পূর্ব এশিয়া
দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতে হবে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই অঞ্চলের জনগণের পারস্পরিক সুবিধার জন্য দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, এই অঞ্চলের জনগণের পারস্পরিক সুবিধার জন্য দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা প্রয়োজন।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে কোরিয়ার বিদায়ী রাষ্ট্রদূত লি জাং-কিউন তার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ কথা বলেন।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: ‘আমি আপনাদের সঙ্গে আছি’: সাংবাদিকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি প্রজন্মের মধ্যে দেশকে উন্নত দেশে রূপান্তরের ক্ষেত্রে কোরিয়ার সাফল্যের প্রশংসা করেন।
তিনি উল্লেখ করেন যে এই সাফল্য বাংলাদেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টায় অনুপ্রাণিত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণ কোরিয়ায় তার দু’টি সফরের কথা স্মরণ করে বলেছেন যে দ্বিতীয় সফরে তিনি সেখানে বিস্ময়কর উন্নয়নের সাক্ষী হয়েছেন।
রাষ্ট্রদূত লি জাং-কেউন দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, অফিসিয়াল উন্নয়ন সহায়তা (ওডিএ), কর্মসংস্থান এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, ২০২০ সালে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল দেড় বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা বর্তমানে তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে ২০২০ সালে ওডিএ ছিল ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যেখানে এখন এটি তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, কোরিয়া জাহাজ নির্মাণ খাত থেকে দক্ষ জনশক্তি নিতে আগ্রহী।
তিনি গত ১৪ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশে তার মেয়াদে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ তার হৃদয়ে আছে।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোহাম্মদ তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ইউএনইএসসিএপি’র ৭৯তম অধিবেশনে ৪ দফা সুপারিশ প্রধানমন্ত্রীর
১ বছর আগে
২০২২ সালে রেকর্ড ৫ হাজার ৮৯১ বাংলাদেশি কর্মী দ.কোরিয়ায় গেছেন
২০২২ সালে রেকর্ড পাঁচ হাজার ৮৯১ বাংলাদেশি কর্মী দক্ষিণ কোরিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন। বর্তমানে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি বাংলাদেশি শ্রমিকদের কাছে একটি ‘জনপ্রিয় ও পছন্দের’ গন্তব্য।
বাংলাদেশে দক্ষিণ কোরিয়ার দূতাবাসের মতে, গত বছর তারা এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেম (ইপিএস) প্রোগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে ‘নিম্ন ও মাঝারি’ দক্ষ কর্মী নিয়েছে।
আরও পড়ুন: জর্ডানে আগামী বছর ১২ হাজার বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ
কোভিড-১৯ মহামারির কারণে প্রায় দেড় বছর বিদেশি ইপিএস কর্মীদের ভর্তি স্থগিত করার পর, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে দ. কোরিয়ার সরকার আবার কর্মী নেয়া শুরু করে।
দক্ষিণ কোরিয়া ২০০৮ থেকে ২০২২ পর্যন্ত ইপিএস এর মাধ্যমে ২৮ হাজার ৬৯৭ জন বাংলাদেশি কর্মী নিয়েছে এবং আশা করা হচ্ছে যে এই বছর প্রতি সপ্তাহে প্রায় ১০০ থেকে ১২০ কর্মী নেবে দ. কোরিয়া।
বাংলাদেশে কোরিয়ান মিশন সোমবার জানিয়েছে, পূর্ব এশিয়ার দেশটি বাংলাদেশি প্রবাসীদের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য, কারণ সেখানে তারা মাসে ন্যূনতম এক হাজার ৪২০ ডলার উপার্জন করতে পারে। যা দক্ষিণ কোরিয়ার আইনত গ্যারান্টিযুক্ত ন্যূনতম মজুরি।
এতে আরও বলা হয়েছে, ওভারটাইম পেমেন্ট মিলে মাসিক বেতন দুই থেকে তিন হাজার মার্কিন ডলারের বেশি হতে পারে।
বাংলাদেশে কোরিয়ান মিশন আরও জানায়, ‘এছাড়াও, দক্ষিণ কোরিয়া বিদেশি কর্মীদের দুর্ঘটনা বীমাসহ চার ধরণের সামাজিক নিরাপত্তা বীমা গ্রহণে উৎসাহিত করে।’
মিশন জানায়, ২০০৭ থেকে ২০২২ পর্যন্ত প্রায় ৩২০ জন কর্মী বাংলাদেশে ফিরে এসেছেন, যারা প্রস্থান (দেশে ফিরে আসা) গ্যারান্টি বীমা এবং বিমান ভাড়ার বীমার টাকা না নিয়েই বাংলাদেশে ফিরে এসেছেন। যা ব্যক্তিভেদে ৩০ হাজার টাকা থেকে চার লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
কোরিয়ান সরকার অবশ্য ঢাকায় ইপিএস সেন্টারের মাধ্যমে দেশে ফিরে আসা বাংলাদেশি শ্রমিকদের অবস্থান ও যোগাযোগের তথ্য শনাক্ত করতে বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাদের অর্থ ফেরত দেয়ার চেষ্টা চালিয়েছে।
যেসব কর্মী বীমার টাকা পাবেন তার মৃত্যু হলে, উপযুক্ত নথি উপস্থাপন করলে তার স্ত্রী, সন্তান বা বাবা-মা ওই টাকা পেতে পারেন।
এ বছরের প্রবাসী শ্রমিকদের প্রথম ব্যাচ আজ রাতে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কোরিয়ান এয়ার কোম্পানির চার্টার্ড ফ্লাইটে দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্দেশে রওনা হবে।
প্রথম ব্যাচে ৯২ জন বাংলাদেশি শ্রমিকের মধ্যে ৬৯ জন নতুন এবং ২৩ জন পুনরায় ভর্তি হয়েছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি কর্মী নেবে মলদোভা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশ থেকে ১২ হাজারের বেশি পোশাক শ্রমিক নেবে জর্ডান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
১ বছর আগে