জার্মান ভাষা
জার্মানির আউসবিল্ডুং: যোগ্যতা, সুযোগ-সুবিধা ও আবেদন পদ্ধতি
উদ্ভাবন এবং স্থায়িত্বের দিক থেকে ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) প্রসিদ্ধ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে অন্যতম জার্মানি। পরিবেশবান্ধব, তথ্য-প্রযুক্তি এবং উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করণে ক্রমশ এগিয়ে চলেছে শেনজেন ভুক্ত দেশটি। ফলে বিস্তৃত পরিসরে চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে দক্ষ জনগোষ্ঠীর। এখানে যোগ্যতার ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে শাস্ত্রীয় জ্ঞান এবং হাতে-কলমে কাজের অভিজ্ঞতাকে। শুধু তাই নয়, এই কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা রয়েছে দেশটিতে। তেমনি একটি ভোকেশনাল প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার নাম আউসবিল্ডুং। এই সুযোগ গ্রহণে আন্তর্জাতিক চাকরিপ্রার্থীদের সাদরে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে ইউরোপীয় দেশটি। চলুন, আউসবিল্ডুং-এ আবেদনের যোগ্যতা, সুযোগ-সুবিধা, আবেদন ও ভিসা প্রক্রিয়ার ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
জার্মানির আউসবিল্ডুং কী
তত্ত্বীয় ও ব্যবহারিক জ্ঞান সমৃদ্ধ জার্মানির ভোকেশনাল প্রশিক্ষণ কর্মসূচির নাম আউসবিল্ডুং। শিক্ষা ব্যবস্থায় তরুণ শিক্ষককেরা একই সঙ্গে স্কুলের ক্লাসরুম পাঠ্যক্রম এবং কর্পোরেট পরিবেশ দুই অভিজ্ঞতারই সম্মুখীন হন। এর নেপথ্যে যৌথভাবে কাজ করে দেশটির সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো।
হাতে-কলমে এই প্রশিক্ষণের সময়কাল সাধারণত কমপক্ষে ২ থেকে সর্বোচ্চ ৪ বছর পর্যন্ত। প্রার্থীরা নিজেদের দক্ষতা ও পছন্দ অনুযায়ী নির্দিষ্ট বিষয় নির্বাচন করতে পারেন। শুধুমাত্র জার্মান ভাষায় পাঠদান করা এই প্রোগ্রামে বিদেশি নাগরিকরা জার্মানদের মতো একই সুযোগ-সুবিধাসহ একটি নির্দিষ্ট জার্মান কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। এই চুক্তির জন্য বিদেশি প্রার্থীরা জার্মানির বাইরে থেকে ট্রেনিং কোম্পানি ঠিক করে আসতে পারেন অথবা জার্মানিতে এসেও কোম্পানির খোঁজ করতে পারেন।
আরো পড়ুন: জার্মান অপরচুনিটি কার্ড: বাংলাদেশ থেকে আবেদন পদ্ধতি ও বিস্তারিত
জার্মানির আউসবিল্ডুং কাদের জন্য
বয়স, একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড এবং দেশ নির্বিশেষে যেকোনো ব্যক্তি আউসবিল্ডুং-এ অংশ নিতে পারেন। তবে যারা জার্মানিতে গিয়ে ট্রেনিংয়ের জন্য কোম্পানি খুঁজতে চান তাদের অবশ্যই অনূর্ধ্ব ৩৫ বছর বয়সি হতে হবে। জার্মানির বাইরে থেকে যারা কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে আসবেন, তাদের ক্ষেত্রে বয়সের এই বাধ্যবাধকতা নেই।
তবে এই প্রোগ্রামে নিবন্ধিত হওয়ার প্রধান শর্ত হচ্ছে জার্মান ভাষা দক্ষতা। সিইএফআর (কমন ইউরোপীয়ান ফ্রেমওয়ার্ক অব রেফারেন্স) অনুযায়ী ন্যূনতম যোগ্যতা লেভেল বি১।
দ্বিতীয়ত, যারা একাডেমিক শিক্ষাক্ষেত্রে কমপক্ষে ৯ বা ১০ বছর অতিবাহিত করেছে, তারা এই প্রোগ্রামে নিবন্ধিত হতে পারবে। এক্ষেত্রে তাদের সনদপত্র বা মার্কশিটগুলো অবশ্যই জার্মান একাডেমিক যোগ্যতার সমতূল্য হতে হবে। এর জন্য জেডএবি (সেন্ট্রাল অফিস ফর ফরেন এডুকেশন) (https://zab.kmk.org/en/app/zeugnisbewertung) থেকে শংসাপত্রগুলোর মূল্যায়ন বা তুলনামূলক বিবৃতি নিতে হবে।
আরো পড়ুন: কীভাবে আইইএলটিএস পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করবেন?
জার্মানির আউসবিল্ডুংয়ের সুবিধা
এই দ্বৈত শিক্ষাপদ্ধতিতে প্রশিক্ষণার্থীরা নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান থেকে মাসিক ভাতা পান। এর পরিমাণ সাধারণত প্রতি মাসে ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ ইউরো বা ১ লাখ ৫ হাজার ৪১৬ থেকে ১ লাখ ৫৮ হাজার ১২৫ টাকার (১ ইউরো = ১৩১ দশমিক ৭৭ টাকা) মতো। এর কমবেশি হওয়াটা নির্ভর করে মূলত নিয়োগকর্তা, কোম্পানির শহর এবং প্রশিক্ষণের বিষয়ের ওপর। নিয়োগকর্তারা অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রার্থীদের বাসা ভাড়া বাবদ আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে।
জার্মানির বাইরে থেকে কোম্পানি ঠিক করা অথবা জার্মানিতে পৌঁছে ট্রেনিং কোম্পানি খোঁজা; উভয় ক্ষেত্রে প্রতি সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত পৃথক খণ্ডকালীন চাকরি করার সুযোগ রয়েছে। এমনকি সর্বোচ্চ ২ সপ্তাহ পর্যন্ত ট্রায়াল জবও করা যাবে।
আর কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে আসার পর পুরো ট্রেনিং প্রোগ্রামের সময়কালের জন্য দেওয়া হবে রেসিডেন্ট পারমিট।
