আখাউড়া
আখাউড়ায় ভাইয়ের হাতে ভাই খুনের অভিযোগ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে বড় ভাইকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের নোনাসার গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আব্দুর রহমান (৫০) এবং অভিযুক্ত খলিলুর রহমান ওই গ্রামের আব্দুল কাদির মিয়ার ছেলে।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রথমবারের মতো হাফ ম্যারাথন দৌড় অনুষ্ঠিত
পরিবার সূত্রে জানা যায়, আব্দুর রহমানের বসতবাড়ি ও পুকুরের জায়গা নিয়ে ছোট ভাই খলিলুর রহমান সঙ্গে একাধিক মামলাসহ ২০ বছর ধরে বিরোধ চলে আসছে। সোমবার দুই ভাইয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়।
এরই জের ধরে সন্ধ্যায় আব্দুর রহমান মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে বাড়িতে আসার পথে খলিলুর রহমান ও তার ছেলে তানভীর ও বাবুসহ পাঁচ থেকে ছয়জনের একটি দল লোহার রড দিয়ে তাকে বেধরক পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।
পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুল ইসলাম জানান, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত খলিলুর রহমান পলাতক।
ওসি আরও বলেন, এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুইজনকে থানায় আনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মহাসড়কে দুর্ঘটনা কমাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাইওয়ে পুলিশের অভিযান শুরু
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রাক্টর খাদে পড়ে নিহত ২
আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন কাজ ধীরগতিতে হওয়ায় রেলমন্ত্রীর অসন্তোষ
আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন পরিদর্শন করে এটির নির্মাণ কাজ ধীরগতিতে হওয়ায় রেলমন্ত্রী এবং ভারতীয় হাইকমিশনার অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
রেলমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যেই তিনবার সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। ঠিকাদারেরা বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে যদি কাজ করতে ব্যর্থ হয়। তবে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বহিষ্কার করে বিকল্প ঠিকাদার নিয়োগ করা হবে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
বৃহস্পতিবার রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নির্মাণাধীন আখাউড়া থেকে আগরতলা পর্যন্ত নতুন রেলপথের নির্মাণকাজ পরিদর্শনকালে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। এ সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী এ প্রকল্প নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেছেন। এটি আমাদের দুই দেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি রুট। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আটটি ইন্টারচেঞ্জ পয়েন্টের মধ্যে পাঁচটি ইতোমধ্যে চালু হয়েছে, এটি ৬ নাম্বার হবে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও উভয় দেশের মধ্যে যাতায়াতের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন: স্টেশন পরিদর্শনে এসে দুই কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করলেন রেলমন্ত্রী
এসময় ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিশ্চয়তা প্রদান করেন যে আগামী জুনের মধ্যে মাটি ভরাটের কাজ সম্পন্ন করবেন এবং এ বছর ডিসেম্বরের মধ্যেই রেলপথ চালু করার আশ্বাস দেন।
এ সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য দেন।
