বিধিমালা
ড্যাপ ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালায় সংশোধন চান আবাসন খাতের ব্যবসায়ীরা
সবার জন্য বাসস্থান নিশ্চিতকরণ এবং আবাসন শিল্পের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতে ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) এবং ইমারত নির্মাণ বিধিমালায় প্রয়োজনীয় সংশোধন চান রিয়েল এস্টেট ও হাউজিং খাতের ব্যবসায়ীরা।
সোমবার (১৩ মে) সকালে এফবিসিসিআইর মতিঝিল কার্যালয়ে রিয়েল এস্টেট এবং হাউজিং বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতি এই আহ্বান জানান ব্যবসায়ীরা।
সভায় সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআইর রিয়েল এস্টেট ও হাউজিং বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জিটু। কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এফবিসিসিআইর পরিচালক ও আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাবের সাবেক সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন এফবিসিসিআইর সভাপতি মাহবুবুল আলম।
আরও পড়ুন: মৎস্য খাতের উন্নয়নে পৃথক দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চল চান ব্যবসায়ীরা
সভায় এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আবাসন খাতের চাহিদা বাড়ছে। নিবন্ধন ফি সহনীয় করা হলে ফ্ল্যাটের বিক্রি বাড়বে। এতে একদিকে যেমন মানুষের বাসস্থান সংকট দূর হবে, অন্যদিকে এই খাতও বিকশিত হবে।
ফ্ল্যাটের দাম সাধারণ মানুষের নাগালে রাখতে নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
এফবিসিসিআই সভাপতি আরও বলেন, রিহ্যাবের সদস্য নয় এমন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি আবাসন ব্যবসায় জড়িত। কিছু নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের প্রতারণার জন্য এই খাতের ব্যবসায়ীদের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতে হবে বলে মন্তব্য করেন মাহবুবুল আলম।
পাশাপাশি আবাসন খাতের কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে রিহ্যাবকে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিষয়ে কঠোর হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
আবাসন খাতের টেকসই উন্নয়নে আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাবকে আরও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী।
তিনি বলেন, রিহ্যাবকে তথ্য-উপাত্তভিত্তিক কৌশলপত্র তৈরি করতে হবে। উন্নয়ন ও গবেষণা সেল গঠন এবং অভিজ্ঞ পরামর্শক নিয়োগ দিয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা নিয়ে অগ্রসর হতে হবে।
কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল বলেন, বর্তমানে দেশের আবাসন ব্যবসায়ীদের জন্য ড্যাপ এবং ইমারত নির্মাণ বিধিমালা সবচেয়ে বড় ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবাসন ব্যবসায়ীরা ড্যাপ কিংবা ইমারত নির্মাণ বিধিমালার বিরুদ্ধে নয়।
সাংঘর্ষিক ইস্যুগুলো সংশোধনের মাধ্যমে আবাসন খাতবান্ধব বিধিমালা প্রণয়নে রাজউক ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
আবাসন খাতের সংকট নিরসনে কমিটির সদস্যদের কাছে সুনির্দিষ্ট পরামর্শ আহ্বান করেন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জিটু।
যৌক্তিক পরামর্শগুলো বিশ্লেষণ করে শিগগিরই নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের তুলে ধরা হবে বলে জানান তিনি।
