চ্যাটজিপিটি
ওপেনএআই কিনতে প্রায় ১০ হাজার কোটি ডলার প্রস্তাব মাস্কের
টুইটারের (বর্তমান এক্স) পর এবার চ্যাপজিপিটির মূল প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই কেনার প্রস্তাব দিয়েছেন টেসলার প্রধান নির্বাহী ও মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রথম সারির এই প্রতিষ্ঠানটি কিনতে বিরাট অঙ্কের আর্থিক প্রস্তাব দিয়েছেন মাস্কের নেতৃত্বাধীন একটি বিনিয়োগকারী দল।
ওপেনএআইয়ের সমস্ত সম্পত্তি কিনে নিতে ৯ হাজার ৭৪০ কোটি ডলার প্রস্তাব করা হয়েছে বলে সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছেন মাস্কের আইনজীবী মার্ক টোবেরফ।
তবে লোভনীয় এই প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছেন ওপেনএআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) স্যাম আল্টম্যান।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক ও আল্টম্যানের মধ্যে উত্তেজনা নতুন কিছু নয়। কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার উৎকর্ষের এই যুগে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলমান পারস্পরিক টানাপোড়েনের মধ্যে মাস্কের এই প্রস্তাব নতুন উত্তেজনার জন্ম দিল।
আরও পড়ুন: চ্যাটজিপিটির বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে ভারতীয় বড় সংবাদমাধ্যমগুলো
এদিকে, মাস্কের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে তারই মালিকানাধীন এক্স (সাবেক টুইটার) কিনে নেওয়ার পাল্টা প্রস্তাব দিয়েছেন আল্টম্যান। এক্স কিনতে ৯৭৪ কোটি ডলার দাম হাঁকিয়েছেন তিনি।
এক এক্স পোস্টে মাস্কের প্রস্তাব ফিরিয়ে তার উদ্দেশে এই প্রযুক্তিবিদ বলেন, ‘ধন্যবাদ! আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠান বিক্রি করব না। তবে আপনি চাইলে আমরা টুইটার কিনে নিতে পারি।’
কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার প্রারম্ভিক এই যুগে এআইভিত্তিক বিভিন্ন টুলসের একটি বড় বাজার ইতোমধ্যে গড়ে ফেলেছে ওপেনএআই। ফলে সারা বিশ্ব থেকেই ব্যাপক বিনিয়োগ আকর্ষণ করছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রযুক্তি খাতে, বিশেষ করে এআইতে ভবিষ্যতে এই প্রতিষ্ঠানটি যে আধিপত্য করবে, তা সবারই জানা।
ইলন ও আল্টম্যান উভয়েই ওপেনএআইয়ের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। ২০১৫ সালে প্রাথমিকভাবে একটি অলাভজনক সংস্থা হিসেবে যাত্রা শুরু করে ওপেনএআই। এরপর ২০১৮ সালে কোম্পানিটি থেকে বের হয়ে যান মাস্ক। তবে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম চালিয়ে যান আল্টম্যান। পরে ওপেনএআইকে লাভজনক কোম্পানিতে পরিণত করার চেষ্টা শুরু করেন তিনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে তার হাত ধরে আসে চ্যাটজিপিটি।
ওপেনএআইকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরে আল্টম্যানের এই সিদ্ধান্তের প্রতি অসম্মতি জানান মাস্ক। সে সময় তিনি বলেন, ওপেনএআই প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল মানবতার উপকারে এআই তৈরি করা, কিন্তু সেই নীতি থেকে সরে এসেছে প্রতিষ্ঠানটি।
তবে ওপেনএআইয়ের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, নতুন বিনিয়োগ সংগ্রহের জন্যই এই নীতিগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। এই পদক্ষেপ উন্নত এআই প্রযুক্তির উন্নয়নে সহায়ক হবে বলে মনে করেন তারা।
আরও পড়ুন: ডিপসিক: এআইয়ের দুনিয়ায় চ্যাটজিপিটি ও জেমিনির লড়াকু প্রতিপক্ষ
কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার জগতে মাস্ক পুনরায় প্রবেশ করেন ২০২৩ সালে। এক্সএআই নামে একটি প্ল্যাটফর্ম নিয়ে আসেন তিনি।
সম্প্রতি ওপেনএআইয়ের স্বত্ব কিনে নিতে মাস্কের কোম্পানি এক্সএআই ছাড়াও বেশ কয়েকটি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান চেষ্টা করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ব্যারন ক্যাপিটাল গ্রুপ ও ভ্যালর ম্যানেজমেন্টের মতো প্রতিষ্ঠান।
