প্রথম বই
নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের প্রথম বই ‘এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ’
নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের প্রথম বই ‘এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ’- প্রকাশিত হয়েছে। দেশের শীর্ষ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান আগামী প্রকাশনী বইটি প্রকাশ করেছে।
রবিবার (১৬ এপ্রিল) রাজধানী গুলশানের একটি অডিটোরিয়ামে আগামী প্রকাশনী আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রপতির কাছে হস্তান্তর করেন।
হস্তান্তর অনুষ্ঠানে আগামী প্রকাশনীর প্রকাশক ওসমান গনি স্বাগত বক্তব্য দেন। গবেষক অধ্যাপক ড. এম. আবদুল আলীম তার বইয়ের ওপর আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেবেন ২৪ এপ্রিল
১৯৯৬ সাল থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপপুর লেখা একুশটি কলাম ও স্মৃতিচারণমূলক লেখা,তিনটি সাক্ষাৎকার এবং তার জীবন সম্পর্কিত একটি দীর্ঘ প্রবন্ধ গ্রন্থটিতে স্থান পেয়েছে। এছাড়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তার দুষ্প্রাপ্য। ঐতিহাসিক কিছু আলোকচিত্র বইটিতে যুক্ত করা হয়েছে।
মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন বঙ্গবন্ধুর প্রত্যক্ষ আহ্বানে ১৯৬৬ সালে ছাত্র-রাজনীতিতে যুক্ত হন এবং তার স্নেহের পরশ লাভ করেন। ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত অনেকবার তার সান্নিধ্য লাভ করেন। ১৯৭২ সালে পাবনার নগরবাড়ি ঘাট জনসভা এবং পাবনা সোডিয়ামের জনসভায় পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের বক্তব্য শুনে, প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাকে বুকে জড়িয়ে আশীর্বাদ করেন এবং হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় নিয়ে আসেন। জেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সভাপতি এবং পাবনা জেলা বাকশালের যুগ্ম-সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হিসেবে মাঠ পর্যায়ের রাজনীতিতে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। জাতীয় নেতা তাজউদ্দী এম মনসুর আলী, এ এইচ এম কামারুজ্জামান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ছাত্রনেতা তোফায়েল আহমেদ, আব্দুর রাজ্জাক, শেখ ফজলুল হক মণি, সিরাজুল আলম খান প্রমুখের নিবিড় সান্নিধ্য লাভ করেন। সেইসব স্বর্ণোজ্জ্বল স্মৃতি,সংগ্রামী জীবন, ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্ব, স্বাধিকার সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদান এবং রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে পদক্ষেপের কথা এ বইয়ের অন্তত চারটি কলামে মলাটবদ্ধ করেছেন।
কলামগুলো হলো- 'বঙ্গবন্ধুকে যেমন দেখেছি', ‘বঙ্গবন্ধু ইতিহাসের অমর মহানায়ক', 'বঙ্গবন্ধু ফিরলেন- পূর্ণতা পেল স্বাধীনতা’, 'বঙ্গবন্ধু হত্যাকার: তদন্ত কমিশন গঠনে বাধা কোথায়?' ও 'বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নে আমাদের দিনবদল'।
এছাড়া বইটিতে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম, রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে গৃহীত নানা পদক্ষেপ, ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন, করোনাসঙ্কট মোকাবিলা, পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেল নির্মাণ, রূপপুর পারমাণবিক বিদুৎকেন্দ্র বাস্তবায়ন, স্মার্ট বাংলাদেশ কর্মসূচিসহ বহুবিধ উন্নয়ন কর্মকার এবং রাষ্ট্রনেতা হিসেবে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠার বিষয় নিয়ে লেখা সাতটি কলাম।
সেগুলো হলো- ‘জাতির মনে জাগরণ শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন', 'বঙ্গবন্ধুকন্যার হাতেই উন্নয়নের বাংলাদেশ', 'করোনাযুদ্ধে অপ্রতিরোধ্য শেখ হাসিনা', 'দাবায়ে রাখতে পারবা না', 'সাবাস বাংলাদেশ এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়’, ‘এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ’-প্রভৃতি।
তাছাড়া মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের স্কুল-কলেজ জীবনের অনুস্মৃতি, ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযুদ্ধের কথা, পনেরই আগস্ট-পরবর্তী জেল-জুলুম-নির্যাতনের দুর্বিষহ স্মৃতি, মোহাম্মদ নাসিম, রফিকুল ইসলাম বকুল, আহমেদ রফিকসহ অন্যান্য রাজনৈতিক সহযোদ্ধাদের কথা, শিক্ষকদের কথা, শৈশব-কৈশোরের বন্ধুদের কথা: নির্বাচন কমিশন আইন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড নিয়ে তদন্ত কমিশন প্রসঙ্গ, কূটনৈতিক শোভনীয়তা, গণমাধ্যম এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ঘটনাবলির বিশ্লেষণ লেখাগুলোতে ফুটে উঠেছে।
সাক্ষাৎকার তিনটিতে তার ব্যক্তিজীবন সমকালের চালচিত্র উঠে এসেছে। গ্রন্থের পরিশিষ্টে যুক্ত করা হয়েছে মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপপুর জীবন, ছাত্র-রাজনীতি, আন্দোলন-সংগ্রাম, কারাভোগ, মুক্তিযুদ্ধ, কর্মজীবন এবং রাজনৈতিক চিন্তাদর্শ সম্পর্কে গবেষক-প্রাবন্ধিক অধ্যাপক ড. রাম আবদুল আলীমের একটি অনুসন্ধানমূলক ও তথ্যসমৃদ্ধ দীর্ঘ গবেষণা-প্রবন্ধ।
প্রকাশক বীর মুক্তিযোদ্ধা ওসমান গনি ও গবেষক ড. এম আবদুল আলীম বইটি রাষ্ট্রপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের কাছে হস্তান্তর করেন।
বইটি তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি অসীম শ্রদ্ধায় উৎসর্গ করেন।
আর বইটির প্রচ্ছদ করেন মাসুক হেলাল। ২০৪ পৃষ্ঠার বইটির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৯০০ টাকা।
বহুগুণে গুণান্বিত এই মানুষটি ২০২৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।
‘এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ’ গ্রন্থের পাতায় পাতায় বিধৃত হয়েছে তার শৈশব থেকে শুরু করে পুরো জীবনের কথা; তার সংগ্রাম, রাজনীতি, মুক্তিযুদ্ধ, জেল জীবন, কর্মজীবন, সংসার-জীবন, চিন্তাদর্শ তথা সবকিছুর পরিচয়।
বইটির লেখাগুলো সংগ্রহ,সংকলন ও সম্পাদনায় সার্বিক তত্ত্বাবধান করেছেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন গবেষক অধ্যাপক ড. এম. আবদুল আলীম।
আরও পড়ুন: মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে বাংলাদেশের নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি ঘোষণা: গেজেট
১ বছর আগে