এ সময়, ফ্ল্যাট ও জমির নিবন্ধন ব্যয় সহনশীল রাখা, প্রকল্পের অনুমোদনসংক্রান্ত জটিলতা দূরীকরণ, এলাকাভিত্তিক ফ্লোর এরিয়া রেশিও (এফএআর) নির্ধারণের ক্ষেত্রে বৈষম্য দূরীকরণ, ভবন বা ইমারত নির্মাণের ক্ষেত্রে উচ্চতা সীমার বিধিনিষেধ শিথিল করা, আবাসন খাতের জন্য ব্যাংক ঋণ নিশ্চিত করাসহ আবাসন খাতের অন্যান্য সমস্যাগুলো তুলে ধরেন বক্তারা।
সভায় আরও ছিলেন- এফবিসিসিআইর সহসভাপতি ড. যশোদা জীবন দেবনাথ, পরিচালক হাফেজ হাজী হারুন-অর-রশিদ, মো. রাকিবুল আলম দিপু, রিহ্যাবের সিনিয়র সহসভাপতি এবং স্ট্যান্ডিং কমিটির উপদেষ্টা লিয়াকত আলী ভূঁইয়া, এফবিসিসিআইর মহাসচিব মো. আলমগীর, কমিটির কো-চেয়ারম্যান, অন্যান্য সদস্য ও ব্যবসায়ী নেতারা।
আরও পড়ুন: হালাল খাদ্যের বাজার ধরতে কমপ্লায়েন্স ইকো-সিস্টেম গড়ে তোলার আহ্বান ব্যবসায়ীদের
অসুস্থ গরুর মাংস বিক্রির অভিযোগে ২ ব্যবসায়ীকে জরিমানা
৬ মাস আগে
ইমারত নির্মাণ বিধিমালা না মানায় অগ্নিকাণ্ডে এত হতাহত: মেয়র তাপস
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, ইমারত নির্মাণ বিধিমালা না মানায় বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে অনেক মানুষ নিহত হয়েছে এবং অনেককে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে।
শুক্রবার (১ মার্চ) দুপুরে বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রোগীদের দেখে বেইলি রোডের দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি মন্তব্য করেন।
মেয়র বলেন, ‘আমাদের প্রাথমিক পরিদর্শন এবং তথ্য থেকে আমরা যতটুকু জানতে ও দেখতে পেয়েছি, এই ভবন নির্মাণে অনেক গাফিলতি রয়েছে। এই ভবন নির্মাণে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা, বিএনবিসি কোডে যে নির্ণায়কগুলো রয়েছে সেগুলো সম্পূর্ণরূপে লঙ্ঘন করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: সিন্ডিকেট রোধে কোটি মানুষকে টিসিবি কার্ড দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী: তাপস
তিনি বলেন, ‘আমরা পরিদর্শনে দেখলাম, ১০ তলা ভবন হওয়া সত্ত্বেও মাত্র একটি সিঁড়ি রয়েছে এবং সেই সিঁড়িটাও নির্ধারিত মানদণ্ড অনুযায়ী প্রশস্ত না। ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুযায়ী পাঁচ তলার উপরে ভবন হলেই একটি ভবনে দুটো সিঁড়ি থাকতেই হবে এবং একটি সিঁড়ি জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত থাকবে। অগ্নিকাণ্ড, ভূমিধ্বসসহ যেকোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগকালে সেটি ব্যবহৃত হবে। কিন্তু এই ভবনে তা মানা হয়নি বলেই অগ্নিকাণ্ডে এত হতাহত হয়েছে।’
এ সময় সরকারের কাছে পাঠানো ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ইমারত নির্মাণ ও পুনঃনির্মাণ বিধিমালা দ্রুত অনুমোদন পাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তাপস বলেন, এ ধরনের ব্যাপক প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা পূর্ণাঙ্গরূপে বাস্তবায়ন ও পরিপালন একান্ত আবশ্যক। বিগত বছরগুলোতে যে দুর্যোগগুলো হয়েছে সেগুলোর আলোকে এ ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় জরুরি সাড়া প্রদানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন একটি খসড়া নীতিমালা প্রনয়ণ করছে। তাছাড়া ইমারত নির্মাণ ও পুনঃনির্মাণে সিটি করপোরেশনের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক করে আমরা একটি নীতিমালা সরকারের কাছে পাঠিয়েছি। সেটি নিয়ে বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মত বিনিময় চলছে। আমরা আশা করব, সরকার দ্রুত এই নীতিমালাটির অনুমোদন দেবে।
