সাঈদা মুনা তাসনীম
যুক্তরাজ্যের চ্যানেল এসের বিশেষ সম্মাননা পুরস্কার পেলেন সাঈদা মুনা তাসনীম
যুক্তরাজ্যের অন্যতম প্রধান ও জনপ্রিয় কমিউনিটি টেলিভিশন ‘চ্যানেল এস’র বিশেষ সম্মাননা পুরস্কার পেলেন বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনীম।
চ্যানেল এসের ১৯তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী এবং বাংলাদেশের গৌরবোজ্জল বিজয়ের ৫২তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ১৬ ডিসেম্বর লন্ডনে বিশেষ অনুষ্ঠানে তাকে এই বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: স্যুট অ্যাওয়ার্ডের বর্ষসেরার সম্মাননা পেলেন দারাজের সিসিএও-সিওও
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত হিসেবে বাংলাদেশের মর্যাদা ও গুরুত্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের জন্য হাইকমিশনের সেবার মান উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নীত করায় তাকে এই বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়।
চ্যানেল এসের চেয়ারম্যান আহমেদুস সামাদ চৌধুরী জেপি, প্রতিষ্ঠাতা মাহী ফেরদৌস জলিল এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাজ চৌধুরী হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীমের হাতে বিশেষ সম্মাননা স্মারক তুলে দেন। যাতে প্রায় একশ ছবিতে যুক্তরাজ্যে হাইকমিশনারের বিগত পাঁচ বছরের বিভিন্ন কর্ম ও সাফল্য প্রতিফলিত হয়েছে।
এসময় ব্রিটিশ এমপি আপসানা বেগম, হাউস অব লর্ডস সদস্য ব্যারোনেস উদ্দিন ও নিউহামের নির্বাহী মেয়র রুকসানা ফাইয়াজ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সেরা করদাতা সম্মাননা-ট্যাক্স কার্ড পেলেন সালমান এফ রহমান
বিশেষ সম্মাননা স্মারক গ্রহণের পর হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম বলেন, ‘আমি একজন পেশাদার কূটনীতিক, মানুষের সেবা করা আমার দায়িত্ব যা আমি সব সময়ই আন্তরিকতার সঙ্গে করার চেষ্টা করেছি। ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের মর্যাদার সঙ্গে সর্বোচ্চ সেবা প্রদান করার অঙ্গীকার নিয়ে দায়িত্ব পালন করছি।’
হাইকমিশনার চ্যানেল এসের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চ্যানেল এস শুধু একটি টেলিভিশন নয়, এটি যুক্তরাজ্যে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির একটি অন্যতম প্রধান প্লাটফর্ম।’
ফারহান মাসুদ খানের উপস্থাপনায় প্রচারিত অনুষ্ঠানে স্টুডিওতে ব্রিটিশ ও ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ কয়েকশ আমন্ত্রিত অতিথি উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ঢাকায় রাশিয়ান হাউসের উদ্যোগে ৮৪ মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা
১০ মাস আগে
২১শে ফেব্রুয়ারিকে ‘লন্ডন মাল্টিলিংগুয়াল ডে’ পালনের আহ্বান
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনীম অমর একুশে ফেব্রুয়ারিকে ‘লন্ডন মাল্টিলিংগুয়াল ডে’ হিসেবে পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব হাইকমিশন খুব শিগগিরই লন্ডনের মেয়রের কাছে পাঠাবে।’
গত মঙ্গলবার (২১শে ফেব্রুয়িারি) সন্ধ্যায় লন্ডনের কেন্জিংটনের একটি হোটেলে ‘সেফগার্ডিং ইন্ডিজেনাস ল্যাঙ্গুয়েজেস থ্রু ট্রান্সফর্মিং এডুকেশন’-শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে হাইকমিশনার সাঈদা মুনা এ আহ্বান জানান।
এসময় তিনি যুক্তরাজ্যে প্রায় ৩০০টি এবং লন্ডনে প্রায় ২০০টি মাতৃভাষার প্রচলন রয়েছে উল্লেখ করে বলেন, ‘একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসটিকে ‘লন্ডন মাল্টিলিংগুয়াল ডে’ হিসেবে ঘোষণা করা খুবই যৌক্তিক এবং এবিষয়ে আজকের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারি সকল দেশের রাষ্ট্রদূতগণ অভিন্ন মত ব্যক্ত করেছেন।’
হাইকমিশনার ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটিসহ বিভিন্ন কমিউনিটির সদস্যদের তাদের নিজ নিজ এলাকার কাউন্সিলরদের মাধ্যমে লন্ডন মেয়রের নিকট এবিষয়ে প্রস্তাব পাঠানোর পরামর্শ দেন।
