কপ-২৮
দ্রুত লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড পেতে পদক্ষেপ নেবে বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রীর জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত
প্রধানমন্ত্রীর পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক বিশেষ দূত এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, কপ-২৮ এ কার্যকর লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড দ্রুত পেতে পদক্ষেপ নেবে বাংলাদেশ। এজন্য বাংলাদেশের সংশ্লিষ্টদের সক্ষমতা বাড়ানো হবে।
তিনি বলেন, উক্ত তহবিলে এ পর্যন্ত ১৯টি দেশ মোট ৭৯২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এ ফান্ড ভবিষ্যতে বৃদ্ধি পাবে। নতুন তহবিল প্রাথমিকভাবে চার বছরের জন্য বিশ্বব্যাংক কর্তৃক পরিচালিত হবে।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকালে পরিবেশ অধিদপ্তরের অডিটোরিয়ামে ‘২৮তম বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন: প্রত্যাশা, প্রাপ্তি এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা’- শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবের হোসেন চৌধুরী এসব কথা বলেন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এমিরিটাস ড. আইনুন নিশাত।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব(প্রশাসন) ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন, অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) সঞ্জয় কুমার ভৌমিক, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদ। প্যানেল আলোচনা পরিচালনা করেন পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের ডিএমডি ড. ফজলে রাব্বি সাদেক আহমেদ।
আরও পড়ুন: কপ-২৮ উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক: সীমিত সম্পদ সত্ত্বেও কম কার্বনের পথে বাংলাদেশ
বিষয়ভিত্তিক তিনটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ধরিত্রী কুমার সরকার, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. জিয়াউল হক ও পরিচালক মির্জা শওকত আলী।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল এবার কপ-২৮ এ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের চেষ্টায় এবার ‘ইউএই ফ্রেমওয়ার্ক ফর গ্লোবাল ক্লাইমেট রেজিলেন্স’ গ্রহণ করা হয়েছে। যার লক্ষ্য হবে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে যুক্ত ক্রমবর্ধমান প্রতিকূল প্রভাব, ঝুঁকি ও দুর্বলতা হ্রাস করা; সেইসঙ্গে অভিযোজনমূলক কার্যক্রম ও সহায়তা বৃদ্ধি করা।
তিনি বলেন, ‘ওয়ার্ক প্রোগ্রাম অন জাস্ট ট্রাঞ্জিশন পাথওয়ে’র কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। ‘লো জিএইচজি এমিশনস এন্ড ক্লাইমেট রেজিলেন্ট ডেভেলপমেন্ট’ পথের সঙ্গে জলবায়ু অর্থায়ন প্রবাহ সামঞ্জস্যপূর্ণ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমিত রাখার লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে টেকসইভাবে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন হ্রাসের প্রয়োজনীয়তাকে স্বীকৃতি দিয়ে জিএসটি-তে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটি সদস্য দলগুলোকে তাদের পরবর্তী এনডিসিকে আরও উচ্চাকাঙ্খী করে সব সেক্টরকে কভার করে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখার সঙ্গে সংগতি রেখে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন হ্রাস লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করার জন্য উৎসাহিত করেছে এবং ন্যায়সঙ্গত পদ্ধতিতে জীবাশ্ম জ্বালানি পরিহারের আহ্বান জানানো হয়েছে।
অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) সঞ্জয় কুমার ভৌমিক বলেন, এবারের কপ-২৮ সম্মেলনে জলবায়ু বিষয়ক কর্মকাণ্ডে নেতৃস্থানীয় কণ্ঠস্বর হিসেবে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিগ্রস্ত মানুষের পক্ষে বিশ্বব্যাপী অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘ক্লাইমেট মোবিলিটি চ্যাম্পিয়ন লিডার অ্যাওয়ার্ড’-এ ভূষিত করা হয়েছে। এ ছাড়াও বাংলাদেশকে ‘ইনোভেশন ইন ডিভলভিং ফাইন্যান্স’ বিভাগে ‘জিসিএ লোকাল এডাপ্টেশন চ্যাম্পিয়ন্স অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হয়েছে। যা স্থানীয় পর্যায়ে জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা ও উদ্ভাবনের প্রতি বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে।
আরও পড়ুন: কপ-২৮ সম্মেলন : শুক্রবার শুরু হচ্ছে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক
কপ-২৮ সম্মেলনে স্থানীয় জলবায়ু নেতৃত্বে গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশন অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে বাংলাদেশ
১১ মাস আগে
২৮তম বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে দেশের অর্জন নিয়ে আলোচনা
দুবাইয়ে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৮ এ দেশের অর্জন নিয়ে বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের সঙ্গে বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আলোচনা করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
এসময় তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কপ-২৮ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী আমন্ত্রিত ছিলেন, তিনি সেখানে যেতে পারেননি, তার পক্ষ থেকে আমাকে পাঠিয়েছিলেন। সেখানে বাংলাদেশ সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবং প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা জলবায়ুর অভিঘাত মোকাবিলায় যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছি সেগুলো সেখানে প্রশংসিত হয়েছে। সে কারণে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং গ্লোবাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট মোবিলিটি (জিসিসিএম) যৌথভাবে প্রধানমন্ত্রীকে ‘ক্লাইমেট মোবিলিটি চ্যাম্পিয়ন লিডার অ্যাওয়ার্ডে’ ভূষিত করেছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভাপতি ও আইওএমের ডিরেক্টর জেনারেল সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বাংলাদেশকে স্থানীয় অভিযোজনে সাফল্যের জন্য ‘গ্লোবাল সেন্টার অন এডাপটেশন এওয়ার্ড’ দেওয়া হয়েছে।’’
ড. হাছান বলেন, ‘বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের অসহায় শিকার হলেও যেভাবে এই জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা করে এসেছে সেগুলো বিশ্বব্যাপী সবসময় প্রশংসিত হয়েছে। সে কারণে প্রধানমন্ত্রীকে ২০১৫ সালে ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ’ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কপ-২৮ সম্মেলনের অন্যতম প্রধান অগ্রগতি হচ্ছে ‘লস এন্ড ড্যামেজ ফান্ড’ গঠন করা, যেটি আগে ছিলো না। এবং এই সম্মেলনে সবাই জীবাশ্ম জ্বালানী থেকে ধীরে ধীরে সরে আসার বিষয়ে একযোগে একমত হয়েছে।’
আরও পড়ুন: সাইকেল শোভাযাত্রা করে নির্বাচনী প্রচার শুরু করলেন তথ্যমন্ত্রী
এ সময় নগর পরিকল্পনায় প্রকৃতির সাথে মানুষের সংযোগ নিয়ে প্রশ্নে পরিবেশবিদ তথ্যমন্ত্রী হাছান বলেন, আমাদের দেশে বেশিরভাগ নগর পরিকল্পনার ক্ষেত্রে প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সংযোগ ঘটিয়ে তোলা হয়নি। সে কারণে নগরগুলো ইট-পাথরের জঞ্জালে পরিণত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী অনেকগুলো উদ্যোগ একা গ্রহণ করেছেন। সে উদ্যোগের প্রেক্ষিতে অনেকগুলো খাল পুনঃখনন করা হচ্ছে কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, খাল খননের সঙ্গে যুক্তদের চেয়েও অনেক শক্তিশালী হচ্ছে খাল দখলকারীরা। এটি একটি বড় প্রতিবন্ধকতা। অবশ্যই প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সংযোগ ঘটিয়েই নগর পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। শুধু নগর পরিকল্পনা নয়, যে কোনো উন্নয়ন পরিকল্পনাই প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সংযোগ ঘটিয়ে করা প্রয়োজন।
প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া, ফোরামের সভাপতি কাউসার রহমান, সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রমুখ এ সময় বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন: রাজনীতির নামে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের মানববন্ধনে তথ্যমন্ত্রী
ধ্বংসাত্মক রাজনীতি নির্মূল করে মানবিক রাষ্ট্র গঠনই বিজয় দিবসের প্রত্যয়: তথ্যমন্ত্রী
১১ মাস আগে
কপ-২৮ উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক: সীমিত সম্পদ সত্ত্বেও কম কার্বনের পথে বাংলাদেশ
