এলডিসি-৫
কাতার থেকে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী
কাতারে রাষ্ট্রীয় সফর শেষ করে বৃহস্পতিবার বিকালে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট বেলা সাড়ে ৩টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।
এর আগে সকাল ১১টায় ফ্লাইটটি হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যায়।
৪ মার্চ শেখ হাসিনা স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি-৫) বিষয়ে জাতিসংঘের পঞ্চম সম্মেলনে যোগ দিতে দোহা যান।
কাতারে থাকার সময় তিনি এলডিসি-৫ সম্মেলন, বিভিন্ন সাইড-লাইন ইভেন্ট এবং একটি নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।
প্রধানমন্ত্রী কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি, কাতার ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন শেখা মোজা বিনতে নাসের, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্ট সাবা করোসিসহ বিভিন্ন নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী ঢাকার উদ্দেশে দোহা ছেড়েছেন
এলডিসি-৫ সম্মেলন: দোহার উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
১ বছর আগে
উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য সাহায্য বাড়ানোর কথা বিবেচনা করুন: প্রধানমন্ত্রী
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অগ্রাধিকারমূলক বাজারে অভিগম্যতা এবং ট্রিপস মওকুফের মতো সহায়তা ব্যবস্থার সম্প্রসারণের প্রস্তাবগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য থাকা বিভিন্ন সহায়তা ব্যবস্থা যেমন-অগ্রাধিকারমূলক বাজার অভিগম্যতা এবং ট্রিপস মওকুফ প্রভৃতি সম্প্রসারণ প্রয়োজন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ডব্লিউটিও-তে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর গ্রুপ ইতোমধ্যেই এই বিষয়ে তাদের প্রস্তাব দিয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এই প্রস্তাবগুলোকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা উচিত, বিশেষ করে কোভিড-১৯ মহামারি এবং ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জের পরিপ্রেক্ষিতে।’
মঙ্গলবার দোহাতে কাতার ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে (কিউএনসিসি) স্বল্পোন্নত দেশ বিষয়ক জাতিসংঘের পঞ্চম সম্মেলনের (এলডিসি-৫) সময় অনুষ্ঠিত ‘এনহ্যান্সিং দ্য পার্টিসিপেশন অব লিস্ট ডেভেলপমেন্ট কান্ট্রিস (এলডিসিস) ইন ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড এন্ড রিজিওনাল ইন্টেগ্রেশন’- শীর্ষক একটি উচ্চ-পর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠকে সহসভাপতি হিসেবে বক্তব্য দেয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এসময় শেখ হাসিনা বলেন, ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য ২০৩০ এজেন্ডা এবং দোহা কর্মসূচিতে আমরা যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি, তা অর্জনের জন্য আমাদের প্রচেষ্টাকে দ্বিগুণ করতে হবে। এর জন্য জাতীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। তিনি আশা করেন যে এই গোলটেবিল অধিবেশনটি স্বল্পোন্নত দেশগুলো বর্তমানে যে চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হচ্ছে তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সহায়তা ব্যবস্থার পরিস্থিতি মূল্যায়ন করবে।’
আরও পড়ুন: অর্থনৈতিক কূটনীতি জোরদারে বাংলাদেশি কূটনীতিকদের সক্রিয় হতে হবে: দোহায় প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবসম্মত এবং স্বল্পোন্নত দেশগুলোর উত্পাদনশীল সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ভালভাবে পরিকল্পনা করা উচিত।’
তিনি আরও বলেন, স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য বাণিজ্য উন্নয়নের মূল চালিকা হিসেবে থাকবে। ‘আপনাদের হয়তো মনে থাকবে যে ইস্তাম্বুল প্রোগ্রাম অব অ্যাকশন এলডিসিগুলোর বাণিজ্যের অংশ দ্বিগুণ করার কথা বলেছিল। তবে, তাদের বাণিজ্যের অংশ এখনও ১ শতাংশের কম রয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতা করতে স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে অবশ্যই তাদের বাণিজ্য-সম্পর্কিত অবকাঠামো বাড়ানো, উত্পাদনশীল সক্ষমতা তৈরি করা এবং পছন্দের বাজার অভিগম্যতা ব্যবহার করার বিষযে মনোনিবেশ করতে হবে। এই উদ্দেশ্যগুলো অর্জনের জন্য স্বল্পোন্নত দেশগুলোর যোগাযোগ, মানবসম্পদ, বাণিজ্য অর্থ এবং প্রযুক্তি স্থানান্তরের জন্য সহায়তা এবং বিনিয়োগের প্রয়োজন।’