এর বাইরে অতিরিক্ত উপযোগিতা হিসেবে রয়েছে ভোকেশনাল প্রশিক্ষণ শেষে চাকরির সম্ভাবনা। প্রশিক্ষণ সফলভাবে শেষ করার পর সংশ্লিষ্ট কোর্সের ওপর ভিত্তি প্রায় ২ হাজার ৪০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ ইউরোর (৩ লাখ ১৬ হাজার ২৪৯ থেকে ৪ লাখ ৬১ হাজার ১৯৭ টাকা) মাসিক বেতনের কাজ পাওয়া যেতে পারে। এগুলোর মধ্যে তালিকার শীর্ষে রয়েছে স্বাস্থ্যসেবা, বিশেষত নার্সিং পেশা। তথ্য ও প্রযুক্তির ক্রমশ অগ্রসর হওয়ায় উচ্চ চাহিদা রয়েছে দক্ষ আইটি (ইনফরমেশন টেকনোলজি) পেশাদারদের। সবচেয়ে আকর্ষণীয় পেশা হচ্ছে নেটওয়ার্ক অ্যাডমিনিস্ট্রেটর এবং সফ্টওয়্যার ডেভেলপার। এছাড়াও যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে ইলেক্ট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল এবং অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জার্মানির নবায়নযোগ্য শক্তির ক্ষাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাওয়ায় এর স্থাপন, রক্ষণাবেক্ষণ এবং বিকাশের জন্য শত শত দক্ষ কর্মীর চাহিদা বাড়ছে। এই জনগোষ্ঠীর একটা বিরাট অংশের যোগান দাতা হিসেবে প্রতীয়মান হয়েছে এই আউসবিল্ডুং।
তাছাড়া প্রোগ্রামের পরীক্ষাগুলোতে সাফল্যের সঙ্গে কৃতকার্য হওয়ায় পর প্রশিক্ষণের কোম্পানিতেই থাকছে কাজ চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ। এমনকি উচ্চশিক্ষায় আগ্রহীরা এই ফলাফল নিয়ে জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তি হতে পারবেন।
সর্বসাকূল্যে, এই কার্যক্রমে অংশ গ্রহণের মধ্য দিয়ে সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ মেয়াদে একটি উচ্চ মান সম্পন্ন জীবনযাত্রার দেশে বৈধভাবে বসবাসের সম্ভাবনা।
আরো পড়ুন: তুলনামূলক কম দামে বিমানের টিকিট কেনার কৌশল
জার্মানির আউসবিল্ডুং-এ আবেদন পদ্ধতি
এই ভোকেশনাল প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশি নাগরিকরা প্রধাণত দুই ভাবে আবেদন করতে পারেন।
এক, বাংলাদেশে থেকেই আউসবিল্ডুংয়ের জন্য জার্মান কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়া। অতঃপর ট্রেনিং-এ অংশগ্রহণের জন্য এন্ট্রি ভিসায় আবেদন করা।
দুই, জার্মানিতে পৌঁছে ভোকেশনাল ট্রেনিং কোম্পানি খোঁজার জন্য নির্ধারিত এন্ট্রি ভিসায় আবেদন করা।
বাংলাদেশ থেকে আউসবিল্ডুংয়ের জন্য জার্মান কোম্পানি খোঁজার উপায়
জার্মানিতে আন্তর্জাতিক চাকরিপ্রার্থীদের জন্য বিভিন্ন ধরণের জব পোর্টাল রয়েছে। এগুলোতে প্রশিক্ষণের জন্য আবেদন করা যায়। এই সাইটগুলোর অধিকাংশই জার্মান ভাষার।
যেমন-
• সরকারি জব প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যে রয়েছে-
• ফেডারেল এম্প্লয়মেন্ট এজেন্সির জব সাইট (https://www.arbeitsagentur.de/jobsuche/)
• সিভিল সার্ভিসের জন্য,
• https://www.service.bund.de/Content/DE/Stellen/Suche/Formular.html
• https://karriere.bund.de/
• সাধারণ জব সাইট:
(https://www.make-it-in-germany.com/en/working-in-germany/job-listings)
• আঞ্চলিক সরকারি পোর্টাল:
(https://www.thaff-thueringen.de/thueringer-stellenboerse/stellenboerse)
বেসরকারি জব পোর্টাল
স্টেপস্টোন (https://www.stepstone.de/en/)
• মনস্টার (Monster.de)
• এছাড়াও সরাসরি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যেয়েও আবেদন করা যেতে পারে। যেমন-
• জার্মান রেলওয়ে কোম্পানি ডয়েচে বাহ্ন:
(https://jobs.deutschebahngroup.careers/en_US/jobsGlobal/SearchJobs)
• আলডি নর্থ অ্যান্ড সাউথ:
• https://www.aldi-nord.de/karriere/
• https://karriere.aldi-sued.de/
• রিটেইল টেইন কোম্পানি লিড্ল (https://jobs.lidl.de/)
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনের মধ্যে রয়েছে-
• ওয়ার্কার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন:
(https://www.awo-mittelrhein.de/en/awo/careers-portal/vacancies-and-job-offers/)
• ডায়াকোনি: (https://www.diakonie.at/jobplattform/offene-stellen)
এছাড়াও এই সাইটগুলোর নিউজলেটারে সাবস্ক্রাইব করে রাখা যেতে পারে। এতে করে বিভিন্ন সময়ে স্বনামধন্য কোম্পানিগুলোর নতুন জব পোস্টগুলো সম্পর্কে জানা যাবে।
আরো পড়ুন: জার্মানিতে স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
আউসবিল্ডুং-এর জন্য আবেদনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
• ইউরোপাস ফর্ম্যাট (https://europass.europa.eu/en/create-europass-cv) অনুযায়ী টেবিল আকারে সিভি (একাডেমিক শিক্ষাগ্রহণ বা চাকরি করার সময়গুলোতে মাঝে দীর্ঘকালীন কোনো বিরতি থাকা যাবে না। যদি এক মাসের বেশি সময় ধরে চাকরি না করা হয়, তাহলে তার স্বপক্ষে উপযুক্ত কারণ উল্লেখ করতে হবে।)
• এক পৃষ্ঠার কভার লেটার বা মোটিভেশন লেটার: যোগাযোগ ও দক্ষতার তথ্যসহ প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা সংক্ষেপে উল্লেখ করতে হবে
• পূর্ববর্তী কর্মসংস্থান থেকে কাজের রেফারেন্স বা পূর্ববর্তী নিয়োগকর্তাদের নিকট থেকে সুপারিশের চিঠি কিংবা নিদেনপক্ষে পূর্ববর্তী নিয়োগকর্তাদের যোগাযোগের তথ্য (কোম্পানির নাম, ফোন নাম্বার, ই-মেইল ঠিকানা ও প্রার্থীর পদবি)
• মাধ্যমিক পরীক্ষার সার্টিফিকেট এবং মার্কশিট: সংযুক্তিতে থাকবে জেডএবি থেকে মূল্যায়ন বা তুলনামূলক বিবৃতি (এই নথিপত্র যদি বাংলা ভাষায় থাকে তবে সেগুলোর জার্মান বা ইংরেজি যেকোনো ভাষায় প্রত্যয়িত অনূদিত সংস্করণ জমা দিতে হবে)
• জার্মান ভাষা দক্ষতার প্রমাণ (সিইএফআর অনুযায়ী ন্যূনতম বি১)
• সম্পূর্ণ পূরণকৃত তথ্য সুরক্ষা ঘোষণা ফর্ম
আরো পড়ুন: ডুওলিঙ্গো ইংলিশ টেস্ট কী? কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন?
