আম্বরখানা
যানজটে অতিষ্ঠ সিলেট নগরবাসী
সিলেট নগরে যন্ত্রণার অপর নাম হয়ে উঠেছে যানজট। রাতদিন সবসময়ই নগরের কয়েকটি এলাকায় তীব্র যানজট লেগে থাকে। ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে যানজট আরেও প্রকট হচ্ছে।
নগরীর জিন্দাবাজার, আম্বরখানা, লামাবাজার, সোবহানীঘাট, শিবগঞ্জ ও নয়াসড়ক এরকম কিছু বাণিজ্যিক এলাকায় সকাল থেকে মধ্যরাত অবদি যানজট লেগে থাকছে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রীরা।
নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পবিত্র রমজান মাস ঘিরে কয়েক দিন ধরে নগরে মানুষের চলাচল বেড়েছে। ঈদুল ফিতর সামনে রেখে কেনাকাটার জন্য বিপণিবিতানগুলোয় ভিড় বাড়ছে। বিভাগীয় শহর হওয়ায় পাশের জেলা ও উপজেলা থেকেও মানুষজন ঈদের কেনাকাটা করতে আসছেন। ফলে স্বাভাবিকভাবেই অন্য সময়ের তুলনায় যানজট বেড়েছে। দেখা যায়, নগরের জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার, আম্বরখানা, মদিনা মার্কেট, নাইওরপুল, সোবহানীঘাট, শিবগঞ্জ ও লামাবাজার এলাকায় যানজটের তীব্রতা বেশি।
বিশেষত জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার, সুরমা মার্কেট ও আম্ভরখানা এলাকার ফুটপাত বেদখল হয়ে পড়ায় পথচারীরা ঠিকমতো হাঁটতে পারছেন না। এতে অনেকে মূল সড়ক দিয়ে যাতায়াত করায় যানজট আরও বেড়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সড়কে নিয়মিত যানজটে বিপর্যস্ত ফতুল্লাবাসী
নগরের পনিটুলা এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী জাহেদ আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘ঈদের কেনাকাটা শুরু হওয়ায় মানুষের ভিড় বেড়েছে। তাই নগরে রিকশা, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত গাড়িও আগের চেয়ে বেশি চলছে। এ ছাড়া বিভিন্ন সড়কে পানির সংযোগ লাইন মেরামত, নর্দমা ও রাস্তা সংস্কারের কাজ হচ্ছে। পাড়া-মহল্লাগুলোতে অবাধে চলছে বড় আকারের ব্যাটারিচালিত অসংখ্য ইজিবাইক। ঈদ সামনে রেখে কোথাও কোথাও ফুটপাত দখল করে ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা কাপড়, জুতাসহ নানা পণ্যের পসরা বসিয়েছে। এসব কারণে যানজট বাড়ছে। ফলে নগরবাসীকে দুর্ভোগ নিয়ে প্রতিদিন পথ চলতে হচ্ছে।’
ঈদের কেনাকাটা করতে মানুষের সমাগম বাড়ায় হঠাৎ করেই নগরে যানজট বেড়েছে বলে মনে করেন সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান।
তিনি বলেন, শহরে প্রচুর মানুষ একসঙ্গে কেনাকাটায় বের হচ্ছেন। ফলে সড়কে যানবাহনের সংখ্যাও বেড়েছে। স্বাভাবিক কারণে যানজটও কিছুটা বেড়েছে। এ ছাড়া কিছু কিছু ফুটপাত বেদখল হয়েছে ঠিক। ঈদের আগে মানবিক কারণে তাদের ফুটপাত থেকেও সরানো যাচ্ছে না।
তবে ঈদের আগে যানজট সহনীয় রাখতে সিটি করপোরেশন তদারকি শুরু করবে বলেও জানান তিনি।
ভুক্তভোগী নগরবাসী, ব্যবসায়ী, সিটি কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অপ্রশস্ত রাস্তাঘাট, যানবাহনের আধিক্য, ফুটপাত বেদখল এবং অধিকাংশ বিপণিবিতানে পার্কিং না থাকার কারণে সিলেট নগরে বছরজুড়েই যানজটের দুর্ভোগ লেগে থাকে। তবে এখন ঈদের আগে কেনাকাটা সারতে নগরের পাশাপাশি বাইরের লোকজন শহরে আসায় যানজট বেড়েছে। তবে আরও কিছুদিন পর ঈদের কেনাকাটায় মানুষের চলাচল বাড়বে এবং তখন যানজটের দুর্ভোগ মাত্রাতিরিক্ত মাত্রায় পৌঁছাবে বলে নগরের বাসিন্দারা আশঙ্কা করছেন।
যোগাযোগ করলে সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (ট্রাফিক) মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব বলেন, ঈদের আগে মানুষ কেনাকাটা করতে বেরোনোয় যানজট কিছুটা বেড়েছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ আপ্রাণ চেষ্টা করছে। এ ছাড়া বিভিন্ন বিপণিবিতান কর্তৃপক্ষকে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ দিয়ে বিপণিবিতানের সামনে যানবাহনের ভিড় এড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: টঙ্গী থেকে মগবাজার পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট
দৌলতদিয়ায় ৩ কিমি. দীর্ঘ যানজট
পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ঈদের আগে মানুষের চলাচল বেড়েছে ঠিকই, তবে সিলেটের বেশিরভাগ বিপণিবিতানে পার্কিং ব্যবস্থা না থাকা, ফুটপাত বেদখল এবং খোঁড়াখুঁড়ি করে রাস্তা ফেলে রাখার কারণেও যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। তবে এ সময়টাতে রাস্তায় যানবাহন যত্রতত্র দাঁড় করিয়ে যেন যাত্রী ওঠানামা করতে না পারে, তা কঠোরভাবে দেখা হচ্ছে।
১ বছর আগে