হিন্দু
রংপুরে অগ্নিসংযোগ: গাজীপুর থেকে আটক ২
রংপুরে হিন্দুদের বাড়ি-ঘর ও দোনানপাটে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মূল সন্দেহভাজনসহ দুই জনকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব)। শুক্রবার র্যাব সদস্যরা গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে।
আটক ব্যক্তিরা হলেন সৈকত মন্ডল ও তার সহযোগী রবিউল ইসলাম। শনিবার র্যাব সদর দপ্তর সূত্র ইউএনবিকে বিষয়টি জানিয়েছে।
রংপুর জেলা প্রশাসক আসিফ হাসান জানিয়েছেন, ফেসবুকে একটি পোস্টের জেরে ১৭ অক্টোবর রংপুরের পীরগঞ্জের বড়ো করিমপুর মাঝিপাড়া গ্রামে হিন্দুদের ২০ থেকে ২৫টি বাড়ি-ঘর ও দোকানপাটে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।
এ সময় তারা হিন্দুদের বাড়ি-ঘর থেকে নগদ টাকা, গবাদি পশু ও মূল্যবান জিনিসপত্রও লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪২ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: রংপুরে হিন্দুপল্লীতে আগুন: জয়পুরহাটে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার ১
রংপুরের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
রংপুরে হিন্দুপল্লীতে আগুন: আটক ৪২
সাম্প্রদায়িক হামলা: ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকারের ব্যাপক উদ্যোগ
সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিশ্বাস ফেরাতে ও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় এ পর্যন্ত ১০২ মামলায় ২০ হাজার ৬১৯ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৫৮৩ জনকে।
সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে ক্ষতিগ্রস্তদের নগদ আর্থিক সহায়তা, খাদ্য, বস্ত্র ও অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য এবং গৃহ নির্মাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য গৃহ নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন এবং ইতোমধ্যে এ জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলেও এক ভার্চুয়াল সভায় জানান তিনি।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মাঝে বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা ও সম্ভাব্য যে কোনো হামলা প্রতিরোধে নজরদারি জোরদার করতে দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশ দেয়।
আরও পড়ুন: সাম্প্রদায়িক সহিংসতা: শাহবাগে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিবাদ
৩৭টি জেলা ও তিনটি সিটি করপোরেশন এলাকায় ১১৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া পুলিশ, র্যাব ও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাত দিন টহল দিচ্ছে।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া জানান, দলটি সকল ইউনিটের নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকতে ও যে কোনো ধরনের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা প্রতিহত করতে নেতা-কর্মীদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগিতা করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী, গেল কয়েকদিনে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, জ্যৈষ্ঠ আওয়ামী লীগ নেতা, সাংসদ, সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী তাঁর কার্যালয়ও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। কাউকে তা বিনষ্ট করতে দেয়া হবে না।’
পুলিশ সদরদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইন গণমাধ্যমও নজরদারি করা হচ্ছে। ভুয়া তথ্য দিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপকসহ দুই ডজনের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা, পৌরসভা, সিটি করপোরেশনের জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক থাকতে নির্দেশনা জারি করেছে এবং তাদের নিজ নিজ এলাকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার্থে যথাযথ ভূমিকা পালন করতে বলেছে। এছাড়া এ বিষয়ে রবিবার মন্ত্রণালয়ে একটি ভার্চুয়াল সভা হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় আনা হয়েছে কক্সবাজারে গ্রেপ্তার ইকবাল হোসেনকে
এলজিআরডিমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম কুমিল্লা পরিদর্শন করেছেন। এখান থেকেই কথিত কোরআন অবমাননার গুজব ছড়ানো হয়।
এদিকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রধান প্রধান ধর্মের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ধর্ম মন্ত্রণালয় বৈঠক করেছে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার্থে মানুষের মাঝে সচেতনা তৈরি ও তাদের অনুপ্রাণিত করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান রংপুরের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে ভুক্তভোগী ৬১টি পরিবারকে নগদ ১০ হাজার করে টাকা, শিশু খাদ্য ও পশু খাদ্য প্রদান করেছেন।
এছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় গৃহ নির্মাণ করতে ১০০ বান্ডেল ঢেউটিন, চার লাখ ৪৫ হাজার টাকা বরাদ্দ এবং ১২০০ প্যাকেট মানবিক খাদ্য সহায়তা প্রদান করেছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসিন।
রবিবার রাতে রংপুর জেলা প্রশাসন ৬৫টি ভুক্তভোগী পরিবারের মাঝে ৯ লাখ নগদ অর্থ সহায়তা ও ১০০ বান্ডেল ঢেউ টিন বিতরণ করেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের যেন খোলা আকাশের নিচে থাকতে না হয় সে জন্য বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি তাদের জন্য তাঁবু স্থাপন করেছে।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ রংপুরের পীরগঞ্জে হামলা ও অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক হিন্দু পরিবারের মাঝে পাঁচ হাজার টাকা ও ২০ কেজি করে চাল বিতরণ করেছেন।
ক্ষমতাসীন দলের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বলেন, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ভুক্তভোগী পরিবারের মাঝে নগদ টাকা, খাদ্য, বস্ত্র সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।
দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একটি কেন্দ্রীয় দল শিগগিরই সারাদেশ পরিদর্শন করবে বলেও জানান তিনি।
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী ও হুইপ আবু সায়িদ আল মাহমুদ স্বপনও রংপুরের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
আরও পড়ুন: জেএমসেন হল পূজামণ্ডপে হামলা: গ্রেপ্তার আরও ১০
হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা দেশের চেতনার বেদীমূলে হামলা: তথ্যমন্ত্রী
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা বাংলাদেশের চেতনার বেদীমূলে হামলা এবং সরকারের ওপরও হামলা। এটি করে তারা সরকারের ওপর দোষ চাপাতে চেয়েছিল। এক ঢিলে দুই পাখি মারার মতো সরকারের সাথে হিন্দু সম্প্রদায় এবং পার্শ্ববর্তী দেশের সম্পর্ক নষ্ট করার হীন উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্রকারীরা এই হামলাগুলো করেছে।’বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষ থেকে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেয়ার পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি একথা বলেন।
আরও পড়ুন: ইসলামের নামে বিভেদ সৃষ্টিকারীদের রুখে দাঁড়ান: তথ্যমন্ত্রী
ধামইরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. দেলদার হোসেনের সভাপতিত্বে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, স্বাস্থ্য সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল মালেক এবং নওগাঁ জেলার সংসদ সদস্যরা সম্মেলনে বক্তব্য দেন।ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে বিএনপি-জামাত। ভোটের সময় ভারত বিরোধী শ্লোগান কারা দেয়, এই বিএনপি দেয়। হিন্দু সম্প্রদায়কে ভোট কেন্দ্রে যেতে বারণ কারা করে, এই বিএনপি-জামাতই করে। কোরআন শরিফ যে একজন মুসলমান যুবক রেখে এসেছিল, সেটি তো তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। সে ধরা পড়লে বোঝা যাবে কার ইন্ধনে সে এটি করেছে। সবকিছু যখন দিবালোকের মতো স্পষ্ট হবে তখন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবের মুখটা চুপসে যাবে।’
