খাবার
স্মরণশক্তি বাড়ানোর জন্য যেসব খাবার উপকারী
একাডেমিক পড়াশোনা, গবেষণাধর্মী কাজ ও কর্মজীবনের উন্নতির জন্য সৃজনশীলতার পাশাপাশি আরও একটি প্রয়োজনীয় বিষয় হচ্ছে স্মরণশক্তি। প্রতিটি মানুষেরই স্বাভাবিক বিকাশের পরিচয় বহন করে এই শক্তি। শুধু তাই নয়, নিত্য-নৈমিত্তিক জীবনে এর তুলনামূলক উপস্থিতির ভিত্তিতে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে বিশেষত্ব সৃষ্টি হয়। চর্চা বা সাধনার পাশাপাশি এই স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে কিছু পুষ্টিকর খাবার। সময়মতো সুফল পেতে এই খাবারগুলোতে শৈশব থেকেই অভ্যস্ত হওয়া জরুরি। চলুন, স্মৃতিশক্তি ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সেরা খাবারগুলোর তালিকা দেখে নেওয়া যাক।
স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতে উপকারী ১০টি খাবার
হলুদ
যে কোনো রান্নায় বহুল ব্যবহৃত এই উপকরণে রয়েছে পুষ্টি উপাদান কারকিউমিন। এটি মূলত এক ধরনের যৌগ, যার মধ্যে আছে উৎকৃষ্ট প্রদাহ-বিরোধী ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য। কারকিউমিন মস্তিষ্ক থেকে প্রাপ্ত নিউরোট্রফিক ফ্যাক্টর বাড়ায়, যা মস্তিষ্কের কোষের বৃদ্ধি ও রক্ষণাবেক্ষণে কাজে লাগে। এর ফলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা উন্নত হয় ও স্মৃতিশক্তি হারানোর ঝুঁকি হ্রাস করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, কারকিউমিন মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালনে যাবতীয় বাধা অতিক্রম করে মস্তিষ্কের টিস্যুগুলোকে সতেজ রাখে। এভাবে তরকারিতে নিয়মিত হলুদ ব্যবহারের মাধ্যমে দীর্ঘ মেয়াদে স্মৃতি ধারণ ক্ষমতা বাড়ানো যেতে পারে। এটি আলঝেইমারের মতো নিউরোডিজেনারেটিভ (স্মৃতিশক্তির পর্যায়ক্রমিক অবনতি) রোগ থেকে রক্ষা করতে পারে।
আরও পড়ুন: নিরাপদে স্ট্রিট ফুড খাওয়ার ১০টি উপায়
চর্বিযুক্ত মাছ
মলা, ঢ্যালা, আইলা, টুনা, সরপুটির মতো সামুদ্রিক মাছগুলো যথেষ্ট পরিমাণে ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। এই অপরিহার্য চর্বিগুলো মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে এবং জ্ঞানীয় কার্যকারিতা উন্নত করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওমেগা -৩ স্মৃতিশক্তি বাড়ায়, প্রদাহ কমায় ও মস্তিষ্কের কোষগুলোর পারস্পরিক যোগাযোগ বজায় রাখে।
এই পুষ্টি উপাদান কোষগুলোর কাঠামোগত অখণ্ডতায়ও অবদান রাখে। নিয়মিত চর্বিযুক্ত মাছ খাওয়া মস্তিষ্ক জনিত যাবতীয় সমস্যা রোধ করে সামগ্রিক মানসিক বিকাশে সহায়তা করে। এটি মস্তিষ্কের জন্য পুষ্টিকর খাদ্য-উপাদানের একটি বৃহৎ অংশের যোগান দেয়। সপ্তাহে অন্তত ২ বার ভারী খাবারে চর্বিযুক্ত মাছ রাখা উচিৎ।
পালং শাক
ঘন পাতাযুক্ত এই সবুজ শাক ভিটামিন কে, ই, ও ফোলেট সমৃদ্ধ। ভিটামিন কে স্ফিংগোলিপিড গঠনে সহায়তা করে, যেটি মূলত মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে কোষ গঠন ও কোষের সঠিক কার্যক্ষমতার জন্য অপরিহার্য। ভিটামিন-ই একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে কোষগুলোকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে।
আরো পড়ুন: রেস্তোরাঁ-শপিং মলে প্রবেশের আগে যে বিষয়গুলোতে সাবধান থাকা জরুরি
আর ফোলেট জ্ঞানীয় কার্যক্রমগুলোতে সাহায্য করে, যার কারণে বয়সের সঙ্গে মস্তিষ্কের সাধারণ অবনতির ঝুঁকি কমে। নিয়মিত পালং শাক খাওয়া মস্তিষ্কের শক্তি বাড়ায় এবং নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের বিরুদ্ধে মস্তিষ্ককে রীতিমতো দুর্গ বানিয়ে তোলে। প্রতিদিনের ডায়েটে অন্তত এক বেলা পালং শাক রাখা হলে দীর্ঘ মেয়াদে কাঙ্ক্ষিত জ্ঞানীয় সুবিধা পাওয়া যেতে পারে।
বাদাম
আখরোট, কাজু বাদাম, এমনকি চিনাবাদাম শুধু মস্তিষ্কের জন্যই নয়; সমস্ত দেহের জন্য বেশ উপকারী। এই বাদামগুলো ভিটামিন ই, স্বাস্থ্যকর চর্বি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মতো মস্তিষ্ক-সহায়ক উপাদানে ভরপুর। ভিটামিন-ই মস্তিষ্কের কোষের অম্লতা-জনিত ক্ষতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।