নিয়োগ প্রক্রিয়ার সময়কাল
আবেদনসহ যাবতীয় নথি পাঠানোর পর অন্তত এক সপ্তাহের মধ্যে কোম্পানির পক্ষ থেকে ই-মেইলের মাধ্যমে অনলাইন সাক্ষাৎকারের দিনক্ষণ জানানো হবে।
আবেদনের কাগজপত্র যাচাই এবং সাক্ষাৎকারের পর চূড়ান্ত নিয়োগের সিদ্ধান্ত আসতে কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। এর মাঝে ১ থেকে ২ সপ্তাহ অপেক্ষা করে আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা বা পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে ই-মেইল ফলোআপ করা যেতে পারে।
আউসবিল্ডুং-এর জন্য ভিসার আবেদন
দীর্ঘকালীন এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের জন্য জার্মানির যে ভিসাটি পেতে হবে তা হচ্ছে দীর্ঘ মেয়াদী টাইপ-ডি বা ন্যাশনাল ভিসা। ট্রেনিংয়ের জন্য কোম্পানি ঠিক করা হোক বা না হোক; উভয় ক্ষেত্রেই এই ভিসায় আবেদন করতে হবে। এই এন্ট্রি ভিসার মেয়াদ ৯০ দিন থেকে সর্বোচ্চ ১ বছর পর্যন্ত থাকে। তাই জার্মানিতে পৌঁছে কোম্পানি খোঁজার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৯ মাস পাওয়া যাবে।
জার্মানির আবেদন পোর্টাল ভিআইডিইএক্সয়ের টাইপ-ডি ভিসার আবেদন ফর্মের লিঙ্ক: https://videx-national.diplo.de/videx। এটি পূরণের পর তা প্রিন্ট করে আবেদনকারী তা নিজে সই করবেন।
আরো পড়ুন: জার্মানিতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর পড়ার জন্য কিভাবে আবেদন করবেন
আউসবিল্ডুং ভিসার আবেদনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
• আবেদনকারীর সইকৃত এবং সম্পূর্ণরূপে পূরণকৃত আবেদন ফর্ম
• জার্মানিতে পৌঁছার দিন থেকে পরবর্তী কমপক্ষে ১২ মাসের মেয়াদ সম্পন্ন বৈধ পাসপোর্ট: বিগত ১০ বছরের মধ্যে ইস্যুকৃত হতে হবে এবং তাতে ভিসার সীল যুক্ত করার জন্য কমপক্ষে ২টি খালি পৃষ্ঠা থাকতে হবে)
• সদ্য তোলা ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি (বিগত ৬ মাসের বেশি পুরাতন হওয়া যাবে না)
• প্রদানকৃত তথ্যের সুরক্ষার্থে সই করা সম্মতির ঘোষণাপত্র:
(https://dhaka.diplo.de/bd-en/service/visa-einreise/-/2669542)
• স্বাস্থ্য বিমা: (ভিসা সংগ্রহের সময় এই প্রমাণ দেখাতে হবে) প্রশিক্ষণের সম্পূর্ণ সময়কালের জন্য ন্যূনতম ৩০ হাজার ইউরো (৩৯ লাখ ৫৩ হাজার ১১৭ টাকা)
• অথবা, একটি সরকারি জার্মান স্বাস্থ্য বিমার প্রমাণ: জার্মান স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর পক্ষ থেকে একটি চিঠি এবং সঙ্গে প্রথম ৩ সপ্তাহের একটি স্বাস্থ্য ও ভ্রমণ বিমা
• পূর্ণ ঠিকানাসহ জার্মানিতে বাসস্থানের প্রমাণ: (কোনো পরিবারের সঙ্গে থাকা হলে তাদের পক্ষ থেকে লিখিত আমন্ত্রণপত্র, অথবা হোটেল বুকিং)
আরো পড়ুন: বাংলাদেশে থেকে জার্মান ভাষার আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেট পাওয়ার উপায়
ভোকেশনাল ট্রেনিং-এ যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত যে কাগজগুলো প্রয়োজন হবে
• জার্মানিতে একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অধীনে প্রশিক্ষণের চুক্তিপত্র
• আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণ: প্রতি মাসে কমপক্ষে ৯০৩ ইউরো (১ লাখ ১৮ হাজার ৯৮৯ টাকা)। অন্তত প্রথম বছরের তহবিলের (১০ হাজার ৮৩৬ ইউরো বা ১৪ লাখ ২৭ হাজার ৮৬৬ টাকা) ব্লক অ্যাকাউন্ট। কোম্পানিরে পক্ষ থেকে প্রাপ্ত ভাতা প্রমাণ হিসেবে দেখানো যাবে। তবে তা অপর্যাপ্ত হলে বাকি অর্থ ব্লক অ্যাকাউন্টে দেখাতে হবে।
ভোকেশনাল ট্রেনিং কোম্পানি খোঁজার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত যে নথি সংযুক্ত করতে হবে
• মাধ্যমিক পরীক্ষার সার্টিফিকেট এবং মার্কশিট: শংসাপত্র জার্মানি মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা কর্তৃক স্বীকৃত কিনা তার জন্য জেডএবি থেকে তুলনামূলক বিবৃতি
• বয়সসীমা: সর্বোচ্চ ৩৫ বছর
• জার্মানিতে জীবনযাত্রার খরচ ও রিটার্ন ফ্লাইটের পর্যাপ্ত তহবিল: জীবনযাত্রার খরচ বাবদ মাসে কমপক্ষে ১ হাজার ২৭ ইউরো (১ লাখ ৩৫ হাজার ৩২৮ টাকা) করে অন্তত প্রথম বছরের জন্য ১২ হাজার ৩২৪ ইউরো (১৬ লাখ ২৩ হাজার ৯৪১ টাকা)
আরো পড়ুন: ইতালিতে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিং এবং ইন্টারভিউ
জার্মান দূতাবাসের ওয়েবসাইটে (https://dhaka.diplo.de/bd-en/service/kontakt-formular) যোগাযোগের মাধ্যমে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে।
