স্বামী হত্যা
ঋণ পরিশোধে চুরি করে গরু বিক্রির চেষ্টা, দেখে ফেলায় স্বামীকে গলা কেটে হত্যা
নেত্রকোণার সদর উপজেলায় ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে এক নারী নিজেদের গোয়ালের গরু চুরি করে বিক্রির দায়িত্ব দেন চোর চক্রের এক সদস্যকে। কিন্তু চুরি করার সময় দেখে ফেলেন স্বামী। পরে নিজের ঘরের বিছানায় ভাড়া করা চোর চক্রের চার সদস্য ও স্ত্রী মিলে স্বামীর পা বেঁধে তার গলা কেটে হত্যা করেন।
এমন লোমহর্ষক হত্যার ঘটনা ঘটেছে সদর উপজেলার কালিয়ারা গাবরাগাতী ইউনিয়নের নারিয়াপাড়া গ্রামে। হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খুনের রহস্য উন্মোচন করেছে নেত্রকোণা মডেল থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) হত্যাকাণ্ডে সরাসারি জড়িত মো. লিটন মিয়া (৫০) ও মো. রিয়েল মিয়া (৩৮) নামে দুজনকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে প্রেরণ করেছেন থানার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) চম্পক দাম।
এর আগে, নিহতের স্ত্রী বেদেনা আক্তারকে (৪২) গ্রেপ্তারের পর সোমবার (২২ ডিসেম্বর) আদালতে স্বামী হত্যার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি।
ওই নারীর দেওয়া তথ্যমতে, এ ঘটনায় তিনি ও আদালতে পাঠানো দুজনসহ জড়িত মোট পাঁচজন। তদন্তের স্বার্থে বাকি দুজনের নাম বলেননি তদন্ত কর্মকর্তা।
পরিদর্শক চম্পক দামের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেদেনা আক্তার অনেক ঋণ করে ফেলেছিলেন। সেই ঋণ পরিশোধ করতে গরু বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি, কিন্তু স্বামী বাধা দেওয়ায় তা করতে পারেননি। পরে নিজেদের গোয়ালের গরু চুরি করে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এই উদ্দেশ্যে তার বাপের বাড়ি, জেলার বারহাট্টা উপজেলায় দুধকুড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. লিটন মিয়াকে (৫০) দায়িত্ব দেন।
গত ২১ ডিসেম্বর (রবিবার) মধ্যরাতে লিটন মিয়া তার সঙ্গে গ্রেপ্তার নারিয়াপাড়া গ্রামের রিয়েল মিয়াসহ চারজন গরু চুরি করতে যান। এ সময় বেদেনা আক্তারের স্বামী হেলাল উদ্দিন তালুকদার (৬০) চোরদের দেখে ফেলেন। তিনি তাদের চিনতেও পারেন। পরে তারা সবাই মিলে ভুক্তভোগীর পা বেঁধে জবাই করে হত্যা করেন। এরপর বেদেনা আক্তার ছাড়া বাকি সবাই পালিয়ে যান।
বেদেনা আক্তারের আদালতে দেওয়া জবানবন্দি ও মোবাইলের ফোনের কলের তালিকা অনুযায়ী এবং তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় লিটন ও রিয়েলকে গ্রেপ্তার করে চম্পক দামের নেতৃত্বাধীন পুলিশের একটি দল।
এই তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, লিটন মিয়ার বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে পাঁচ-ছয়টি চুরির মামলা রয়েছে। রিয়েল মিয়া একটি হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তিন-চার বছর জেল খাটার পর উচ্চ আদালত থেকে খালাস পেয়েছেন তিনি। বাকি দুজনও মামলার আসামি এবং তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশি কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
গত ২২ ডিসেম্বর সকালে খবর পেয়ে বসতঘরের নিজ শয়নকক্ষ থেকে হেলাল উদ্দিন তালুকদারের পা বাঁধা ও গলা কাটা রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নেত্রকোনা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
ভুক্তভোগী কালিয়ারা গাবরাগতী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইসলাম উদ্দিন ও জেলা যুবদলের সাবেক নেতা শাহাবউদ্দিন রিপনের চাচাতো ভাই। এক মেয়ে ও এক ছেলের বাবা ছিলেন নিহত হেলাল তালুকদার।
৫ ঘণ্টা আগে
স্বামী হত্যার দায়ে স্ত্রী ও প্রেমিকের মৃত্যুদণ্ড
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রী ও তার প্রেমিককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
একইসঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ রায় দেন কিশোরগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-২ আদালতের বিচারক শাম্মী হাসিনা পারভীন।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে যুবককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে একজনের মৃত্যুদণ্ড
রায়ের সময় প্রত্যেক আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আসামিরা হলেন, ভৈরবের চন্ডিবের উত্তর পাড়ার মোছা. রোকসানা আক্তার ও একই গ্রামের আসিফ আহমেদ। আর নিহত স্বামী মাহবুবুর রহমান বাংলাদেশ রেলওয়ে এসএসফিডার পদে কমলাপুরে কর্মরত ছিলেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন এপিপি রাখাল চন্দ্র দে এবং আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন খুলেজ চন্দ্র নাগ কাজল।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর রাতে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আসামিরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাহবুবুরকে হত্যা করেন।
পরে ২৮ নভেম্বর নিহতের বড়ভাই বাদী হয়ে ভৈরব থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে এই মামলার রায় দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় স্কুলছাত্র অপহরণ-হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
ইয়াছিন হত্যাকাণ্ড: এক ভাইয়ের মৃত্যুদণ্ড ও অপরজনের যাবজ্জীবন
৪৬১ দিন আগে
লক্ষ্মীপুরে স্বামী হত্যার ঘটনায় স্ত্রীর ১০ বছরের কারাদণ্ড
লক্ষ্মীপুরে স্বামীকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে স্ত্রীকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ সময় আরও ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।
সোমবার (১৬ জানুয়ারি) বিকালে লক্ষ্মীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।
আরও পড়ুন: ঢাবি শিক্ষার্থী খুনের মামলায় ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
দণ্ডপ্রাপ্ত আমেনা রায়পুর উপজেলার বামনী ইউপি’র বামনী গ্রামের মমিনুল হকের মেয়ে। তার স্বামীর বাড়িও একই এলাকায়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২২ মার্চ রাতে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার বামনী গ্রামে পারিবারিক বিরোধের জেরে স্বামী সহিদ হোসেনকে শ্বাসরোধে হত্যা করে স্ত্রী আমেনা বেগম। বিষয়টি গোপন রেখে স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে জানায় আমেনা। দাফনের জন্য গোসল করাতে নিলে গলায় আঁচড়ের দাগ দেখে সন্দেহ হলে পুলিশে খবর দেয় পরিবারের লোকজন। পরে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে শ্বাসরোধে হত্যার বিষয়টি উঠে আসে।
এদিকে এ ঘটনায় সহিদের বড় ভাই আব্দুল আলী খোকন বাদী হয়ে আমেনা বেগমকে আসামি করে ২০২২ সালের ২৯ এপ্রিল রায়পুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এছাড়া এ ঘটনায় একই বছরের ২৩ মে আদালতে তদন্তপত্র দাখিল করে পুলিশ।
জানা গেছে, এর আগে ২০২২ সালের ২৬ এপ্রিল পুলিশের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আসে। এতে সহিদকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় বলে প্রমাণ পাওয়া যায় বলে দাবী পুলিশের।
পারিবারিক কলহের জেরে মুখ চেপে ধরে আমেনা সহিদকে হত্যা করে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয় পুলিশের প্রতিবেদনে।
পুলিশ জানান, দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত আমেনার বিরুদ্ধে রায় দেন। সহিদ জীবিত থাকা অবস্থায় তার তিন ছেলে ও এক মেয়ে ছিল। তার মৃত্যুর সময় আমেনা গর্ভবতী ছিলেন।
পরে আমেনা একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। ১৬ মাস বয়সী মেয়ে ফাতেমা আক্তার মারিয়াকে নিয়েই তাকে কারাগারে যেতে হয়েছে।
আরও পড়ুন: দোষ স্বীকার করায় কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে কারাদণ্ড
ফরিদপুরে বাবাকে হত্যার দায়ে ছেলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
১০৭২ দিন আগে