অন্যদিকে স্বাস্থ্যকর চর্বি মস্তিষ্কের ভেতরে কোষের গঠনে অংশ নেয় এবং জ্ঞানীয় কার্যকারিতায় সাহায্য করে। বাদামে ম্যাগনেসিয়াম ও জিঙ্কের মতো প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান রয়েছে, যা জ্ঞানীয় স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সরাসরি অংশ নেয়। বাদাম স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর জন্য প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় একটি দারুণ সংযোজন হতে পারে। স্ন্যাক্স হিসেবে বিভিন্ন ধরনের বাদাম নিত্যদিনের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে যথেষ্ট। বিভিন্ন মিষ্টি জাতীয় খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে এগুলোকে আরও মুখরোচক করে তোলা যায়।
আরও পড়ুন: মিয়াজাকি বা সূর্যডিম আম কেন এত দামি
গাজর
বিটা-ক্যারোটিনের এই চমৎকার উৎসটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়। বিটা-ক্যারোটিন মস্তিষ্কের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস প্রতিরোধে অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। এই স্ট্রেসের কারণে জ্ঞানীয় কার্যক্রমগুলোর ধীরে ধীরে অবনতি হয়। বিটা-ক্যারোটিন সমৃদ্ধ খাবার স্মৃতিশক্তি এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সঙ্গে মস্তিষ্কের যোগাযোগ সমুন্নত রাখে।
গাজরে থাকা ভিটামিন সি ফ্রি-র্যাডিক্যালের কারণে সৃষ্ট ক্ষতি প্রতিরোধ করে মস্তিষ্ককে সুরক্ষিত রাখে। বার্ধক্য-জনিত স্মৃতিশক্তি হ্রাস থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত গাজর খাওয়া যেতে পারে। সালাদ, জুস, এমনকি রান্না করা খাবারের মাধ্যমেও গাজর অন্তর্ভুক্ত করা যায় প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায়।
মুরগির ডিম
এই বহুমুখী ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবারটি কোলিন ও ভিটামিন বি-১২ সহ একটি সুস্থ মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। কোলিন হলো অ্যাসিটাইলকোলিনের প্রধান উপাদান, যেটি স্মৃতি ধরে রাখা ও কোনো কিছু শিখতে সাহায্য করে। যে কোনো বয়সেই জ্ঞানীয় কার্যকারিতা অক্ষুন্ন রাখতে ও স্মৃতিশক্তি হ্রাস রোধ করার জন্য পর্যাপ্ত কোলিন গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।
আরো পড়ুন: গরুর দুধের বিকল্প হিসেবে খেতে পারেন যেসব স্বাস্থ্যসম্মত খাবার
ভিটামিন বি-১২ স্নায়বিক অংশগুলোর অখণ্ডতা বজায় রেখে মস্তিষ্ককে অটুট রাখে। এটি স্নায়ু তন্তুর সুরক্ষা এবং কোষগুলোর মাঝে পারস্পরিক যোগাযোগ নিশ্চিত করে। মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিকাশের জন্য প্রতিদিন মুরগির ডিম খাওয়া আবশ্যক। শুধু সকালের নাস্তাতেই নয়, অন্যান্য তরকারির সঙ্গে ডিমের অতিরিক্ত সংযোজন খাবারটিকে বেশ উপাদেয় করে তোলে। এছাড়া শুধু সিদ্ধ ডিমও প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগান দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
কুমড়োর বীজ
পুষ্টির পাশাপাশি সুস্বাদু সবজিগুলোর মধ্যে চালকুমড়ো অন্যতম। এর বীজে আছে ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ম্যাগনেসিয়াম মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপে অংশ নিয়ে কোনো কিছু শেখা এবং স্মৃতি ধারণ প্রক্রিয়া চালু রাখে। এটি নিউরোট্রান্সমিটার সিগন্যালিং নিয়ন্ত্রণ তথা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মধ্যকার পারস্পরিক যোগাযোগ স্থাপন করতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে। জিঙ্ক নিউরোপ্রোটেকশনে অবদান রাখে, যা যে কোনো পরিস্থিতিতে মস্তিষ্কের প্রক্রিয়া চালু রাখার জন্য জরুরি।
কুমড়োর বীজের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মস্তিষ্কের কোষগুলোকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে দূরে রাখে। তাই স্মৃতিভ্রষ্ট থেকে বাঁচতে হলে নিয়মিত এই বীজ খাওয়া আবশ্যক। অন্যান্য খাবারের সঙ্গে জুড়ে নিমেষেই এটি উপাদেয় মিশ্রণ তৈরি করতে পারে।
আরও পড়ুন: ওমেগা-৩ ডিম কি আসলেই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি?