এই রেলপথটি ভারতের অনুদানে নির্মিত হচ্ছে। রেলপথের মোট দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে ১৫ কিলোমিটার। এরমধ্যে মাত্র ৫ কিলোমিটার ভারতের অংশ এবং বাকী বাংলাদেশ প্রান্তে। নির্মাণ এবং পরামর্শক কাজে যুক্ত রয়েছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমাকো রেল এন্ড অব ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। প্রকল্পের অগ্রগতি ৫৪ দশমিক ৫০ শতাংশ।
পরিদর্শনকালে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদার, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) কামরুল আহসানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: অর্ধেক যাত্রী নিয়ে ট্রেন চলাচলের সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি: রেলমন্ত্রী
পদ্মা সেতুর সড়ক ও রেলপথ একসাথে উদ্বোধনে ‘সংশয়’ রেলমন্ত্রীর
আখাউড়ায় অটোচালকের লাশ উদ্ধার
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় নাজিরুল ইসলাম (৩৫) নামের এক অটোচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে পৌর শহরের মসজিদপাড়া বাইপাস পল্লী বিদুৎ অফিস সংলগ্ন এলাকার রাস্তার পাশ থেকে তার লাশ উদ্ধার করে আখাউড়া থানা পুলিশ।
নিহত নাজিরুল ইসলাম সদর ইপজেলার রামরাইল ইউনিয়নের সেন্দা গ্রামের মৃত আবুল ছালেকের ছেলে।
আরও পড়ুন: কীর্তনখোলায় নিখোঁজ ব্যক্তির লাশ উদ্ধার
নিহতের স্ত্রী মাহমুদা বেগম বলেন, ‘বুধবার সন্ধ্যায় অটো নিয়ে বের হন নাজিরুল ইসলাম। রাতে ফিরে না আসায় খোঁজাখুঁজি করি। পরে খবর পেয়ে আখাউড়া থানায় গিয়ে লাশ শনাক্ত করি।’
আখাউড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মঈন উদ্দিন জানান, রাতে সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স নিয়ে টহলরত অবস্থায় রাত সোয়া ১টার দিকে পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সংলগ্ন রাস্তার পাশে এক ব্যক্তিকে পড়ে থাকতে দেখে কাছে গিয়ে তাকে মৃত অবস্থায় পেয়ে থানা নিয়ে আসি। নিহত ব্যক্তির বাম পায়ের ছুরির আঘাত ও দুই হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলের কাটা চিহ্ন পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় নিরাপত্তা কর্মীর লাশ উদ্ধার
ময়নাতদন্তের জন্য লাশ জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
আখাউড়ায় মাস্ক না পরায় ৯ জনকে জরিমানা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় মাস্ক না পরায় ক্রেতা বিক্রেতাসহ ৯ জনকে জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ওমিক্রন রোধ ও সরকারি বিধিনিষেধ কার্যকর করতে উপজেলা প্রশাসন এ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে।
সোমবার পৌরশহরের সড়কবাজার, বড়বাজারসহ রেলস্টেশন এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়।
উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মো. রফিকুল ইসলাম জানান, সরকারি দায়িত্ব প্রতিপালন ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে উপজেলা প্রশাসনের সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম এ অভিযান চালান। এসময় মাস্ক না পরায় ৯ জনকে আড়াই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম বলেন,ওমিক্রন রোধ ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। পরবর্তী সরকারি আদেশ না আসা পর্যন্ত এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন: বিধিনিষেধ না মানলে লকডাউনের চিন্তা রয়েছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
এখনই লকডাউন দেয়ার কথা ভাবছি না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আখাউড়ায় গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে উধাও ভুয়া এনজিও
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ঋণ দেয়ার নামে প্রতারণা করে কয়েক শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে‘গ্রাম উন্নয়ন কেন্দ্র’নামে একটি এনজিও উধাও হয়ে গেছে। ঋণ গ্রহীতা গ্রাহকরা সোমবার সকালে ঋণ নিতে এসে দেখেন অফিসে তালা ঝুলানো। পরে ভুয়া এনজিও’র খপ্পরে পড়ে সর্বশান্ত ঋণ গ্রহীতারা থানায় অভিযোগ জানান।
