এরদোগান
সিরিয়াকে অস্থিতিশীল করে তুলছে ইসরায়েল: এরদোগান
সিরিয়ায় আসাদ সরকারের পতনের পর ইসরায়েল দেশটিকে আবারও অস্থিতিশীল করে তুলছে বলে অভিযোগ করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। স্থানীয় সময় রবিবার (১২ এপ্রিল) তুরস্কে চলমান আন্টালিয়া কূটনীতি ফোরামে (এডিএফ) অংশগ্রহণ করে এই মন্তব্য করেন তিনি।
ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনার মাত্র দুদিন পরেই এমন বক্তব্য বিস্মিত করেছে অনেক কূটনৈতিক বিশ্লেষককে। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান এমন খবর দিয়েছে।
মূলত, এই দুটি দেশেরই সামরিক বাহিনী সিরিয়াতে সক্রিয় রয়েছে। ফলে সেখানে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে গত বুধবার (৯ এপ্রিল) আজারবাইজানে বৈঠক করেন তুরস্ক ও ইসরায়েলের কর্মকর্তারা।
তবে বৈঠকের পরও সিরিয়ায় শান্তি নষ্ট করায় ইসরায়েলের সামরিক কার্যক্রমের সমালোচনা করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট।
আরও পড়ুন: তুরস্কে ধরপাকড় উপেক্ষা করে এরদোগানবিরোধী বিক্ষোভ চলছে
আন্টালিয়া সম্মেলনে বিশ্ব নেতা ও কূটনীতিকদের উদ্দেশ্যে এরদোগান জানান, ‘সিরিয়ায় নতুন করে কোনো সংঘাত তারা চান না। যে বিপ্লবের মধ্য দিয়ে বাসার-আল-আসাদ সরকারের পতন হয়েছে, তা ইসরায়েলের কারণে ব্যর্থ হচ্ছে।’
আসাদের পতনের পর সিরিয়ার গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক এরদোগান।
সিরিয়ার ভৌগলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি। সিরিয়ার ওপর চলমান বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে আঙ্কারার চেষ্টার কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান আহমেদ আল সারা। সিরিয়ায় নতুন করে কাউকে সংঘাত সৃষ্টি করতে দেওয়া হবে না বলে সারাকে আশ্বস্ত করেন এরদোগান। সম্মেলনের ফাঁকে একটি বৈঠকও করেন তারা।
গত ৮ ডিসেম্বর আল সারার নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আলশামস (এইচটিএস) দামেস্ক দখল মাধ্যমে আসাদ সরকারের পতন ঘটায়। এরপর সিরিয়ায় অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলেই দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে তুরস্ক।
আরও পড়ুন: বিক্ষোভের তৃতীয় দিনে তুরস্কে গ্রেপ্তার ৩৪৩ জন
দামেস্কের সঙ্গে প্রতিরক্ষা বিষয়ে একটি চুক্তিও করতে চাইছে আঙ্কারা, এর মাধ্যমে সিরিয়াতে সামরিক ঘাঁটি স্থাপনসহ দেশটির আকাশসীমা ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে তুরস্কের।
অন্যদিকে আাসদের পতনের পরই সিরিয়ায় সামরিক তৎপরতা জোরদার করেছে ইসরায়েল। এ কারণে তুরস্ক ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। এ মাসের শুরুর দিকে সিরিয়ায় তিনটি সামরিক ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
আবার হামা প্রদেশের প্রধান বিমানবন্দর ও হোমসের টি-৪ ও পালমিরা বন্দর পরিদর্শন করেছেন তুরস্কের সেনা কর্মকর্তারা। যেখানে তারা দামেস্কের সঙ্গে একটি যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তির অংশ হিসেবে নিজেদের সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে পারে। এ নিয়ে তুরস্ক ও ইসরায়েলের মধ্যকারে উত্তেজনা আরও বেড়েছে।
নিউইয়র্ক ভিত্তিক থিংকট্যাঙ্ক সেঞ্চুরি ইন্টারন্যাশনালের আরন লুন্ড বলেছেন, ‘সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের দ্বিতীয়ার্ধে আসাদের অন্যতম রক্ষাকর্তা ছিল রাশিয়া। এখন আসাদের পতনের পর যদি সিরিয়ার আকাশসীমা ব্যবহার করতে পারে তুরস্ক, তাহলে এই অঞ্চলটিতে ইসরায়েলের সামরিক কার্যক্রম অনেকটাই সীমিত হয়ে পড়বে।‘
তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলের সামরিক অভিযানই শুধু আঙ্কারার জন্য সমস্যা নয়, সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকার গঠনে তেল আবিবের নানা বাধা নিয়েও চিন্তিত তারা। যেমন, দেশটির দক্ষিণে আল সারার সরকার কোনো সেনা মোতায়ন করতে পারবে না বলে জানিয়েছে তেল আবিব।’
আরও পড়ুন: তুরস্কের ইস্তানবুলের মেয়র গ্রেপ্তার
এরইমধ্যে সিরিয়ার দক্ষিণের দারাহ শহরে অনুপ্রবেশ শুরু করেছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। চলমান উত্তেজনার মধ্যে দেশ দুটির মধ্যকার বৈঠককে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন আরন।
তিনি বলেন, সিরিয়ায় এই দুটি দেশই নিজেদের সামরিক তৎপরতা বহাল রাখবে। তবে তাদের মধ্যে যদি একটি যোগাযোগ চ্যানেল স্থাপিত হয় সেটি সব পক্ষের জন্য ভালো হবে বলে মনে করেন এই বিশ্লেষক।
বুধবারের বৈঠকের পর তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেন, ইসরাইলের সাথে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা হয়েছে। দুই আঞ্চলিক শক্তির মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি রোধ করার জন্য এবং সংঘাত বন্ধ করতে আলোচনা অত্যন্ত প্রয়োজন।
এদিকে বৈঠকের পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য সংলাপ চালিয়ে যেতে সম্মত হয়েছে তুরস্ক ও ইসরায়েল।
৪ দিন আগে
তুরস্কে ধরপাকড় উপেক্ষা করে এরদোগানবিরোধী বিক্ষোভ চলছে
তুরস্কের সরকারবিরোধীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর ধরপাকড় ক্রমাগত বাড়ছে। গেল ১৯ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত এক হাজার ১৩৩ জনকে আটক করা হয়েছে। যাদের মধ্যে সাতজন সাংবাদিকও রয়েছেন।
ইস্তানবুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে গেল বুধবার (১৯ মার্চ) আটকের পর থেকে তুরস্কে ব্যাপক বিক্ষোভ চলছে। যা দেশটিতে গেল এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। এতে সেখানকার গণতন্ত্র ও আইনের শাসন নিয়ে গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) ও নিউ ইয়র্ক টাইমস এমন খবর দিয়েছে।
আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সবচেয়ে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে ইস্তানবুলের মেয়রকে। কাজেই জনপ্রিয় একজন প্রার্থীকে নির্বাচনী লড়াই থেকে সরিয়ে দিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এমন একটি সময়ে এই ধরপাকড় শুরু হয়েছে, যখন একটি ভূরাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কেন্দ্রে রয়েছে তুরস্ক। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ‘এতে নিজের সবচেয়ে বিপজ্জনক প্রতিদ্বন্দ্বীকে নিশানা বানানোর মতো মুক্ত পরিবেশ পেয়েছেন এরদোগান।’
মেয়রের গ্রেপ্তারের ঘটনায় গুটিকয়েক ইউরোপীয় নেতা সমালোচনা করলেও বেশিরভাগই নিশ্চুপ রয়েছেন। শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তারও এ বিষয়ে মুখ খুলছেন না।
ফক্স নিউজের সাবেক সঞ্চালক টুকার কার্লসনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ইস্তানবুলের মেয়রের গ্রেপ্তারের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিফ উইটকফ। তিনি বলেন, সম্প্রতি এরদোগানের সঙ্গে কথা বলেছেন ট্রাম্প। তখন এই ফোনাপের কথা প্রকাশ করেনি হোয়াইট হাউস।
বিস্তারিত তথ্য নিয়ে উইটকফ বলেন, ‘তাদের এই কথোপকথনের মধ্য দিয়ে তুরস্ক থেকে ভালো ও ইতিবাচক কিছু খবর আসছে।’
রবিবার (২৪ মার্চ) আনুষ্ঠানিকভাবে একরেম ইমামোগলুকে আটকের নির্দেশ দেন আদালত। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সহায়তা ও দুর্নীতির অভিযোগের বিচার চলছে, এছাড়াও ঘুষ, জালিয়াতি ও অবৈধভাবে ব্যক্তিগত উপাত্ত রেকর্ড করার অভিযোগও রয়েছে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।
তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হবে কিনা; এখন পর্যন্ত আদালদের পক্ষ থেকে এমন কোনো আদেশ আসেনি। তাকে মেয়র পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে বলে শঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুন: বিক্ষোভের তৃতীয় দিনে তুরস্কে গ্রেপ্তার ৩৪৩ জন
গেল দুই দশকের বেশি সময় ধরে তুরস্কের রাজনীতিতে একক আধিপত্য বিস্তার করে যাচ্ছেন এরদোগান। সমালোচকদের অভিযোগ, প্রতিদ্বন্দ্বীদের দুর্বল করে দিতে তিনি রাষ্ট্রীয় শক্তি ব্যবহার করছেন। নির্বাচনী দৌড় থেকে একজন প্রার্থীকে সরিয়ে দিতে তাকে গ্রেপ্তার করার ঘটনা কর্তৃত্ববাদের এক নতুন অধ্যায়েরও সূচনা করেছে।
সাংবাদিকদের সংগঠন ডিস্ক-বেসিন-ইজ ইউনিয়ন জানিয়েছে, ‘অন্তত আট প্রতিবেদক ও ফটো সাংবাদিককে আটক করা হয়েছে, যা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মানুষের সত্য জানার অধিকারের ওপর বড় ধরনের আঘাত।’
সামাজিকমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ইউনিয়ন লিখেছে, ‘সাংবাদিকদের নীরব করিয়ে দিয়ে কেউ সত্য গোপন করতে পারবে না।’
তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী ইরলিকায়া বলেন, বিক্ষোভে ১২৩ পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। বিক্ষোভকারীদের কাছ থেকে এসিড, ছুরি ও অগ্নিবোমা জব্দ করা হয়েছে। জমায়েত ও বিক্ষোভ করার অধিকারের অপব্যবহার করছে কিছু চক্র। এরমধ্য দিয়ে তারা জনশৃঙ্খলা বিঘ্ন, রাস্তার অস্থিরতা ও পুলিশের ওপর হামলা উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
‘আটকদের মধ্যে কিছু মানুষের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে বলে জানতে পেরেছি। বাকিদেরও অপরাধের অতীত ইতিহাস রয়েছে।’
জনগণ যাতে এসব উসকানিতে পা না দেন, সেই আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের খবরে বলা হয়েছে, ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে একরেম ইমামোগলুকে সরিয়ে দিতে এই ধরপাকড় করা হচ্ছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সরকারি কর্মকর্তারা।
২৪ দিন আগে
তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্প, নিহত ১০০
তুরস্কের দক্ষিণ-পূবাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা। দেশটির সিরিয়া সীমান্তবর্তী এলাকা গাজিয়ানটেপে এই এই ভূমিকম্প আঘাত হানে।
সোমবার এক বিবৃতিতে প্রাণঘাতী এই ভূমিকম্পে তুরস্ক এবং সিরিয়ার কর্মকর্তারা নিহতের সংখ্যা ১০০ জনের বেশি উল্লেখ করেছেন। তবে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন তারা।
নিহতদের মধ্যে তুরস্কের মালত্যায় কমপক্ষে ২৩ জন, সানলিউরফায় ১৭ জন, দিয়ারবাকিরে ছয়জন এবং ওসমানিয়েতে আরও পাঁচজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। সিরিয়ার সীমান্ত জুড়ে অন্তত ৪২ জন নিহত হয়েছে, সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৬৮
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান এক টুইটে বলেছেন, ভূমিকম্পে আক্রান্ত এলাকায় আমাদের উদ্ধার অভিযান চলছে। আমরা আশা করছি খুব শিগগিরই সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপন করতে পারবো।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলাইমান সুয়েলু জনগণকে বিধ্বস্থ ভবনে প্রবেশ না করতে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের প্রধান কাজ হলো ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবন থেকে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া।
মার্কিন জিওলজিক্যাল সার্ভে জানিয়েছে যে সাত দশমিক আট মাত্রার কম্পনটি স্থানীয় সময় ০৪টা ১৭ মিনিটে (০১:১৭ জিএমটি) গাজিয়ানটেপ শহরের কাছে ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার (১১ মাইল) গভীরতায় আঘাত হানে।