মসুর ডাল
ফোলেট, আয়রন ও ফাইবারে ভরপুর এই সহজলভ্য খাবারটি মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যক্রমের জন্য অপরিহার্য। সেরোটোনিন, ডোপামিন ও নোরপাইনফ্রিনের মতো নিউরোট্রান্সমিটার সংশ্লেষণের কাজ করে ফোলেট। এর মাধ্যমে মেজাজ, স্মৃতিশক্তি ও যাবতীয় জ্ঞানীয় প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণাধীন থাকে।
পর্যাপ্ত ফোলেট গ্রহণ স্মৃতিভ্রষ্ট সম্পর্কিত নানা ধরণের রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে। অন্যদিকে আয়রনের কাজ হলো মস্তিষ্কে অক্সিজেন পরিবহন করে জ্ঞানীয় প্রক্রিয়া চালু রাখা।
মস্তিষ্কের সঠিক কার্যাবলির জন্য মস্তিষ্কের পাশাপাশি দেহের অন্যান্য অংশও ঠিক থাকা জরুরি। বিশেষ করে অন্ত্র সুস্থ থাকলে মস্তিষ্ক তার প্রয়োজনীয় রসদ থেকে বঞ্চিত হয় না। আর এই বিষয়টি নিশ্চিত করে ফাইবার।
আরও পড়ুন: তীব্র গরমে পানিশূন্যতা প্রতিরোধে উপকারী শাকসবজি
ফুলকপি
ভিটামিন কে ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের একটি উৎকৃষ্ট উৎস হচ্ছে ফুলকপি। ভিটামিন কে-এর কাজ মস্তিষ্কের কোষ গঠনে দরকারি উপাদান সরবরাহ করা। সালফোরাফেনের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মস্তিষ্ককে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস ও প্রদাহ থেকে রক্ষা করে। ফুলকপিতে থাকা যৌগগুলো জ্ঞানীয় কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি ও স্মরণশক্তি উন্নয়নে সহায়ক। বার্ধক্যে স্মরণশক্তির অবনতি থেকে বাঁচতে কম বয়স থেকেই ফুলকপির খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা আবশ্যক। রান্না ছাড়াও সালাদে বা সাইড ডিশ হিসেবে ফুলকপি একটি উযুক্ত খাবার।
কমলা
নানা ধরনের সতেজ ফলের মধ্যে স্মরণশক্তির জন্য সহায়ক ফল হলো কমলা। বাদাম ও গাজরের মতো এটিও মস্তিষ্ককে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করতে পারে, কেননা এতে আছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ভিটামিন সি সেরোটোনিনের মতো নিউরোট্রান্সমিটারের উৎপাদনে সহায়তা করে, যা সঠিক মানসিক অবস্থার জন্য দরকার।
এছাড়া কোলাজেন সংশ্লেষণেও এটি একটি আবশ্যিক উপাদান, কারণ এর মাধ্যমে মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে কোষ ও রক্তনালীগুলোর গঠন বজায় থাকে। প্রতিদিন অন্তত একটি পুরো কমলা খাওয়া দীর্ঘমেয়াদে জ্ঞানীয় কর্মক্ষমতাকে উন্নত রাখার সহায়ক হতে পারে।
আরো পড়ুন: শহরে রান্নার জন্য গ্যাসের চুলার সেরা কয়েকটি বিকল্প
তাছাড়া বয়সের সঙ্গে জ্ঞানীয় অবনতির ঝুঁকি কমাতেও এই অনুশীলন আবশ্যক। সরাসরি ফল হিসেবে খাওয়ার পাশাপাশি কমলার তাজা জুস একটি জনপ্রিয় কোমল পানীয়।
পরিশিষ্ট
এই ১০টি পুষ্টিকর খাবার সর্বাঙ্গীনভাবে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি ও মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে পারে। হলুদের প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য থেকে শুরু করে কমলার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পর্যন্ত প্রতিটি খাবারেই রয়েছে অনন্য পুষ্টিগুণ। পুরো সপ্তাহের খাদ্যাভাসে এই খাবারগুলোকে যুক্ত করার মাধ্যমে মস্তিষ্ককে যে কোনো কাজের জন্য প্রস্তুত করা যেতে পারে। সেই সঙ্গে উত্তরোত্তর অনুশীলনও চালিয়ে যেতে হবে যুগপৎভাবে। এরই দৌলতে ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে কর্মজীবন পর্যন্ত যে কোনো প্রতিযোগিতায় কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জন করা সম্ভব।
আরও পড়ুন: চিনির কিছু স্বাস্থ্যকর প্রাকৃতিক বিকল্প
সিলেটে বন্যাকবলিত এলাকায় খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট
সিলেটের বন্যাকবলিত এলাকার পানি কমতে শুরু করলেও খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দুর্গতরা।
সিলেট নগরীর ১৫ হাজারসহ মোট সাড়ে ৮ লাখ মানুষ এখনো পানিবন্দি।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, নগরীর ১০৭টি ইউনিয়ন ও আটটি ওয়ার্ডে এখনও পানি আছে।
আরও পড়ুন: সিলেটের বন্যায় সাড়ে ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি
এখনও ১৯ হাজার ৭৩৮ জন আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছেন এবং বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় দুই হাজার মানুষ আশ্রয় কেন্দ্র ছেড়ে চলে গেছেন।
জৈন্তাপুর উপজেলার চিকনাগুলের দিনমজুর কবির আহমদ বলেন, 'আমরা যখন আশ্রয় কেন্দ্রে ছিলাম, তখন খাবার ও পানি ছিল কিন্তু এখন বাড়ি ফেরার পর খাবার ও পানি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। পুরো বাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং আমার বাড়িতে যে ধান রাখা হয়েছিল তা ভেসে গেছে। এখন আমি কী খাব?’