এখানে প্রথম ই-মেইলের ফিরতি ই-মেইল হিসেবে সব নথি জমা দিতে বলা হবে। অতঃপর পরবর্তীতে আরও একটি ই-মেইলের মাধ্যমে সাক্ষাৎকারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেওয়া হবে। অ্যাপয়েন্টমেন্টের দিন ভিসার সবগুলো কাগজপত্রের হার্ড কপি সাথে নিয়ে যেতে হবে।
জার্মান দূতাবাসের ঠিকানা: ফেডারেল রিপাবলিক অব জার্মানির দূতাবাস, ১১ মাদানী এভিনিউ, বারিধারা ডিপ্লোম্যাটিক ইনক্লেভ, ঢাকা-১২১২।
ভিসা ফি এবং ভিসাপ্রাপ্তির সময়
আউসবিল্ডুংয়ের জন্য ভিসা প্রক্রিয়াকরণ খরচ ৭৫ ইউরো (৯ হাজার ৮৮৩ টাকা)। মূলত দেশ থেকে জার্মান কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলে এই ধরণের এন্ট্রি ভিসার কাজ খুব দ্রুত হয়ে যায়। সাধারণত এক সপ্তাহ থেকে সর্বোচ্চ ১৫ দিন লাগতে পারে।
আরো পড়ুন: থাইল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, পড়াশোনার খরচ, ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
জার্মানিতে পৌঁছে চূড়ান্ত রেসিডেন্ট পারমিট সংগ্রহ
এন্ট্রি ভিসা নিয়ে জার্মানি পৌঁছে প্রথম কাজ হচ্ছে রেসিডেন্স রেজিস্ট্রেশন অফিসে যেয়ে জার্মানিতে প্রার্থীর বাড়ির ঠিকানা নিবন্ধন করা। তারপর স্থানীয় ভিসা অফিসে রেসিডেন্ট পারমিটের আবেদনের জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে। এটিই সেই পারমিট, যার মাধ্যমে আউসবিল্ডুংয়ের পুরো সময়টাতে জার্মানিতে থাকার অনুমতি পাওয়া যাবে।
ভোকেশনাল ট্রেনিংয়ের সঙ্গে আগে থেকে চুক্তি না করে জার্মানি এলে বাড়ির ঠিকানা নিবন্ধনের পরপরই শুরু করে দিতে হবে কোম্পানি খোঁজা। কেননা রেসিডেন্ট পারমিট আবেদনের প্রথম শর্তই হচ্ছে আউসবিল্ডুংয়ের চুক্তিপত্র।
এন্ট্রি ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই রেসিডেন্ট পারমিট নেওয়া অপরিহার্য। এই পারমিট সংগ্রহের জন্য খরচ হতে পারে ১০০ ইউরো (১৩ হাজার ১৭৭ টাকা)।
শেষাংশ
জার্মানির আউসবিল্ডুং বা ভোকেশনাল প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা তত্ত্বীয় জ্ঞান ও হাতে-কলমে শিক্ষার এক কার্যকর সমন্বয়। বাংলাদেশের দক্ষ কর্মীদের মানোন্নয়নের জন্য তো বটেই, অদক্ষ নাগরিকদের জন্যও এটি এক যুগান্তকারি সম্ভাবনা। প্রশিক্ষণের পাশাপাশি পারিশ্রমিক লাভের এই সুযোগ অর্জন করার প্রথম শর্ত হলো জার্মান ভাষা শিক্ষা। বাকি থাকে জার্মান কোম্পানির কাছ থেকে প্রশিক্ষণের চুক্তিপত্র গ্রহণ। বাংলাদেশে থাকা অবস্থাতেই এটি সম্ভব হলে ভিসাসহ পুরো প্রক্রিয়া আরও সহজ হয়ে যায়। বিশেষ করে জার্মানিতে পৌঁছে কোম্পানি খোঁজার বিড়ম্বনা থাকে না।
আরো পড়ুন: সুইজারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
১ মাস আগে
জার্মান অপরচুনিটি কার্ড: বাংলাদেশ থেকে আবেদন পদ্ধতি ও বিস্তারিত
ইউরোপের যে রাষ্ট্রগুলো কর্মজীবন ও অবকাশ যাপনের মধ্যে ভারসাম্য রেখে চলেছে, সেগুলোর মধ্যে প্রথম সারির দেশ জার্মানি। দেশটির কর্মজীবীদের ন্যূনতম পারিশ্রমিক হার যে কোনো ইউরোপীয় দেশের তুলনায় যথেষ্ট বেশি। শেনজেনভুক্ত দেশটির কর্মচারীদের সাপ্তাহিক গড় কর্মঘণ্টার সংখ্যা গোটা ইউরোপের গড় কর্মঘণ্টার থেকে কম। সঙ্গত কারণেই ইইউ (ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন) সদস্য রাষ্ট্রটিতে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য রয়েছে অপার সম্ভাবনা। সম্প্রতি তাদের অপরচুনিটি কার্ডের প্রণয়ন এই সুযোগকে একটি নিয়মতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রূপ দিয়েছে। চলুন, জার্মান অপরচুনিটি কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা, সুবিধা ও আবেদন পদ্ধতি বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
জার্মান অপরচুনিটি কার্ড কি
ইইউ, ইইএ (ইউরোপীয়ান ইকোনমিক এরিয়া) কিংবা সুইজারল্যান্ডের বাইরের দেশগুলোর দক্ষ কর্মীদের জন্য চাকরির উদ্দেশ্যে জার্মানিতে প্রবেশের অনুমতি হলো অপরচুনিটি কার্ড। এটি মূলত একটি রেসিডেন্ট পার্মিট, যার মেয়াদ থাকে সর্বোচ্চ ১ বছর এবং এই সময়ের মধ্যেই কার্ডধারীকে চাকরির ব্যবস্থা করতে হয়। স্বভাবতই কার্ডটি সংগ্রহের জন্য প্রার্থীকে সংশ্লিষ্ট কর্মসংস্থানের যোগ্যতা স্বরূপ যথাযথ প্রমাণ পেশ করতে হয়।
আরো পড়ুন: কীভাবে আইইএলটিএস পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করবেন?
জার্মান অপরচুনিটি কার্ড কাদের জন্য
ইইউ, ইইএ বা সুইজারল্যান্ডের বাইরের দেশগুলোর প্রধানত দুই ধরনের নাগরিকদের এই কার্ড সরবরাহ করা হয়।
১/ সম্পূর্ণ জার্মানি স্বীকৃত পেশাগত বা শিক্ষাগত যোগ্যতার অধিকারী:
যাদের পেশাগত দক্ষতার প্রমাণ করতে পারে এমন জার্মানি স্বীকৃত কোনো শিক্ষাগত বা পেশাগত সনদ রয়েছে। এই যোগ্যতা অর্জন নিজ দেশে জার্মানি স্বীকৃত কোনো প্রতিষ্ঠান অথবা জার্মানিতে অবস্থিত কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে হতে পারে
২/ যারা এখনও নির্দিষ্ট কোনো দক্ষতায় প্রতিষ্ঠিত কর্মী নন, তবে নিম্নোক্ত শর্তগুলো পূরণ করেছেন-
· জার্মানির কোনো বিশ্ববিদ্যালয় অথবা নিজ দেশে জার্মানি স্বীকৃত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একাডেমিক ডিগ্রি অর্জন
· জার্মানির কোনো প্রতিষ্ঠান অথবা নিজ দেশে জার্মানি স্বীকৃত কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে কমপক্ষে ২ বছরের ভোকেশনাল ট্রেনিং নেওয়া
· কমন ইউরোপিয়ান ফ্রেমওয়ার্ক অব রেফারেন্স ফর ল্যাঙ্গুয়েজেস বা সিইএফআর অনুসারে কমপক্ষে লেভেল-এ১ জার্মান ভাষা দক্ষতা বা কমপক্ষে লেভেল-বি২ ইংরেজি ভাষা দক্ষতা। আইইএলটিএস স্কোর ৫ দশমিক ৫ থেকে ৬ দশমিক ৫, আর টোফেল আইবিটি-তে ৭২ থেকে ৯৪ সিইএফআর লেভেল বি২ এর সমতুল্য।
আরো পড়ুন: তুলনামূলক কম দামে বিমানের টিকিট কেনার কৌশল
জার্মান অপরচুনিটি কার্ডের পয়েন্ট সিস্টেম
২য় ক্যাটাগরির শর্তগুলো সুক্ষ্মভাবে যাচাইয়ের জন্য সেগুলোতে নির্দিষ্ট কিছু পয়েন্ট আরোপ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে যারা ন্যূনতম ছয় পয়েন্ট অর্জন করতে পারে তাদের কার্ড পাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। মানদণ্ডগুলোতে পয়েন্ট বণ্টন পদ্ধতি নিম্নরূপ-
যোগ্যতার সমতা: (৪ পয়েন্ট)
সম্পন্নকৃত ডিগ্রি বা ট্রেনিং আংশিকভাবে সমতুল্য প্রমাণিত হলে ৪ পয়েন্ট যুক্ত হবে। যে দক্ষতাগুলো চূড়ান্তভাবে অনুশীলনের জন্য লাইসেন্স নিতে হয়, সেগুলোর লাইসেন্স হওয়ার আগেও ৪ পয়েন্ট পাওয়া যাবে। তবে রেসিডেন্ট পার্মিটের আগে অবশ্যই লাইসেন্স পরীক্ষা উত্তীর্ণ হতে হবে।
সর্বাধিক চাহিদা সম্পন্ন পেশার যোগ্যতা: (১ পয়েন্ট)
জার্মানির চাকরির বাজারে যে ডিগ্রি বা ভোকেশনাল ট্রেনিংগুলোর সর্বাধিক চাহিদা রয়েছে সেগুলোর জন্য নির্ধারিত ১ পয়েন্ট। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- মাইনিং ম্যানেজার, হেল্থ সার্ভিস ম্যানেজার, কেমিস্ট, সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, গ্রাফিক এবং মাল্টিমিডিয়া ডিজাইনার এবং সফটওয়্যার ডেভেলপার।
জার্মানিতে সর্বাধিক চাহিদা সম্পন্ন পেশাগুলোর পূর্ণ তালিকা এই লিংকে পাওয়া যাবে-
https://www.make-it-in-germany.com/fileadmin/1_Rebrush_2022/a_Fachkraefte/PDF-Dateien/3_Visum_u_Aufenthalt/2024_Mangelberufe_EN.pdf
পেশাগত অভিজ্ঞতা: (২ থেকে ৩ পয়েন্ট)
স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর তার প্রাসঙ্গিক পেশায় বিগত সর্বোচ্চ ৫ বছরের মধ্যে কমপক্ষে ২ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলে প্রার্থী ২ পয়েন্ট পাবেন। আর বিগত সর্বোচ্চ ৭ বছরের মধ্যে কমপক্ষে ৫ বছরের অভিজ্ঞতার জন্য দেওয়া হবে ৩ পয়েন্ট পাবেন।
ভাষা দক্ষতা: (১ থেকে ৪ পয়েন্ট)
জার্মান ভাষা পারদর্শিতার জন্য সিইএফআর অনুযায়ী এ২ লেভেলের জন্য রয়েছে ১ পয়েন্ট। লেভেল বি১-এ ২ এবং লেভেল বি২ বা তার উপরের স্তরের জন্য নির্ধারিত ৩ পয়েন্ট। এর সঙ্গে অতিরিক্ত ১ পয়েন্ট যোগ হবে যদি ইংরেজি ভাষা দক্ষতা লেভেল সি১ বা তার উপরে থাকে, অথবা প্রার্থী যদি নেটিভ স্পিকার হন।
বয়স: (১ থেকে ২ পয়েন্ট)
অনুর্ধ্ব ৩৫ বছর বয়সি প্রার্থীদের জন্য থাকবে ২ পয়েন্ট। ৩৫ থেকে ৪০ বছর বয়সিরা পাবেন ১ পয়েন্ট।
জার্মানিতে বসবাসের রেকর্ড: (১ পয়েন্ট)
বিগত সর্বোচ্চ ৫ বছরের মধ্যে অন্তত ৬ মাস ধরে জার্মানিতে বৈধভাবে বসবাস করলে তার জন্য ১ পয়েন্ট যুক্ত হবে। এই বসবাস বেড়ানো, অধ্যয়ন, কিংবা কাজ যে কোনো উদ্দেশ্যে হতে পারে।
স্বামী বা স্ত্রীর দক্ষ কর্মী হওয়া: (১ পয়েন্ট)
আবেদনকারী দম্পতির যে কোনো একজন অপরচুনিটি কার্ডের শর্ত পূরণ করলে অন্যজন ১ পয়েন্ট পাবেন।
চূড়ান্ত ভাবে আবেদন প্রস্তুতি শুরুর পূর্বে আবেদনের যোগ্যতা নিচের লিংকে যেয়ে যাচাই করে নেওয়া যেতে পারে-
https://www.make-it-in-germany.com/en/visa-residence/self-check-opportunity-card#c52628
আরো পড়ুন: জার্মানিতে স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
জার্মান অপরচুনিটি কার্ডের সুবিধাগুলো
