বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি
শাবিপ্রবির ভর্তিযুদ্ধ আজ, আসনপ্রতি লড়বে ৫১ শিক্ষার্থী
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথমবর্ষ প্রথম সেমিস্টারের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ শুক্রবার। এবার শাবিপ্রবির প্রতিটি আসনের বিপরীতে ৫১ জন ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ‘বি’ ইউনিট এবং একই দিন বিকাল ৩টা থেকে ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
পরীক্ষার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে এবারই প্রথমবারের মতো দেশের পাঁচটি বিভাগীয় কেন্দ্রের বিভিন্ন উপকেন্দ্রে দুই ধাপে পরীক্ষা সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) শাবিপ্রবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সামনে ভর্তি-সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য তুলে ধরেন ড. রফিকুল।
তিনি বলেন, ভর্তি পরীক্ষার্থীদের নির্ধারিত সময়ের ৩০ মিনিট আগে নিজ কেন্দ্রে উপস্থিত থাকতে হবে। পরীক্ষা দিতে এসে পরীক্ষার্থীরা কোনো ধরনের জটিলতায় পড়লে ভর্তি কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে।
তিনি জানান, ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য গত ৫ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত আবেদন করার নির্ধারিত সময়ে ১ হাজার ৬৭১ আসনের বিপরীতে মোট ৮৬ হাজার ৩৮০ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন। এতে প্রতি আসনের বিপরীতে ৫১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবেন।
এর মধ্যে এ-১ ইউনিটে (বিজ্ঞান শাখা) ৯৫৫ আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে ৫৭ হাজার ২৭৩টি; এ-২ ইউনিটের (বিজ্ঞান ও স্থাপত্য) ৩০টি আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে ১ হাজার ২৫০টি।
অন্যদিকে, ‘বি’ ইউনিটে (বিজ্ঞান, মানবিক, বাণিজ্য) ৫৮১টি আসনের বিপরীতে আবেদন করেছেন ২৯ হাজার ১০৭ জন্য পরীক্ষার্থী। এছাড়া অতিরিক্ত ১০৫টি কোটা আসন রয়েছে। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নির্ধারিত আসন ২৮টি, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী/জাতিসত্ত্বা/হরিজন-দলিত সম্প্রদায়ের ভর্তিচ্ছুদের জন্য ২৮টি আসন, প্রতিবন্ধীদের জন্য ১৪টি, পোষ্য কোটা হিসেবে ২০টি, চা শ্রমিকদের জন্য ৫টি এবং বিকেএসপি (খেলোয়াড়) কোটায় ১০টি আসন সংরক্ষিত রয়েছে।
আরও পড়ুন: পাঁচ বিভাগীয় শহরে শাবিপ্রবির ভর্তি পরীক্ষা শুক্রবার
এবারের ভর্তি পরীক্ষা শাবিপ্রবি কেন্দ্রের পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে অনুষ্ঠিত হবে।
এর মধ্যে এ-১ ইউনিটের (বিজ্ঞান) ভর্তি পরীক্ষায় শাবিপ্রবি কেন্দ্রে ৬ হাজার ২৭০ জন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ৩৪ হাজার ৩৬৯ জন, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ৬ হাজার ১২ জন, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) ৩ হাজার ৭৮০ জন ও চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) ৫ হাজার ৬২৭ জনসহ সর্বমোট ২৯ হাজার ১১৬ জন শিক্ষার্থী অংশ নেবেন। এছাড়া এ-২ (স্থাপত্য) ইউনিটে শাবিপ্রবি কেন্দ্রে অংশ নেবেন আরও ১ হাজার ২৪২ জন।
অন্যদিকে, ‘বি’ ইউনিটের (বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগ) ভর্তি পরীক্ষায় শাবিপ্রবি কেন্দ্রে ৬ হাজার ৯৮৩ জন, ঢাবিতে ১২ হাজার ৬৩৬ জন, বেরোবিতে ৫ হাজার ৫৬ জন, যবিপ্রবিতে ৩ হাজার ১৪ জন ও সিভাসুতে ১ হাজর ৪২৭ জনসহ মোট ৫৬ হাজার ৫৮ জন আবদেনকারী পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
ড. রফিকুল ইসলাম বলেন, ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষার মধ্য ৮০ নম্বরের বহুনির্বাচনি পরীক্ষা। আর ২০ নম্বর এসএসসি ও এইচএসসির ফলাফল ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে। বহুনির্বাচনি পরীক্ষায় চারটি অপশন থাকবে বলে জানান তিনি।