ভুক্তভোগীরা জানায়, প্রায় এক মাস আগে ‘গ্রাম উন্নয়ন কেন্দ্র’এনজিও সংস্থার কয়েকজন মাঠ কর্মী ঋণ দেয়ার নামে পৌরশহরসহ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে প্রচারণা করে। তারা আগ্রহী গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম সঞ্চয় বাবদ ১০, ২০, ৫০ ও ৮০ হাজার টাকা নেয়। সোমবার পৌরশহরের মসজিদ পাড়ার একটি তিনতলা ভবনে অফিস উদ্বোধন করে ঋণ দেয়ার দিন ধার্য করেন। সকালে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আসা ঋণগ্রহীতারা অফিসে এসে দেখেন তলাবদ্ধ এবং পালিয়ে গেছে ওই এনজিওর কর্মীরা।
আরও পড়ুন: ভিক্ষুকের টাকা আত্মসাৎ, চট্টগ্রামে কথিত এনজিও কর্মকর্তা আটক
উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের কৃষক শরীফ মিয়ার স্ত্রী শরীফা বেগম জানান, এক লাখ টাকা ঋণ দেয়ার পাশাপাশি স্বামীকে কর্মসংস্থান করে দেয়ার অজুহাত দেখিয়ে সঞ্চয় বাবদ তার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নেয়। সোমবার ঋণ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারা ঋণ নিতে এসে দেখেন অফিস ঘরে তালাবন্ধ। কর্মীদের মোবাইল ফোনও বন্ধ করে রেখেছেন।
উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের বীরচন্দ্র পুর গ্রামের কৃষক সাদেক মিয়া জানান, তারা দুই লাখ টাকা ঋণ দেয়ার কথা বলে গত দুই দিন আগে আমার কাছ থেকে একটি বইয়ের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা নেয়। সকালে ঋণ নিতে এসে দেখি অফিসে তালা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৪ ডিসেম্বর পৌরশহরের মসজিদ পাড়ায় তিনতলা ভবনের তৃতীয় তলায় অফিস ভাড়া নিয়ে ‘গ্রাম উন্নয়ন কেন্দ্র’ নামের একটি এনজিও প্রতিষ্ঠান প্রতারণা ব্যবসা শুরু করে।
ভবনের মালিক দুবাই প্রবাসী আলেক মিয়া। তার স্ত্রী সেতু আক্তার জানায়, চলতি মাসের ৪ তারিখ ভবনের তিন তলার একটি কক্ষ মাসিক ৬ হাজার টাকায় তারা ভাড়া নেয়। নতুন বছরের ১ জানুয়ারি অফিসটি উদ্বোধন করে আমাদের ভাড়া পরিশোধ করার কথা। আমরা বুঝতে পারিনি তারা এতো বড় প্রতারক।
আরও পড়ুন: গ্রাহকের ৪ কোটি টাকা নিয়ে উধাও এনজিও পরিচালক
আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ও পুলিশ পরিদর্শক মো. মিজানুর রহমান বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুমানা আক্তার জানান, এ ধরনের এনজিও প্রতিষ্ঠানের নাম সরকারি তালিকায় নেই। অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে মানুষের সচেতন হওয়া উচিত।
ভারত থেকে ফিরলেন পাচারের শিকার ৬ বাংলাদেশি
ভারতে পাচারের শিকার ছয় বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টায় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা থেকে বাংলাদেশের আখাউড়া সীমান্ত চেকপোস্ট দিয়ে তারা বাংলাদেশে প্রবেশে করেছেন। এ সময় পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আবেগঘন পরিবেশের তৈরি হয়।
তারা হলেন- বগুড়ার দুপচাচিয়া উপজেলার জিয়ারুল ইসলাম,কিশোরগঞ্জ সদরের হানিফা আক্তার, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার আলপনা খাতুন, ঢাকার কেরানীগঞ্জের রীনা আক্তার, জামালপুরের মানিক মিয়া এবং মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার মো.শাহাজান মিয়া।
ত্রিপুরায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সহযোগিতায় এই ছয়জনকে বাংলাদেশে ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে।