আরও পড়ুন: পূর্ব ইন্দোনেশিয়া ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল
রাজধানী আঙ্কারা এবং তুরস্কের অন্যান্য শহর এবং পুরো অঞ্চল জুড়ে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল।
বেশ কয়েকটি ভবন ধসে পড়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।এতে অনেক মানুষ সেখানে আটকে থাকতে পারে।
শহরের একটি শপিং মল ধসে পড়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছেন দিয়ারবাকিরের বিবিসির তুর্কি সংবাদদাতা।
গাজা উপত্যকায় বিবিসির প্রযোজক রুশদি আবুলউফ বলেছেন যে তিনি যে বাড়িতে ছিলেন সেখানে প্রায় ৪৫ সেকেন্ড কাঁপুনি ছিল।
তুর্কি ভূমিকম্পবিদরা সাত দশমিক চার মাত্রার ভূমিকম্পের শক্তি পরিমাপ করেছেন।
তারা বলেছে যে এই অঞ্চলে মাত্র কয়েক মিনিট পর দ্বিতীয় কম্পন আঘাত হেনেছে।
আরও পড়ুন: ইরানে ৫ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্প
৮০১ দিন আগে
ন্যাটোর সদস্যপদ: ফিনল্যান্ডকে হ্যাঁ, সুইডেনের প্রতি নাখোশ এরদোয়ান
ন্যাটের সদস্যপদ পেতে ফিনল্যান্ডকে সমর্থন করতে তুরস্ক এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান।
অন্যদিকে ইউরোপের আরেকটি দেশ সুইডেনের ক্ষেত্রে কোন পদক্ষেপ নিবেন না তুরস্ক।কারণ সম্প্রতি সুইডেনে তুরস্ক বিরোধী বিক্ষোভ যাকে ইসলামফোবিয়া হিসেবে বর্ননা করে ইউরোপের দেশটির নাগরিককের তুরস্কে সফরে এরই মধ্যে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
সুইডেনে তুর্কি দূতাবাসের বাইরে গত সপ্তাহান্তে বিক্ষোভের পর এক বিধর্মী পবিত্র কোরআন শরীফ পোড়ানো এবং কুর্দিপন্থী দলগুলো তুরস্কের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার পর শনিবার ভ্রমণ সতর্কীকরণ দেয়া হয়। এই ঘটনাগুলো সুইডেনের ন্যাটোর সদস্যপদ অনুমোদন করতে তুরস্কের অস্বীকৃতিকে আরও শক্ত করেছে।
সুইডেন এবং ফিনল্যান্ড সামরিক জোটের সদস্য হওয়ার জন্য যৌথভাবে আবেদন করেছে।
রবিবার প্রকাশিত একটি ইভেন্টের পূর্ব-রেকর্ড করা ভিডিওতে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তুরস্ক শুধুমাত্র ফিনল্যান্ডের ক্ষেত্রে স্বাক্ষর করতে পারে।
বিলেসিক প্রদেশে তরুণদের উদ্দেশ্যে দেয়া এক ভাষণে এরদোয়ান বলেন, যদি প্রয়োজন হয় আমরা ফিনল্যান্ড সম্পর্কে একটি ভিন্ন বার্তা দিতে পারি। আমরা যখন ফিনল্যান্ড সম্পর্কে ভিন্ন বার্তা দেবো, তখন সুইডেন হতবাক হয়ে যাবে।’
তুরস্ক অভিযোগ করে বলেছে যে কুর্দি গোষ্ঠীগুলোসহ সন্ত্রাসী সংগঠন বা অস্তিত্বের হুমকি হিসাবে বিবেচনা করা গোষ্ঠীগুলোর প্রতি খুব নম্রতা দেখায় স্টকহোম সরকার।
ন্যাটোর নতুন সদস্যদের যোগ করার জন্য তার বিদ্যমান সদস্যদের সর্বসম্মত অনুমোদনের প্রয়োজন, কিন্তু এরদোয়ানের সরকার বলেছে যে দেশটি তার শর্ত পূরণ করলেই তারা সুইডেনকে সমর্থন দিতে রাজি হবে।
নাগরিকদের জন্য তার ভ্রমণ সতর্কতায় তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত গোষ্ঠী‘ দ্বারা তুর্কি-বিরোধী বিক্ষোভের বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করেছে। কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি বা পিকেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো তারা এক দশক ধরে তুরস্কের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ চালিয়ে আসছে। তুরস্কের পাশাপাশি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও পিকেকেকে একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসাবে ঘোষণা করেছে।
আরও পড়ুন: সুইডেনে পবিত্র কোরআন পোড়ানোর তীব্র নিন্দা বাংলাদেশের
কুর্দিপন্থী গোষ্ঠীগুলো তাদের ন্যাটো সদস্যপদে তুরস্কের অনুমোদন পেতে সুইডেন এবং ফিনল্যান্ডের তাদের দেশে পিকেকে-এর কার্যকলাপ প্রতিরোধ করার প্রতিশ্রুতির প্রতিক্রিয়া হিসাবে সংগঠিত সুইডেনে বিক্ষোভের সময় পিকেকে এবং এর সহযোগীদের পতাকা উড়িয়েছে।
