না.গঞ্জ
না.গঞ্জে আ.লীগ নেতাকে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাত
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে দুর্বৃত্তরা ছুরিকাঘাত করেছে। সোমবার দিবাগত রাতে উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নে ঘটনাটি ঘটে। নিহত দেলোয়ার হোসেন (৪২) উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, রাত পৌনে ৯টার দিকে বালিয়াপাড়া বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন দেলোয়ার হোসেন। হঠাৎ কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করলে দেলোয়ার গুরুতর আহত হন।
আরও পড়ুন: সিলেটে ছুরিকাঘাতে গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ, যুবক আটক
স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হলেও স্বজনরা তাকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন।
আহতদের ছোট ভাই জাকির হোসেন বলেন, আমার ভাইয়ের অবস্থা খুবই গুরুতর। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। এখন তাকে আইসিইউতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বর্তমান ইউপি সদস্য সোহেলের সঙ্গে দেলোয়ারের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল।
বিরোধের জের ধরে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা।
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক তৈয়ব জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
ওসি আরও বলেন, হামলার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: কেরানীগঞ্জে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে সবজি ব্যবসায়ীর মৃত্যু
গাইবান্ধায় ছুরিকাঘাতে ইউপি সদস্য খুনের অভিযোগ
না.গঞ্জে অপহরণের পর শিশুহত্যা, ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে উম্মে তাবাসসুম জুঁই নামে তিন বছরের এক শিশুকে অপহরণের পর হত্যার দায়ে তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ওসি প্রদীপের সম্পদের খোঁজে ৭ দেশে দুদকের চিঠি
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কুঁড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী থানার শিলখুড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ দলডাঙ্গা গ্রামের সমেদ আলীর দুই ছেলে শাহজালাল (২১) ও খয়বর হোসেন (৩২) এবং তাদের সহযোগী আশরাফুল (১৯)।
মামলার বিবরণে জানা যায়, মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের ভুলতা টেকপাড়ায় টেকপাড়া এলাকায় আনোয়ার হোসেনের শিশুকন্যা জুঁইকে অপহরণের পরিকল্পনা করে তাদের বাড়ির ভাড়াটিয়া শাহজালাল, খয়বর হোসেন ও আশরাফুল।
উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর সকালে বাড়ির সামনে খেলা করার সময় জুঁইকে অপহরণ করে তারা। পরে অপহরণকারীরা শিশুটির বাবার কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে এবং টাকা নিয়ে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনে যেতে বলে। তবে অপহরণের ঘটনা পুলিশকে জানালে জুঁইকে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয় অপহরণকারীরা।
অপহরণকারীদের সঙ্গে জুঁইয়ের পরিবারের পাঁচ লাখ টাকায় রফাদফা হয়। টাকা পেলে তারা জুঁইকে ফেরত দেবে বলে আশ্বাসও দেয়।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীপুরে ছাত্রলীগ নেতা হত্যায় ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড
তবে টাকা দিতে দেরি হলে রাতে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় জুঁইয়ের লাশ বস্তায় ভরে তাদের বাড়ির পেছনে ফেলে যায় অপহরণকারীরা। পরদিন সকালে লাশ উদ্ধার হয়।
এ ঘটনায় নিহত শিশুর বাবা আনোয়ার হোসেন বাদি হয়ে রূপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করলে পুলিশ তিন আসামি জাকির হোসেন, শাহজালাল ও আশরাফুলকে গ্রেপ্তার করে।
পরে আসামিদের মধ্যে দুইজন হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রাকিব উদ্দিন জানান, আদালত এই মামলায় ১৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্ততর্কের পর বিচার প্রক্রিয়া শেষে রায় ঘোষণা করেছেন। বাদী ও রাষ্ট্রপক্ষ এ রায়ে সন্তুষ্ট।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান জানান, রায় ঘোষণার পর আদালতের নির্দেশে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে বাবাকে হত্যার দায়ে মেয়ের মৃত্যুদণ্ড
না.গঞ্জে ৪ হত্যা: ২ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল, খালাস ১১
২০ বছর আগে ২০০২ সালে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে আওয়ামী লীগের চার কর্মীকে কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ২৩ জনের মধ্যে দুইজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।
এছাড়া ১১ জনকে খালাস এবং সাতজনকে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন দণ্ড দেওয়া হয়েছে। বাকি তিনজন মারা যাওয়ায় তাদের আপিল বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: 'পাকিস্তান' শব্দ যুক্ত থাকা আইনের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট
মঙ্গলবার (১৬ মে) ২৩ আসামিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশের ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের ওপর রায় দেন বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন-আইনজীবী জমির উদ্দিন সরকার, এম এম শাহজাহান, ফজলুল হক খান ফরিদ, মোহাম্মদ আবুল হাসনাত, শেখ মো. শামসুজ্জামান ও ইসরাত জাহান।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন-ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।
যে দুইজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে তারা হলেন-জহিরুল হক ভূইয়া ওরফে জহির মেম্বার ও আব্দুল আহাদ।
২৩ আসামিদের মধ্যে যে তিন আসামি মারা গেছেন তারা হলেন-আবুল বাশার ওরফে কাশু চেয়ারম্যান, ইউনুস আলী মেম্বার ও ইদ্রিস আলী।
যাবজ্জীবন দণ্ড দেওয়া হয়েছে-মো. ফারুক, মো. খোকন, মো. ডালিম, মো. রোহেল, লিয়াকত আলী, আল আমিন ও রুহুল আমিনকে।
এছাড়া খালাস পাওয়া ১১ আসামি হলেন-সিরাজ উদ্দিন ওরফে সিরাজ, সাহাব উদ্দিন, মো. হালিম, ইয়াকুব আলী, মো. আমির হোসেন, মো. আবুল কালাম, মো. রফিক মিয়া, গোলাম আজম, আব্দুল হাই, হারুন ও তাজুদ্দিন।
আরও পড়ুন: হিন্দু নারীদের অধিকার প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী ফজলুল হক খান ফরিদ।
জানা যায়, ২০০২ সালের ১২ মার্চ সকালে আড়াইহাজার উপজেলার জালাকান্দি এলাকার বাড়ি থেকে আড়াইহাজার উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলামের ছোট ভাই আব্দুর বারেক, তার ফুফাতো ভাই বাদল, আওয়ামী লীগ কর্মী ফারুক এবং কবির হোসেনকে তৎকালীন আড়াইহাজার থানা বিএনপির সহ-সভাপতি আবুল বাশারের নেতৃত্বে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাদের কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় নিহত বারেকের বাবা আজগর আলী বাদী হয়ে আবুল বাশারকে প্রধান আসামি করে ১৮ জনের নামোল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন।
পরে পুলিশ তদন্ত শেষে ২৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।
এর মধ্যে ২০১৪ সালের ২১ অক্টোবর আওয়ামী লীগে যোগ দেন এ হত্যা মামলার প্রধান আসামি আবুল বাশার।
পরবর্তীতে এ মামলার বিচার শেষে ২০১৭ সালের ১৭ মে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক কামরুন নাহার ২৩ জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন।
এরপর নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। আর আসামিরা আপিল ও জেল আপিল করেন।
আরও পড়ুন: হাইকোর্ট বেঞ্চে ‘বকশিশ’ নিষিদ্ধ, নির্দেশনা জারি