১১ আসামি গ্রেপ্তার
প্রবাসীকে কুপিয়ে হত্যা, ১১ আসামি গ্রেপ্তার
মালয়েশিয়া প্রবাসী যুবককে কুপিয়ে হত্যা মামলায় ১১ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে বেশকিছু মোবাইল, নগদ টাকা, ভোটার আইডি কার্ড, এটিএম কার্ড, পাওয়ার ব্যাংক উদ্ধার করার দাবি করেছে র্যাব-৮।
বুধবার দুপুর ১টায় বরিশাল নগরের রুপাতলীস্থ র্যাব-৮ এর সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কমান্ডিং অফিসার ও পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদুল হাসান।
তিনি জানান, ২৬ ডিসেম্বর শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া থানাধীন রাজনগর ঠাকুর কান্দী এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জেরে দানেশ সরদার (৩৫) নামে একজন প্রবাসী যুবককে হত্যার অভিযোগ উঠে।
আরও পড়ুন: রংপুরে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার পর থানায় গিয়ে স্বামীর আত্মসমর্পণ
এ ঘটনায় নিহতের বাবা সোনা মিয়া নড়িয়া থানায় ৫৭ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলা ও ঘটনার বিবরণে জানা যায়, নিহত মো. দানেশ সরদার একজন মালয়েশিয়া প্রবাসী ছিলেন। তিনি ১০ বছর যাবত মালয়েশিয়ায় ছিলেন। ঘটনার তিন মাস আগে দেশে আসেন এবং দেশে আসার পর থেকে পূর্ব শত্রুতার জেরে আসামি পক্ষের সঙ্গে বিরোধের সৃষ্টি হয়।
এর রেশ ধরে গত ২৬ ডিসেম্বর বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে নড়িয়া থানাধীন ঠাকুর কান্দী গ্রামস্থ লোকমান আকনের বাড়ির সামনে পাঁকা রাস্তার ওপর আগে থেকে ওঁত পেতে থাকা আসামিরা রামদা, ছেনদা, ঢাল, সরকি, টেটা, বল্লম, চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল, হকিষ্টিক, লোহার রড, বাঁশের লাঠি ইত্যাদি মারাত্মক দেশীয় অস্ত্রপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
আর এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র্যাব ৮ (মাদারিপুর ক্যাম্প) গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে এবং ছায়াতদন্ত শুরু করে।
তদন্তে দেখা যায়, হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা নিজ এলাকা ছেড়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আত্মগোপন করে।
পরবর্তীতে র্যাব-৮ এর সিপিসি-৩ (মাদারীপুর ক্যাম্প) কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার কে এম শাইখ আকতারের নেতৃত্বে মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার শাহাবাগ থানা এলাকায় অভিযান চালানো হয়।
অভিযানে শাহবাগ থেকে মামলার এজাহারভূক্ত দুই নম্বর আসামি শাহিন মোড়ল (২৪) কে গ্রেপ্তার করে।
তার দেয়া তথ্য মোতাবেক ঢাকা জেলার শাহাবাগ থানাধীন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর এলাকা থেকে মামলার এজাহারভূক্ত ৯ নম্বর আসামি নাছির বেপারী (৩২), ৩৩ নম্বর আসামি কামাল কাজি (২৭), ৩৬ নম্বর আসামি আওয়ার মালত (৩৫), ৫১ নম্বর আসামি জব্বার হাওলাদার (৪৫), ৫২ নম্বর আসামি মিজান বেপারী (৪০) এবং ৫৭ নম্বর আসামি ডিটু বেপারী (৩৫) কে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে তাদের দেয়া তথ্যানুযায়ী শাহাবাগ থানাধীন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর এলাকা থেকে মামলার তিন নম্বর আসামি মো. জনি মোড়ল (২২), মামলার আট নম্বর আসামি রাসেল মালথ (৩০), মামলার ১৯ নম্বর আসামি ওয়াহেদ খান (২২) এবং ৩৫ নম্বর এলাকার বাসিন্দা দেলোয়ার কাজিকে (৩৫) গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব-৮ এর কমান্ডিং অফিসার ও পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদুল হাসন বলেন, আসামিরা ঘটনার পর থেকে সবাই পলাতক রয়েছে। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তারা বিভিন্ন এলাকা থেকে একত্রিত হওয়ার জন্য শাহবাগ এলাকায় অবস্থান নেয়।
আর বিষয়টি র্যাব জানতে পেরে অভিযান চালিয়ে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা কাজ করছে।
এছাড়া গ্রেপ্তারদের শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া থানায় হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় স্কুলশিক্ষককে কুপিয়ে হত্যা, ৭ আসামির যাবজ্জীবন
১ বছর আগে