দুবাইয়ে অনুষ্ঠেয় কপ-২৮ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দানকারী পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, সীমিত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জ্বালানি দক্ষতা ও জ্বালানি সংরক্ষণের ওপর জোর দিয়ে স্বল্প কার্বন উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের সপ্তম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ দেশের দুর্বলতাকে সহনশীলতার দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য কঠোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী কপ-২৮ এর উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, 'আমরা ২০০৯ সালে আমাদের নিজস্ব সীমিত সম্পদ থেকে বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছি। এখন পর্যন্ত, আমরা ৪৯০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছি যা ৮৫০ টিরও বেশি প্রকল্পকে সহায়তা করে। এছাড়াও 'আমাদের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির অংশ হিসেবে সরকার জলবায়ু সংক্রান্ত কার্যক্রমে ৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ব্যয় করার,’ কথাও তুলে ধরেন শাহাব উদ্দিন।
গত বছর বাংলাদেশ ইউএনএফসিসিসিতে জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা জমা দেয়। ন্যাপ ২০২৩ থেকে ২০৫০ সাল পর্যন্ত সময়সীমা সহ ৮টি ঝুঁকিপূর্ণ খাতের জন্য ১১৩টি হস্তক্ষেপ চিহ্নিত করেছে। এই অগ্রাধিকারমূলক হস্তক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করতে ২৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা প্রতি বছর প্রায় সাড়ে ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন হবে। এর অর্থ ন্যাপ বাস্তবায়নে প্রতি বছর প্রায় সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলারের আর্থিক ঘাটতি থাকবে।
মন্ত্রী বলেন, ২০১৫ সালের তুলনায় ২০২১ সালে বাংলাদেশ তার জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান (এনডিসি) তিনগুণ বর্ধিত নির্গমন হ্রাসের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে হালনাগাদ করেছে।
আরও পড়ুন: পাঁচটি বিপর্যয়কর জলবায়ু টিপিং পয়েন্ট অতিক্রম করার দ্বারপ্রান্তে পৃথিবী: বিজ্ঞানীদের সতর্কতা
শাহাব উদ্দিন বিশ্বব্যাপী প্রতিনিধিদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন 'সম্প্রতি প্রকাশিত বৈজ্ঞানিক প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, আমরা ভুল পথে এগোচ্ছি। ২০৩০ সালের জন্য নির্গমন হ্রাসের অঙ্গীকারের উচ্চাকাঙ্ক্ষা প্যারিস চুক্তির ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি লক্ষ্য বজায় রাখতে সাত গুণ বেশি হওয়া দরকার।’
তিনি বলেন, কপ-২৮-এ নিম্নলিখিত ক্ষেত্রগুলোতে অগ্রগতি অপরিহার্য হবে-
‘আমাদের বেঁচে থাকার জন্য আমাদের অবশ্যই ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি লক্ষ্যকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এমনকি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সীমার অস্থায়ী ওভারশ্যুট অভিযোজন সীমা ছাড়িয়ে অতিরিক্ত স্থায়ী ক্ষতির দিকে পরিচালিত করে। নির্গমন ব্যবধান মোকাবিলার জন্য আমাদের প্রধান নির্গমনকারীদের দ্বারা দৃঢ় রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি প্রয়োজন।’
‘প্রথম গ্লোবাল স্টকটেককে অবশ্যই ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ফলাফলের বিপরীতে অগ্রগতি মূল্যায়নের জন্য সুনির্দিষ্ট মাইলফলকও অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে।
আরও পড়ুন: জলবায়ু সংকট: অন্তর্ভুক্তিমূলক আন্তর্জাতিক অর্থায়ন ব্যবস্থা প্রণয়নের আহ্বান
‘ন্যাপ এবং এনডিসি বাস্তবায়নে সহায়তা করার জন্য সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ উন্নয়নশীল দেশগুলো - এলডিসি এবং এসআইডিএস - জনসাধারণের উৎস থেকে পর্যাপ্ত আর্থিক সংস্থান সংগ্রহ করা। উন্নত দেশগুলোকে অবশ্যই ২০১৯ সালের স্তর থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে অভিযোজন অর্থায়ন দ্বিগুণ করার জন্য কপ-২৬ এর আহ্বান পূরণ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘উন্নত দেশগুলোকে তাদের ঐতিহাসিক অঙ্গীকার অনুযায়ী বছরে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সরবরাহ করতে হবে। জলবায়ু অর্থায়ন সম্পর্কিত নিউ কালেক্টিভ কোয়ান্টিফাইড গোলসের অধীনে ২০২৫ পরবর্তী অর্থায়ন অবশ্যই সবচেয়ে দুর্বলদের ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিবেচনা করে এবং বাস্তবায়নের জন্য একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ সহ বর্তমান প্রতিশ্রুতির চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি হতে হবে।’
জলবায়ু পরিবর্তনের চরম হুমকি মোকাবিলায় প্যারিস চুক্তির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন এবং আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বিশ্বকে একটি নিরাপদ ও উন্নত স্থান হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার প্রধান ও প্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানান মন্ত্রী।