এছাড়া নলকূপ তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
তবে অনেক নিচু এলাকার সড়ক ও বাড়িঘর থেকে এখনো পুরোপুরি পানি নেমেনি।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, রবিবার বিকেল ৩টায় কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমার পানি বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ও সিলেট পয়েন্টে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
এছাড়া কুশিয়ারা নদীর পানি অমলশীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৯৯ সেন্টিমিটার ও শেরপুর পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস জানান, পানি ধীরে ধীরে কমছে বলে মনে হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান জানান, জেলার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে এবং বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য কন্ট্রোল রুমের কার্যক্রম পুরোদমে চলছে।
মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে এবং তারা বন্যাকবলিত এলাকায় তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
২৮ জুন থেকে আবারও ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
এছাড়া শুক্রবার থেকে কোম্পানীগঞ্জ ও জৈন্তাপুর উপজেলার দুটি পানি বিশুদ্ধকরণ প্লান্ট থেকে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে খাবার পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েকদিনের টানা বর্ষণে গত ২৭ মে থেকে জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়। ১৫ জুন থেকে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে বন্যায় ১০০০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট, ভেসে গেছে ৪০০ পুকুরের মাছ
সিরাজগঞ্জে যমুনার পানি বৃদ্ধি, বন্যার আশঙ্কা
রেলের খাবার মানসম্মত না হলে চুক্তি বাতিল: রেলমন্ত্রী
রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম বলেছেন, রেলের খাবার মানসম্মত না হলে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ক্যাটারিং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ট্রেনে ক্যাটারিং সার্ভিসের চুক্তি অনুযায়ী মানসম্মত খাবার প্রদানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী দাম বাড়ানো হয়েছে খাবারের।
আরও পড়ুন: মার্চেই কালুরঘাট সেতুতে যান চলাচল শুরু হবে: রেলমন্ত্রী
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রেল ভবনের সভাকক্ষে বাংলাদেশ রেলওয়ের ট্রেনের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও ক্যাটারিং সার্ভিসের সেবার মান এবং সার্বিক বিষয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, যাত্রীদের ভালো খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু যাত্রীদের অভিযোগ- ক্যাটারিং প্রতিষ্ঠানগুলো বাসি রুটি ও গন্ধযুক্ত খাবার দিচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, যারা ক্যাটারিং পরিচালনা করেন তাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। খাবারের মান ভালো করতে হবে। মান খারাপ হলে বদনাম ক্যাটারিং প্রতিষ্ঠানের হয় না। দুর্নাম হয় রেল কর্তৃপক্ষের, রেলমন্ত্রীর।
খাবারের মান স্বাস্থ্যসম্মত করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নিয়মিত মনিটরিং করার নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, কর্মকর্তারা যার যার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করলে খাবার মানসম্মত হবে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বৃদ্ধি পাবে এবং একই সঙ্গে টিকিট কালোবাজারি বন্ধ হবে। ট্রেনে হকারদের উৎপাত বন্ধ করতে হবে, হকারদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে ব্যবস্থা নিতে হবে।
আরও পড়ুন: পুরোনোদের অভিজ্ঞতা নিয়ে রেলকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়া হবে: রেলমন্ত্রী
তিনি বলেন, ট্রেনে যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বাড়াতে হবে। যাত্রীদের অভিযোগ ট্রেন অপরিষ্কার এবং অনেক সময় বাথরুম ব্যবহার অযোগ্য অবস্থায় থাকে, যা মেনে নেওয়া যায় না।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বৃদ্ধিতে পরিদর্শন বাড়ানোসহ নিয়োজিত পরিচ্ছন্ন কর্মীদের মনিটরিং করার নির্দেশ দেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, রেলে যারা দায়িত্বে আছেন তাদের হাওয়া খেলে চলবে না, কাজ করতে হবে। ভালো কাজের জন্য স্বীকৃতি দেওয়া হবে।