৩৩ দিন আগে
আগামী বছর জাতীয় মেধাক্রম তৈরি করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি: দীপু মনি
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আগামী বছর থেকে একটি মাত্র পরীক্ষা নিয়ে জাতীয় মেধাক্রম তৈরির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হবে।
বুধবার কুষ্টিয়ার দৌলতপুর কলেজ মাঠে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে বিজ্ঞান মেলা ও আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: নতুন পাঠ্যপুস্তক নিয়ে গুজবে কান দিবেন না: দীপু মনি
দীপু মনি বলেন, এবার গুচ্ছ পদ্ধতিতে কিছু সমস্যা ও সীমাবদ্ধতা ছিল। আগামীতে এসব সমস্যা কাটিয়ে ওঠা হবে।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, র্যাগিং সামাজিক সমস্যা। সমম্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে এর বিরুদ্ধে একটি সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।
এজন্য তিনি গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আ কা ম সরওয়ার জাহান বাদশাহ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান বক্তব্য দেন।
এছাড়া বিজ্ঞান মেলায় ১৮টি কলেজ অংশ নিচ্ছে।
আরও পড়ুন: অনেক নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাস নেই: দীপু মনি
তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুটাকে পচিয়ে ফেলেছে বিএনপি: দীপু মনি
৭৪৮ দিন আগে
ইটভাটায় কাজ করে জিপিএ-৫ পাওয়া রাজুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা
রাজু হোসেন ইটভাটায় কাজ করে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পায়।
কিন্তু ভালভাবে এইচএসসি পাশ করাই যেন তার কাল হলে।
আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বা পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে তার পক্ষে।
মেধাবী এই শিক্ষার্থী রাজু হোসেন ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়নের সন্ধ্যারই খুটিয়াটুলি গ্রামের বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: পায়ে লিখেই গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেল অদম্য মানিক
তার স্বপ্ন আইন বিভাগে লেখাপড়া করা। কিন্তু এই স্বপ্নের পথে বাধা তাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা।
বাবা আনোয়ার হোসেন পেশায় ভ্যানচালক ও মা নাজমা বেগম হিমাগারের শ্রমিক। পড়াশোনার খরচ চালাতে রাজু নিজেও ইট ভাটার ট্রলির শ্রমিকের কাজ করে।
দুই ভাইয়ের মধ্যে সে বড়। বাড়ির পাশে মীরডাঙ্গী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৪.২২ ও রাণীশংকৈল ডিগ্রি কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে রাজু হোসেন।
রবিবার (১২ ফ্রেরুয়ারি) দুপুরে অদম্য মেধাবী রাজুর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাদের মা-বাবা বাড়ির উঠোনে বসে আছেন। ছেলের এইচএসসি পরীক্ষায় ভাল ফলে উত্তীর্ণ হওয়ায় চোখেমুখে খুশি থাকলেও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ছেলের ভর্তির টাকা নিয়ে। কিভাবে জোগাড় করবেন ভর্তির টাকা। নিজের ভিটে-বাড়ি বা জমিজমাও নাই যে বিক্রি করবেন।
রাজুর বাবা আনোয়ার জানান, ছেলেটা ছোট থেকেই মেধাবী। যার কারণে ওর লেখাপড়ায় কোন ভাটা পড়ুক তা চাইনি। কষ্ট করেই পড়িয়ে যাচ্ছি। কিভাবে যে তার ভর্তি পরীক্ষা জোগার করবো কোন কূল-কিনারা পাচ্ছি না। যদি কেউ সহযোগিতায় আসতেন, তাহলে তার স্বপ্নপূরণ হতো।
ফলাফল প্রকাশের পর আলাপকালে রাজু জানায়, কি করবো আমি বুঝতে পারছি না? ছোট বেলা থেকেই কষ্ট করে আসছি। কখনও কখনও না খেয়ে স্কুলে গিয়েছি, কিন্ত বাদ দেইনি স্কুল ও কলেজের পড়াশোনা। আমি এখন আইন নিভাগ পড়তে চাই। কিভাবে ভর্তি হবো, কিভাবে কী করবো এখন আর মাথায় কাজ করছে না।
আরও পড়ুন: ভ্যান চালিয়ে জিপিএ-৫ পেল রমজান!