তিনি কপ-২৮ উদ্বোধনের প্রথম দিনেই লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ডের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ইতিহাস সৃষ্টির জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের সরকার ও জনগণ এবং কপ-২৮ সভাপতিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
২০২৩ সালের বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন (কপ-২৮) গত ৩০ নভেম্বর দুবাইয়ে শুরু হয়েছে এবং ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। ১৩ দিনব্যাপী এই সম্মেলনে ১৯৮টি দেশের সরকার প্রধান ও প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
আরও পড়ুন: কপ-২৮ সম্মেলন : শুক্রবার শুরু হচ্ছে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক
১১ মাস আগে
কপ-২৮ সম্মেলনে স্থানীয় জলবায়ু নেতৃত্বে গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশন অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে বাংলাদেশ
চলমান জলবায়ু সম্মেলনে ইনোভেশন ইন ডেভেলপিং ফাইন্যান্স ক্যাটাগরিতে গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশন (জিসিএ) লোকাল লেড অ্যাডাপটেশন (এলএলএ) চ্যাম্পিয়নশিপ অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে বাংলাদেশ।
স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়িত স্থানীয় সরকার ইনিশিয়েটিভ অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (লজিক) প্রকল্প এ সম্মান অর্জন করে। এই লজিক প্রকল্পটি ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সুইডেন, ডেনমার্ক, জাতিসংঘের মূলধন উন্নয়ন তহবিল (ইউএনসিডিএফ) এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) সহায়তায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) রেসিলিয়েন্স হাবে আয়োজিত এক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে স্থানীয় পর্যায়ে অভিযোজন ও সহনশীলতা বিনির্মাণে বাংলাদেশের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ এই পুরস্কার প্রদান করা হয়।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলো মোকাবিলায় স্থানীয়ভাবে পরিচালিত সৃজনশীল, প্রশংসনীয় এবং সম্প্রসারণযোগ্য প্রকল্পগুলোকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী এবং জনগণকে পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়তা করার উদ্দেশ্যে ২০২২ সালে জিসিএ এলএলএ চ্যাম্পিয়ন্স অ্যাওয়ার্ডস চালু করা হয়।
আরও পড়ুন: কপ-২৮: ৫ গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধানে অন্য দেশের সঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ
অর্থায়ন বৃদ্ধিতে উদ্ভাবনী পদ্ধতির জন্য এই পুরষ্কার দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পক্ষে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ এই পুরস্কার গ্রহণ করেন।
বাংলাদেশের ৯টি প্রধান জলবায়ু ও ঝুঁকিপূর্ণ জেলায় প্রায় ২০ লাখ মানুষ এই প্রকল্পের আওতায় উপকৃত হয়েছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় আরো ভালোভাবে প্রস্তুত হওয়ার জন্য ৪ লাখেরও বেশি পরিবারের ক্ষমতায়ন করেছে।
এই মানুষগুলো এখন জলবায়ু-সহনশীল জীবিকায় বিনিয়োগ করতে পারেন, বৈচিত্র্যময় আয়ের উৎস বেছে নিতে পারে্ন এবং অভিযোজনের চর্চাগুলো বাড়ানোর জন্য বাজার এবং বিনিয়োগে নিজেদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারেন।
আরও পড়ুন: কপ-২৮: বিশ্বব্যাপী জলবায়ু প্রতিক্রিয়া ত্বরান্বিত করার আহ্বান
ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার বলেন, ‘স্থানীয় সরকার ইনিশিয়েটিভ অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (লজিক) প্রকল্পের স্বীকৃতি স্থানীয়ভাবে পরিচালিত জলবায়ু অভিযোজন ও সহনশীলতার প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকারের ফসল। এই পুরস্কার স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং এর উন্নয়ন অংশীদারদের নিষ্ঠার স্বীকৃতি।এটি জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উদ্ভাবনের শক্তিকে একটি নজির হিসেবে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন এবং তাদের জন্য টেকসই ও জলবায়ু সহনশীল ভবিষ্যতে অবদান রাখতে রূপান্তরমূলক উদ্যোগকে সহায়তা যোগাতে ইউএনডিপি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