বাংলাদেশের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার একটি মাল্টিমডাল পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তঃসীমান্ত সংযোগের উন্নতির ওপর জোর দিয়েছে। ‘এটি খরচ কমাবে, দক্ষতা বাড়াবে এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে উন্নত করবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দক্ষতা উন্নয়ন, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, মেধাসম্পদ ব্যবস্থার উন্নতি এবং আমাদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকারের নীতি হচ্ছে জাতীয় উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করা। ‘কাধে কাধ মিলিয়ে কাজ করে আমরা দেশকেেউন্নয়নশীল দেশের পর্যায়ে নিয়ে এসেছি। আমাদের অগ্রাধিকার মসৃণ ও টেকসই উত্তোরণ নিশ্চিত করা।’
বুরুন্ডি প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট এভারিস্ট এনদাইশিমিয়ে উচ্চ-পর্যায়ের এই ইভেন্টের অপর সহসভাপতি ছিলেন।
অন্যান্যদের মধ্যে এই অনুষ্ঠানে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী, পর্যবেক্ষক, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা এবং অন্যান্য স্বীকৃত আন্ত:সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ৫টি মূল সহায়তা প্রয়োজন: দোহায় প্রধানমন্ত্রী
এলডিসি-৫ সম্মেলন: দোহার উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
১ বছর আগে
অর্থনৈতিক কূটনীতি জোরদারে বাংলাদেশি কূটনীতিকদের সক্রিয় হতে হবে: দোহায় প্রধানমন্ত্রী
স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ টেকসই করতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে অর্থনৈতিক কূটনীতি জোরদারে তৎপর হতে বিভিন্ন দেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন দেশে কর্মরত বাংলাদেশি কূটনীতিকদের দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক কূটনীতিকে শক্তিশালী করতে সক্রিয় হতে হবে।’
সোমবার প্রধানমন্ত্রী মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে অবস্থানরত বাংলাদেশি কূটনীতিকদের অংশগ্রহণে দোহায় তার বাসভবনে অনুষ্ঠিত একটি আঞ্চলিক দূত সম্মেলনে এই নির্দেশনা দেন।
এসময় তিনি বলেন, যেহেতু বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হতে চলেছে, তাই যেসব দেশে বাংলাদেশ তার ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে পারে সেদিকে মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের সব দেশের সঙ্গে আলোচনা ও সমঝোতা করতে হবে। যাতে আমরা একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে টিকে থাকতে পারি, এগিয়ে যেতে পারি এবং ভবিষ্যতে উন্নত দেশে পরিণত হতে পারি।’
তিনি বলেন, একসময় কূটনীতি ছিল রাজনৈতিক ইস্যু, আর এখন এটা অর্থনৈতিক বিষয়। ‘সুতরাং, আমরা যে যেখানে (বিভিন্ন দেশে) কাজ করছি, তাদের সেখানে বাণিজ্য ও ব্যবসার সুযোগ খুঁজে বের করতে হবে, যাতে আমরা প্রতিযোগিতামূলক দামে আমাদের রপ্তানি এবং পণ্য আমদানি বাড়াতে পারি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের পণ্যের চাহিদা আছে, তাই যেখানে আমাদের পণ্য বাজারজাত করার সুযোগ আছে সেই জায়গাগুলো চিহ্নিত করুন।’
আরও পড়ুন: উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ৫টি মূল সহায়তা প্রয়োজন: দোহায় প্রধানমন্ত্রী
সকল দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য বাংলাদেশের নীতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের পররাষ্ট্রনীতির মূল ভিত্তি হল 'সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো প্রতি বিদ্বেষ নয়'।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখবে। কিন্তু যখন অন্যায় হবে, তখন বাংলাদেশ অবশ্যই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে কথা বলবে, যেমনটি মিয়ানমারের সঙ্গে করেছিল।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘...আমরা মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি, কিন্তু আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে সংঘাতে জড়াইনি। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।’
সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি ও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী এখন স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) বিষয়ক জাতিসংঘের পঞ্চম সম্মেলনে (এলডিসি-৫) যোগ দিতে কাতারে অবস্থান করছেন। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এবং জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে তিনি গত শনিবার কাতারে পৌঁছেছেন। বুধবার প্রধানমন্ত্রীর ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: এলডিসি-৫ সম্মেলন: দোহার উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী এলডিসি-৫ সম্মেলনে যোগ দিতে দোহার উদ্দেশে রওনা হবেন শনিবার
১ বছর আগে