এই কার্ডের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে সর্বোচ্চ ১ বছরের জন্য জার্মানিতে কাজ খোঁজার অনুমতি দেওয়া হয়। ১ বছর পর জার্মানিতে থাকা অবস্থায় কার্ডের মেয়াদ ২ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর জন্য আবেদন করা যায়। এখানে কার্ডধারীরা চাকরি বা স্ব-নিযুক্ত হওয়ার জন্য চেষ্টা করতে পারেন।
এই পার্মিটের মাধ্যমে সপ্তাহে সর্বমোট ২০ ঘণ্টা এক বা একাধিক খণ্ডকালীন চাকরি করা যায়। চাকরি অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে কার্ডধারীরা প্রতি কোম্পানিতে সর্বোচ্চ ২ সপ্তাহের জন্য জব ট্রায়াল করতে পারবেন।
১ মাস আগে
বাংলাদেশে থেকে জার্মান ভাষার আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেট পাওয়ার উপায়
জার্মান ভাষা শিক্ষা নিঃসন্দেহে উচ্চশিক্ষা এবং পেশাগত সমৃদ্ধির জন্য একটি নতুন দিগন্তের উন্মোচন করতে পারে। এর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, অর্থনীতি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রভাবশালী অবস্থানের কারণে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে জার্মানি।
বিখ্যাত জার্মান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি অর্জন অথবা সেখানকার কোনো স্বনামধন্য কোম্পানিতে চাকরি- লক্ষ্য যাই হোক না কেন, তার জন্য প্রথমেই প্রয়োজন জার্মান ভাষায় দক্ষতা অর্জন।
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর এই অর্জনে অভাবনীয়ভাবে নিজেদের স্বাক্ষর রাখছেন। যারা তাদের সারিতে নিজেদের যুক্ত করতে চাইছেন, তাদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে এই নির্দেশিকা নিবন্ধটি।
এটি বাংলাদেশ থেকে জার্মান ভাষার আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেট পাওয়ার সার্বিক ধারণা প্রদান করবে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত জার্মান ভাষার দক্ষতা যাচাইয়ের পরীক্ষা ও কোর্সগুলোর ব্যাপারে অবগত হওয়ার জন্য এটি এক পরিপূর্ণ গাইড হিসেবে কাজ করবে।
আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়াতে উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
বাংলাদেশে জার্মান ভাষার আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেট পাওয়ার বিস্তারিত নির্দেশিকা
জার্মান ভাষার আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেট পাওয়ার যোগ্যতা
কমন ইউরোপীয় ফ্রেমওয়ার্ক অফ রেফারেন্স ফর ল্যাঙ্গুয়েজ (সিইএফআর) অনুযায়ী জার্মান ভাষায় দক্ষতা যাচাইয়ের স্তর ছয়টি- এ১, এ২, বি১, বি২, সি১ এবং সি২। এই ছয়টি স্তর যাচাইয়ের জন্য বিভিন্ন বয়সের বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষার আয়োজন করে গ্যোটে ইনস্টিটিউটের বাংলাদেশ শাখা। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এই পরীক্ষাগুলোতে উত্তীর্ণের মাধ্যমে সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়ে থাকে।
চলুন, এই পরীক্ষাগুলোর বিভিন্ন শর্ত এবং ন্যূনতম কত বয়স হলে সেগুলোতে অংশগ্রহণ করা যাবে তা জেনে নিই।
এ১ স্তরের সার্টিফিকেট পরীক্ষা
গ্যোটে-জার্টিফিকেট এ১: ফিট ইন ডয়েচ ১ (এফডি ১)
বয়স: ১০ থেকে ১৬ বছর
ভাষা দক্ষতা: প্রার্থীদের ন্যূনতম সিইএফআর-এর এ১ স্তরে জার্মান ভাষায় সাবলীল হতে হবে।
প্রয়োজনীয় কোর্স: জার্মান ভাষায় পূর্ববর্তী জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীকে ৪৫-মিনিটের ৮০ থেকে ২০০ টিচিং ইউনিট শেষ করতে হবে।
আরও পড়ুন: সুইজারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষায় স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
গ্যোটে-জার্টিফিকেট এ১: স্টার্ট ডয়েচ ১ (এসডি ১)
বয়স: সর্বনিম্ন ১৬ বছর।
ভাষা দক্ষতা: প্রার্থীদের অবশ্যই জার্মান ভাষায় সিইএফআর-এর এ১ স্তরের দক্ষতা থাকতে হবে।
প্রয়োজনীয় কোর্স: জার্মান ভাষায় পূর্ববর্তী জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীকে ৪৫ মিনিটের ৮০ থেকে ২০০ টিচিং ইউনিট শেষ করতে হবে।
এ২ স্তরের সার্টিফিকেট পরীক্ষা
গ্যোটে-জার্টিফিকেট এ২: ফিট ইন ডয়েচ (এফডি)
বয়স: সর্বনিম্ন ১২ বছর
ভাষা দক্ষতা: প্রার্থীদের অবশ্যই জার্মান ভাষাতে সিইএফআর-এর এ২ স্তরের দক্ষতা থাকতে হবে।
প্রয়োজনীয় কোর্স: জার্মান ভাষায় পূর্ববর্তী জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীকে ৪৫ মিনিটের ২০০ থেকে ৩৫০টি ক্লাস শেষ করতে হবে।
গ্যোটে-জার্টিফিকেট এ২
বয়স যোগ্যতা: সর্বনিম্ন ১৬ বছর।
ভাষা দক্ষতা: প্রার্থীদের অবশ্যই সিইএফআর-এর এ২ স্তরের জার্মান ভাষা দক্ষতা থাকতে হবে।
প্রয়োজনীয় কোর্স: জার্মান ভাষায় পূর্ববর্তী জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীকে ৪৫ মিনিটের ২০০ থেকে ৩৫০টি ক্লাস শেষ করতে হবে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার আশায় নিরাশা এনে দিয়েছে লকডাউন!