আর দায়িত্বে অবহেলার কারণে বদনাম হয় মন্ত্রীর এবং প্রধানমন্ত্রীকেও সে বদনামের ভাগীদার হতে হয়। প্রধানমন্ত্রীর বদনাম হয় এমন কাজ সহ্য করা হবে না।
সকলকে দায়িত্বের প্রতি সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বিএনপির হরতাল-অবরোধে রেলে আক্রমণ বেড়েছে: রেলমন্ত্রী
ধান-গমের বিকল্প খাবার হতে পারে কাসাভা
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের এই সময়ে মানব জাতিসহ গৃহপালিত প্রাণির খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
এদিকে বৈরি আবহাওয়ায় ধান ও গমের উৎপাদন কমছে। অপরদিকে জনসংখ্যা বাড়ছে দিন দিন। এমন অবস্থায় ধান, গম, চালের উপর নির্ভরতা কমাতে পারে কাসাভা। বাংলাদেশে কাসাভা সাধারণত শিমুল আলু নামে পরিচিত।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে খাবারের খোঁজে লোকালয়ে ২ বানর
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফসল উদ্ভিদ ও বিজ্ঞান বিভাগের সম্মেলনকক্ষে শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় কৃষি অনুষদের ফসল উদ্ভিদ ও বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ছোলায়মান আলী ফকির কাসাভার বিভিন্ন গুনাগুণ, ব্যবহার ও কাসাভা চাষের সম্ভাবনা ও প্রতিকূলতা সম্পর্কে তার গবেষণালব্ধ তথ্য উপস্থাপন করেন।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আর্থিক সহায়তায় এই গবেষণা পরিচালিত হয়েছে।
সম্মেলনে গবেষক ছোলায়মান আলী ফকির জানান, কাসাভা পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম শর্করা জাতীয় খাদ্য এবং প্রায় ৮০ কোটি মানুষের প্রধান খাদ্য।
তিনি আরও জানান, এটি শর্করা, আমিষ, চর্বি, আঁশ, খনিজ দ্রব্য, বিটা-ক্যারোটিন, ভিটামিন-সি, লৌহ ও ক্যালসিয়াম রয়েছে। এটি উচ্চ তাপমাত্রা ও কম উর্বর মাটিতেও জন্মাতে সক্ষম। সিদ্ধ করে, পুড়িয়ে এমনকি গোল আলুর মতো অন্যান্য তরকারির সঙ্গেও রান্না করে কাসাভা আলু খাওয়া যায়।
তিনি জানান, কাসাভা আটার সঙ্গে মিশিয়ে রুটি, পরোটা, কেক, পিঠা তৈরিতে ব্যবহার করা যায়। আমেরিকার দেশ হাইতি, মেক্সিকান রিপাবলিক, পেরাগুয়ে, পেরু, আফ্রিকা তানজানিয়া, কেনিয়া, জাম্ববিয়া, ঘানা, নাইজেরিয়া ও এশিয়ার ভিয়েতনাম, ভারতের কেরালা ও তামিলনাড়ু রাজ্যে, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনে এই আলু স্যুপ, চিপস, ট্যাপিওকা (সাগুসদৃশ খাবার), পুডিং ইত্যাদি হিসেবে খাওয়া হয়।
এছাড়া কাসাভার পাতায় ডিমের মতো পুষ্টিগুণ রয়েছে।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় পানিবন্দি ২ হাজার পরিবার, খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট
ছোলায়মান আলী ফকির জানান, দেশের পার্বত্য অঞ্চলগুলোতে এই পাতা সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। তাছাড়া এ পাতা প্রক্রিয়াজাতকরণের পর উদ্ভাবিত পিলেট ও আটা গরু, ছাগল, মহিষ, মাছ ও পোল্ট্রিকে খাবার হিসেবে দেওয়া যায়। তবে কাসাভা গাছের সর্বত্র বিষাক্ত সায়ানোজেনিক গ্লুকোসাইড থাকে। তাই বিষাক্ত কিছু জাতের কাসাভার ডগা ও পাতা খেয়ে গরু-ছাগল মারা যেতে পারে। তবে সিদ্ধ বা প্রক্রিয়াজাত করলে এই বিষক্রিয়া আর থাকে না।
নওগাঁয় পানিবন্দি ২ হাজার পরিবার, খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট
কয়েকদিনের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে নওগাঁর ছোট যমুনা ও আত্রাই নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এতে করে জেলার ৪টি উপজেলার ৭টি পয়েন্ট ভেঙে ১০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট।
এলাকাবাসীর থেকে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত ছোট যমুনা ও আত্রাই নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে জেলার রানীনগর, আত্রাই, মান্দা ও মহাদেবপুর উপজেলার বেড়িবাঁধের ৭টি পয়েন্ট এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের একটি অংশ ভেঙে বন্যার পানিতে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে ভারি বর্ষণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, সতর্ক করতে মাইকিং
তলিয়ে গেছে শত শত বিঘা জমির আউশ ও আমন ধান খেত। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। এছাড়া রানীনগর-আত্রাই সড়কের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে দুইদিন থেকে সড়ক পথে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
