অপহরণ চক্রে
অপহরণ চক্রের ৯ সদস্য আটক, ৩ রোহিঙ্গা শিশু উদ্ধার ও নিখোঁজ ৬
কাজের প্রলোভন দেখিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গা শিশু অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় ও মানবপাচারকারি চক্রের ৯ সদস্যকে আটক করেছে এপিবিএন।
একই সঙ্গে অপহৃত ৩ রোহিঙ্গা শিশুকেও উদ্ধার করা হয়েছে। আর এখনো নিখোঁজ রয়েছে আরও ৬ শিশু।
এপিবিএন জানিয়েছে, অপহৃতদের উদ্ধার ও চক্রের অন্যান্য সদস্যদের আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
শনিবার (০৮ জুলাই) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উখিয়াস্থ ৮ এপিবিএনের সহকারি পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ।
উদ্ধার রোহিঙ্গা শিশুরা হলো- ক্যাম্প-১৩ এর ইলিয়াসের ছেলে সৈয়দ নুর (১২), একই ক্যাম্পের সোনা মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ হাসান (১৪) ও মো. তাহেরের ছেলে আনিসুর রহমান (১৩)।
আটকরা হলো- নুরুল আমিন (৩২), মো. ফয়সাল (১৮), শফিকুল (১৮), সাইফুল ইসলাম (২২), মিজানুর রহমান (১৮), আব্দুর রহমান (১৭), মোহাম্মদ পারভেজ (১৪)।
আরও পড়ুন: টেকনাফে পাহাড় থেকে অপহরণকারী ও ডাকাতদলের প্রধানসহ গ্রেপ্তার ৬
তারা সবাই টেকনাফের স্থানীয় বাসিন্দা। আর মো. মোবারক (১৭) ও মো. আমিন (১৭)। তারা উখিয়া ক্যাম্পের বাসিন্দা।
আর এখনো হদিস মেলেনি নুর আলম (১৫), সৈয়দুল মোস্তফা (১১), ওসমান (১৩), রিমন (১৫), কামাল মোস্তফা (১৪) ও হারেছ (১২)।
উখিয়াস্থ ৮ এপিবিএনের সহকারি পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ বলেন, গত ২ জুলাই বেলা ১১টার দিকে একটি অপরাধী চক্র টেকনাফে সুপারি পাড়া ও গাড়িতে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে ক্যাম্প-১৩ থেকে মোহাম্মদ হাসান (১৪), আনিসুর রহমান (১৩ ও নুর আলম (১৫) কের অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়।
তাদেরকে আটকে রেখে তাদের স্বজনদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করা হয়। এরপর গত ৬ জুলাই বেলা ১২টার দিকে একই অপরাধী চক্র একই কায়দায় ক্যাম্প-১৩ ও আশপাশের এলাকা থেকে সৈয়দ নূর (১২), সৈয়দুল মোস্তফা (১১), ওসমান (১৩), রিমন (১৫), কামাল মোস্তফা (১৪) ও হারেছ (১২) কে অপহরণ করে টেকনাফ নিয়ে যায়।
মো. ফারুক আহমেদ বলেন, অপহরণের বিষয়টি অবগত হওয়ার পর ৮ এপিবিএন বিভিন্ন উৎস ও স্থান গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে বের করা হয়।
এরপর শুক্রবার অভিযান চালিয়ে টেকনাফের দক্ষিণ লম্বরি পাড়া দুর্গম স্থানের সুপারি বাগানের ভেতর থেকে অপহৃত রোহিঙ্গা ৩ শিশুকে উদ্ধার করা হয়।
একইসঙ্গে উখিয়ার কুতুপালং এবং টেকনাফ থানাধীন দক্ষিণ লম্বরি এলাকার বিভিন্ন দুর্গম স্থানে অভিযান চালিয়ে এই অপহরণ চক্রের ৯ সদস্যকে আটক করা হয়।
এই ৯ জনের স্থানীয় বাসিন্দা ৭ জন ও রোহিঙ্গা রয়েছে ২ জন।
আরও পড়ুন: অপহরণ করে ঢাকা কলেজের হলে বন্দি, দুই ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার
জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, এ চক্রের সদস্যরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা হতে সুপারির কাজ/অন্য কোন কাজের প্রলোভনে টেকনাফ এলাকায় বিশেষ করে দক্ষিণ লম্বরি এলাকায় সুপারি বাগানের ভিতরে নির্জন স্থানে বিশেষ কৌশলে আটক রাখে। অত:পর ভিকটিমদের চোরাপথে নৌকাযোগে মিয়ানমারের শামিলা এলাকায় পাঠিয়ে আটক রাখে।
তারপর অপহৃতদের স্বজনদের কাছে বড় অঙ্কের টাকা আদায় করে মুক্তি দেয়। অনেক সময় এই অপরাধ প্রক্রিয়ার বিভিন্ন ধাপে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাও ঘটে।
আটকদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ ও আরও তদন্তের মাধ্যমে অপহৃত অন্যান্য ভিকটিমদের উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলেও জানায় এপিবিএন কর্মকর্তা মো. ফারুক আহমেদ।
আরও পড়ুন: রাঙামাটিতে অপহরণের দুইদিন পর ৩ শ্রমিক উদ্ধার
১ বছর আগে