উল্লেখ্য, জিসিএ অ্যাওয়ার্ডস কেবল বিজয়ীদের অর্জনকেই স্বীকৃতি প্রদান করে না বরং স্থানীয় পর্যায়ের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার সম্মিলিত প্রচেষ্টাকেও বিশ্বের কাছে তুলে ধরে। টেকসই আগামীর জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা এবং উদ্ভাবন এর যোগান দেওয়ার মাধ্যমে জলবায়ু সহনশীলতা গড়ে তুলতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলোর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে এই ধরনের পুরষ্কারগুলোর অনন্য ভূমিকা রয়েছে।
আরও পড়ুন: কপ২৮-এ বিশুদ্ধ জ্বালানির বিষয়ে অগ্রগতি আনতে হবে: যুক্তরাজ্য
১১ মাস আগে
কপ-২৮: ৫ গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধানে অন্য দেশের সঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ
বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অত্যন্ত বিপন্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর পক্ষে কার্যকর ভূমিকা পালনে এবারের কপ-২৮ সম্মেলনে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিষ্পত্তিতে সমন্বিতভাবে কাজ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ।
এ বিষয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন ইউএনবিকে বলেন, বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল কপ সম্মেলনে বিভিন্ন ইস্যুভিত্তিক আলোচনায় বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অত্যন্ত বিপন্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর পক্ষে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ কপ-২৮ সম্মেলনে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিষ্পত্তিতে সমন্বিতভাবে কাজ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
সেগুলো হলো:
# প্রথম গ্লোবাল স্টকটেক অবশ্যই ১.৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার লক্ষ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ কার্যক্রমের অগ্রগতি মূল্যায়ন, ভবিষ্যৎ উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও কংক্রিট মাইলফলকসহ সুস্পষ্ট পদক্ষেপ নিতে হবে।
# অধিক বিপদাপন্ন উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ অ্যাড্রেস করার লক্ষ্যে কপ-২৮ সম্মেলনে ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড অপারেশনালাইজ’ করা এবং এর ‘ডিটেইল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ ঠিক করা।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত থাকা সত্ত্বেও মেয়াদ বাড়ছে ব্যয়বহুল ভাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের
# অভিযোজনসংক্রান্ত বৈশ্বিক লক্ষ্য ‘গ্লোবাল গোল অন অ্যাডাপ্টেশন’-এর কাঠামো তৈরি বা প্রণয়ন; সদস্য দেশগুলোকে অবশ্যই ১.৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার লক্ষ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করার জন্য তাদের এনডিসিতে বর্ণিত ২০৩০ প্রশমন লক্ষ্যমাত্রাকে শক্তিশালীকরণ এবং এনডিসি বাস্তবায়নের জন্য এলডিসি দেশগুলোর অর্থায়ন বাড়ানো।
# উন্নত দেশগুলোকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর উন্নয়নশীল দেশগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেওয়া নিশ্চিত করা; জলবায়ু অর্থায়নের সংজ্ঞা চূড়ান্ত করা।
# অভিযোজন অর্থায়ন দ্বিগুণ করা; জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন এবং ২০২৫ পরবর্তী সময়ে জলবায়ু অর্থায়নের জন্য ‘নিউ কালেক্টিভ কোয়ান্টিফাইড গোল অন ক্লাইমেট ফাইন্যান্স’ আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করা।
পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, কপ সম্মেলনে বাংলাদেশের অবস্থান যথাযথভাবে তুলে ধরার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে দেশের বিশিষ্ট জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থার মতামত নিয়ে একটি অবস্থানপত্র প্রণীত হয়েছে।