বি১ স্তরের সার্টিফিকেটের জন্য মানদণ্ড
গ্যোটে-জার্টিফিকেট বি১
বয়স যোগ্যতা: সর্বনিম্ন ১২ বছর
ভাষা দক্ষতা: প্রার্থীদের অবশ্যই জার্মান ভাষাতে সিইএফআর-এর বি১ স্তরের দক্ষতা থাকতে হবে।
বি২ স্তরের সার্টিফিকেটের জন্য মানদণ্ড
গ্যোটে-জার্টিফিকেট বি২
বয়স যোগ্যতা: ন্যূনতম ১৫ বছর
ভাষা দক্ষতা: প্রার্থীদের অবশ্যই জার্মান ভাষায় সিইএফআর-এর বি২ স্তরের দক্ষতা থাকতে হবে।
সি১ স্তরের সার্টিফিকেটের জন্য মানদণ্ড
গ্যোটে-জার্টিফিকেট সি১
বয়স যোগ্যতা: সর্বনিম্ন ১৬ বছর
ভাষা দক্ষতা: প্রার্থীদের অবশ্যই জার্মান ভাষাতে সিইএফআর-এর সি১ স্তরের দক্ষতা থাকতে হবে।
প্রয়োজনীয় কোর্স: জার্মান ভাষায় পূর্ববর্তী জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীকে ৪৫-মিনিটের ৮০০ থেকে ১ হাজার টিচিং ইউনিট শেষ করতে হবে।
সি২ স্তরের সার্টিফিকেট পরীক্ষা
গ্যোটে-জার্টিফিকেট সি২: গ্রসেস ডয়েচেস স্প্রাচডিপ্লোম (জিডিএস)
বয়স: ন্যূনতম ১৮ বছর
ভাষা দক্ষতা: প্রার্থীদের অবশ্যই জার্মান ভাষাতে সিইএফআর অনুযায়ী দক্ষতার সর্বোচ্চ স্তর সি২-এর দক্ষতা থাকতে হবে।
প্রয়োজনীয় কোর্স: জার্মান ভাষায় পূর্ববর্তী জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীকে ৪৫ মিনিটের কমপক্ষে ১ হাজার টিচিং ইউনিট শেষ করতে হবে।
আরও পড়ুন: প্রবাসী বাংলাদেশিরা কিভাবে ই-পাসপোর্ট করবেন: দেশের বাইরে থেকে পাসপোর্ট নবায়নের উপায়
বিশেষ সার্টিফিকেট পরীক্ষা
টেস্টডিএএফ
বয়স: ন্যূনতম ১৮ বছর
ভাষা দক্ষতা: প্রার্থীদের অবশ্যই জার্মান ভাষাতে সিইএফআর-এর কমপক্ষে বি২ এবং সি১ স্তরের দক্ষতা থাকা জরুরি।
প্রয়োজনীয় কোর্স: জার্মান ভাষায় পূর্ববর্তী জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীর সম্পন্ন করা কোর্স ৪৫ মিনিটের ৭০০ থেকে ১ হাজার টিচিং ইউনিটের মধ্যে থাকতে হবে।
গ্যোটে-টেস্ট প্রো
বয়স: সর্বনিম্ন ১৬ বছর।
জার্মান ভাষার আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেশন পরীক্ষা
যে শিক্ষার্থীরা গোথ-ইন্সটিটিউটের কোর্সগুলোতে অংশগ্রহণ করেন, এমন আভ্যন্তরীণ প্রার্থীদের পরীক্ষার ফি’তে বিশেষ ছাড় থাকে। এই অভ্যন্তরীণ প্রার্থী হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের একটি কোর্সের অবশ্যই যে কোনো একটি নির্দিষ্ট স্তরের কোর্স সম্পূর্ণভাবে শেষ করতে হবে। বাইরের শিক্ষার্থী অর্থাৎ শুধুমাত্র পরীক্ষাতে যারা অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছেন তাদের পরীক্ষা সমূহের নাম নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
জার্মান ভাষার আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেট পরীক্ষা সমূহ
গ্যোটে-জার্টিফিকেট এ১ (এসডি১)
গ্যোটে-জার্টিফিকেট এ১ (ফিট ইন ডয়েচ)
গ্যোটে-জার্টিফিকেট এ১ (এসডি১)
গ্যোটে-জার্টিফিকেট এ২ (ফিট ইন ডয়েচ)
গ্যোটে-জার্টিফিকেট এ২
গ্যোটে-জার্টিফিকেট বি১
গ্যোটে-জার্টিফিকেট বি১ জুগ্যান্ডলিশ: ফিট ইন ডয়েচ
গ্যোটে-জার্টিফিকেট বি২
গ্যোটে-জার্টিফিকেট সি১
গ্যোটে-জার্টিফিকেট সি২
সূত্র: গ্যোটে ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ
আরও পড়ুন: অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদনে ভুল হলে সংশোধনের নিয়ম
বর্তমানে, বাংলাদেশ গ্যোটে ইনস্টিটিউট শুধুমাত্র এ১ থেকে বি২ স্তর পর্যন্ত সার্টিফিকেশন পরীক্ষার ব্যবস্থা করছে। পরীক্ষা সংক্রান্ত সর্বশেষ তথ্য শিক্ষার্থীদের নিবন্ধনের সময় নতুন ইস্তেহারে দেওয়া হয়ে থাকে। তাই এই পরীক্ষাগুলো হালনাগাদকৃত ফি-এর ব্যাপারে জানতে অনুগ্রহপূর্বক বাংলাদেশ গ্যোটে ইনস্টিটিউটের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে চোখ রাখুন বা সরাসরি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
জার্মান ভাষা আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেটের জন্য কোর্স
জার্মান ভাষা শেখা ও আন্তর্জাতিক জার্মান ভাষা সার্টিফিকেট পরীক্ষাগুলোতে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য বাংলাদেশে গ্যোটে ইন্সটিটিউট-এর এক্সটেনসিভ, ইনটেনসিভ, এবং ব্লেন্ডেড লার্নিং কোর্স রয়েছে।
প্রতিটি কোর্সে সাধারণত সর্বোচ্চ ২২ জন শিক্ষার্থী নেওয়া হয়। কোর্সগুলো সাধারণত জানুয়ারি, মার্চ, জুন এবং সেপ্টেম্বরে শুরু হয়ে থাকে।
কোর্সগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক:
এক্সটেনসিভ ও ইনটেনসিভ কোর্স
এক্সটেনসিভ অনলাইন লাইভ এ১.১/এ১.২
অনলাইনে পরিচালিত এই কোর্সটি এ১ স্তরে একদম নতুনদের জন্য। এর প্রতি সপ্তাহে ২টি সেশন থাকে, যার প্রতিটি সেশন ৪৫ মিনিটের ৪টি টিচিং ইউনিট পর্যন্ত দীর্ঘ হয়। এভাবে ১০ সপ্তাহে সর্বমোট ৭৫টি টিচিং ইউনিট সম্পন্ন করা হয় কোর্সটিতে।
এক্সটেনসিভ অনলাইন লাইভ এ২.১/এ২.২
এ২ স্তরে শিক্ষার্থীদের জন্য তৈরি করা এই অনলাইন কোর্সে প্রতি সপ্তাহে ২টি সেশন রাখা রয়েছে। প্রতিটি সেশন ৪৫ মিনিটের ৪টি টিচিং ইউনিট পর্যন্ত চলে। ১০ সপ্তাহে কোর্সটিতে মোট ৮০টি টিচিং ইউনিট সম্পন্ন করা হয়।
ইনটেনসিভ অনলাইন লাইভ এ১
এ১ স্তরে দ্রুত অগ্রসর হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে বানানো হয়েছে এই কোর্সটি। প্রতি সপ্তাহে থাকে ৪টি সেশন, যেগুলোর প্রতিটি সাড়ে ৩ ঘন্টা পর্যন্ত স্থায়ী হয়। ১০ সপ্তাহে কোর্সে সর্বমোট ১৫০টি টিচিং ইউনিট শেষ করা হয়, যেখানে এ১-এ দ্রুত দক্ষতা অর্জনের সুবিধা পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: উচ্চশিক্ষায় দেশের বাইরে যেতে প্রস্তুতির ধাপগুলো জেনে নিন