পানিবন্দি এসব মানুষদের মাঝে সরকারি সহযোগিতায় চাল, ডালসহ শুকনা খাবার বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।
বৃহষ্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে রানীনগর ও আত্রাই উপজেলার বন্য কবলিত বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যহৃত থাকায় ভেঙে যাওয়া বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে লোকালয়ে হু হু করে পানি ঢুকছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যায় এখনো ৭০০০ পরিবার পানিবন্দি
ডিবি অফিসে খাবার খাওয়ার ব্যাখা দিলেন গয়েশ্বর
বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় শনিবার আটকের সময় পুলিশের গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে দুপুরের খাবার খাওয়ার ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
রবিবার (৩০ জুলাই) নয়াপল্টন কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ডিবি কার্যালয়ে তার দুপুরের খাবারের ভিডিও ও ছবি জনগণকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে প্রচার করা হয়েছে।
গয়েশ্বর বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘটনার ভিডিও এবং ছবি ছড়িয়ে দেওয়া একটি নিম্ন রুচির পরিচায়ক এবং একটি অত্যন্ত লজ্জাজনক ও ঘৃণ্য কাজ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরও জানান, সোনারগাঁও হোটেল থেকে ডিবি অফিসের আনা খাবার খান নি তিনি; তার পরিবর্তে ডিবি প্রধান হারুন-অর-রশিদের বাড়ি থেকে পাঠানো খাবার খান তিনি।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘যারা এটা করেছে (ভিডিও ও ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছে) তারা তাদের নিম্নরুচির পরিচয় দিয়েছে। এটি এক ধরনের তামাশাপূর্ণ নাটক এবং আমি জানি না কে এর স্ক্রিপ্ট লিখেছেন।’
আরও পড়ুন: আটকের পর ডিবি প্রধানের সঙ্গে গয়েশ্বরের দুপুরের ভোজ
শনিবার ডিবি অফিসের প্রধান হারুন-অর-রশিদের সঙ্গে গয়েশ্বর দুপুরের খাবার খাচ্ছেন এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের সময় ধোলাইখাল থেকে ওই বিএনপি নেতাকে আটক করা হয়। পরে তাকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে গয়েশ্বর বলেন, রক্তচাপ কমে যাওয়ায় ডিবি কর্মকর্তারা তাকে খেতে অনুরোধ করেন।
প্রবীণ এই নেতা বলেন, ‘তারা বলল, স্যার আপনি সারাদিন কিছু খাননি। আমরা শুনেছি আপনি পানিও পান করেননি। আপনাকে স্যালাইন দিয়ে ইনজেকশন দেওয়া হবে। কিছু না খেয়ে স্যালাইন নেবেন? আমাদের যা আছে তা একটু খান। আমরা আপনাকে না খাইয়ে রাখতে পারি না। কারণ আমরা আপনাকে গ্রেপ্তার না করলেও আমাদের দায়িত্ব রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডাইনিং রুমে ঢুকে দেখলাম খাবারের বিশাল আয়োজন…আমি বললাম সোনারগাঁও বা অন্য কোন হোটেলের খাবার আমি খাই না। আমি ৯০ভাগ নিরামিষাশী এবং আমি এক বা দুটি আইটেমের বেশি খাই না। আমি দেখেছি যে তারা ছবি তুলছে এবং আমি তাদের বলেছিলাম যে খাবারের সময় ছবি তোলা কোনও ভদ্রলোকের কাজ নয়।’
পরে তিনি বলেন, ডিবি প্রধান তার (হারুনের) বাড়ি থেকে আনা খাবার নিয়ে আসতে বলেছেন তার কর্মীদের।
আরও পড়ুন: নিরাপত্তাহীনতায় বাংলাদেশ থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক ক্রমান্বয়ে দেশ ছাড়ছে: গয়েশ্বর
তিনি আরও বলেন, ‘তিনি (হারুন) টিফিন ক্যারিয়ার থেকে আমাকে দুই চামচ সাদা ভাত দিয়েছিলেন। আমি তাকে শুধু তার সবজি দিতে বললাম। তারপর তিনি বললেন, স্যার এক টুকরো রুই মাছ নিন, এটা কিশোরগঞ্জ থেকে আনা হয়েছে।’
এই বিএনপি নেতা বলেন, এর আগেও অনেকবার ডিবি অফিসে গিয়েয়েন তিনি। সেসময় আশেপাশের হোটেল থেকে খাবার দিয়ে তাকে আপ্যায়ন করা হত। কিন্তু সোনারগাঁ থেকে এবার খাবার কেনার তহবিল দিল কে? তাদের কি এটা করার নিয়ম আছে? যাদের তারা হেফাজতে নেয় তারা কি তাদের সঙ্গে এমন আচরণ করে? তাই বোঝা যায়, তারা লোক দেখানো নাটক মঞ্চস্থ করেছে। এটি একটি নিম্ন রুচির পরিচয়। বাংলাদেশের মানুষ এতটা বোকা নয় যে সাজানো ছবি ও ভিডিও দেখে বিপথগামী হবে।
গয়েশ্বর বলেন, গয়েশ্বর রায়ের মাথা কেনার মতো এত টাকা রাষ্ট্রের নেই। ‘রাষ্ট্রের ক্ষমতা আছে আমাকে এক গুলিতে মেরে ফেলার এবং ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমের মতো আমাকে গুম করার ক্ষমতা আছে... কিন্তু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের মতো একজনকে কেনার ক্ষমতা সরকারের নেই।’