এছাড়া আমার স্বপ্নের মাঝে বাধা হয়ে দাড়িয়েছে আর্থিক অভাব অনটন। বেসরকারি এনজিও ‘আরডিআরএস, থেকে কিছু টাকা লোন করে রংপুরের একটি কোচিং সেন্টারে ভর্তি হই পরিক্ষার জন্য।
রাজু জানায়, কিছু টাকা দিয়ে ভর্তি হলেও খাওয়াসহ অন্যান্য খরচ বহন না করতে পারায় আর কোচিং-এ যাওয়া হয়নি তার। এখন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং চলছে, কিন্তু আমার সেই সামর্থ্য নাই যে ভর্তি হবো।
রাজুর মা নাজমা বেগম জানান, দুই ছেলে নিয়ে বহুকষ্টে জীবন চালিয়েছি। এক পর্যায়ে মানুষের বাসায় কাজ শুরু করি। হিমাগারের নারী শ্রমিক হিসবে কাজ করি। তার বাবা ভ্যান চালায়। অর্থের অভাবে এক ছেলের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে। বড় ছেলে রাজু ইটভাটার ট্রলির শ্রমিক ও কখনো ভ্যান চালিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, এত কষ্ট করে আমার ছেলে পড়াশোনা করে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে। আমি অনেক খুশি হয়েছি। তবে এখন পড়াশোনা কীভাবে চালাবে সে চিন্তায় আছি।
রাণীশংকৈল ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক সফিকুর ইসলাম আলম বলেন, সে মাসে একদিন বা দু’দিন কলেজে আসত। তার সংগ্রামের কথা সবাই জানি। সে আমাদের কলেজ থেকে জিপিএ ৫ পেয়েছে, এটা আমাদের গর্বের বিষয়। অনেক কষ্ট করে সে ভালো ফলাফল করেছে। তার ফলাফলে আমরা অনেক খুশি।
তিনি বলেন, গরিব-অসহায় মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাশে দানশীল ব্যক্তিদের এগিয়ে আসা জরুরি।
এ বিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান আব্দুল বারী বলেন, রাজুর এই বিষয়টি আগে জানতাম না। জেনে খুশি হলাম। ব্যক্তিগতভাবে আমি আমার পক্ষ থেকে তার পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য সহযোগিতা করব ইনশাল্লাহ।
এ বিষয়ে রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির স্টিভ বলেন, বিষয়টি যেমনিভাবে কষ্টের, তেমনি অনুপ্রেরণার। পড়াশোনার ইচ্ছাশক্তি থাকলে যে কোনো উপায়ে তা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব, রাজু তাই প্রমাণ করেছে। রাণীশংকৈল উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এবং আমার পক্ষ থেকে তাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে।
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে জিপিএ-৫ না পাওয়ায় এসএসসি পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যা!
৭৭৯ দিন আগে