আরও পড়ুন: বিজ্ঞান-প্রযুক্তির গবেষণায় বরাদ্দ আরও বাড়াতে হবে: তাপস
চাঁদপুরের সাবেক সংসদ সদস্য শামসুল হক ভূঁইয়ার মৃত্যুতে তাপসের শোক
৮ মাস আগে
কারাগারে ‘চিকিৎসক নিয়োগ বিধিমালা’ চূড়ান্তে ১ মাস সময় দিলেন হাইকোর্ট
দেশের কারাগারগুলোয় আগামী ১ মাসের মধ্যে চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার (৬ জুন) এ বিষয়ে এক আবেদনের শুনানিকালে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও কারা কর্তৃপক্ষকে শূন্য পদে কারা চিকিৎসক নিয়োগের অগ্রগতি এক সপ্তাহের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শ্রমিকদের গ্রামীণ কল্যাণের লভ্যাংশ দেওয়ার রায়ে হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জে আর খান রবিন। কারা অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. শফিকুল ইসলাম।
এসময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান জামান।
মঙ্গলবার (৬ জুন) শুনানিকালে এখন কারা হাসপাতালগুলোতে কতজন চিকিৎসক আছেন-আদালতের এমন প্রশ্নে কারা অধিদপ্তরের আইনজীবী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ১২৫ জন।
তখন আদালত জানতে চান, বাকিগুলো পূরণ করছেন কিভাবে?
জবাবে কারা অধিদপ্তরের আইনজীবী জানান, শূন্যপদ পূরণের কাজ চলছে।
আদালত তখন বলেন, কত বছর লাগবে? ডাক্তারের তো অভাব নেই। নিয়োগ দেন না কেন? কেন্দ্রীয় কারাগারেই দিচ্ছেন না, তাহলে জেলা কারাগারগুলোর অবস্থা তো আরও খারাপ।
আদালত আরও বলেন, শুধু চিঠি চালাচালি করছেন। ক্ষমতা অপব্যবহার করার জন্য না, মানুষের সেবা করার জন্য। কারাগারে গরিব মানুষ থাকে, ধনীরা থাকে না।
ধনীরা কারাগারে গেলেও তাদের জন্য ডিভিশনের ব্যবস্থা থাকে। গরিবদের বাঁচান।
এরপর কারা চিকিৎসক নিয়োগের বিধিমালা চূড়ান্ত করা কথা বলে আদালত কারা কর্তৃপক্ষের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমরা এক মাস পর তারিখ রাখছি। এর মধ্যেই চূড়ান্ত করবেন। এর আগে, গত ১৩ ডিসেম্বর আদালতে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের ৬৮ কারাগার এবং কারা হাসপাতালে ১৪১টি চিকিৎসকের পদের বিপরীতে প্রেষণে ও সংযুক্ত মিলিয়ে মোট ৯৩ জন চিকিৎসক রয়েছেন।
এরপর আদালত শূন্য পদগুলোতে অবিলম্বে কারা চিকিৎসক নিয়োগ দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়ে অগ্রগতি জানাতে বলেন।
এর ধারাবাহিকতায় মামলাটি কার্য তালিকায় আসে। ২০১৯ সালে রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জে আর খান রবিন।
তখন আদালত কারাগারে চিকিৎসক নিয়োগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা নিয়ে রুল জারি করেন। সেই সঙ্গে কারাগারের চিকিৎসা ব্যবস্থা, চিকিৎসক নিয়োগসহ কারাগারের সার্বিক অবস্থা নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন।
পরে কারা কর্তৃপক্ষ প্রতিবেদন দিয়ে কারাগারে ২৪ জন চিকিৎসক থাকার কথা জানায়। পরে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি হাইকোর্ট শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগ দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: পুরান ঢাকায় পুকুর দখলে হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা
৪২ ঘন্টার অবিশ্বাস্য তদন্ত; পুলিশ সুপার যোগাযোগ করায় অসন্তোষ হাইকোর্টের
১ বছর আগে