আল্টম্যানকে প্রস্তাব দিয়ে এক বিবৃতিতে মাস্ক বলেছেন, ওপেনএআইকে তার পুরনো অবস্থানে ফিরিয়ে আনতে হবে। এটিকে আবারও একটি ওপেন-সোর্স ও নিরাপত্তাকেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
অবশ্য মাস্কে যে দাম হাঁকিয়েছেন তা ওপেনএআইয়ের সর্বশেষ বাজারমূল্যের তুলনায় অনেক কম। ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে সর্বশেষ তহবিল সংগ্রহ করেছিল ওপেনএআই। সে সময় প্রতিষ্ঠানটির বাজারমূল্য ছিল ১৫৭ বিলিয়ন ডলার। তবে বর্তমানে এর মূল্য ৩০০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
সম্প্রতি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অবকাঠামো তৈরির জন্য ৫০০ বিলিয়ন ডলারের নতুন একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে ওপেনএআই। এই প্রকল্পে তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ওরাকল। এছাড়া প্রকল্পটির অপর দুই অংশীদার হিসেবে যুক্ত হয়েছে জাপানের একটি বিনিয়োগকারী সংস্থা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি সার্বভৌম তহবিল।
‘দ্য স্টারগেট প্রজেক্ট’ নামে পরিচিত এই উদ্যোগের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি এই প্রকল্পকে ‘ইতিহাসের সর্ববৃহৎ এআই অবকাঠামো প্রকল্প’ বলে অভিহিত করে বলেন, ‘এটি যুক্তরাষ্ট্রে প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শীর্ষ উপদেষ্টাদের একজন হওয়া সত্ত্বেও এই প্রকল্পে ঘোষিত বিনিয়োগের অর্থ বাস্তবে এখনও নিশ্চিত হয়নি বলে দাবি করেন মাস্ক। তবে তার এই দাবির পক্ষে নির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেননি তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের অক্টোবরে টুইটার কিনে নেন ইলন মাস্ক। পরবর্তীতে মাইক্রোব্লগিং এই প্ল্যাটফর্মের নাম পরিবর্তন করে তিনি এর নতুন নাম দেন ‘এক্স’।
৫২ দিন আগে
চ্যাটজিপিটির বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে ভারতীয় বড় সংবাদমাধ্যমগুলো
মার্কিন স্টার্টআপ ওপেন এআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে ভারতের সবচেয়ে বড় সংবাদমাধ্যমগুলো। তাদের লেখা ও কন্টেন্ট (আধেয়) বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে চ্যাটজিপিটির এই মূল উদ্যোক্তা কোম্পানির বিরুদ্ধে।-খবর বিবিসির
গেল নভেম্বরে ভারতের সবচেয়ে বড় সংবাদ সংস্থা এসিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনাল (এএনআই) প্রথম ওপেন এআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করে। ভারতে এরকম প্রথম ঘটনা ছিল এটি। এখন অন্যান্য সংবাদমাধ্যমগুলোও এএনআইয়ের সঙ্গে যুক্ত হতে যাচ্ছে।
এএনআইয়ের অভিযোগ, ‘ওপেন এআই তাদের কপিরাইটযুক্ত লেখা অবৈধভাবে ব্যবহার করছে। ক্ষতিপূরণ হিসেবে স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানটির কাছে দুই কোটি রুপি দাবি করা হয়েছে।’
আরো পড়ুন:ডিপসিক: এআইয়ের দুনিয়ায় চ্যাটজিপিটি ও জেমিনির লড়াকু প্রতিপক্ষ
বিবিসির খবর বলছে, চ্যাটজিপিটি যখন ভারতে নিজেদের ব্যবসা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে, তখনই তাদের বিরুদ্ধে এই মামলার বিষয়টি সামনে চলে এসেছে। জরিপ অনুসারে, ভারতেই চ্যাটজিপিটির সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ব্যবহারকারী।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, কন্টেন্ট চুরির দায়ে ওপেন এআইকে বিচারের মুখোমুখি করতে চাচ্ছে ভারতের সবচেয়ে পুরোনো দৈনিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, দ্য হিন্দু, দ্য ইন্ডিয়ান টুডে গ্রুপ, ধনকুবের গৌতম আদানির মালিকানাধীন এনডিটিভিসহ আরও এক ডজনের বেশি সংবাদমাধ্যম।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ওপেন এআই দাবি করছে, সর্বত্র গ্রহণযোগ্য আইনগত দৃষ্টান্ত মেনে ইন্টারনেটে সচরাচর পাওয়া যায় এমন উপাত্তই কেবল তারা ব্যবহার করছেন।
বুধবার (৬ জানুয়ারি) ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে ছিলেন ওপেন এআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্যাম অ্যাল্টম্যান। সেখানে তিনি স্বল্প-খরচের এআই বাস্তুসংস্থান তৈরিতে ভারতীয় পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন দেশটির আইটিমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গে।
