেন, এ বছর সয়াবিনসহ যাবতীয় ভোজ্য তেলের দাম দ্বিগুণেরও বেশি হওয়ায় অধিকাংশ কৃষকরা সরিষা আবাদের প্রতি ঝুঁকেছেন। ধান চাষে কখনও লাভ কখনও লোকসান হওয়ায় কৃষকরা চাষের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলায় তারা সরিষা আবাদ করে লাভ করবেন বলে ধারণা করছেন।
এছাড়াও তারা আরও বলেন, ধানসহ অন্য ফসলে খরচ বেশি লাভ কম। অথচ সরিষা চাষে খরচ কম লাভ বেশি। এক বিঘা জমিতে বীজ, সার, সেচ ও মাড়াই করে বাজারে তোলা পর্যন্ত খরচ হয় তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা। সেখানে এক বিঘা জমিতে সরিষার ফলন হয় চার থেকে পাঁচ মণ। প্রতিমণ সরিষা বাজারে পাঁচ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে টেকসই খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিত করতে ছাদ কৃষি প্রয়োজন: এফএও
হাবিবুর রহমান নামে আরেক কৃষক বলেন, সরিষা আবাদের পাশাপাশি একই মৌসুমে কৃষক আমন ও বোরো আবাদ করে বাড়তি মুনাফা পাচ্ছে। সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে বিভিন্ন সবজির আবাদ করেও তারা লাভ হচ্ছেন।
তিনি বলেন, আমাদের এলাকায় অনেক চাষিই এখন ধান আবাদের পাশাপাশি সরিষা আবাদ করে দ্বিগুণ লাভ করছে।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মঞ্জুরুল হক বলেন, চলতি মৌসুমে যশোরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১১ হাজার ৮৪৮ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। যা কৃষির জন্য খুবই ইতিবাচক।
তিনি বলেন, জমির উর্বরতা ধরে রাখার জন্য শস্য নিবিড়তার জন্য কৃষককে সরিষা আবাদে উৎসাহিত করা হচ্ছে। কারণ সরিষা আবাদ করে একই জমিতে সহজেই তিন ফসলের চাষ করা সম্ভব। এজন্য অধিকাংশ কৃষককে সরিষা আবাদের জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যশোরাঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, সরকার ভোজ্য তেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে রবি ফসলের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এজন্য যশোরসহ দক্ষিনাঞ্চলের জেলাগুলোতে অন্য ফসলের সঙ্গে সরিষা আবাদের চাষির সংখ্যা বাড়ছে। এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষার ভালো ফলন হবে বলে তিনি আশা করেন।
আরও পড়ুন: বোরোর উৎপাদন বাড়াতে ১৭০ কোটি টাকার প্রণোদনা
১ বছর আগে