বিগত কপসমূহের মতো এবারও কপ-২৮ সম্মেলনে বাংলাদেশ ১৫২ বর্গমিটার আয়তনের একটি প্যাভিলিয়ন তৈরি করেছে এবং এখানে বিভিন্ন সাইড ইভেন্ট আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, বরাবরের মতো এবারের কপ-২৮ সম্মেলনেও বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল এসব বিষয়ে কার্যকর ও বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রাণলয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ ইউএনবিকে বলেন, কপ-২৮ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে ১৩টি সেমিনারসহ ২৪টি সাইড লাইন প্রোগ্রাম আয়োজন করবে। সেখানে শুধু বাংলাদেশ নয়, উন্নয়নশীল দেশের লিডার হিসেবে অন্যান্য দেশগুলোর জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব তুলে ধরবে বাংলাদেশ। এছাড়াও প্রতি বছরের মতো কপ-২৮ সম্মেলনের রিজিউমড হাই-লেভেল সেগমেন্টের আগে সম্মেলনের ভেন্যুতে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের আগে অফশোর হাইড্রোকার্বন অনুসন্ধানের আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের পরিকল্পনা স্থগিত
৩০ নভেম্বর শুরু হয়ে ১২ ডিসেম্ব পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরে ২৮তম বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন কপ-২৮ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এর অংশ হিসেবে ১ থেকে ২ ডিসেম্বর সম্মেলনের হাই-লেভেল সেগমেন্ট ‘ওয়ার্ড ক্লাইমেট সামিট’, ৮ থেকে ৯ ডিসেম্বর রিজিউমড হাই-লেভেল সেগমেন্ট, ৩০ নভেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত টেকনিক্যাল নেগোসিয়েশন এবং ১২ ডিসেম্বর তারিখে সমাপনী অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রাণালয় জানায়, সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী। তার সঙ্গে থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাসান মাহমুদ; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার; প্রধানমন্ত্রীর পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ দেশের বিশিষ্ট জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানা যায়, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার নির্বাচিত পরিচালক সায়মা ওয়াজেদেরও সম্মেলনে অংশে নেওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: বেসরকারি খাতের উৎপাদকদের ক্রমবর্ধমান অর্থ বকেয়া বিদ্যুৎখাতের অন্যতম বাধা
১১ মাস আগে
কপ-২৮: বিশ্বব্যাপী জলবায়ু প্রতিক্রিয়া ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের (ইউএন) ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (কপ-২৮) সম্মেলনের ২৮তম অধিবেশন শুরু হয়েছে।
বিশ্বের অন্যতম জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদনকারী দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত এবার সম্মেলনের আয়োজক। দেশটির দুবাই শহরে বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) বিকালে শুরু হওয়া এ সম্মেলন চলবে আগামী ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
এই বছরের জলবায়ু সম্মেলনটি বিশেষভাবে বিশ্ববাসীর মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। কারণ গ্লোবাল স্টকটেকের মূল্যায়নের সময় এসে গেছে। ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য অনুযায়ী এবারই প্রথম বিশ্বের সামগ্রিক অগ্রগতির দ্বিবার্ষিক মূল্যায়নই (স্টকটেক) হচ্ছে।
আনুষ্ঠানিকভাবে কপ-২৮ এর সভাপতি সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতান আহমেদ আল জাবের বলেন, ‘গ্লোবাল স্টকটেকের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে নতুন পথচলা শুরু হবে। জীবাশ্ম জ্বালানির ভবিষ্যৎ কী হবে, এটা থাকবে এবারের সম্মেলনে আলোচনার মূল বিষয়। এটি এমন একটি সিদ্ধান্ত যা কার্যকর করতে, ত্রুটিগুলো সংশোধন করতে এবং ২০৩০ পর্যন্ত পদক্ষেপ নির্ধারণ করতে সহায়তা করবে।’
আল জাবের বিশ্ব নেতাদের কাছে একটি সমাবেশের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি জীবাশ্ম জ্বালানির ভবিষ্যৎ বিষয়ে বৈশ্বিক মূল্যায়নের উপর দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া এবং এজেন্ডাগুলোতে ঐকমত্যে পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল কপ-২৮ সম্মেলনে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে: পরিবেশমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘এই প্রেসিডেন্সি (সবুজ) অর্থায়ন শুরু করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিশ্বের দক্ষিণাংশের দেশগুলোর আর উন্নয়ন ও জলবায়ু কর্মকাণ্ডের মধ্যে যেকোনো একটিকে বেছে নিতে হবে না।’
তিনি সমাধানের জন্য সব পক্ষকে এগিয়ে আসার এবং ঐক্যমত্যে পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনের নির্বাহী সেক্রেটারি সাইমন স্টিয়েল বলেন, ‘আমরা ছোট ছোট পদক্ষেপ নিচ্ছি। অস্থিতিশীল বিশ্ব থেকে খুব ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছি। তবে, বর্তমানে আমরা যে জটিল প্রভাবগুলোর (জলবায়ু পরিবর্তনের) সম্মুখীন হচ্ছি তা সমাধানের সর্বোত্তম প্রতিক্রিয়া তৈরি করার জন্য স্থিতিস্থাপকতার অভাব রয়েছে।’