স্যাম অ্যাল্টম্যান বলেন, ভারতের উচিত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিপ্লবের নেতৃত্ব দেওয়া দেশের একটি হওয়া। কারণ দেশটি কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার একটি বড় বাজার।
ইন্টারনেট চষে উপত্ত সংগ্রহের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় চ্যাটজিপিটির মতো চ্যাটবটকে। সেক্ষেত্রে ভারতের সাড়ে ৪০০ সংবাদভিত্তিক চ্যানেল ও খবরের কাগজ যেসব লেখা ও কন্টেন্ট প্রকাশ করে, সেগুলো চ্যাটজিপিটির উপাত্ত সংগ্রহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বলতে গেলে, চ্যাটবটের জন্য একটি উর্বর ভূমি হচ্ছে ভারত।
কিন্তু কী কী তথ্য চ্যাটজিপি সংগ্রহ করে বৈধভাবে ব্যবহার করতে পারবে, সে সম্পর্কে কোনো পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না। বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত এক ডজন মামলা রয়েছে চ্যাটজিপিটির বিরুদ্ধে। বিভিন্ন প্রকাশক, শিল্পী ও সংবাদসংস্থা এসব মামলা করেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের মতো তাদের অভিযোগও একই।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে চ্যাটজিপিটির বিরুদ্ধে মামলা করে মার্কিন দৈনিক নিউ ইয়র্ক টাইমস। ওপেন এআই ও মাইক্রোসফটের কাছে তারা কোটি কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
৫৮ দিন আগে
ডিপসিক: এআইয়ের দুনিয়ায় চ্যাটজিপিটি ও জেমিনির লড়াকু প্রতিপক্ষ
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জগতে শুরু থেকেই আধিপত্য বিস্তার করে আছে চ্যাটজিপিটি। এছাড়া গুগলের জেমিনি ও অ্যানথ্রপিক ক্লডের মত কয়েকটি নামও বেশ পরিচিতি পেয়েছে। কিন্তু তাদের কেউই ওপেন এআইয়ের এই সেবাটির সমকক্ষ হয়ে উঠতে পারেনি। তবে এবার এআই যুদ্ধে শক্ত প্রতিপক্ষ হিসেবে আবির্ভাব ঘটেছে চীনা প্রতিষ্ঠান ডিপসিকের। কারিগরি বৈশিষ্ট্য ও বাজারে যুগান্তকারী প্রভাবের মধ্য দিয়ে বিশ্ববাসীকে নতুন বাস্তবতার সম্মুখীন করেছে এই পরিষেবাটি। চলুন, চ্যাটজিপিটিসহ সমসাময়িক প্রতিযোগীদের মাঝে ডিপসিকের অবস্থানটি পর্যালোচনা করে দেখা যাক।
ডিপসিক কি
এই উন্নত এআই মডেলটির নামকরণ করা হয়েছে প্রতিষ্ঠানের নামেই। চীনের জেজিয়াং প্রদেশের রাজধানী শহর হ্যাংজোর একটি গবেষণাগারে চলে এর উন্নয়নের কাজ। ২০২৩ সালের মে থেকে কাজটি শুরু করেন প্রকৌশলী লিয়াং ওয়েনফেং। গ্রাফিক্স কার্ডের জন্য বিশ্বব্যাপি সুপরিচিত মার্কিন প্রতিষ্ঠান এনভিডিয়া থেকে বিপুল সংখ্যক চিপ জমা করছিলেন ওয়েনফেং। বিশ্লেষকদের দাবি, সংগ্রহে থাকা এই চিপগুলো কাজে লাগিয়েই তিনি ডিপসিক বানিয়েছেন। চিপগুলো যথেষ্ট কম দামি হওয়ায় অনেক কম খরচেই মডেলটি চূড়ান্তভাবে ব্যবহারযোগ্য একটি সেবায় রূপ লাভ করে।
ডিপসিকের মডেলটি ওপেন-সোর্সভিত্তিক। চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি অ্যাপল ও অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ হিসেবে ছাড়া হয় ডিপসিকের প্রথম সংস্করণ আর ১। ২৭ জানুয়ারি নাগাদ এটি যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপল অ্যাপ স্টোর থেকে বিনামূল্যে সবচেয়ে বেশি ডাউনলোড করা অ্যাপ হিসেবে চ্যাটজিপিটিকে ছাড়িয়ে যায়। শুধু তাই নয়, চীনসহ যুক্তরাজ্যের কয়েকটি দেশেও এই চ্যাটবট অ্যাপটি চ্যাটজিপিটির তুলনায় বেশিবার ডাউনলোড করা হয়েছে।
আরো পড়ুন: স্মার্টফোনে ভূমিকম্প সতর্কতা চালু করবেন যেভাবে
তাই সিলিকন ভ্যালিসহ গোটা এআই দুনিয়াকে এটি নতুন এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করছে বলে দাবি করছেন বাজার বিশ্লেষকরা। সমসাময়িক প্রতিষ্ঠিত এআই পরিষেবাগুলোর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ডিপসিককে এখন উদীয়মান এআই হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। এতদিন ধরে চ্যাটজিপিটির একচেটিয়া কর্তৃত্বকে হুমকির মুখে ফেলে ডিপসিক এআই প্রতিদ্বন্দিতার এক নতুন যুগের সূচনা ঘটিয়েছে।
সমসাময়িক এআই মডেলগুলোর সঙ্গে ডিপসিকের তুলনা
.
