স্থিতাবস্থা
যশোর-নড়াইল মহাসড়কে গাছ না কাটার উপর স্থিতাবস্থা
যশোর-নড়াইল মহাসড়কে ছয় লেন প্রকল্পের কারণে সড়কের পাশে থাকা গাছ না কাটার উপরে আপাতত স্থিতি অবস্থা দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রবিবার (১৯ মে) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
রিটের বাদীপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ এবং তাকে সহায়তা করেন আইনজীবী সঞ্জয় মণ্ডল এবং আইনজীবী সেলিম রেজা।
আরও পড়ুন: সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গাছ না কাটার নির্দেশ হাইকোর্টের
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডিএজি বিপুল বাগমার এবং সড়ক বিভাগের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এসএম জহিরুল ইসলাম।
সম্প্রতি তাপমাত্রা অত্যধিক বৃদ্ধি ও জনজীবন অতিষ্ঠ হওয়ার মধ্যেও যশোরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে— বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
বিষয়টি নিয়ে গত ৫ মে জনস্বার্থে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)।
আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, যশোর-নড়াইল ছয় লেন মহাসড়কের উন্নয়ন প্রকল্প সরকার হাতে নিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সড়ক নির্মাণের জন্য কোনো টেন্ডার আহ্বান করা হয়নি। তা সত্ত্বেও মহাসড়কের দুই পাশে শত শত গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে।
তিনি আদালতে বলেন, প্রচণ্ড দাবদাহে মানুষের সুরক্ষার প্রয়োজনে গাছগুলো কাটা বন্ধ রাখা উচিত। গাছ সংরক্ষণ করেও ছয় লেনের সড়কের কাজ করা সম্ভব। তাতে জনগণ উপকৃত হবে।
শুনানিতে সরকারের পক্ষে দাবি করা হয়, গাছ কাটা যাবে না এমন কোনো আইন দেশে নেই। গাছ কাটা বন্ধ হলে উন্নয়ন কাজ ব্যাহত হবে।
তার বিপরীতে আইনজীবী মোরসেদ বলেন, মিডিয়ায় রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে যে, ২০৩০ সালে দাবদাহের অন্যতম শীর্ষ নগরী হবে ঢাকা। সুতরাং, গাছ সংরক্ষণ করে এখনই ব্যবস্থা না নিলে জনগণের ভোগান্তি দূর করা সম্ভব হবে না। এমনকি সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩২ অনুসারে বেঁচে থাকার অধিকার যা মৌলিক অধিকার তাও বিঘ্নিত হবে।
শুনানি শেষে যশোর-নড়াইল ছয় লেনের মহাসড়ক নির্মাণে বর্তমানে সড়কের পাশে থাকা গাছ কাটার উপরে স্থিতি অবস্থার আদেশ জারি করেন আদালত। একইসঙ্গে আদেশে উল্লেখ করেন, ছয় লেন মহাসড়কের টেন্ডার আহ্বান করার পরে এই স্থিতি অবস্থার আদেশ বাতিল হবে।
রিটকারীরা হলেন- মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী, মো. এখলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া ও রিপন বাড়ৈ।
রিটের বিবাদীরা হলেন- সচিব কেবিনেট বিভাগ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণাললেয়র সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল, ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র, ঢাকা উত্তরা-দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী, প্রধান প্রকৌশলী প্রধান বন সংরক্ষক, সড়ক মহাসড়ক বিভাগ ও বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি।
আরও পড়ুন: ২০৩০ সাল পর্যন্ত গাছ না কাটার আহ্বান বনমন্ত্রীর
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গাছ কাটা বন্ধে হাইকোর্টে রিট
৭ মাস আগে
পুরান ঢাকায় পুকুর দখলে হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা
পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার ডিআইটির শতবর্ষের পুকুর দখল করে মার্কেট ও কাউন্সিল অফিস নির্মাণের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছেন হাইকোর্ট। এই আদেশের ফলে পুকুরটি বর্তমানে যে অবস্থায় আছে, সে অবস্থায় থাকবে।