ইনটেনসিভ অনলাইন লাইভ এ২
ইনটেনসিভ এ১ কোর্সের মতো একইভাবে এই প্রোগ্রামটিও শিক্ষার্থীদের এ২ স্তরের দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে। এরও প্রতি সপ্তাহে ৪টি সেশন এবং প্রতিটিতে সাড়ে ৩ ঘন্টা সময়। তবে ১০ সপ্তাহে কোর্সটি সব মিলিয়ে ১৬০টি টিচিং ইউনিট শেষ করে।
ইনটেনসিভ অনলাইন লাইভ বি১
বি১ স্তরে পৌঁছাতে উচ্চাকাঙ্ক্ষী শিক্ষার্থীদের জন্য এই প্রোগ্রামটি। এই ইনটেনসিভ কোর্সের প্রতি সপ্তাহে রয়েছে ৫টি করে সেশন। প্রতিটি সেশন ৪ ঘন্টা ৫ মিনিট স্থায়ী হয়। কোর্সটি ১০ সপ্তাহে সর্বমোট ১৯০টি টিচিং ইউনিটে শেষ হয়। ইউনিটগুলো জার্মান ভাষায় তুলনামূলকভাবে আরও উন্নত দক্ষতা এবং সংস্কৃতি বোঝার ওপর জোর দেয়।
ইনটেনসিভ অনলাইন লাইভ বি২
বি২ স্তরে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে তৈরি এই ইনটেনসিভ কোর্সে প্রতি সপ্তাহে ৪টি সেশন থাকে। বি১-এর মত এই সেশনগুলোও ৪ ঘন্টা ৫ মিনিটের এবং ১০ সপ্তাহে মোট ১৯০টি টিচিং ইউনিটে পাঠদান করা হয়। এই কোর্সটি শিক্ষার্থীদের ভাষাকে পরিমার্জিত করা, শব্দভান্ডার প্রসারিত করা এবং উচ্চ-মধ্যবর্তী স্তরে যোগাযোগের ক্ষমতা জোরদার করতে সাহায্য করে।
ইনটেনসিভ হাইব্রিড এ১
এই কোর্সটি ক্লাসরুম এবং জুম স্ট্রিমিং এর সমন্বয়ে তৈরি। অংশগ্রহণকারীরা শারীরিকভাবে ক্লাসে যোগদান করতে পারে। আবার বিকল্পভাবে যোগদান করতে পারে অনলাইন সেশনগুলোতেও। এর প্রতি সপ্তাহে ৪টি সেশন, যেগুলোর প্রতিটি সাড়ে ৩ ঘন্টা পর্যন্ত স্থায়ী হয়। ১০ সপ্তাহে কোর্সটি মোট ১৫০টি টিচিং ইউনিট শেষ করে।
ইনটেনসিভ হাইব্রিড এ২
হাইব্রিড এ১ কোর্সের মতো, এই প্রোগ্রামটি তৈরি করা এ২ স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য। এখানেও প্রতি সপ্তাহে সাড়ে ৩ ঘন্টার ৪টি সেশন, যেগুলোতে ক্লাসরুম এবং জুম মিলিয়ে অংশগ্রহণ করা যায়। ১০ সপ্তাহে কোর্সটি মোট ১৬০টি টিচিং ইউনিট শেষ করে।
ব্লেন্ডেড লার্নিং কোর্স
এই কোর্সগুলো ৫০/৫০ অনুপাতে ক্লাসরুম সেশন এবং স্ব-অধ্যয়নকে একীভূত করে। কোর্সের অর্ধেক পরিচালিত হয় একজন শিক্ষকের সঙ্গে সরাসরি ক্লাসে যোগদানের মাধ্যমে। বাকি অর্ধেক সম্পন্ন হয় ইনস্টিটিউটের প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে স্ব-অধ্যয়নের অনলাইন শিক্ষার মাধ্যমে।
ক্লাসরুমের সেশনে শিক্ষার্থীরা সরাসরি শিক্ষক এবং সহপাঠীদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এখানে তারা তাদের কথা বলা এবং শোনার দক্ষতা অনুশীলনের সঙ্গে সঙ্গে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পান। অনলাইন স্ব-অধ্যয়নের অংশটি প্ল্যাটফর্মের বিভিন্ন শিক্ষার উপকরণ, অনুশীলনসহ বিভিন্ন সেবা ব্যবহারের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।
এই কোর্স ফরমেটটি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা গ্রহণের ক্ষমতা, বুদ্ধি এবং সঠিক ক্রমবিকাশের ক্ষেত্রগুলো বিবেচনা করে পৃথক শিক্ষার প্রয়োজন মেটানোর লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছে। এখানে প্রতি সপ্তাহে ৪টি সেশন করে ১০ সপ্তাহ পর্যন্ত চলে।
প্রতি সেশনের স্থায়ীত্বকাল ৩ ঘন্টা এবং কোর্স শেষে শিক্ষার্থীরা এখানে ৪৫ মিনিটের মোট ১৬টি টিচিং ইউনিট সম্পন্ন করতে পারে। এই নমনীয় সময়সূচীটি অন্যান্য শিক্ষা ব্যবস্থার থেকে প্রতিশ্রুতিশীল বা বহুমুখী শিক্ষার পরিবেশের জন্য বেশ উপযুক্ত।
আরও পড়ুন: ডেনমার্কে উচ্চশিক্ষা: উপায়, খরচ ও সুযোগ-সুবিধা
জার্মান ভাষার আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেট কোর্সের সময়
জার্মান ভাষার আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেট কোর্সসমূহ
সময় (সপ্তাহ)
এক্সটেনসিভ অনলাইন লাইভ (এ১.১/এ১.২)
১০
এক্সটেনসিভ অনলাইন লাইভ (এ২.১/এ২.২)
১০
ইনটেনসিভ অনলাইন লাইভ/হাইব্রিড এ১
১০
ইনটেনসিভ অনলাইন লাইভ/হাইব্রিড এ২
১০
ইনটেনসিভ অনলাইন লাইভ বি১
১০
ইনটেনসিভ অনলাইন লাইভ বি২.১/বি২.২
৯
পরীক্ষা প্রস্তুতি (এ১/বি১)
১
সূত্র: গ্যোটে ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ
এই কোর্সের সময়, ফিসহ বিবিধ বিষয় বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তন হয়। সাধারণত শিক্ষার্থীদের নিবন্ধনের সময় হালনাগাদকৃত কোর্স ইস্তেহারে নতুন ফি ঘোষণা করা হয়। তাই সর্বশেষ তথ্যের ব্যাপারে অবগত হওয়ার জন্য বাংলাদেশ গ্যোটে ইনস্টিটিউটের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট-এ চোখ রাখার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।
শেষাংশ
সর্বোপরি, এই নিবন্ধটি বাংলাদেশে জার্মান ভাষার আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেট পাওয়ার উপায় জানার সহজ সমাধান। জার্মান ভাষাতে ক্যারিয়ার গড়ায় উৎসাহীদের যাবতীয় প্রয়োজনগুলোই মূল কাঁচামাল বাংলাদেশ গ্যোটে-ইন্সটিটিউট-এর কোর্স এবং পরীক্ষা পদ্ধতির। তাই এই পদ্ধতিগুলো বাংলাদেশের জার্মান ভাষা শিক্ষার্থীদের পরম নির্ভরতার জায়গা।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষা: উপায়, খরচ ও সুযোগ-সুবিধা
১ বছর আগে