উন্নয়ন খরচ
ডিপসিকের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও প্রধান কৃতিত্ব হচ্ছে এর বাজেট-বান্ধব প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়া। ১০ হাজার এনভিডিআ জিপিইউয়ের ওপর আর ১ মডেলটির বিকাশ ঘটাতে প্রয়োজন হয়েছিলো মাত্র ৬০ লাখ মার্কিন ডলার।
এটি ওপেনএআই, মেটা (সাবেক ফেসবুক) ও গুগলের উন্নয়ন খরচ থেকে অনেক কম। সঙ্গত কারণেই এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাধিক ব্যবহৃত এআই অ্যাপে পরিণত হয়। এতে করে রাতারাতি মোড় ঘুরে যায় এআই নির্ভর ইন্ডাস্ট্রির। এই ধাক্কার শিকার হয়েছে মেটা ও মাইক্রোসফ্টসহ অনেকগুলো এআই প্রতিষ্ঠানের। এই তালিকায় রয়েছে- স্বয়ং এনভিডিআও, যেখানে স্টকের দাম পড়ে গেছে প্রায় ১৭ শতাংশ।
আরও পড়ুন: কীভাবে জানবেন ঢাকার যানজটের সর্বশেষ অবস্থা?
পারফর্মেন্সের দিক থেকে বিশ্বখ্যাতি থাকলেও চ্যাটজিপিটি ও জেমিনি প্রশিক্ষণ এবং রক্ষণাবেক্ষণের খরচ যথেষ্ট বেশি। অন্যদিকে ডিপসিক কম খরচে প্রায় সমপরিমাণ সক্ষমতা প্রদর্শন করছে। এটি বদলে দিচ্ছে যে পদ্ধতিতে এআইকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় তার ন্যায্যতার হিসাব।
পারদর্শিতা
কোনও প্রশ্ন করা হলে ডিপসিক আর ১ প্রথমে তার উত্তর তৈরি করার প্রক্রিয়াটি ব্যবহারকারির সঙ্গে শেয়ার করে। এখানে থাকে উত্তর প্রস্তুত করার জন্য প্রয়োজনীয় যুক্তি ও সামঞ্জস্যপূর্ণতা। এখানে কোনো পরিবর্তন প্রয়োজন হলে ব্যবহারকারি তার নির্দেশনা দিয়ে দেন। তারপর চূড়ান্ত নিদের্শনার ওপর নির্ভর উত্তরটি সরবরাহ করা হয়। এতে করে উত্তরের নির্ভুলতা ও প্রাসঙ্গিকতা বজায় থাকে। সহজ ভাষায় ডিপসিক কাজ দেখানোর পূর্বে সে কিভাবে কাজটি করবে তার একটা খসড়া নিয়োগকর্তাকে দেখিয়ে নেয়। অন্যদিকে, চ্যাটজিপিটি নিজে থেকেই পুরো কাজটি সম্পন্ন করে। সর্বশেষ হালনাগাদকৃত সংস্করণে এটি আরও পরিণত হয়েছে। তাছাড়া প্রিমিয়াম ক্যাটাগরিগুলো আরও ভালো পারফর্মেন্স দেয়।
কিন্তু এক্ষেত্রে শুরুর দিকে চ্যাটজিপিটির অবস্থার সঙ্গে তুলনা করলে ডিপসিক অনেকটা এগিয়ে থাকবে।
আরো পড়ুন: নারীর নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত সুরক্ষায় মোবাইল অ্যাপ
গ্রহণযোগ্যতা
প্রতি মুহুর্তে ডিপসিকের ক্রমবর্ধমান ডাউনলোড সংখ্যার ক্রমাগত গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির বিষয়টিকে প্রকাশ করছে। মুক্তির মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই এর মোবাইল অ্যাপটির ২৬ লাখ ডাউনলোড হয়। এখন পর্যন্ত এটি যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপের তালিকার শীর্ষে ও বিশ্ব জুড়ে ১১১টি দেশে শীর্ষ ১০ অ্যাপে মধ্যে রয়েছে। অন্যদিকে, ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপি একটি বিশ্বস্ত নাম হয়ে ওঠায় প্রতি মাসেই চ্যাটজিপিটির ডাউনলোড সংখ্যা থাকে কয়েক মিলিয়ন
এর পেছনে অবশ্য মুক্তির সময় অভূতপূর্ব সেবা হওয়া ও বিভিন্ন প্রযুক্তিগত পরিষেবাগুলোর সঙ্গে এর সমন্বয়ও দায়ী।
বিচার-বিবেচনা
তৈরিকৃত লিখিত কন্টেন্টের ধরণ কেমন হবে তা নিয়ে প্রতিটি এআই মডেলেরই কিছু স্বতন্ত্র বিবেচনা পদ্ধতি রয়েছে। কিন্তু চ্যাটজিপিটি ও জেমিনির ব্যাপারে এখন পর্যন্ত পক্ষপাতিত্বের কোনো অভিযোগ মেলেনি।