স্থিতাবস্থা জারির আদেশ কার্যকর করে বিবাদীদের দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এক রিটের প্রেক্ষিতে সোমবার (৫ জুন) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মো. শওকত আলী চৌধুরীর বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: রাজশাহী সিটির ৯৫২ পুকুর সংরক্ষণের নির্দেশ
রুলে পুকুরটি রক্ষা করতে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ গোষণা করা হবে না, সিএস ও আর এস রেকর্ড অনুযায়ী পুকুরটি সংরক্ষণের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং পুকুরের মধ্যে যেসব স্থাপনা করা হয়েছে সেগুলো অপসারণের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সরকার সচিব, পরিবেশ সচিব, গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব, রাজউক চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদীদেরকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।
এর আগে গতকাল পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার ডিআইটির শতবর্ষের পুকুর দখল করে মার্কেট, কাউন্সিল অফিস নির্মাণ বন্ধ করে পুকুরটি সংরক্ষণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।
রিটে পুকুর দখলের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চাওয়া হয়।
মানবাধিকার সংগঠন এইচআরপিবির পক্ষে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ এ রিট দায়ের করেন। রিটে গত ৩ জুন একটি জাতীয় দৈনিকে ‘পুকুর দখল করে মার্কেট ও কাউন্সিলর অফিস’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ায় ১৯৬৩ সালে ১৩ দশমিক ৫৭ একর সম্পত্তি অধিগ্রহণ করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এর মধ্যে দুই একরের একটি পুকুরও ছিল।
এলাকাবাসী খাওয়ার পানি সংগ্রহ থেকে ধোয়া-মোছাসহ নানাকাজে পুকুরের পানি ব্যবহার করতেন। পুকুর থেকে মাছও ধরতেন তারা। শত বছরের ঐতিহ্যবাহী সেই পুকুরটি ব্যক্তিমালিকানাধীন দাবি করে প্রায় ভরাট করে ফেলা হচ্ছে।
চারপাশে ছোট ছোট মার্কেট, দোকান ও রিকশার গ্যারেজও গড়ে তোলা হয়েছে। দখল নিশ্চিত করতে পুকুরের একটি অংশ ভরাট করে নির্মিত দোতলা ভবন স্থানীয় ৪৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহানা আক্তারের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: পরিবেশ সংরক্ষণে টিলাকাটা ও পুকুর ভরাট বন্ধ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
বছরের পর বছর ধরে দখল চললেও উচ্ছেদ না করায় ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
গত শুক্রবার পুকুর রক্ষার দাবিতে আয়োজিত পুকুর ঘেরাও কর্মসূচি ও মানববন্ধন পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়ে গেছে। কর্মসূচি পালন না করে ফিরে গেছেন এলাকাবাসী ও পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা।
পুকুরটি রক্ষায় এলাকাবাসী সিটি করপোরেশন ও রাউজকে বিভিন্ন সময় চিঠি দিয়েছে। এতে পুকুরটি সংরক্ষণ করে সুপেয় পানি ও অগ্নিকাণ্ডে পানি সরবরাহ এবং অবৈধ অংশ উদ্ধার করে চারদিকে দেয়াল দিয়ে পুকুর রক্ষার দাবি জানানো হয়।
তবে এসব চিঠি কিংবা দাবি-দাওয়ায় টনক নড়েনি সংশ্লিষ্টদের।
এলাকাবাসী জানান, ২০০৪ সালেও রাজউকের পুকুরে গোসল করেছেন তারা। এরপর থেকেই মূলত পুকুরটি প্রভাবশালীদের দখলে চলে যেতে থাকে। দখলের শুরুতে পুকুরটিতে প্রচুর আবর্জনা ফেলা হয়।
গৃহস্থালি থেকে শুরু করে সব ধরনের বর্জ্যে পুকুরটি ভরে ওঠে। তারপর স্থানীয় প্রভাবশালীরা পুকুরপাড়ে টং দোকান ও রিকশার গ্যারেজ নির্মাণ করেন।