রাজধানীর ধোলাইখালে দলটির অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের মধ্যে শনিবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গয়েশ্বরকে পিটিয়ে আহত করে।
পরে মাথা কেটে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে আটক করে প্রথমে ওয়ারী থানায় ও পরে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: মানুষের ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করাই বিএনপির দায়িত্ব: গয়েশ্বর
সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে ডিবি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তিনি দুপুরের খাবার খেয়েছিলেন। তারপরে তাকে তার কার্যালয়ের সামনে নামিয়ে দেওয়া হয়।
তার ওপর হামলার বর্ণনা দিয়ে গয়েশ্বর বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা ধোলাইখালে রাজধানীর প্রবেশপথে তাদের দলের অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে জড়ো হলে পুলিশ তাদের ওপর টিয়ারশেল নিক্ষেপ শুরু করে, যার ফলে সংঘর্ষ শুরু হয়।
তিনি বলেন, ‘আপনারা মিডিয়ার মাধ্যমে দেখেছেন যে কীভাবে তারা আমাদের নেতাকর্মীদের লাঠি দিয়ে পিটিয়েছিল... তারা আমাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করলে আমি মাটিতে পড়ে যাই এবং তারপরও তারা আমাকে মারধর করে। দেখে মনে হচ্ছে তারা একটি সাপকে মারছে।’
এর আগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নয়াপল্টনে তার কার্যালয়ে গয়েশ্বরকে দেখতে যান এবং তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন।
খাবার-ফল নিয়ে আমানকে দেখতে হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তার সহকারী একান্ত সচিব-২ গাজী হাফিজুর রহমান (লিকু) জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমানকে দেখতে যান।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস উইং থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর হাতে এসএসসির ফলাফল হস্তান্তর
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিএনপি নেতাকে প্রধানমন্ত্রীর পাঠানো দুপুরের খাবার, বিভিন্ন প্রকার মৌসুমি ফল ও জুস, একটি বুকেট তুলে দেন এপিএস-২।
গাজী হাফিজুর রহমান আমানউল্লাহ আমানকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আপনার জন্য এসব খাবার, ফল ও জুস পাঠিয়েছেন এবং আপনার স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর জানতে চেয়েছেন। তিনি আপনার দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন।’
লিকু আরও বলেন, চিকিৎসার জন্য দেশের ভেতরে অন্য যেকোনো হাসপাতালে আমানউল্লাহ আমান যেতে চাইলে তারও সুব্যবস্থা করে দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আমানউল্লাহ প্রধানমন্ত্রীর এসব উপহার গ্রহণ করেন এবং মানবতা ও রাজনৈতিক শিষ্টাচারের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
আরও পড়ুন: বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে আমাদের শিক্ষার মান উন্নত করুন: প্রধানমন্ত্রী
বিচার বিভাগকে স্মার্ট করতে পদক্ষেপ নিয়েছি: প্রধানমন্ত্রী
চিপসের পরিবর্তে কিছু স্বাস্থ্যকর বিকল্প খাবার
ব্যস্ত লাইফস্টাইল, কাজের চাপ এবং মানসিকতার পরিবর্তনের কারণে প্রায়ই আমরা এমন কাজ করি, যা আমাদের শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। অফিসে কাজের ফাঁকে বা টিভি দেখতে দেখতে আমরা হালকা কিছু খাবার খেয়ে থাকি। যেগুলো খেলে পেট খুব বেশি না ভরে উঠলেও, শরীরে অস্বাস্থ্যকর পদার্থের পুরু স্তর জমে। আমাদের স্বল্প সময়ের ক্ষুধা মেটানোর জন্য বেশিরভাগই আমরা ভাজা চিপস ও চর্বিযুক্ত বিভিন্ন খাবার বেছে নিই।
এগুলোর বিকল্প হিসেবে আমরা যদি এমন খাবার বেছে নেই যেগুলো সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর; এর চেয়ে ভাল আর কিছুই হতে পারে না।
আসুন বিকল্প কিছু স্ন্যাক্সের কথা জানা যাক, যেগুলো আমাদের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনে কাজে লাগতে পারে।
পপকর্ন
সাশ্রয়ী ও স্বাস্থ্যকর এমন খাবারের মধ্যে পপকর্ন সেরা বিকল্পগুলোর একটি। এটি আলুর চিপসের মতোই তৃপ্তিদায়ক ও মুড়মুড়ে। তবে এতে আলুর চিপসের তুলনায় অর্ধেক ক্যালোরি এবং অনেক কম চর্বি রয়েছে।
এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে এমন পপকর্ন খেতে হবে যা বেশি তেল বা মাখনে ভাজা হয়নি এবং মুখরোচক বিভিন্ন মশলার বদলে যাতে শুধুমাত্র হালকা লবণ থাকবে।
আরও পড়ুন: গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে ৬ খাবার
চট্টগ্রামে খাবারের খোঁজে ৩ তলা ভবনে গন্ধগোকুল!