শুরু থেকেই এগুলো স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা ও বিতর্কিত বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে ভারসাম্যপূর্ণতা বজায় রেখেছে। এই নৈতিক অবস্থান বিশ্ব বাজারে তাদের বস্তুনিষ্ঠ কন্টেন্ট ও বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে।
আরো পড়ুন: আইফোন চুরি প্রতিরোধে অ্যাপলের গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা
কিন্তু ডিপসিককে নিয়ে এই সূচনালগ্নেই একটি সমালোচনার অবতারণা ঘটেছে। আর তা হচ্ছে- চীনের ঐতিহাসিক তিয়েনানমেন স্কয়ার বিক্ষোভ নিয়ে জানতে চাওয়া হলে আর ১ তা এড়িয়ে যায়। এমন পক্ষপাতমূলক বৈশিষ্ট্য নিয়েই সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে ডিপসিক।
এরই রেশ ধরে নিকট ভবিষ্যতে এআই সেবা প্রদানে সীমিত অনুশীলনের আশঙ্কা থাকছে, যা উন্মুক্ত তথ্য প্রবাহের অন্তরায়।
প্রতিবন্ধকতা ও সম্ভাবনা
মুক্তির পরপরই ডিপসিকে বড় আকারের কিছু সাইবার আক্রমণ চীনের বাইরের ব্যবহারে কিছুটা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। দীর্ঘমেয়াদে এটি অ্যাপটির ব্যবসার ক্ষেত্রে সমূহ ক্ষতির কারণ হতে পারে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন উদ্ভাবন ও নিয়মিত হালনাগাদকরণ এই বাধা অতিক্রমে কার্যকর হতে পারে। একই সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে চ্যাটজিপিটি ও জেমিনির পাশাপাশি অন্য এআই মডেলগুলোও নিজেদের আপগ্রেড করবে।
আরো পড়ুন: ভিডিও গেম খেলে অর্থ উপার্জনের উপায়
ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র সাশ্রয়ী খরচে এআইয়ের উন্নয়ন সাধনের জন্য চীনের সঙ্গে সমন্বয় করতে সহমত পোষণ করেছে।
সর্বপরি, উন্নয়নকারী প্রতিষ্ঠান ও গ্রাহক উভয়ের জন্যই ইন্ডাস্ট্রি জুড়ে এমন প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হওয়ার এক সুদূরপ্রসারি প্রভাব রয়েছে।
ইতিবাচক ও গঠনমূলক প্রতিদ্বন্দ্বিতার দৌলতে তৈরি হয় সমস্যা সমাধানের প্রেক্ষাপট। এতে করে একদিকে যেমন ব্যবসাগুলোর প্রান্তিক লাভ বাড়ে, অপরদিকে তেমন সাধারণ মানুষের জীবনধারণ পদ্ধতিও উন্নত হয়।
আরও পড়ুন: ২০২৫ সালে যে প্রযুক্তিগত দক্ষতাগুলোর চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকবে
সারবস্তু
চ্যাটজিপিটির একচেটিয়া রাজত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এবার এআই কেন্দ্রিক প্রতিযোগিতার মঞ্চ তৈরি করলো ডিপসিক। উন্নয়ন খরচ সাশ্রয়ী হওয়ায় ওপেন সোর্স সফ্টওয়্যারটি নিয়ে গবেষণার বিপুল সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ডাউনলোড করে নিজস্ব ডিভাইসে সংরক্ষণের সুবিধা। ফলে সহজলভ্যতা নন-টেক শ্রেণি পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়ায় বিরাট এক পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে প্রযুক্তি বাজার।
আরো পড়ুন: কীভাবে বুঝবেন ছবিটি এআই দিয়ে বানানো কিনা
৬৪ দিন আগে
চ্যাটজিপিটির বিকল্প 'ট্রুথজিপিটি' তৈরির পরিকল্পনা ইলন মাস্কের
বিলিয়নেয়ার টুইটারের মালিক ইলন মাস্ক আবার মানবতার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিপদ সম্পর্কে সতর্কতা ঘণ্টা বাজিয়েছেন। দাবি করছেন যে একটি জনপ্রিয় চ্যাটবটের একটি উদার পক্ষপাত রয়েছে। তিনি নিজের এআই সৃষ্টি করে এর মোকাবিলা করার পরিকল্পনা করছেন।
সোমবার রাতে মাস্ক প্রচারিত একটি বিভাগে ফক্স নিউজ হোস্ট টাকার কার্লসনকে বলেছিলেন যে তিনি জনপ্রিয় এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটির বিকল্প ‘ট্রুথজিপিটি’ তৈরি করার পরিকল্পনা করছেন। যেটি একটি ‘সর্বোচ্চ সত্য-সন্ধানী এআই হবে যা মহাবিশ্বের প্রকৃতি বোঝার চেষ্টা করে।’
মাস্ক বলেন, ধারণাটি হলো যে একটি এআই যে মানবতাকে বুঝতে চায় এটিকে ধ্বংস করার সম্ভাবনা কম।
মাস্ক আরও বলেছিলেন যে তিনি চিন্তিত যে চ্যাটজিপিটি ‘রাজনৈতিকভাবে সঠিক হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।’
কার্লসনকে দেয়া দুই-অংশের সাক্ষাৎকারে প্রথমটিতে, মাস্ক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নিয়ন্ত্রণের পক্ষেও পরামর্শ দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে তিনি একজন ‘বড় ভক্ত’। তিনি এআইকে গাড়ি বা রকেটের চেয়ে ‘আরও বিপজ্জনক’ উল্লেখ করে বলেছিলেন যে এটি মানবতাকে ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে।
আরও পড়ুন: ইলন মাস্ককে নিয়ে তথ্যচিত্র তৈরি করছেন অস্কার বিজয়ী অ্যালেক্স গিবনি
নেভাদা ব্যবসায়িক ফাইলিং অনুসারে মাস্ক আলাদাভাবে এক্স.এআই কর্পোরেশন নামে একটি নতুন ব্যবসা সংগঠিত করেছে। নেভাদা সেক্রেটারি অব স্টেট অফিসের ওয়েবসাইট বলছে, ব্যবসাটি ৯ মার্চ যাত্রা শুরু করে এবং মাস্ককে এর পরিচালক এবং তার দীর্ঘকালীন উপদেষ্টা জ্যারেড বার্চালকে সচিব হিসাবে নিযুক্ত করেছে।
মাস্ক বহু বছর ধরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে দৃঢ় মতামত প্রকাশ করেছেন এবং মার্ক জুকারবার্গ এবং বিল গেটস সহ অন্যান্য প্রযুক্তি নেতাদের বরখাস্ত করেছেন, যা তিনি এই ক্ষেত্রের একটি ‘সীমিত’ বোঝার জন্য বর্ণনা করেছেন।
ওপেনএআই ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি ব্লগ পোস্টে বলেছে, মাস্ক ওপেনআই-চ্যাটজিপিটির পিছনে একটি স্টার্টআপ-এ একজন প্রাথমিক বিনিয়োগকারী ছিলেন এবং২০১৫ সালে একটি অলাভজনক এআই গবেষণা ল্যাব হিসাবে প্রতিষ্ঠার পরে এর বোর্ডের সহ-সভাপতি ছিলেন৷ কিন্তু মাস্ক সেখানে মাত্র কয়েক বছর স্থায়ী থাকার পর ২০১৮ সালের শুরুর দিকে বোর্ড থেকে পদত্যাগ করেন।
সান ফ্রান্সিসকো স্টার্টআপটি স্বয়ংক্রিয় ড্রাইভিং সিস্টেম তৈরিতে টেসলার কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল। ‘যেহেতু টেসলা এআইতে আরও বেশি মনোযোগী হচ্ছে, এটি ইলনের জন্য একটি সম্ভাব্য ভবিষ্যতের দ্বন্দ্ব দূর করবে।’
মাস্ক কার্লসনকে বলেছিলেন, ‘আমি নাম এবং ধারণা নিয়ে এসেছি।’ ‘ ওপেনএআই এখন মাইক্রোসফ্টের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত এবং আর অলাভজনক নয়।
মাস্ক ২০১৯ সালে তার প্রস্থানের বিষয়ে বিস্তারিতভাবে বলেছেন, এটি টেসলার প্রকৌশল সমস্যা এবং ওপেনএআই- এর নেতাদের সঙ্গে কিছু মতামতের পার্থক্যের উপর ফোকাস করার প্রয়োজনীয়তার সঙ্গেও সম্পর্কিত ছিল। তিনি বলেন, ‘ভালো শর্তে বিচ্ছিন্ন হওয়াই ভালো।’
মাস্ক নির্দিষ্ট না করেই টুইটে বলেছেন, ‘টেসলা ওপেনএআই-এর মতো কিছু লোকের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিল এবং ওপেনএআই টিম যা করতে চেয়েছিল তার কিছুর সঙ্গে আমি একমত নই।’
