মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা
সরকার মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষায় আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অগ্রগতির কথা তুলে ধরে বলেন, সরকার দেশে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষায় আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, যেখানেই মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে, সেখানেই জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ভুক্তভোগী মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে।
সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপদেষ্টা নাকাতানি জেন এর সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।
আইন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে বিশেষ উপদেষ্টা নাকাতানি জেন ৯সদস্যের জাপানি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।
আরও পড়ুন: মানবাধিকার রক্ষায় সবরকম সহযোগিতা করবে সরকার: আইনমন্ত্রী
এসময় আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের মানবাধিকার ও শ্রম অধিকার পরিস্থিতি, গার্মেন্টস শিল্পের কর্মপরিবেশ ও শ্রমিক নিরাপত্তা, হলি আর্টিসান মামলার অগ্রগতিসহ বিভিন্ন বিষয় আলোচনায় প্রাধান্য পায়।
বৈঠকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অগ্রগতির কথা তুলে ধরে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে বাংলাদেশে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষায় আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তার সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারীদের বিচার করেছে।
তিনি বলেন, একাত্তরের গণহত্যা ও মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচার করছে। ২০০৯ সালে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন প্রণয়ণ করে তার অধীনে একটি শক্তিশালী জাতীয় মানবাধিকার কমিশন প্রতিষ্ঠা করেছে। এই কমিশন দেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাকে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছে। যেখানেই মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে, সেখানেই কমিশন ভুক্তভোগী মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশের নাগরিকদের খাদ্য ও গৃহ সংস্থানের অধিকার পূরণে জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার যুগান্তকারী বহু পদক্ষেপ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে সকল গৃহহীন মানুষকে বিনামূল্যে গৃহনির্মাণ করে দিচ্ছে সরকার।
মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার অন্যতম উদাহরণ উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী জানান, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে আদালত কতৃর্ক দণ্ডপ্রাপ্ত। তিনি কারাগারে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে জননেত্রী শেখ হাসিনার মহানুভবতায় তার কারাদণ্ড স্থগিত করা হয়েছে এবং বর্তমানে তিনি নিজ বাসায় থেকে সুচিকিৎসা গ্রহণ করছেন।
আনিসুল হক জানান, রানাপ্লাজা দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের কর্মপরিবেশ উন্নয়ন ও শ্রমিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের বিষয়ে সরকার শ্রম আইন সংশোধনসহ কার্যকর বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। ফলে গার্মেন্টস খাতের কর্মপরিবেশ আগের তুলনায় অনেক উন্নত হয়েছে। সরকার শ্রম আইনকে সংশোধন করে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন আইনে পরিণত করার চেষ্টা করছে; আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার চাহিদ মোতাবেক আইনটিকে আরও শ্রমবান্ধব করার কাজ করছে। কোনো কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে ওই কারখানার ৩০ শতাংশ শ্রমিকদের সমর্থনে ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের বিধান করা হয়েছে। ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন প্রক্রিয়াটিকে পুরোপুরি ডিজিটাইজড করা হয়েছে।
এছাড়া, কারখানার আরও অনেক অপারেটিং সিস্টেম অনলাইন করা হয়েছে। শ্রমিকদের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। শ্রম আদালতের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ফলে শ্রম আদালতে মামলা নিষ্পত্তির হার আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। হলি আর্টিসানে সন্ত্রাসী হামলার পর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক তৎপরতার কারণে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বর্তমানে অনেক কমেছে।
হলি আর্টিসান মামলার অগ্রগতির বিষয়ে আইনমন্ত্রী জানান, অধস্তন আদালতে যথাযথ প্রক্রিয়ায় এই মামলার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য বর্তমানে মামলাটি উচ্চ আদালতে আছে। সেখানে খুব অল্প সময়ে এই মামলা নিষ্পত্তি হবে বলে জাপানী প্রতিনিধি দলকে আশ্বস্ত করেন তিনি।
মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে সহযোগিতার জন্য আইনমন্ত্রী জাপান সরকার ও জনগণকে ধন্যবাদ জানান।
সেইসঙ্গে জাপান-বাংলাদেশ বন্ধুত্বের সম্পর্ক আগামীতে আরও দৃঢ় হবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।
হলি আর্টিসান মামলায় অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে জাপানের পাশে থাকার জন্য জাপানি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারলেও আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না: আইনমন্ত্রী
উপাত্ত সুরক্ষা যেন হয়, আইনে সে ব্যবস্থাই থাকবে: আইনমন্ত্রী
১ বছর আগে