তখন পুকুরটির ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
গেন্ডারিয়া পুকুরের চারপাশ মার্কেট, কংক্রিটের দোকান ও রিকশার গ্যারেজে ঘেরা।
স্থানীয়রা মনে করেন, পুকুরের পাড় দখল করে দোকান তৈরি করা হলেও এখনো পুকুরের বড় অংশই দৃশ্যমান। ধীরে ধীরে ভেতরের অংশ দখলে নেওয়ার পরিকল্পনা থেকেই চারপাশে মার্কেটের প্রাচীর দেওয়া হয়েছে।
কয়েকজন দোকানি বলেন, এখানে দেড়শ থেকে দুইশ দোকানের ভাড়া তোলেন বর্তমান কাউন্সিলরের বাবা ও সাবেক কাউন্সিলর সাইদুর রহমান সহিদ।
রাজউকের সম্পত্তি বিভাগ জানিয়েছে, পুকুরটি রাজউকেরই। এটি দখলে নেওয়ার জন্য প্রভাবশালীরা ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে একটি মামলা করেন। সেই মামলা এখনো চলছে।
তবে গেজেটভুক্ত সম্পত্তি হওয়ায় পুকুরটি দখলে নিতে পারছেন না দখলদাররা।
এছাড়া অবৈধ দখল উচ্ছেদে রাজউকের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে বলে মনে করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে পুকুর থেকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সীমানা পিলার উদ্ধার
১ বছর আগে
শ্রমিকদের গ্রামীণ কল্যাণের লভ্যাংশ দেওয়ার রায়ে হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা
নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মালিকানাধীন গ্রামীণ কল্যাণ থেকে চাকরিচ্যুত ১০৬ শ্রমিককে শ্রম আইন অনুযায়ী কোম্পানির লভ্যাংশ দিতে শ্রম অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের রায় কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে শ্রম অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের ওই রায়ের ওপর ছয় মাসের স্থিতাবস্থা জারি করেছেন আদালত।
ড. ইউনূসের পক্ষে করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি করে মঙ্গলবার (৩০ মে) বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎস্পৃষ্টে হাত হারানো শিশুটিকে ৪ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের রুল
আদালতে ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ ও ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। শ্রমিকদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান ও অ্যাডভোকেট গোলাম রব্বানী শরীফ।
পরে অ্যাডভোকেট গোলাম রব্বানী শরীফ বলেন, গত ৩ এপ্রিল ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মালিকানাধীন গ্রামীণ কল্যাণ থেকে চাকরিচ্যুত ১০৬ শ্রমিককে শ্রম আইন অনুযায়ী কোম্পানির লভ্যাংশ পরিশোধ করতে রায় দেন শ্রম অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনাল।
তিনি আরও বলেন, এই রায় চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন ড. ইউনূস।
শ্রমিকদের পক্ষের আইনজীবীরা জানান, ১০৬ কর্মকর্তা ও কর্মচারী ২০০৬ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ কল্যাণে কর্মরত ছিলেন। ২০০৬-২০১৩ অর্থ বছরে কোম্পানির লভ্যাংশ থেকে তাদের বঞ্চিত করা হয়।
শ্রম আইনে বলা আছে, শ্রম আইন কার্যকর হওয়ার দিন থেকে কোম্পানির লভ্যাংশের ৫ শতাংশ শ্রমিকদের কল্যাণ ও অংশগ্রহণ তহবিল দিতে হবে। এই লভ্যাংশ না পাওয়ার কারণে প্রথমে তারা গ্রামীণ কল্যাণকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। কিন্তু লিগ্যাল নোটিশ দেওয়ার পরও ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় তারা মামলা করেন।
আরও পড়ুন: এবি ব্যাংকে ৩৫০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদনে অনিয়ম, অনুসন্ধানের নির্দেশ হাইকোর্টের
হিন্দু নারীদের অধিকার প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল
১ বছর আগে