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর একটি তিনতলা ভবনে খাবারের খোঁজে এসে আটকা পড়ে বিপন্ন প্রাণী গন্ধগোকুল।
শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে পৌর সদরের মীর পাড়ার নিগার সীমা তুলির বাসায় আটকা পড়ে গন্ধগোকুলটি।
নিগার সীমা বলেন, 'প্রাণীটি গত এক সপ্তাহ ধরে ভবনের কার্নিশ বেয়ে বাসায় ঢুকে খাবার চুরি করছিল। বিষয়টি টের পেলেও তাকে আমরা খাবার দিতাম। খাবার বলতে বিস্কুট, মুরগির মাংস- এইসব। তবে শনিবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে বাসায় প্রবেশ করে সে আর বের হতে পারেনি। পরে এটিকে খাঁচায় বন্দি করে বন বিভাগের লোকজনকে খবর দেয়া হয়েছে। তারা রবিবার এসে প্রাণীটি নিয়ে যাবে জানিয়েছে।
তিনি আরও জানান, প্রাণীটি থেকে এক ধরনের গন্ধ বের হচ্ছে। প্রাণীটির নিরাপত্তার কথা ভেবে লোকালয়ে আপাতত ছাড়ছি না। বন বিভাগের লোকের হাতেই তুলে দেব।
বোয়ালখালী বন বিভাগের কর্মকর্তা আজম খান বলেন, শনিবার একটি বাসায় খাবারে সন্ধানে গন্ধগোকুলটি ধরা পড়েছে এমন খবর পেয়েছি। রবিবার এটি উদ্ধার করে বনে উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে বিরল প্রজাতির গন্ধগোকুল উদ্ধার
বিশ্বনাথে বিরল প্রজাতির ‘গন্ধগোকুল’ উদ্ধার
এক টাকার রেস্টুরেন্ট!
এক টাকায় পেটপুরে খাওয়ার কথা আমরা কি ভাবতে পারি? তবে এখন থেকে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বদৌলতে দারিদ্র্যপীড়িত জেলা কুড়িগ্রামের মানুষ চাইলেই এক টাকায় পেটপুরে খেতে পারবেন। এ ফাউন্ডেশন উদ্যোগে এবার এই জেলায় চালু হলো এক টাকার রেস্টুরেন্ট।
এক টাকায় শহরের রেস্টুরেন্টের খাবার পেয়ে খুশি হতদরিদ্র মানুষেরা।
দেশের প্রেক্ষাপটে বাজারে এক টাকা এখন নেহাত মূল্যহীন। প্রায় বিলুপ্তির পথে এক টাকার নোট। দোকানিরা এর চাহিদা সারেন চকলেট দিয়েই। কিন্তু এক টাকায় রেস্টুরেন্টের খাবার অবিশ্বাস্য।
সত্যি এমন ব্যতিক্রম আয়োজন করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন।
জেলার সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের চরসুভারকুঠি গ্রামে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্থায়ীভাবে বিশেষ একটি রেস্টুরেন্ট চালু হয়েছে।
এক টাকার এই রেস্টুরেন্টে পাওয়া যাচ্ছে বিরিয়ানি, পোলাও, ভাত, মাছ, মাংস, ডিমসহ বারো পদের খাবার।
যা ক্ষুধার্ত মানুষেরা রেস্টুরেন্টে গিয়ে ইচ্ছামতো তাদের পছন্দের খাবার খেতে পারছেন। মনোরম ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসে তৃপ্তি সহকারে পছন্দের খাবার খেতে পেরে খুশি সুবিধাভোগীরা। দ্রব্যমূল্যের এমন ঊর্ধ্বগতির বাজারে সমাজে এমন অনেক অসহায়, দরিদ্র এবং গৃহহীন মানুষ তিনবেলা খাওয়া কষ্টকর।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় এক টাকায় ঈদ বাজার