বগুড়া-৪
জাতীয় নির্বাচন থেকে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের ঘোষণা হিরো আলমের
বগুড়া-৪ (কাহালু ও নন্দীগ্রাম) আসনে বাংলাদেশ কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থী আলোচিত ইউটিউবার আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম প্রার্থীতা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে হিরো আলম বলেছেন, নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামী ১৭ ডিসেম্বর নিজের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেব। তবে কি কারণে তা এখনই বলছি না। ওইদিনই জানাব।
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) তার ফেসবুক পেজে দেওয়া পোস্টে এ ঘোষণা দেন হিরো আলম।
তবে তার সঙ্গে ফোনে যোগযোগ করে পাওয়া যায়নি।
গত ৩ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র যথাযথভাবে পূরণ না করার কারণ দেখিয়ে হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন বগুড়া রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম।
সেদিন সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আশরাফুল হোসেন আলম দলীয় প্রার্থী হয়েও প্রার্থীতা আবেদন পত্রে দলের নাম উল্লেখ করেননি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এক শতাংশ ভোটার তালিকাও জমা দেননি। দলীয় ফরমের মূল কপি জমা না দিয়ে ফটোকপি জমা দিয়েছেন। এ ছাড়া হলফনামায় তিনি তার সই দেননি এবং সম্পদ বিবরণী ফরমও জমা দেননি। এসব কারণে আশরাফুল হোসেন আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হলো।’
আরও পড়ুন: মাহি বি, হিরো আলমসহ ৫৬ জন প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন
প্রার্থিতা ফিরে পেতে হিরো আলম গত ৬ ডিসেম্বর ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে গিয়ে আপিল করেন। সেই আপিলের শুনানিতে ইতোমধ্যে তিনি প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন।
ওই আসনে বর্তমান এমপি জাসদ নেতা রেজাউল করিম তানসেন ছাড়াও বৈধ প্রার্থী রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি ও সাবেক বিএনপি নেতা ডা. জিয়াউল হক মোল্লা, আওয়ামী লীগ প্রার্থী হেলাল উদ্দিন কবিরাজ, জাতীয় পার্টির (জাপা) মোস্তফা কামাল ফারুকসহ আরও কয়েকজন প্রার্থী।
এর আগে চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেছিল রিটার্নিং অফিসার।
পরে নির্বাচন কমিশনে আপিল করে প্রার্থিতা ফেরত না পেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করে প্রার্থীতা ফিরে পান হিরো আলম।
হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে বগুড়া-৪ আসনে একতারা প্রতীকে ৮৩৪ ভোট কম পেয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত জাসদের প্রার্থী একেএম রেজাউল করিম তানসেনের কাছে হেরে যান তিনি। তবে বগুড়া সদরে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।
আরও পড়ুন: একাধিক ত্রুটির কারণে হিরো আলমের মনোনয়ন বাতিল
রিজভীর বিরুদ্ধে হিরো আলমের ৫০ কোটি টাকার মানহানি মামলা
১১ মাস আগে
ফলাফল পাল্টে দেয়া হয়েছে: হিরো আলম
বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেয়ার অভিযোগ তুলে ফল প্রত্যাখ্যান করেছেন বহুল আলোচিত আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বগুড়া সদর উপজেলার এরুলিয়া ইউনিয়নের এরুলিয়া গ্রামের নিজ বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ তুলে আদালতের আশ্রয় নেয়ার কথা জানান।
সংবাদ সম্মেলনে হিরো আলম বলেন, ‘ভোট সুষ্ঠু হয়নি,ফলাফল পাল্টে দেয়া হয়েছে। আমি এ ফলাফল মানি না। আমার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। শিগগিরই ফল বাতিল চেয়ে আদালতে রিট করা হবে।'
তিনি বলেন, 'নির্বাচনের পরিবেশ ভাল ছিল। কিন্তু নন্দীগ্রামে যখন ফলাফল ঘোষণা করা হলো তখনই তাদের কাজে সন্দেহ লেগেছে। কারণ তারা নন্দীগ্রাম উপজেলার মোট ৪৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ধাপে ধাপে ৩৯টি কেন্দ্রের ফল আলাদা ঘোষণা করেন। কিন্তু বাকি ১০টি কেন্দ্রের ফলাফল আলাদাভাবে ঘোষণা না করে এক সঙ্গে ১০ কেন্দ্রর ফলাফল ঘোষণা করেন। এই দশ কেন্দ্রের ফলাফল আলাদা আলাদা করে ঘোষণা না করে একসঙ্গে কেন করা হলো? এখানেই কারচুপি করা হয়েছে। এমনকি আমাদের এজেন্টদের কাছেও ফলাফলের কোন কপি দেয়া হয়নি।’
আরও পড়ুন: হেরে গেলেন হিরো আলম
হিরো আলম আরও বলেন, 'আজকে সারা বাংলাদেশ তাকিয়ে ছিল হিরো আলমের দিকে। গর্বে আমার বুক ভরে গেছে। আমার মনে হয়েছে আমি প্রধানমন্ত্রীর ভোট করলাম। আমি সবার যে ভালবাসা পেয়েছি তা কখনও ভুলবো না। আমাকে জোর করে হারানো হয়েছে। কিছু শিক্ষিত মানুষ চায়নি হিরো আলম এমপি হোক। কারণ আমি জিতলে মনে হয় সরকার এবং তাদের সম্মান চলে যাবে। এমনকি হিরো আলমের মতো মূর্খকে তাদের স্যার বলে ডাকতে হবে। এই ভয়েই আমাকে তারা ভোটে পাশ করতে দেয়নি।'
২০২৪ সালের জাতীয় সাধারণ নির্বাচন করবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে হিরো আলম বলেন, ‘উপনির্বাচনের মত পরিবেশ থাকলে ভোটে দাঁড়ানোর ইচ্ছা থাকবে না। আমি চাই ভোট সুষ্ঠু হোক। যাতে ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জেতাতে পারে।’
এ আসনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট প্রার্থী জাসদ নেতা একেএম রেজাউল করিম তানসেন বিজয়ী হয়েছেন। মশাল প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ২০ হাজার ৪০৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলমের একতারা প্রতীকে পড়েছে ১৯ হাজার ৫৭১ ভোট।
বুধবার রাত ৮টা ১৫ মিনিটে রিটার্নিং কর্মকর্তা বগুড়ার জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম ওই আসনের মোট ১১২টি কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করেন। নির্বাচনে মোট ৯ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। ওই আসনে তিন লাখ ২৮ হাজার ৪৬৯জন ভোটারের মধ্যে ৭৮ হাজার ৫৭০ জন ভোট দিয়েছেন যা শতকরা হার ২৩ দশমিক ৯২ শতাংশ।
আরও পড়ুন: আমার মতো পাগলকে একবার ভোট দিয়ে দেখেন: হিরো আলম
বগুড়া উপনির্বাচনে হিরো আলমের মনোনয়পত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত হাইকোর্টে স্থগিত
১ বছর আগে