সিডব্লিউইআইসি
প্রথমবারের মতো ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কমনওয়েলথ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম
প্রথমবারের মতো ঢাকায় আগামী ১৩ ও ১৪ সেপ্টেম্বর কমনওয়েলথ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
রবিবার কমনওয়েলথ এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কাউন্সিল (সিডব্লিউইআইসি) এক সংবাদ সম্মেলনে এই ফোরাম অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ঘোষণা করে।
এই ফোরামের আয়োজক কমনওয়েলথ এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কাউন্সিল।
আরও পড়ুন: 'কমনওয়েলথের অভিভাবক' হিসেবে ব্রিটেনের রাজার গুরুত্ব অপরিসীম: মোমেন
আয়োজনে অংশীদার হিসেবে রয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিআইডিএ), পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং জেডআই ফাউন্ডেশন।
রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, যুক্তরাজ্যের হাউস অব লর্ডসের সদস্য এবং সিডব্লিউইআইসি’র ডেপুটি চেয়ারম্যান লর্ড সোয়ার কেসিএমজি, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) লোকমান হোসেন মিয়া এবং বাংলাদেশে সিডব্লিউইআইসি-এর কৌশলগত উপদেষ্টা জিল্লুর হোসেন এমবিই।
বাংলাদেশে এই প্রথমবারের মতো কমনওয়েলথ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম আয়োজিত হতে যাচ্ছে।
পূর্বে ফোরামটি কমনওয়েলথের অন্যান্য সদস্যরাষ্ট্র যেমন- যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, কেনিয়া, রুয়ান্ডা, মাল্টা ইত্যাদিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
কমনওয়েলথ হলো- ৫৬টি দেশ নিয়ে গঠিত একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা, যা অভিন্ন মূল্যবোধ দ্বারা একত্রিত। বিশ্বের জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ কমনওয়েলথের আওতাভুক্ত দেশগুলোয় বাস করে।
১৯৭২ সালে বাংলাদেশ কমনওয়েলথের ৩৪তম সদস্য হিসেবে যোগদান করে।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই কমনওয়েলথ সদস্যদের পারস্পরিক সহযোগিতার স্বপ্ন নিয়ে কমনওয়েলথে যোগ দেন।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীনতাপ্রাপ্ত বাংলাদেশ যখন কমনওয়েলথে যোগদান করে, তখন দেশটি যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতি এবং বিধ্বস্ত অবকাঠামো নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই করছিল। সময়ের সঙ্গে, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক বিভিন্ন সূচকে ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করেছে।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২০২৬ সালে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হচ্ছে। এই জাতির কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে এই অর্জন সম্ভব হয়েছে। পাশাপাশি ছিল কমনওয়েলথ সদস্যদের মতো উন্নয়ন অংশীদারদের সমর্থন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আগামী নির্বাচনের জন্য কমনওয়েলথের পর্যবেক্ষক চান প্রধানমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদারদের মধ্যে রয়েছে কমনওয়েলথ ভুক্ত বেশ কয়েটি দেশ।
যুক্তরাজ্যের হাউস অব লর্ডসের সদস্য এবং কমনওয়েলথ এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কাউন্সিলের ডেপুটি চেয়ারম্যান লর্ড সোয়ার কেসিএমজি বলেন, বাংলাদেশি কোম্পানিগুলির জন্য কমনওয়েলথ ৫৬টি দেশের মধ্যে অপার সম্ভাবনা অন্বেষণ ও তা কাজে লাগানের একটি বিশাল সুযোগ তৈরি করেছে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, কমনওয়েলথকে অবশ্যই এলডিসি, এলএলডিসি, এসআইডিএস এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন দেশগুলির চ্যলেঞ্জ ও ঝুঁকিসমূহ মোকাবিলায় সহায়ক ভূমিকা পালন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী সময়ে জিএসপি সম্পর্কিত বাণিজ্যিক সুবিধার ধারাবাহিকতা বজায় রাখা, বেসরকারি পুঁজির প্রবাহ এবং সবুজ প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সহজ অর্থায়নের মতো ক্ষেত্রগুলিতে গুরুত্ব আরোপ করতে হবে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া কমনওয়েলথ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফোরামের অফিসিয়াল অংশীদার হতে পেরে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত আনন্দিত।
আমাদের জন্য এটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং অপূর্ব সুযোগ। এটা আমাদের অর্জিত অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার স্বীকৃতিস্বরূপ, যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও গতিশীল নেতৃত্বে আমরা অর্জন করেছি।
দেশের শীর্ষ বিনিয়োগ প্রচার সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এই ফোরাম যে সুযোগগুলি তৈরি হবে তার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে সচেষ্ট থাকবে।
বাংলাদেশে ব্যবসা করার সুযোগ অন্বেষণ করতে আগ্রহী এমন বিনিয়োগকারীদের আমরা নির্বিঘ্নে বিনিয়োগ পরিষেবা পৌঁছে দেব।
বাংলাদেশে কমনওয়েলথ এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কাউন্সিল-এর কৌশলগত উপদেষ্টা জিল্লুর হোসেন এমবিই বলেন, কমনওয়েলথ সদস্যদের রাষ্ট্রপ্রধান, রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ এ বছর ঢাকায় কমনওয়েলথ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফোরামে যোগ দেবেন।
সুতরাং, বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সম্পর্কিত বিষয়সমুহ তুলে ধরার জন্য এটি একটি অনন্য প্ল্যাটফর্ম হবে।
এ ফোরমের লক্ষ্য হলো- অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি ও মজবুত করা, উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করা এবং বাংলাদেশের জন্য টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথ অন্বেষণ করা।
আরও পড়ুন: কমনওয়েলথ লিডার্স ইভেন্টে রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে মতবিনিময় প্রধানমন্ত্রীর
১ বছর আগে