সাবেক কর্মকর্তা
সরকারি প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে ডাক বিভাগের সাবেক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক
সরকারি কেনাকাটায় অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ডাক বিভাগের সাবেক মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর ভদ্র ও উপপোস্টমাস্টার জেনারেল মোস্তাক আহমেদের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের মুখপাত্র আকতারুল ইসলাম বলেন, দুদকের ঢাকা সমন্বিত কার্যালয়, দুদক-১ এর একজন সহকারী পরিচালক মামলাটি দায়ের করবেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে সাবেক কাস্টম কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
তিনি বলেন, 'পোস্ট ই-সেন্টার ফর রুরাল কমিউনিটি' প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও উপপ্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পালনকারী ভদ্র ও আহমেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।’
এই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ৫০০ এইচপিই সার্ভার ও ইউপিএস ইউনিট কেনার সময় ১৫ কোটি টাকার বেশি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। উল্লেখযোগ্য ব্যয় সত্ত্বেও, সরঞ্জামগুলো কখনই ব্যবহার করা হয়নি, যার ফলে সরকারি তহবিলের ক্ষতি হয়েছে।
২০১৭ সালে টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পরিচালিত একটি তদন্তে প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে প্রকাশিত হয়েছে। এতে দেখা যায়, সার্ভার, ইউপিএস ইউনিট এবং অন্যান্য বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম কেনার জন্য সরকারি মালিকানাধীন টেলিফোন শিল্পের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছিল। এগুলো জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ডাকঘরগুলোতে বিতরণের জন্য এসব সরঞ্জাম দেওয়া হয়।
অপচয় ও আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানে অতিরিক্ত সচিব (টেলিকম) মুহিবুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। দলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সদস্যরা ছিলেন।
তদন্ত দলটি পোস্ট অফিসগুলো আকস্মিক পরিদর্শন করে এবং স্টক রেজিস্টারগুলো যাচাই করেছে। ২০১৭ সালের জুনে সমাপ্ত প্রকল্পটিতে উল্লেখযোগ্য অসঙ্গতির প্রমাণ পায় তদন্ত দল। সরবরাহের চালানগুলো থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তির প্রায় দুই বছর পরেও কিছু পণ্য সরবরাহ করা হয়।
তদন্তে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট পোস্টমাস্টারসহ দায়িত্বশীল কর্মচারীরা যন্ত্রপাতি অব্যবহৃত থাকার কারণ হিসেবে প্রশিক্ষণ ও জ্ঞানের অভাবের কথাও উল্লেখ করেন। মেশিনগুলোর উদ্দেশ্যমূলক ব্যবহারের বিষয়ে ডাক অধিদপ্তরের কোনও নির্দেশের প্রমাণও পাওয়া যায়নি। এর ফলে বাস্তবেই সেগুলো অকেজো হয়ে গেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রশিক্ষণের জন্য ৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও কোনো প্রশিক্ষণ সেশন অনুষ্ঠিত হয়নি। তদন্ত দল চূড়ান্তভাবে দেখতে পেয়েছে যে, প্রয়োজনীয় দক্ষ জনশক্তি তৈরি না করে সার্ভারগুলো কেনার ফলে সরবরাহকারী সংস্থাটি প্রাথমিকভাবে চুক্তিগত বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন করে লাভবান হয়েছিল।
আরও পড়ুন: বিএফআইইউ-দুদকসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ঢেলে সাজানো অপরিহার্য: টিআইবি
বেনজীর-মতিউরের সম্পদের বিবরণী চেয়ে দুদকের নোটিশ
৩ মাস আগে
দুদকের আপিল মঞ্জুর, কাজে ফিরতে পারবেন না সাবেক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন
কোনো কারণ দর্শানো (শোকজ) ছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্মচারীকে অপসারণ করা সংক্রান্ত ৫৪(২) বিধি বাতিলের বিরুদ্ধে দুদকের আপিল মঞ্জুর করেছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে দুদকের সাবেক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন চাকরিতে ফিরতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আট বিচারপতির আপিল বিভাগ এ রায় দেন।
আরও পড়ুন: এত টাকা লাগলে সাধারণ মানুষ কীভাবে হজে যাবে: প্রশ্ন হাইকোর্টের
আদালতে শরীফের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. সালাহউদ্দিন দোলন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মিয়া মোহাম্মদ ইশতিয়াক। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
খুরশিদ আলম খান বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্মচারীকে অপসারণ করা সংক্রান্ত ৫৪(২) বিধি বাতিল করে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিলেন, দুদকের আপিল মঞ্জুর করে সেই রায় আপিল বিভাগ আজ বাতিল করে দিয়েছেন।
এছাড়া এ সংক্রান্ত শরীফ যে রিট আবেদন করেছিলেন সেই রিট পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছেন আদালত। এর ফলে শরীফ আর চাকরিতে ফিরতে পারবেন না।
২০০৮ সালের দুদক (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালার ৫৪(২) বিধিতে বলা হয়েছে, ‘এই বিধিমালায় ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ না দর্শিয়ে কোনো কর্মচারীকে নব্বই দিনের নোটিশ প্রদান করে অথবা নব্বই দিনের বেতন নগদ পরিশোধ করে তাকে চাকরি হতে অপসারণ করতে পারবে।’
২০০৮ সালের দুদক (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালার ৫৪ (২) বিধি অনুসারে মো. আহসান আলী নামের দুদকের এক কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছিল। তিনি ৫৪ (২) বিধির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেছিলেন। সে রিটে হাইকোর্ট ২০১১ সালের ২৭ অক্টোবর এ বিধি বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।
হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে দুদক লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে, যা ২০১৬ সালের নভেম্বরে খারিজ করেন আপিল বিভাগ। এর বিরুদ্ধে পরের বছর দুদক পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করে। পরে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর দুদককে আপিল করার অনুমতি দেন। আর এই আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়। পরে দুদক আপিল করে।
এদিকে দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক পদ থেকে চাকরিচ্যুত মো. শরীফ উদ্দিনকে গত বছর ১৬ ফেব্রুয়ারি অপসারণ করলে তিনিও দুদক কর্মচারী বিধিমালার ৫৪ (২) বিধি ও চাকরিচ্যুতির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন।
পরে ১১ এপ্রিল তা শুনানির জন্য ওঠে। কিন্তু তখন পর্যন্ত মো. আহসান আলীর মামলায় দুদকের দুদকের রিভিউ আবেদনের নিষ্পত্তি না হওয়ায় শরীফের রিটের শুনানি মুলতবি করে আদেশ দেন হাইকোর্ট।
পরে এ মুলতবি আদেশের বিরুদ্ধে গত বছরের ১৬ জুন আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন শরীফ।
গত ৩ জানুয়ারি শরীফের সেই লিভ টু আপিল ও দুদকের আপিল শুনানির জন্য একসঙ্গে আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ওঠে।
এরপর একসঙ্গে দুই আবেদনের শুনানি শেষে গত ২ মার্চ রায়ের জন্য ১৬ মার্চ দিন ঠিক আপিল বিভাগ।
আরও পড়ুন: বেসরকারি হজ প্যাকেজে ন্যূনতম খরচ ৬.৭২ লাখ টাকা: হাব
সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের খরচ নির্ধারণ
১ বছর আগে