এরদোয়ান বলেছেন যে তিনি সুইডিশ প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, ‘আপনি যদি সত্যিই ন্যাটোতে প্রবেশ করতে চান তবে আপনি এই সন্ত্রাসীদের হস্তান্তর করবেন। আপনি যদি এই সন্ত্রাসীদের হস্তান্তর না করেন, তাহলে দুঃখিত।’
তিনি বলেছিলেন যে তুরস্ক সুইডেনের কাছ থেকে প্রত্যার্পণ চায় এমন ১২০ জনের একটি তালিকা সরবরাহ করেছে।
জুনে স্বাক্ষরিত সমঝোতায় একটি দাবি ছিল যা নর্ডিক দেশগুলোর যৌথ আবেদনে তুরস্কের ভেটোর কারণে বাদ পড়ে যায়।
ডিসেম্বরে সুইডিশ সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল যে দেশটি গুলেনের সঙ্গে যুক্ত একটি সংবাদপত্রের প্রাক্তন প্রধান সম্পাদক বুলেন্ট কেনেসকে হস্তান্তর করতে পারে না,যা তুরস্ককে ক্ষুব্ধ করে।
তুরস্ক ২০১৬ সালের অভ্যুত্থানের চেষ্টার জন্য অভিযুক্ত মুসলিম ধর্মগুরু ফেতুল্লাহ গুলেনের কিছু অনুসারী কথিত পিকেকে জঙ্গিদের প্রত্যার্পণের দাবি করছে।
তুরস্ক স্টকহোমে গত সপ্তাহান্তে উগ্র ডানপন্থী কর্মী রাসমাস পালুদানের কুরআন পোড়ানোর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে, যা তিনি শুক্রবার কোপেনহেগেনে পুনরাবৃত্তি করেছিলেন। ডানপন্থী আরেক কর্মী হেগে কুরআনের পাতা ছিঁড়ে ফেলার পর আঙ্কারা ডাচ রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠায়।
আরও পড়ুন: সুইডেন আ. লীগ নেতা ওবায়দুল হকের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
গত সপ্তাহের বিক্ষোভের পর এরদোগান সুইডেনকে সামরিক জোটের সদস্যপদ পাওয়ার দৌড়ে সমর্থন আশা না করার জন্য সতর্ক করেছিলেন। তুরস্ক ব্রাসেলসে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকও অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে। যেখানে সুইডেন এবং ফিনল্যান্ডের ন্যাটো সদস্যপদ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল।
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার নাগরিকদের সতর্কতা অবলম্বন করতে এবং ইউরোপে বিক্ষোভ এলাকা থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে যে তারা জেনোফোবিক বা বর্ণবাদী আক্রমণের সম্মুখীন হলে তাদের স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে যাওয়া উচিত।
একটি পৃথক পরামর্শে মন্ত্রণালয়টি তুর্কি নাগরিকদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মেমফিস, টেনেসি, নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি টায়ার নিকোলসের পুলিশ কর্তৃক মারাত্মক মারধরের প্রতিক্রিয়ায় প্রতিবাদের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
এর আগে শনিবার তুরস্ক তার ভ্রমণ সতর্কতা জারি করার আগে নর্ডিক দেশগুলো পৃথকভাবে তুরস্কের জন্য সর্বশেষ ভ্রমণ নির্দেশিকা জারি করেছিল। ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে এবং সুইডেন তুরস্কে আসা তাদের নাগরিকদের বড় জমায়েত এড়াতে এবং সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান জানিয়েছে।
সুইডিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার ওয়েবসাইটে একটি বার্তায় বলেছে যে আঙ্কারায় সুইডেনের দূতাবাস জনসাধারণের জন্য বন্ধ রয়েছে এবং ইস্তাম্বুলে দেশটির কনস্যুলেট জেনারেলের দর্শনার্থীদের ‘সতর্কতা অবলম্বন করতে অনুরোধ করা হয়েছে।’
স্টকহোমে গত সপ্তাহান্তের ঘটনার পর তুরস্কে শুরু হওয়া পাল্টা প্রতিবাদের কথা উল্লেখ করে সুইডেনের মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘আমরা তুরস্কে সুইডিশদের সচেতন করতে চাই যে আরও প্রতিবাদ হতে পারে।’
আরও পড়ুন: সুইডেনে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় ঢাকার নিন্দা
৮০৮ দিন আগে