এইচএসবিসি
বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে রপ্তানি বৃদ্ধি ও পণ্য বৈচিত্র্যকরণে এফবিসিসিআই ও এইচএসবিসি’র চুক্তি
যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশের বাণিজ্যকে আরও জোরদার করতে একসঙ্গে কাজ করবে ব্যবসায়ীদের র্শীষ সংগঠন দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এবং দি হংকং এন্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন লিমিটেড (এইচএসবিসি)। এ উপলক্ষে সোমবার বিকালে রাজধানীর একটি হোটেলে চুক্তি সই করেছে এফবিসিসিআই ও এইচএসবিসি।
চুক্তির আওতায় যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশের বাণিজ্যিক বাজারভিত্তিক একটি সমীক্ষা পরিচালনা করবে আর্নস্ট এন্ড ইয়ং এবং কে এশিয়া।
এই গবেষণার প্রাথমিক উদ্দেশ্য বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বিদ্যমান বর্তমান দ্বিপক্ষীয় ব্যবসা ও বিনিয়োগের উন্নয়ন। দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্রগুলো খুঁজে বের করার লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ-ইউকে বিজনেস করিডোর: লিগ্যাসি এন্ড দি ফিউচার’- শীর্ষক আয়োজনে এই উদ্যোগের উদ্বোধন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘সমসাময়িক রপ্তানি নীতি ও দ্বিপক্ষীয় সুসর্ম্পকের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে আমাদের ব্যবসার পরিসর ক্রমশই বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশটির সঙ্গে স্থাপিত চুক্তির মাধ্যমে এই সম্পর্ক ভবিষ্যতেও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। এই ধরনের সমীক্ষা পরিচালনার উদ্যোগ গ্রহণে এইচএসবিসি ও এফবিসিসিআইকে আমি ধন্যবাদ জানাই। নিঃসন্দেহে এই সমীক্ষা দুদেশের ব্যবসা ও বিনিয়োগের নতুন নতুন সম্ভাবনাময় সুযোগ উন্মোচন করবে।’
আরও পড়ুন: শিল্প উৎপাদন সচল রাখতে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করুন: এফবিসিসিআই
এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন তার বক্তব্যে বলেন, ‘যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মানুষদের মধ্যে রয়েছে এক চমৎকার আত্মিক সম্পর্ক। যদিও বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাজ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি গন্তব্য। বর্তমানে এই বাণিজ্যিক সম্পর্ক কিছু নির্দিষ্ট পণ্যের ওপর সীমাবদ্ধ। আমি মনে করি, উভয় দেশের নীতিনির্ধারক এবং ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দের এই বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নয়ন ও বৈচিত্রকরণে একসঙ্গে কাজ করা প্রয়োজন। ক্রমবর্ধমান ব্যবসা, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের উন্নয়নে এই সমীক্ষা একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ।’
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ বর্তমানে ৫ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। গত অর্থবছরে রপ্তানি ছিল ৪ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার এবং আমদানি ছিল শূণ্য দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাজ্যে আমাদের রপ্তানি পণ্যগুলোর মধ্যে নিটওয়্যার, বোনা পোশাক, হিমায়িত মাছ, পোশাক ও টেক্সটাইলের মতো কয়েকটি আইটেম উল্লেখ্যযোগ্য। তবে আমাদের রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে এই গবেষণাটি যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় ব্যবসায়িক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কেও ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক সৃষ্টি করবে এবং দু’দেশের বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন তৈরিতে কাজ করবে।’
এইচএসবিসি বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুব উর রহমান তার বক্তব্যে যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশের ব্যবসায়িক সম্পর্কের ঐতিহাসিক গুরুত্বের পাশাপাশি উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য উন্নয়নে এইচএসবিসির সক্ষমতার নতুন মাত্রা তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: সার্ক চেম্বারের সভাপতি হচ্ছেন এফবিসিসিআই সভাপতি
তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাজ্য বাংলাদেশে দ্বিতীয় বৃহত্তম বিনিয়োগকারী এবং তৃতীয় বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য। এই গবেষণা আমাদের নিজস্ব ব্যবসা ও বিনিয়োগ ব্যবস্থায় নতুন সম্ভাবনার সন্ধান পেতে সাহায্য করবে। এই যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা সেইসব সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে পারি এক সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে। আমাদের দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সুসমন্বয় শুধুমাত্র আমাদের অর্থনীতিকেই উপকৃত করে না, বরং একইসঙ্গে একটি সুদীর্ঘ, টেকসই সম্পর্ক গড়তেও সাহায্য করে। আমি এই উদ্যোগে অংশীদারিত্বের জন্য এফবিসিসিআইকে এবং গবেষণায় সাহায্যের জন্য আর্নস্ট এন্ড ইয়ং এবং কে এশিয়াকে ধন্যবাদ জানাই।’
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন এইচএসবিসি এশিয়া প্যাসিফিকের চিফ অব স্টাফ ফিলিপ ফেলোয়েস; এবং অনলাইন যোগাযোগমাধ্যম জুমের সাহায্যে অনুষ্ঠানে নিজ বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম।
অনুষ্ঠানে পিডব্লিউসি বাংলাদেশের কান্ট্রি ক্লায়েন্টস্ অ্যান্ড মার্কেট লিড মামুন রশিদ-এর সঞ্চালনায় ‘আনলকিং নিউ অপরচুনিটিজ ফর বাংলাদেশ অ্যান্ড ইউকে’- শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় মন্তব্য ও মতবিনিময় করেন কে এশিয়া’র ডিরেক্টর ফিলিপ চৌধুরী, নেক্সট সোর্সিং লিমিটেড’র সহযোগী পরিচালক শাহুল স্যালি এবং এশিয়ান টাইগার ক্যাপিটাল’র চেয়ারম্যান ইফতি ইসলাম।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে এফবিসিসিআই এর সহ-সভাপতিগণ, পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, চেম্বার এবং ব্যবসায়ী প্রতিনিধি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: এফবিসিসিআই সভাপতির সঙ্গে লিবিয়ায় সদ্য নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
১ বছর আগে