পেশোয়ার
পাকিস্তানে মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত ২০, আহত ৯৬
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর পেশোয়ারের একটি মসজিদের ভিতরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় কমপক্ষে ২০ জন নিহত এবং ৯৬ জন মুসল্লি আহত হয়েছেন। সোমবার স্থানীয় কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পেশোয়ারের একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা সাদ্দিক খান বলেছেন, কেউ তাৎক্ষণিকভাবে বোমা হামলার দায় স্বীকার করেনি।
তবে অতীতে একই ধরনের আত্মঘাতী হামলায় পাকিস্তানি তালেবানদের দায়ী করা হয়েছে।
আশেপাশের পুলিশ অফিসের অনেক পুলিশসহ প্রায় ১৫০ জন মুসল্লি মসজিদে নামাজ পড়ছিলেন, এসময় হামলাকারী তার আত্মঘাতী জ্যাকেটের বিস্ফোরণ ঘটায়।
স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা জাফর খান জানান, বিস্ফোরণের প্রভাবে মসজিদের ছাদ ধসে পড়ে এবং এতে অনেকে আহত হয়।
একজন বেঁচে যাওয়া ৩৮ বছর বয়সী পুলিশ অফিসার মীনা গুল জানান, বোমাটি বিস্ফোরণের সময় তিনি মসজিদের ভেতরে ছিলেন।
গুল আরও বলেন, কীভাবে তিনি অক্ষত অবস্থায় বেঁচে গেছেন তা তিনি জানেন না। বোমা বিস্ফোরণের পর তিনি শুধু চিৎকার ও চেঁচামেচি শুনতে পান।
পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধারকারীরা মসজিদের মাঠ থেকে ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে ফেলার এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা মুসল্লিদের উদ্ধারের চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে বোমা হামলায় যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত, আহত ১৫
খান বলেন, আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে গুরুতর অবস্থায় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ এক বিবৃতিতে বোমা হামলার নিন্দা করেছেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সম্ভাব্য সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি হামলার পিছনে যারা রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ‘কঠোর ব্যবস্থা’ নেয়ার অঙ্গীকার করেছেন।
দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও এক টুইটার পোস্টে বোমা হামলার নিন্দা করেছেন এবং এটিকে ‘সন্ত্রাসী আত্মঘাতী হামলা’ বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেছেন, ‘আমার প্রার্থনা ও সমবেদনা নিহতদের পরিবারের সঙ্গে থাকবে।’
ইমরান আরও বলেছেন, ‘সন্ত্রাসবাদের ক্রমবর্ধমান হুমকি মোকাবিলায় আমাদের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের উন্নতি করা এবং আমাদের পুলিশ বাহিনীকে যথাযথভাবে প্রস্তূত করা অপরিহার্য।’
পেশোয়ার হল আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের রাজধানী এবং এখানে প্রায়ই জঙ্গি হামলা ঘটে।
পাকিস্তানি তালেবান গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান বা টিটিপি নামে পরিচিত। তারা পৃথক গোষ্ঠী হলেও আফগান তালেবানের ঘনিষ্ঠ মিত্র। আফগানিস্তানে ২০ বছর যুদ্ধের পর মার্কিন ও ন্যাটো সৈন্য প্রত্যাহারের পর ২০২১ সালের আগস্টে ক্ষমতা দখল করে তালেবান।
টিটিপি পাকিস্তানে ইসলামী আইনের কঠোর প্রয়োগের জন্য, সরকারি হেফাজতে থাকা তাদের সদস্যদের মুক্তি এবং দেশটির সাবেক উপজাতীয় অঞ্চলে পাকিস্তানি সামরিক উপস্থিতি হ্রাস করার জন্য গত ১৫ বছর ধরে বিদ্রোহ চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তের কাছে মর্টার বিস্ফোরণে নিহত ৪, নিখোঁজ ২০
পাকিস্তানে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৩ চীনা নাগরিক নিহত
১ বছর আগে