আরও পড়ুন: বিএনপি-জামায়াত ও তাদের দোসররা কুমিল্লার ঘটনা ঘটিয়েছে: তথ্যমন্ত্রী‘সরকার দেশকে বিরোধীদল শূন্য করতে চায়’- মির্জা ফখরুলের এমন মন্তব্যের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী বিরোধী দল থাকুক। আমরা মনে করি, শক্তিশালী বিরোধী দল গণতন্ত্রকে সংহত করে। দুঃখজনক হচ্ছে আমরা চাইলেও বিএনপি শক্তিশালী হতে পারছে না। বিএনপি’র জোট থেকে অনেকেই পালিয়ে যাচ্ছে, বিএনপির রাজনীতিও অনেকে ছেড়ে দিয়েছে। আপনারা জানেন যে, বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির অনেকেই ঘোষণা দিয়ে বিএনপির সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন।’কুমিল্লা ও পীরগঞ্জের ঘটনার প্রকৃতি সম্পর্কে জানতে চাইলে সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা। কারণ বাংলাদেশের কোনো সম্প্রদায়ের মানুষ সাম্প্রদায়িক নয়। সুতরাং যে ঘটনাগুলো ঘটেছে সেগুলো দুষ্কৃতিকারীরা ঘটিয়েছে এবং এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এর প্রেক্ষিতে যে পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছিল, সেটি সরকার দমন করতে সক্ষম হয়েছে। আমরা রাজনৈতিকভাবেও জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছি। কিন্তু যারা এই ষড়যন্ত্রটা করেছিল তারা আরও ষড়যন্ত্র করবে। কারণ তারা সময়ে সময়ে এ ধরনের নানা ঘটনা ঘটিয়েছে। পদ্মা সেতুর নির্মাণের শুরুতে গুজব রটিয়ে, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ নিয়ে এবং অতি সম্প্রতি পূজা মণ্ডপে কোরআন শরিফ রেখে তারা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির অপচেষ্টা করেছিল। আমরা তাদেরকে দমন করেছি। কিন্তু এই ষড়যন্ত্রকারী কুচক্রীমহলের ষড়যন্ত্র এবং কুচক্র পুরোপুরি বন্ধ হয়েছে সেটি আমি মনে করি না।’
আরও পড়ুন: সকল সম্প্রদায়ের মিলিত প্রচেষ্টায় দেশ পৌঁছাবে স্বপ্নের ঠিকানায়: তথ্যমন্ত্রী
এর আগে ধামইরহাট আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বক্তব্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আজ দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, দেশে যখন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি স্থিতি আছে, তখন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে বেকায়দায় ফেলার জন্য, সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য, প্রতিবেশীদের সাথে আমাদের সুসম্পর্কের ওপর কালিমা লেপন করার হীন উদ্দেশ্যে দুর্গা পূজাকে উপলক্ষ করে বিভিন্ন জায়গায় হামলা পরিচালনা করা হয়েছে। আমাদের সরকার দৃঢ় হাতে সেটি দমন করেছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার জন্য সারাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে আমাদের দল অতন্দ্র প্রহরীর মতো কাজ করছে। তবে তাদের উদ্দেশ্য হীন, তারা এ ধরনের আরও গন্ডগোল পাকানোর চেষ্টা করবে। তাই আমি নেতাকর্মীদের অনুরোধ জানাবো যে আপাতত এই দুস্কৃতিকারীরা নিবৃত্ত হয়েছে মনে হলেও আমাদেরকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।’
জীবন বাঁচাতে হিন্দু পরিচয়ে থাকতে হয়েছে: মেয়র সাদিক
বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) মেয়র এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সদস্য সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ ১৫ আগস্টের হত্যার কথা স্মরণ করে জানিয়েছেন, জীবন বাঁচাতে একটা সময় হিন্দু পরিচয়ে থাকতে হয়েছে।
বিসিসি মেয়র বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে একটি গোষ্ঠী পাকিস্তান বানাতে চেয়েছিল। কিন্তু তা দেশের জনগণ হতে দেয়নি।
আরও পড়ুন: বরিশালে পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষ, আহত ৩
শনিবার দুপুরে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বরিশাল সাংবাদিক ইউনিয়নের উদ্যোগে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন বরিশালের সিটি মেয়র।
সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমার দাদা আব্দুর রব সেরনিয়াবাতসহ আমার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে ৭৫ এর সেই রাতে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সেই মিন্টো রোডের বাসায় আমি মায়ের কোলে ছিলাম। আমার মা মরহুমা সাহানারা বেগমও গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। জীবন বাঁচাতে আমরা ভারতে হিন্দু পরিচয়ে ছিলাম। যাতে কারও সন্দেহ না হয়। সে সময় আমাদের পেলেও মেরে ফেলতো।’
আরও পড়ুন: বরিশালে একদিনে ২৩ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ১৯৫
তিনি বলেন, জনগণের টানে শত প্রতিকূলতার মধ্যেও আমরা দেশে ফিরে এসেছি। সেই জনগণের সেবা ছাড়া অন্য কোন লক্ষ্য আমার নেই। অতীতে বরিশালের অবকাঠামোগত উন্নয়ন টেকসইয়ের গ্যারান্টি দিয়ে নির্মাণ করেছি। যা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। এছাড়াও নগরীতে নতুন সড়ক নির্মাণ, জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও খালের নাব্যতা রক্ষায় কাজ করেছি। এই মহৎকাজে সবসময় বরিশালের জনগণকে পাশে চাই।