কিন্তু টেসলার এআই সিস্টেমের গুণমান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মার্কিন নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রকরা গত মাসে ক্যালিফোর্নিয়ায় একটি পার্ক করা ফায়ারট্রাকে ছুটে যাওয়ার সময় একটি স্বয়ংক্রিয় ড্রাইভিং সিস্টেম ব্যবহার করার জন্য সন্দেহভাজন একটি টেসলা জড়িত একটি মারাত্মক দুর্ঘটনার তদন্ত ঘোষণা করেছে।
ফায়ারট্রাক অভিযোগ হলো অটোমেকারের অটোপাইলট সিস্টেম ব্যবহার করে টেসলাসের একাধিক দৃষ্টান্তে এজেন্সির একটি বৃহত্তর তদন্তের অংশ যা পার্ক করা জরুরি যানবাহনে ক্র্যাশ করে। যা অন্যান্য দুর্ঘটনার প্রবণতা রয়েছে। এনএইচটিএসএ গত বছরে টেসলাসের সঙ্গে নিরাপত্তা সমস্যাগুলো অনুসরণ করার জন্য আরও আক্রমণাত্মক হয়ে একাধিক প্রত্যাহার এবং তদন্ত ঘোষণা করেছে।
মাস্ক বোর্ড থেকে পদত্যাগ করার পরের বছর ওপেনএআই এখনও চ্যাটজিপিটিতে কাজ করা থেকে অনেক দূরে ছিল। কিন্তু, প্রকাশ্যে তার জিপিটি সিস্টেমের প্রথম প্রজন্মের উন্মোচন করেছিল, যার উপর চ্যাটজিপিটি প্রতিষ্ঠিত হয়ে একটি লাভজনক ব্যবসা হিসাবে নিজেকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য একটি বড় পরিবর্তন শুরু করেছিল।
২০২০ সালের দিকে মাস্ক টুইট করেছিলেন যে ‘ওপেনএআই আরও উন্মুক্ত হওয়া উচিত’ এবং উল্লেখ করেছেন যে এটিতে তার ‘কোন নিয়ন্ত্রণ এবং শুধুমাত্র খুব সীমিত অন্তর্দৃষ্টি’ নেই।
কখনও কখনও তিনি পরিপূরক হয়েছেন। ৩০ নভেম্বর চ্যাটজিপিটি প্রকাশের পরের দিনগুলোতে মাস্ক ওপেনএআই সিইও স্যাম অল্টম্যানকে টুইট করেছিলেন যে এটি ‘ভয়ঙ্কর ভাল’ এবং অভিযোগ করেছেন যে সংবাদ মিডিয়া এটিকে ব্যাপকভাবে কভার করছে না।কারণ, ‘চ্যাটজিপিটি খুব একটা বামপন্থি নয়।’
তারপর থেকে মাস্ক বারবার উদাহরণ তুলে ধরে বলেছেন বামপন্থী পক্ষপাতিত্ব বা সেন্সরশিপ দেখান। অন্যান্য চ্যাটবটের মতো চ্যাটজিপিটি’র ফিল্টার রয়েছে যা এটিকে বিষাক্ত বা আপত্তিকর উত্তর বের করা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করে।
আরও পড়ুন: টুইটারের নিয়ন্ত্রণে ইলন মাস্ক, শীর্ষ কর্মকর্তাদের বরখাস্ত
৭১৮ দিন আগে
মাইক্রোসফট বিংয়ের নতুন সংস্করণে থাকছে চ্যাটজিপিটি প্রযুক্তি
মাইক্রোসফট তাদের সার্চ ইঞ্জিন বিং-এর নতুন সংস্করণের ঘোষণা দিয়েছে, যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সর্বশেষ সংস্করণকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নতুন এই সংস্করণে ওপেনএআই-এর চ্যাটজিপিটি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এই প্রযুক্তি গত বছর চালু হওয়ার পর থেকে বিশ্বজুড়ে ঝড় তুলেছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিতে বলা হয়, এই পদক্ষেপটি ওয়েব বা তথ্য অনুসন্ধানে গুগলের আধিপত্যের জন্য এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে এবং উভয় টেক জায়ান্টের মধ্যে এআই যুদ্ধের সূচনাকে চিহ্নিত করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ।
মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সত্য নাদেলা বলেন, ‘প্রতিযোগিতা শুরু হচ্ছে আজ।’
আরও পড়ুন: চ্যাটজিপিটিকে টক্কর দিতে গুগলের ‘বার্ড’!