আখাউড়ার নো ম্যান্স ল্যান্ডে তাদেরকে গ্রহণ করার সময় উপস্থিত ছিলেন- ত্রিপুরায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার মোহাম্মদ জোবায়েদ হোসেন, প্রথম সচিব আসাদুজ্জামান ও রেজাউল হক, আখাউড়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুমানা আক্তার, সহকারী কমিশনার (ভূমিকা) সাইফুল ইসলাম, ওসি ইমিগ্রেশন আব্দুল হামিদ, বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের কর্মসূচি প্রধান শরিফুল হাসান, স্বেচ্ছাসেবক সৈয়দ খায়রুল আলম এবং পাচারের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস: আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি বন্ধ
পরিবারের কাছে হস্তান্তরের পর ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের পক্ষ থেকে পাচারের শিকার ব্যক্তি ও তাদের প্রত্যেক পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে জরুরি অর্থ সহায়তা এবং কাউন্সিলিং সেবা দেয়া হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তার ও ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের কর্মসূচি প্রধান শরিফুল হাসান তাদের হাতে এসব সাহায্য তুলে দেন।
নথিপত্র বলছে, পাচারের শিকার ছয় বাংলাদেশিই মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ত্রিপুরায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হন।
ত্রিপুরায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার মোহাম্মদ জোবায়েদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আদালতের নির্দেশে তারা আগরতলার মর্ডান সাইক্রিয়াটিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাদের অনেকেই এই হাসপাতালে চার থেকে পাঁচ বছর বা আরও বেশি সময় ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন। হাইকমিশন সবসময় তাদের সাথে যোগাযোগ রেখেছে। পরে অবস্থার উন্নতি হলে তাদের দেশে ফেরত আনার উদ্যোগ নেয়া হয়। তবে তারা কীভাবে ভারতে এসেছিলেন সেটি তারা বলতে পারেননি।
আরও পড়ুন: আখাউড়া স্থলবন্দরে বাংলাদেশি যাত্রীদের দুর্ভোগ
পাচারের শিকার জিয়ারুলের আত্মীয় মোহাম্মদ রাজ্জাক জানান, ২০১৪ সালে তার স্ত্রীর বোনের স্বামী জিয়ারুল নিখোঁজ হয়ে যান। তিনি কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। এমন একজন মানুষ কীভাবে ভারতে পাচার হলেন সেটা নিয়ে তারাও বিস্মিত।
আলপনার চাচাত ভাই দুলাল জানান, ১০ বছর আগে হঠাৎ করে একদিন তাদের বোন নিখোঁজ হন। অনেক পরে পুলিশের মাধ্যমে তারা জানতে পারেন, আলপনা আগরতলায় মানসিক হাসপাতালে আছেন। কিন্তু কীভাবে সে ভারত গেল আমরা তা বুঝতে পারছি না।
হানিফা আক্তারর ছেলে হেফজ ছাত্র ইয়াছিন জানান, ৫ বছর আগে হঠাৎ করে তাদের মা হারিয়ে যান। তারা ভেবেছিলেন কোনও আত্মীয়ের বাড়িতে গেছেন। পরে নানাবাড়ি করিমগঞ্জ থানায় খোঁজ করেন, কিন্তু পাননি। পরে মে মাসে পুলিশ খোঁজ নিতে বাড়িতে এলে জানতে পারেন আগরতলায় আছেন তার মা। দীর্ঘদিন পর এখন মাকে পেয়ে তারা খুশি।
আরও পড়ুন: ৬ বছর পর আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে কয়লা রপ্তানি শুরু
আখাউড়ায় ২২ বছরের অপেক্ষা শেষে ভেঙে পড়ল সেতু
২২ বছরেও সংযোগ সড়ক না হওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের বনগজ ও কৃষ্ণনগর গ্রামের মধ্যবর্তী বিলের মাঝখানে নির্মিত সেতুটি ভেঙে পড়েছে।
শুক্রবার সকাল নয়টার দিকে ইটবোঝাই একটি নৌকার ধাক্কায় স্থানীয় নয়াখালের ওপরে থাকা সেতুটি ভেঙে পড়ে। এ সময় সেতুটি ভেঙে নৌকার ওপর পড়লে ইটসহ নৌকাটি ডুবে যায়।
স্থানীয় বনগজ গ্রামের বাসিন্দা কামরুজ্জামান লালু ইউএনবিকে জানান, সকালে প্রায় সাত হাজার ইট বোঝাই একটি নৌকার সামনের অংশ সেতুর মাঝখানের পিলারে ধাক্কা দিলে সেতুটির আংশিক ভেঙে যায়। এসময় ভাঙা অংশ নৌকার ওপর পড়লে নৌকাটি খালের পানিতে ডুবে যায়। তবে মাঝিসহ সহযোগীদের থাকার কক্ষটি নৌকার পেছন দিকে থাকায় তারা অক্ষত আছেন।
আরও পড়ুন: রাঙ্গামাটিতে পোয়াপাড়া বেইলি ব্রিজ ভেঙে ট্রাক খালে