আরও পড়ুন: ক্যানবেরায় বহু ভাষা ও সংস্কৃতির ব্যক্তিদের অংশগ্রহণে অমর একুশে উদযাপন
তাছাড়া তিনি বাংলা ভাষা শিক্ষা এবং চর্চার জন্য যুক্তরাজ্যে কমিউনিটি সংগঠনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান উদ্যোগ গ্রহণ করলে হাইকমিশন বিনামূল্যে বাংলা বই সরবরাহ করতে সহায়তা করবে বলেও জানান।
তিনি তার বক্তব্যে সর্বদলীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ-এর প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে ৫২-র ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের কথা স্মরণ করেন এবং একুশে ফেব্রুয়ারির আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা পাওয়া, বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের অন্যতম দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে অন্তর্ভুক্তির উদ্যোগসহ বাংলা ভাষার সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষপে গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করনে।
অনুষ্ঠানে কমনওয়েলথের সেক্রেটারি জেনারেল পেট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
পেট্রিসিয়া তার বক্তব্যে এবছরের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রতিপাদ্যের উল্লেখ করে প্রতিটি দেশে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে মাতৃভাষার সংরক্ষণ ও চর্চার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে বাংলাদেশে বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলনকে মাতৃভাষার সংরক্ষণ ও চর্চার ক্ষেত্রে এক অনন্য নজীর বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ভাষা ও সংস্কৃতি সুরক্ষায় যারা প্রাণ দিয়েছিলো, তাদের সেই আত্মদান থেকে আজও আমরা অনুপ্রেরণা নিতে পারি।’
ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য পল ব্রিস্টো অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন: ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে নয়া দিল্লির বাংলাদেশ মিশন
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটি অমর একুশের মহান আদর্শ ধারণ করে আছে, যা আগামী দিনগুলোতেও এদেশে নিজ নিজ মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও উন্নয়নে অন্য ভাষার মানুষকেও উৎসাহ যোগাবে।’
যুক্তরাজ্যে ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা অর্জনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
এ অনুষ্ঠানে লন্ডনে অবস্থিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, ১৭টি দূতাবাসের কূটনীতিক ও প্রতিনিধি এবং ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশ নেন।
এছাড়া হাইকমিশনের স্মারক অনুষ্ঠানের সহ-আয়োজক যুক্তরাজ্যে ইউনেস্কোর জাতীয় কমিশনের প্রতিনিধি ম্যাথিউ রাবাগলিয়াতি, ব্রিটিশ কাউন্সিল প্রতিনিধি ও'বায়ার্ন মুলিগান ও যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সুলতান মাহমুদ শরীফ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূতগণ এবং দূতাবাসগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী শিল্পীরা ভাষা শহীদদের উৎসর্গ করে নিজ নিজ ভাষায় মনোজ্ঞ সঙ্গীত, আবৃত্তি ও নৃত্য পরিবেশন করেন।
এছাড়াও, উদীচী স্কুল অব পারফরমিং আর্টসের শিশু-কিশোর শিল্পীরা সমবেত কন্ঠে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’- অমর সঙ্গীতটি পরিবেশন করে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে হাইকমিশনার অতিথি ও মিশনের কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রতীকী শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর ভাষা শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস: জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ভাষায় শ্রদ্ধাঞ্জলি
১ বছর আগে