মাইক্রোসফটের তত্ত্বাবধানে ওপেনএআই-এর ডেভেলপ করা চ্যাটজিপিটি ডিপ লার্নিং পদ্ধতি ব্যবহার করে তথ্য খোঁজার ক্ষেত্রে মানুষের মতো সাড়া দেয়ার চেষ্টা করছে।
সত্য নাদেলা বলেন, ‘আমি ভেবেছিলেন যে এটি অনলাইনে অনুসন্ধানের প্রকৃতি ও অন্যান্য অনেক সফটওয়্যারের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ার ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে প্রস্তুত। এই প্রযুক্তিটি আমাদের জানা প্রায় প্রতিটি সফটওয়্যার বিভাগকে নতুন করে সাজাবে।’
বিং এখন কেবল ওয়েবসাইটের লিংক দেখাবে না। বরং আরও বিস্তারিত উত্তর দিয়ে অনুসন্ধানের উত্তর দিবে।
ব্যবহারকারীরা তাদের জিজ্ঞাসা সম্পর্কে ভালো ধারণা পেতে এআই-সম্পন্ন বট-এর সঙ্গে কথা বলতে পারবেন। যেকোনো জিজ্ঞাসার আর প্রাসঙ্গিক উত্তর সার্চ পেজের ডান পাশে দেখানো হবে।
নতুন বিং-এর এই ব্যবস্থা আপাতত প্রতিটি ব্যক্তির জন্য সীমিত সংখ্যক অনুসন্ধানের সঙ্গে ব্যবহার করা যাবে।
গুগল তাদের নিজস্ব নতুন চ্যাটবট বার্ড সম্পর্কে জানানোর একদিন পর এই ঘোষণা আসল।
আরও পড়ুন: গুগলের নতুন এআই টেক্সট থেকে তৈরি করতে পারে মিউজিক
৭৮৭ দিন আগে
চ্যাটজিপিটিকে টক্কর দিতে গুগলের ‘বার্ড’!
মার্কিন টেক জায়ান্ট গুগল চ্যাটজিপিটিকে টক্কর দিতে ‘বার্ড’ নামে একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত চ্যাটবট চালু করছে।
প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, বার্ড আগামী সপ্তাহগুলোতে জনসাধারণের জন্য চালু করার আগে একদল পরীক্ষকদের দ্বারা পরখ করে দেখবে।
বার্ড গুগলের বিদ্যমান বৃহৎ ভাষার মডেল ল্যামডায় নির্মিত। যাকে একজন প্রকৌশলী তার প্রতিক্রিয়ায় এতটাই মানুষের মতো বলে বর্ণনা করেছিলেন যে তিনি বিশ্বাস করেছিলেন যে এটি সংবেদনশীল।
প্রযুক্তি জায়ান্টটি এর বর্তমান সার্চ ইঞ্জিনের জন্য নতুন এআই টুলও ঘোষণা করেছে।
আরও পড়ুন: গুগলের নতুন এআই টেক্সট থেকে তৈরি করতে পারে মিউজিক
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিতে বলা হয়েছে যে এআই চ্যাটবটগুলো প্রশ্নের উত্তর ও তথ্য সন্ধানের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এর সবচেয়ে পরিচিত উদাহরণ হচ্ছে চ্যাটজিপিটি। এই এআইগুলো ইন্টারনেটকে একটি বিশাল তথ্যভাণ্ডার হিসেবে কাজে লাগিয়ে উত্তর দিয়ে থাকে। তবে এক্ষেত্রে আপত্তিকর উপাদান বা ভুল তথ্য চলে আসতে পারে এমন উদ্বেগ কেউ কেউ প্রকাশ করেছেন।
গুগল প্রধান সুন্দর পিচাই এক ব্লগে লিখেছেন, ‘বার্ড আমাদের বৃহৎ ভাষা মডেলগুলোর শক্তি, বুদ্ধিমত্তা ও সৃজনশীলতার সঙ্গে বিশ্বের জ্ঞানের বিস্তৃতিকে একত্রিত করতে চায়।’
পিচাই জোর দিয়ে বলেন যে তিনি গুগলের এআই পরিষেবাগুলোকে সাহসী ও দায়িত্বশীল করতে চান, তবে কীভাবে বার্ডকে ক্ষতিকারক বা আপত্তিকর উত্তর দেয়া থেকে বিরত রাখা হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলেননি।
মাইক্রোসফট তাদের সার্চ ইঞ্জিন বিং-এ এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি আনতে যাচ্ছে বলে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনার পর গুগলের এই ঘোষণা এসেছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির ইন্টারনেট কোন দেশে?
দৈনন্দিন প্রযুক্তির কাজকে সহজ করবে ৫ 'লাইফ হ্যাক'
৭৮৮ দিন আগে