স্বানীয় লোকজন জানান, এলাকাবাসীর দাবির মুখে ১৯৯৯ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য শাহ আলম বনগজ ও কৃষ্ণনগর গ্রামের মধ্যবর্তী নয়াখালের ওপর সেতুটি নির্মাণের উদ্যোগ নেন। আখাউড়া উপজেলা এলজিইডি এর নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করেছিল।
উত্তর-দক্ষিণে লম্বালম্বি সেতুটির দুই প্রান্তে মাটি নেই। সমতল থেকে অন্তত ১৫ ফুট উঁচু সেতুটি ঝুলে আছে। ফলে সেতুটিতে কেউ কখনো উঠানামা করেনি দীর্ঘ ২২ বছরে।
আরও পড়ুন: পদ্মার গোলডাঙ্গিতে ১০০ মিটার ভাঙন, হুমকির মুখে ব্রিজসহ কয়েকটি গ্রাম
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে এলজিইডির আখাউড়া উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ বলেন, ‘ইউএনও'র মাধ্যমে সেতুটি ভেঙে যাওয়ার খবর পেয়ে উপসহকারী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলামকে পাঠানো হয়েছে। ওই প্রকৌশলী সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দিলে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আখাউড়ায় ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীর বিয়ে পণ্ড
করোনা মহামারিতে স্কুল বন্ধ থাকায় বাড়িতে হেঁসে-খেলে দিন পার করছিল ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ফারজানা আক্তার। এরই মধ্যে পরিবারের সদস্যরা তার বিয়ের আয়োজন করে।
শুক্রবার দুপুরে বিয়ের খবর পেয়ে উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের নয়াদিল গ্রামে অভিযান চালিয়ে ১৩ বছরের এই কিশোরীর বিয়ে পণ্ড করে দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুমানা আক্তার।ৃ
আরও পড়ুন: বাল্য বিয়ে পড়ানোর অভিযোগে লালমনিরহাটে কাজি আটক
তিনি জানান, উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের নয়াদিল গ্রামের ফরিদ মিয়ার মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ফারজানা আক্তারের সাথে বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুরের দুলাল মিয়ার ছেলে সজীব মিয়ার (২৩) বিয়ের আয়োজন করা হয়। গোপন খবরের ভিত্তিতে ওই স্কুল ছাত্রীর বাড়িতে ভ্রাম্যমাণ আদালত উপস্থিত হয়। বরযাত্রী তখনও বিয়ের আসরে পৌঁছায়নি। পরে মেয়ের বাবাকে বিয়ের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বিয়ের বিষয়টি স্বীকার করেন। এরপর তাকে বাল্য বিবাহ নিরোধ আইনে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং আগামী ৫ বছরের আগে তিনি তার মেয়ে বিয়ে দিবেন না এই শর্তে মুচলেকা দেন।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে এক রাতে বন্ধ হলো ৬ বাল্য বিয়ে
এসময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য সহিদ মিয়া, মহিলা ইউপি সদস্য সাফিয়া খাতুন ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
আখাউড়ায় ইউএনও’র হস্তক্ষেপে বাল্যবিয়ে বন্ধ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেল ৮ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী। সোমবার আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের রুটি গ্রামে দুবাই প্রবাসী সুহেল মিয়ার মেয়ের বিয়ের বাড়িতে গিয়ে আয়োজন চলাকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রোমানা আক্তার বিয়ে বন্ধ করে দেন।
এসময় বাল্য বিয়ের আয়োজন করায় বর ও কনে উভয় পক্ষকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
জানা গেছে, সোমবার দুপুরে রুটি গ্রামের প্রবাসী সুহেল মিয়ার মেয়ের সঙ্গে একই গ্রামের আব্দুর রউফ মিয়ার ছেলে জুনায়েদ বাবুর বিয়ের আয়োজন করা হয়। দুপুরে বর নিয়ে কনের বাড়িতে হাজির হন বরপক্ষের অর্ধশত বরযাত্রী। বরযাত্রীদের খাবার টেবিলে বসানো হয় ভুরিভোজের জন্য। বিয়ে বাড়িতে তখন এক আনন্দঘন মুহূর্ত। এমন সময় কনের বাড়িতে উপস্থিত হন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুমানা আক্তার।