সাংবাদিক ইউনিয়ন বরিশাল এর সভাপতি সাইফুর রহমান মিরন এর সভাপতিত্বে এসময় আরও বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক ফিরদাউস সোহাগ, সিনিয়র সাংবাদিক মুরাদ আহমেদ, মাহমুদ হোসেন চৌধুরী, সহ-সভাপতি রাহাত খান, সাবেক সভাপতি গোপাল সরকার প্রমূখ।
আলোচনা সভা শেষে বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ৪ জনের উপস্থিতিতে হিন্দু বিয়ে
চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জে কঠোর লকডাউনে মধ্যেই অনুষ্ঠিত হচ্ছিল সনাতন ধর্মালম্বী এক তরুণীর বিয়ে। বাড়ির সামনে বিশালাকৃতির গেইট। চারদিকে জমকালো লাইটিং, ঢাক-ঢোল, গান-বাজনার সাথে নৃত্য।
এক কথায় মহা ধুমধামের সাথে চলছিল বিয়ের আনন্দ। চলমান আনন্দের মধ্যেই বুধবার রাত ৮টার দিকে পুলিশ নিয়ে বিয়ে বাড়িতে উপস্থিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার। তার উপস্থিতিতে যেন সবকিছু বিষাদে পরিণত হয়।
আরও পড়ুন: লকডাউনে বিয়ে : বর ও কনে পক্ষকে জরিমানা
এদিকে কিছুক্ষণের মধ্যেই বিয়ের লগ্ন শুরু হবে। বাড়ির অনতিদূরে বর পক্ষ চলে এসেছে। তাই বিয়ে বন্ধ না করে, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে তাৎক্ষণিক বন্ধ হয় ঢাক-ঢোলসহ নৃত্যসহ অন্যান্য অনুষ্ঠান ও জনসমাগম। খুলে ফেলা হয় বিয়ের গেটসহ অন্যান্য ডেকোরেশন।
অবশেষে, বর ও কনেসহ মোট চারজনের উপস্থিতিতে কনের নানার বাড়ি হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের ধড্ডা গ্রামে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ঘরের মধ্যে সম্পন্ন হয় এই শুভ বিবাহ।
বর-কনের স্বজনরা জানান, কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার অমল চন্দ্রের মেয়ে রুপালীকে (১৮) (ছদ্দনাম) হাজীগঞ্জের ধড্ডা তার নানার বাড়িতে এনে বিয়ে দেয়া হচ্ছে। আর বর হাজীগঞ্জের উচ্চঙ্গা গ্রামের হারাধনের ছেলে কমল দাস।
আরও পড়ুন: ৩৫০টি বাল্যবিয়ে বন্ধ করে রেকর্ড গড়লেন বেলকুচির ইউএনও
লকডাউনের মধ্যে এমন আয়োজন করে বিয়ের খবর পেয়ে তাই পুলিশ নিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার বিয়ে বাড়িতে হাজির হন। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বিয়ের সকল আয়োজন বন্ধ করে দেন। পাশাপাশি বর-কনেসহ চারজনের উপস্থিতিতে বিয়ের দেয়ার নির্দেশনা দেন বর-কনের অভিভাবকদের।
হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোমেনা আক্তার ইউএনবিকে বলেন, ‘সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিয়ের রীতিতে লগ্ন একটা বড় বিষয়। তাই লগ্ন ঠিক রেখে ঘরের মধ্যে বিয়ের কাজ সম্পন্ন এবং চলমান কঠোর লকডাউনে জনসমাগমসহ অন্যান্য আয়োজন বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছি।’
এ সময় হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক মো. মাসুদ মুন্সী, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাকির হোসেন লিটুসহ অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
শাল্লার ঘটনার সাথে জড়িতদের ছাড় নয়: র্যাব ডিজি
র্যাবের মহা পরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বৃহস্পতিবার বলেছেন, শাল্লার ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের কেউ ছাড় পাবে না।
বোরকা নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে সময় নেবে শ্রীলঙ্কা
শ্রীলঙ্কার একজন শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা বোরকা পরিধানকে ধর্মীয় চরমপন্থার পরিচয় বলে অভিহিত করলেও এ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি বিবেচনা করতে সময় লাগবে বলে দেশটির সরকার মঙ্গলবার জানিয়েছে।
সরস্বতী পূজা ৩০ জানুয়ারি
হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব সরস্বতী পূজা সারা দেশে ৩০ জানুয়ারি পালন করা হবে।
পূজা উপলক্ষে ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন পেছানোর আহ্বান টিআইবির
হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব সরস্বতী পূজা উপলক্ষে আসন্ন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
অযোধ্যা: মন্দির বানানোর পক্ষে রায় ভারতের সুপ্রিম কোর্টের
ভারতের অযোধ্যায় বিতর্কিত ধর্মীয় স্থানে একটি মন্দির গড়ার জন্যই সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে।