শীর্ষ ১০
বিশ্বের শীর্ষ ১০ পুলিশ কুকুরের প্রজাতি
মানুষের প্রতি অকৃত্রিম বিশ্বাস আর ভালোবাসার পাশাপাশি বৈচিত্র্যময় ক্ষমতা শুধুমাত্র পোষা প্রাণীর থেকেও অধিক গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে কুকুরকে। আনুগত্যের সঙ্গে যখন এদের বিস্ময়কর বুদ্ধিমত্তা যোগ হয় তখন অনায়াসেই এরা মানুষের এমন সঙ্গীতে পরিণত হয়, যার কোনো বিকল্প হয় না। এদের মধ্যে বিশেষ কিছু কুকুরের অসাধারণ দক্ষতা রয়েছে। এগুলোকে সঠিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নানা ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ব্যবহার করা সম্ভব। অপরাধীদের পিছু ছোটা থেকে শুরু করে লুকানো মাদকদ্রব্য উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে এরা অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠে। এগুলোর মধ্য থেকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ১০টি পুলিশ কুকুরের জাত সম্বন্ধে আলোচনা করা হয়েছে এই নিবন্ধে। চলুন, যে বৈশিষ্ট্যগুলোর কারণে কুকুরগুলোকে অন্য সব প্রজাতিদের থেকে আলাদা- তা জেনে নেওয়া যাক।
পৃথিবীর ১০টি সেরা পুলিশ কুকুরের জাত
জার্মান শেফার্ড
১৮৯৯ সাল থেকে বিভিন্ন জার্মান কুকুর ব্যবহার করে এই জাতটি তৈরি করেছিলেন ম্যাক্স ভন স্টেফানিৎস। সে সময় ভেড়া পালনের উদ্দেশ্যে তৈরি এই কুকুর পরে যেকোনো কিছু খুঁজে বের করা ও উদ্ধারসহ পুলিশের নানা কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যে অ্যালসেশিয়ান নামে বহুল পরিচিত এই জাত এমনকি যুদ্ধেও অংশ নিয়েছিল।
এই জাতের উচ্চতা পুরুষ কুকুরের ক্ষেত্রে ৬০ থেকে ৬৫ সেন্টিমিটার এবং স্ত্রী কুকুরের বেলায় ৫৫ থেকে ৬০ সেন্টিমিটার। পুরুষ জার্মান শেফার্ডের ওজন ৩০ থেকে ৪০ কেজি, আর স্ত্রী কুকুরের ওজন হয় ২২ থেকে ৩২ কেজি।
বিফ ওরফে ব্রায়ান নামের শেফার্ড ১৯৪৭-এর ২৯ মার্চ ১৩তম ল্যাঙ্কাশায়ার ব্যাটালিয়ান প্যারাট্রুপারদের কাজে সহায়তা করেছিল।
শেফার্ডরা এখনও সহায়ক ভূমিকা পালন করে মৃতদেহ অনুসন্ধান, মাদকদ্রব্য শনাক্তকরণ, বিস্ফোরক শনাক্তকরণ এবং মাইন শনাক্তকরণের কাজে।
বিশ্ব জুড়ে উচ্চ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অ্যালসেশিয়ান সরবরাহকারী প্রসিদ্ধ নিরাপত্তা পরিষেবা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো ডেনমার্কের এজেন্সি গার্ড ডগ পেট্রোল, ব্রিটিশ কোম্পানি আন্তর্জাতিক ভিআইপি বডিগার্ড (আইভিআইপিবি) লিমিটেড এবং যুক্তরাজ্যের স্পার্টা সিকিউরিটি গ্রুপ।
আরও পড়ুন: কেক ও বিস্কুট খাওয়ার ক্ষতিকর দিক: বিকল্প কিছু স্বাস্থ্যসম্মত পুষ্টিকর খাবার
বেলজিয়ান ম্যালিনোইস
শনাক্তকরণ, গার্ড, গাইডসহ নানা পুলিশি কর্মকাণ্ডের জন্য সহায়ক এই কুকুর বিভিন্ন নামে পরিচিত। সেগুলোর মধ্যে বেলজিয়ান শেপডগ, বেলজিয়ান শেফার্ড বা চিয়েন ডি বার্জার বেলজ নামগুলো সর্বাধিক পরিচিত।
এই জাতটি প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালনের পর থেকে আজ অবধি সামরিক কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
এই জাতের মধ্যে পুরুষ কুকুরগুলো সাধারণত ৬০ থেকে ৬৬ সেন্টিমিটার আর স্ত্রীগুলো ৫৬ থেকে ৬২ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। ওজনে একটি পুরুষ কুকুর ২৫ থেকে ৩০ কেজির কাছাকাছি আর স্ত্রী কুকুর প্রায় ২০ থেকে ২৫ কেজি পর্যন্ত হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিক্রেট সার্ভিস, ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর ওকেটজ ইউনিট, অস্ট্রেলিয়ান প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং ক্রুগার ন্যাশনাল পার্কের অ্যান্টি-পাচিং ক্যানাইন ইউনিট ম্যালিনোইসদের ব্যবহার করে থাকে।
অস্ট্রেলিয়ান আর্মিদের আফগানিস্তানে যুদ্ধের সময় একজন বিদ্রোহীকে বন্দি করার কাজে সহায়তার জন্য কুগা নামের ম্যালিনোইসকে ডিকিন পদক দেওয়া হয়।
ম্যালিনোইসদের মতো পুলিশ কুকুরদের পরিষেবা দানকারী প্রখ্যাত নিরাপত্তা সংস্থাগুলো হলো- যুক্তরাজ্যের আইভিআইপিবি ও আমেরিকার ইন্টিগ্রিটি কেনাইন পরিষেবা।
আরো পড়ুন: বিশ্বের সবচেয়ে দামি ১০ কফি
ব্লাডহাউন্ড
প্রখর ঘ্রাণশক্তি সম্পন্ন শিকারীদের মধ্যে হাউন্ডের কোনো জুড়ি নেই। হরিণ, বন্য শুয়োর, খরগোশ শিকারের জন্য এদের প্রজনন শুরু হয়েছিল সেই মধ্যযুগে।
সর্বপ্রথম কে এই জাতটি তৈরি করেছিল তা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। কিন্তু আনুমানিক ১০০০ খ্রিস্টাব্দে বেলজিয়ামের সেন্ট-হুবার্ট মঠে সন্ন্যাসীদের হাতে এর প্রথম জাতের জন্ম।
এখনও সারা বিশ্বে হাউন্ডদের ব্যবহার করা হয় আইন প্রয়োগকারীদের পলায়নরত বন্দি, নিখোঁজ ব্যক্তি ও হারিয়ে যাওয়া পোষা প্রাণীদের খুঁজে বের করতে।
একটি পুরুষ হাউন্ডের ওজন ৪৬ থেকে ৫৪ কেজি এবং স্ত্রী হাউন্ডের ওজন হয়ে থাকে ৪০ থেকে ৪৮ কেজি। পুরুষ কুকুর উচ্চতায় ৬৪ থেকে ৭২ সেস্টিমিটার হয়, যেখানে স্ত্রী কুকুরগুলো ৫৮ থেকে সর্বোচ্চ ৬৬ সেস্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।
ইউএস আর্মির ৬১৫-তম মিলিটারি পুলিশ কোম্পানির মাসকট হলো একটি ব্লাডহাউন্ড। আইভিআইপিবি প্রতিষ্ঠান উচ্চ প্রশিক্ষিত ব্লাডহাউন্ড সরবরাহ করে থাকে।
আরো পড়ুন: বিশ্বের সেরা ১০ মনোমুগ্ধকর জলপ্রপাত
বক্সার
জার্মানিতে গড়ে ওঠা এই ম্যাস্টিফ জাতটি তৈরি করা হয়েছিল ওল্ড ইংলিশ বুলডগ এবং বর্তমানে বিলুপ্ত বুলেনবিসারের প্রজনন থেকে। বক্সাররা ব্র্যাচিসেফালিক হয়ে থাকে, অর্থাৎ এদের চওড়া অথচ ছোট মাথার খুলি থাকে।
একটি পুরুষ বক্সারের উচ্চতা ৫৬ থেকে ৬৪ সেন্টিমিটার আর স্ত্রী কুকুরের উচ্চতা ৫৩ থেকে ৬১ সেন্টিমিটার। পুরুষ বক্সার ওজনে ৩০ থেকে ৩২ কেজি হয়, অন্যদিকে স্ত্রী বক্সারের ওজন ২৫ থেকে ২৭ কেজির মধ্যে থাকে।
ধৈর্যশীলতা, শিশুদের প্রতি উৎসাহী ও সুরক্ষামূলক হওয়ার কারণে বক্সাররা বাচ্চাদের সঙ্গে খুব তাড়াতাড়ি সখ্য করে নিতে পারে।
সামরিক সংঘাতে দায়িত্ব পালনের সময় বীরত্বের জন্য পাঞ্চ ও জুডি নামে বক্সার জুটিকে ডিকিন পদক দেওয়া হয়েছিল। আইভিআইপিবির পুলিশ কুকুর সেবার মধ্যে এই বক্সাররাও আছে।
আরো পড়ুন: মানুষের পরে পৃথিবীর সবচেয়ে বুদ্ধিমান ১০ প্রাণী
ডোবারম্যান পিনসার
১৮৯০ সালের দিকে লুই ডোবারম্যান নামে জার্মানির এক কর সংগ্রাহক তৈরি করেছিলেন এই কুকুরের জাতটি। দৃঢ়চেতা ও অনুগত ডোবারম্যান বুদ্ধিমান, সতর্ক ও রক্ষক কুকুর হিসেবে পরিচিত।
পুরুষ কুকুরগুলো যেখানে ৬৮ থেকে ৭২ সেন্টিমিটার, স্ত্রী কুকুরগুলো সেখানে ৬৩ থেকে ৬৮ সেন্টিমিটারের হয়ে থাকে। পুরুষ ডোবারম্যানের আদর্শ ওজন ৪০ থেকে ৪৫ কেজি এবং স্ত্রীগুলো ৩২ থেকে ৩৫ কেজির হয়ে থাকে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রহরী কুকুর হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার পর থেকে এরা জনপ্রিয় হতে শুরু করে।
ক্যাপি নামের ডোবারম্যান জাপানি সৈন্যদের ব্যাপারে সতর্ক করে জীবন বাঁচিয়েছিল ২৫০ জন মার্কিন মেরিনদের। যুদ্ধে নিহত হওয়া কুকুরদের মধ্যে প্রথম সমাধিস্থ করা হয় কার্ট নামে এক ডোবারম্যানকে। সেটি পরে বিশাল এক সমাধি ক্ষেত্রে পরিণত হয়। সেখানকার স্মৃতিস্তম্ভে কার্ট ও ক্যাপিসহ আরও ২৩টি ডোবারম্যানের নাম খোদাই করা আছে।
আইভিআইপিবির নিরাপত্তা কুকুর পরিষেবায় এই কুকুরটিও অন্তর্ভুক্ত আছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বসেরা ১০ পিরামিড: চিরন্তন কিংবদন্তির খোঁজে
১ বছর আগে
২০২৩ সালে বিশ্বের শীর্ষ ১০ বিলাসবহুল গাড়ি
শুধুমাত্র দূরবর্তী কোনো স্থানে ভ্রমণ নয়, প্রযুক্তির সঙ্গে যুগপৎ বিকশিত উন্নত মানের গাড়িগুলো জীবনধারায় যোগ করছে নতুন নতুন সুবিধা। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সুপার ফাস্ট কার ও হাইপারকারের মতো শ্বাসরুদ্ধকর বিলাসবহুল গাড়িগুলো সামাজিক অবস্থানকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করে। আরও একটু আরামদায়ক, ডিজাইনে আরও একটু নতুনত্ব এবং আরও একধাপ উচ্চতর কর্মক্ষমতা দিতে রীতিমত প্রতিযোগিতা করে চলে অটোমোবাইল নির্মাতারা। সেই অর্থে ২০২৩ সালে পৃথিবীর সেরা ১০টি বিলাসবহুল গাড়ি অটোমোবাইল ভক্তদের একদমই নিরাশ করেনি। চলুন, বিস্ময়কর ব্যয়বহুল সেই গাড়িগুলোর ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
২০২৩ সালে পৃথিবীর সবচেয়ে বিলাসবহুল ১০ গাড়ি
রোলস-রয়েস বোট টেল
এখন পর্যন্ত পৃথিবীর সবচেয়ে বিলাসবহুল গাড়ি রোলস-রয়েসের বোট টেল, যার মূল্য ২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার; বাংলাদেশি টাকায় ৩০৩ দশমিক ৮ কোটি টাকা (১ মার্কিন ডলারকে ১০৮ দশমিক ৫ বাংলাদেশি টাকা হিসাবে)। চোখ ধাঁধানো গাড়িটির ডিজাইন করেছে জনপ্রিয় অটোমোবাইল ব্র্যান্ড রোলস-রয়েস-এর কোচবিল্ড বিভাগ।
২০২১ সালে উৎপাদিত গাড়িটি সপ্রতিভ এবং স্বতন্ত্র অভিব্যক্তির সমন্বয়ে এক অনন্য সৃষ্টি। এর চেসিস এবং ইঞ্জিনটি রোলস-রয়েস ফ্যান্টমের। অর্থাৎ ফ্যান্টমের মত বোট টেলের ৫৬৩ হর্সপাওয়ার শক্তি সম্পন্ন ৬ দশমিক ৭৫ লিটারের টুইন-টার্বোচার্জকৃত ভি১২ ইঞ্জিনের ক্ষমতা আছে। ফ্যান্টম ঘন্টায় সর্বোচ্চ ২৫০ কিলোমিটার (১৫৫ মাইল/ঘন্টা) বেগে ছুটতে পারে।
বোট টেলের পেছনের ডেকের পাঁচটি ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল ইউনিটসহ ১ হাজার ৮১৩টি যন্ত্রাংশ বেসপোকের। এই অত্যাশ্চর্য বাহনটির ডিজাইনের অনুপ্রেরণা এসেছে ক্লাসিক ইয়ট থেকে। এর পেছনের কাঠের ডেকটি খোলা হলে শ্যাম্পেন কুলার ও একটি হোস্টিং স্যুটের মতো দারুণ এক বেসপোক হস্তশিল্পের সেট উন্মুক্ত হয়। ব্র্যান্ডের বিলাসিতা ও বিশেষত্বকে জাহির করার মাধ্যমে এই ভার্সনটি রোলস-রয়েস কাস্টমাইজেশনের এক সীমাহীন সম্ভাবনা প্রদর্শন করেছে।
বুগাটি লা ভয়চার নোয়ার
ফ্রান্সের বুগাটি অটোমোবাইলস এস.এ.এস এই অসাধারণ হাইপারকারটি বানিয়েছিল কিংবদন্তির বুগাটি টাইপ ৫৭ এসসি আটলান্টিককে উৎসর্গ করে। ২০১৯ সালে জেনেভা মোটর শো-এর মাধ্যমে উন্মোচিত এই মাস্টারপিসটি আধুনিক প্রযুক্তি ও ক্লাসিক ডিজাইনের এক অভাবনীয় সংমিশ্রণ। এর ১৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যকে বাংলাদেশি মুদ্রায় পরিবর্তন করলে দাড়ায় ২০২ দশমিক ৯ কোটি টাকা।
এর হাতে বানানো রাজকীয় চেসিসটি মসৃণ কালো কার্বন ফাইবারে মোড়া। পেছনের ৬টি নিষ্কাশন পাইপ-এর আগের সময়ের কাইরনগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়। ৮ লিটার কোয়াড-টার্বোচার্জ করা ডব্লিউ১৬ ইঞ্জিন যানটিকে ১ হাজার ৪৭৯ হর্সপাওয়ার শক্তি দিতে পারে। কাইরন বুগাটির যৌথ উৎপাদিত গাড়িগুলোর সবচেয়ে কম সময়ে শূন্য থেকে ৪০০ কিলোমিটার/ঘন্টা(২৪৯ মাইল/ঘন্টা) গতিতে উঠার রেকর্ড আছে। এর অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক কারুকাজ কারিগরের সূক্ষ্ম ও যত্নশীল কাজের কথা জানান দেয়। এই একচেটিয়া যানবাহন নিমেষেই বিলাসিতা, কর্মক্ষমতা এবং স্বপ্রতিভ শিল্পকলার প্রতীক হিসেবে কাজ করে।
১ বছর আগে
২০২৩ সালে বিশ্বের শীর্ষ ১০ শক্তিশালী মুদ্রা
বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড এবং অর্থনৈতিক লেনদেনে সাবলীলতার দরুণ মুদ্রা বিশ্ব অর্থনীতির একটি অপরিহার্য উপাদান। স্বভাবতই সবগুলো মুদ্রা মূল্যমান এক পাল্লায় পরিমাপ করা হয় না। এমনকি কিছু কিছু মুদ্রা অন্যগুলোকে ছাড়িয়ে আশ্চর্যজনক উচ্চতায় উঠে আসে। এই আকাশচুম্বী তারতম্যের কারণ কী! বর্তমান বিশ্বের সব থেকে দামি ১০টি মুদ্রার সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পাশাপাশি চলুন পটভূমিটাও জেনে নেওয়া যাক।
বৈদেশিক মুদ্রার মান নির্ধারণ হয় কীভাবে?
বৈদেশিক মুদ্রার মূল্যমান মূলত নির্ধারিত হয় দু’টি প্রধান উপায়ে: ফ্লোটিং রেট ও ফিক্সড রেট।
ফ্লোটিং রেট
এই রেটটি নির্ধারিত হয় মুক্ত বাজারে সরবরাহ ও চাহিদার বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে। যখন একটি মুদ্রার চাহিদা বেশি হয়, তখন এর মূল্য বাড়ে। আর চাহিদা কমার সঙ্গে সঙ্গে তার দামটা পড়তে থাকে। বিভিন্ন প্রযুক্তিগত এবং মৌলিক কারণ একটি ন্যায্য বিনিময় হার সম্পর্কে মানুষের ধারণাকে প্রভাবিত করে। আর সেই অনুযায়ী পরিবর্তন হতে থাকে চাহিদা ও সরবরাহ।
উদাহরণস্বরূপ, ইউরোপীয়দের মধ্যে মার্কিন ডলারের চাহিদা বৃদ্ধির ফলে ইউরোর তুলনায় মার্কিন ডলারের দাম বেড়ে যায়। এর পেছনে নটবর হিসেবে কাজ করে সুদের হারের পরিবর্তন, বেকারত্বের হার, মুদ্রাস্ফীতি ও ভূ-রাজনৈতিক ঘটনাগুলো।
ফিক্সড রেট
বিদেশি মুদ্রার বিনিময় হিসেবে একটি দেশের সরকার নিজেদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট হার নির্ধারণ করে দেয়। এই হার বজায় রাখার জন্য সরকার সেই বিদেশি মুদ্রার বিপরীতে নিজস্ব মুদ্রা ক্রয় ও বিক্রয় করে।
আরও পড়ুন: আমদানিতে কড়াকড়ি সত্ত্বেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৮ বিলিয়ন ডলারের নিচে
স্বল্পমেয়াদে ফ্লোটিং রেটের গতিবিধিকে ঘিরে দানা বাধতে থাকে অনুমান ও গুজব। কখনো সত্যিকার অর্থেই রেটের বিপর্যয় ঘটে, যার সূত্র ধরে পরিবর্তিত হতে থাকে দৈনন্দিন সরবরাহ ও চাহিদা। স্বল্পমেয়াদের এই অস্থিরতার চরম অবস্থায় সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো হস্তক্ষেপ করে।
অর্থাৎ একটি মুদ্রার দাম অত্যধিক বেশি বা কম হয়ে গেলে সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর এই হস্তক্ষেপ ঘটে। অন্যথায় এই অস্থিতিশীলতাটি দেশের অর্থনীতি, বাণিজ্য এবং ঋণ পরিশোধের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। সর্বপরি, মুদ্রার ফ্লোটিং রেটকে তুলনামূলকভাবে অনুকূল অবস্থায় নিয়ে আসার জন্য ফিক্সড রেটের ব্যবস্থাগুলো প্রয়োগ করা হয়।
২০২৩ সালে পৃথিবীর শীর্ষ ১০ মূল্যবান মুদ্রা
কুয়েতি দিনার
বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দামি মুদ্রা হলো কুয়েতি দিনার (কেডব্লিউডি), যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রায় যার বিনিময় হার ৩ দশমিক ২৭ মার্কিন ডলার। কুয়েতের ভৌগলিক অবস্থান সৌদি আরব এবং ইরাকের মাঝে হওয়ায় দেশটিকে তেল রপ্তানিকারক হিসেবে বিশ্বব্যাপী শীর্ষস্থানীয় পদমর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে। ১৯৬০-এর দশকে প্রবর্তিত মুদ্রা দিনার সর্বপ্রথম ব্রিটিশ পাউন্ডের বিপরীতে ফিক্সড রেট করা হয়েছিল। এই কৌশলগত পদক্ষেপটি কুয়েতকে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং একক মুদ্রামুখী ঝুঁকিগুলো হ্রাস করতে সাহায্য করে। বর্তমানে বাংলাদেশে ১ কুয়েতি দিনারের দাম ৩৫৩ দশমিক ৭০ টাকা।
আরও পড়ুন: রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্রতিকৃতি বিশিষ্ট বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুদ্রার এখন কি করা হবে?
১ বছর আগে