পড়ুন: একরাতে ৪ বাল্যবিয়ে বন্ধ করলেন সিরাজগঞ্জের সেই ইউএনও
পরে তিনি স্থানীয় ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম এবং ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. আশরাফুল আলমের উপস্থিতিতে বর-কনের জন্মনিবন্ধন যাচাই করে বয়স না হওয়ায় বিয়ে বন্ধ করে দেন। উভয়পক্ষের অভিভাবক মুচলেকা দেন সঠিক বয়স না হওয়া পর্যন্ত ছেলে-মেয়ের দিবেন না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আক্তার বলেন, লকডাউনের মধ্যে বিয়ের আয়োজন করায় এবং বর ও কনের বিয়ের বয়স না হওয়ায় উভয় পক্ষকে বুঝিয়ে বিয়ে বন্ধ করে দিয়েছি। উভয় পক্ষকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
পড়ুন: ৩৫০টি বাল্যবিয়ে বন্ধ করে রেকর্ড গড়লেন বেলকুচির ইউএনও
এসময় আখাউড়া উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা তাপস চক্রবর্তী, উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আখাউড়ায় পুকুর থেকে বালু উত্তোলন, জমি বিলীনের আশঙ্কা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় শ্রেণি পরির্বতনের অনুমতি না নিয়ে একটি কৃষি জমিকে পুকুর বানানো হয়েছে। এখন ওই পুকুর থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু তোলার অভিযোগ উঠেছে।
এতে করে আশপাশের অনেক জমি ওই পুকুরে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছে স্থানীয়রা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের টেংরাপাড়া এলাকার প্রভাবশালী আফছু মিয়া ও তার ছেলে রাজীব মিয়া পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই তাদের নিজেদের একটি পুকুরে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। ইতোমধ্যেই পুকুরটি ৩০-৪০ ফুট গভীর করে ফেলা হয়েছে। এখান থেকে উঠানো বালু বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: অবৈধভাবে বালু উত্তোলন : সিরাজগঞ্জে ৮ জনের জরিমানা
স্থানীয়রা জানান, আফছু মিয়া ও তার ছেলে রাজীব ২০২০ সালে ফসলী জমি নষ্ট করে প্রথমে একটি পুকুর খনন করে। পুকুর করতে গিয়ে সেখানে এমনভাবে মাটি কাটা হয়েছে যে আশেপাশের জমি ভাঙতে শুরু করে। এ অবস্থায় তাদের কাছে একাধিক ব্যক্তি তাদের জমি বিক্রি করতে বাধ্য হন। এছাড়া গত ২ জুন থেকে ওই পুকুরে তারা ড্রেজার বসিয়ে বাণিজ্যিকভাবে বালু উত্তোলন শুরু করে। এ অবস্থায় স্থানীয় অনেকে আপত্তি করলেও তারা কর্ণপাত করেননি
এ বিষয়ে উপজেলার টানপাড়া গ্রামের মো. আসারুল ইসলামসহ অনেকেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
একই গ্রামের মোহাম্মদ হোসেন মিয়া বলেন, ‘ওই জায়গায় আমার একটি ফসলি কৃষি জমি ছিল। তারা পুকুরটি খনন করায় আমার জমিটি ভেঙে বিলীন হতে থাকে। পরে এক প্রকার বাধ্য হয়েই জমিটি কম দামে তাদের কাছে বিক্রি করতে হয়।’
অভিযুক্ত পুকুরের মালিক রাজীব মিয়া বলেন, ‘পুকুরের গভীরতা বাড়াতে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। পাশের জমির কোনও ক্ষতি হবে না। তাছাড়া পুকুরের পাশে আমারও জমি রয়েছে।’
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পরিবেশ অধিদপ্তরের মো. নূরুল আমীন বলেন, ‘বাণিজ্যিকভাবে বালু উত্তোলন করার বিষয়টি ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন। তারপরও পরিবেশের কোনো ক্ষতি হচ্ছে কিনা তা আমরা খতিয়ে দেখবো।’
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জ জব্দকৃত বালু নিলামে বিক্রি, ১৮ নৌযানের জরিমানা
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুমানা আক্তার জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য এসিল্যান্ডকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।