তিনি দ্রুত প্রাসঙ্গিক পদক্ষেপ নেওয়ার এবং একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ক ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বচ্ছতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সবুজ জ্বালানিতে রূপান্তরের জন্য দৃঢ় আহ্বান জানানোর সময় জাতিসংঘের এই জলবায়ু কর্মকর্তা জোর দিয়ে বলেন, ‘দেশের মধ্যে এবং এক দেশের সঙ্গে অন্য দেশের সম্পর্কে ন্যায়বিচার’ নিশ্চিত করা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও সতর্ক করেছেন, ‘বৈশ্বিক উষ্ণতা ১ দশমিক ৫-ডিগ্রি সীমা অতিক্রম করার আগে পৃথিবীর কার্বন নির্গমন সহ্য করার ক্ষমতা শেষ হওয়ার আগে আমাদের হাতে এখনও প্রায় ছয় বছর আছে।’
এবারের কপ-২৮ সম্মেলন পৃথিবী ও সমস্ত মানবজাতির মুখোমুখি থাকা জলবায়ু সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য ৭০ হাজারেরও বেশি প্রতিনিধিকে স্বাগত জানাবে।
আরও পড়ুন: কপ-২৮ এর আগেই জলবায়ু ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের সুপারিশ সংসদীয় কমিটির
সংসদ সদস্যদের গোলটেবিল বৈঠক: কপ-২৮ এর আগে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের ককাস গঠনের প্রস্তাব
১১ মাস আগে
সংসদ সদস্যদের গোলটেবিল বৈঠক: কপ-২৮ এর আগে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের ককাস গঠনের প্রস্তাব
২০২৩ সালের নভেম্বরে দুবাইয়ে অনুষ্ঠেয় কপ-২৮ সম্মেলনের আগে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক সংসদীয় ককাস কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) যুক্তরাজ্যের হাউস অব লর্ডসে বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত 'বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য জলবায়ু চুক্তি: কপ-২৮ এর অগ্রাধিকার' শীর্ষক এক উচ্চ পর্যায়ের সংসদীয় গোলটেবিল বৈঠকে প্রস্তাব করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের হাউস অব লর্ডস ও হাউস অব কমন্সের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেন। চলতি বছরের মার্চে স্বাক্ষরিত বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য জলবায়ু চুক্তির আলোকে কপ-২৮ এর জন্য বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের অভিন্ন অগ্রাধিকার নিয়ে আলোচনা করা হয় বৈঠকে।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে এটিই ছিল এ ধরনের প্রথম গোলটেবিল বৈঠক।
বৈঠকে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কনজারভেটিভ ফ্রেন্ডস অব ইন্ডিয়ার পৃষ্ঠপোষক এবং যুক্তরাজ্যের সাবেক জ্বালানি ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী ব্যারোনেস ভার্মা।
বাংলাদেশের পক্ষে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, সাবেক পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বর্তমান সভাপতি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, জলবায়ু সংসদ বাংলাদেশের আহ্বায়ক নাহিম রাজ্জাক, সংসদ সদস্য শেখ তন্ময় এবং আয়েন উদ্দিন গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য রাখেন।
অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যের গৃহায়ণ ও গৃহহীনবিষয়ক (Housing and Homelessness) মন্ত্রী ফেলিসিটি বুচান এবং যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক ছায়ামন্ত্রী কেরি ম্যাকার্থি এবং ক্ষুদ্র ব্যবসা, ভোক্তা ও শ্রম বাজারবিষয়ক ছায়া মন্ত্রী সীমা মালহোত্রাসহ আরও বেশ কয়েকজন ব্রিটিশ সংসদ সদস্য গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য রাখেন।
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী তার বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। একই সঙ্গে গ্লাসগোতে কপ-২৬ অনুষ্ঠানে ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) সভাপতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তিনি কপ-২৮ জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের জন্য যৌথভাবে ক্ষয়ক্ষতি, জলবায়ু অর্থায়ন, মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনায় বিনিয়োগ এবং কম কার্বণ অর্থনীতিতে বাংলাদেশের উত্তরণসহ চার দফা প্রস্তাব দেন। একই সঙ্গে পরিচ্ছন্নতা, নবায়নযোগ্য এবং সবুজায়নে কৌশলগত বিনিয়োগের বিষয়টিও তিনি উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: ‘কপ-২৭ সম্মেলনে কার্বন নিঃসরণ কমাতে অনেকেই আগের চেয়ে বেশি কমিটমেন্ট করেছে’
১ বছর আগে