কথাশিল্পী
হুমায়ূন আহমেদের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
আজ বুধবার (১৯ জুলাই) কথাশিল্পী, নাট্যনির্মাতা ও চলচ্চিত্রকার হুমায়ূন আহমেদের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী।
আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম এই কিংবদন্তি লেখক ২০১২ সালের ১৯ জুলাই ৬৩ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের বেলভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
এদিকে তার পরিবারসহ বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করছে।
আরও পড়ুন: জন্মদিনে নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদকে স্মরণ
সকালে গাজীপুরের নুহাশ পল্লীতে তার কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী অভিনেত্রী ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মেহের আফরোজ শাওন এবং তাদের দুই ছেলে নিনিত ও নিষাদ।
সকাল থেকে বিশেষ মোনাজাত ও কোরআন খতমের আয়োজন করা হয় এবং তার আত্মার চির শান্তি কামনায় দোয়া অনুষ্ঠানও অনুষ্ঠিত হয়।
তার স্ত্রী শাওন ও নুহাশ পল্লী কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে দুপুরে এতিমদের শিশুদের খাওয়ানো হবে।
২০১৩ সাল থেকে বিশেষ এই দিন পালন করে আসছে লেখকের ভক্তদের একং সংগঠন হিমু পরিবহন। বুধবার সকালে লেখকের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এই সংগঠনের সদস্যরা।
এ ছাড়া আরও কয়েকটি সংগঠন লেখকের স্মরণে দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। একই সঙ্গে লেখকের ভক্তরা্ তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিংবদন্তির প্রতি আবেগপূর্ণ স্ট্যাটাস লিখেছেন শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
এই শব্দস্রষ্টার জীবন ও গৌরবময় কর্মজীবনকে তুলে ধরে টেলিভিশন চ্যানেল এবং রেডিও স্টেশনগুলোও বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে।
হুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের কুতুবপুর গ্রামে ফয়জুর রহমান আহমেদ ও আয়েশা ফয়েজের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি বগুড়া জিলা স্কুল থেকে ১৯৬৫ সলে স্কুল সার্টিফিকেট, ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস করেন।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়নের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন এবং পরে পলিমার রসায়নে পিএইচডি করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ডাকোটা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে যান।
আরও পড়ুন: চলে গেলেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহ
হুমায়ূন আহমেদের প্রথম উপন্যাস ছিল 'নন্দিত নরকে'। যা যুগান্তকারী একজন লেখক হিসেবে তার কর্মজীবনকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
হুমায়ূন আহমেদ একুশে পদক বিজয়ী লেখক হিসেবে ২০০ টিরও বেশি ফিকশন ও নন-ফিকশন বই লিখেছেন। যার সবকটিই এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে সর্বাধিক বিক্রিত।
বাঙালি সংস্কৃতি ও বিনোদন ক্ষেত্রে তার বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার, লেখক শিবির পুরস্কার, শিশু একাডেমি পুরস্কার, মাইকেল মধুসূদন পদক, বাচসাস পুরস্কারসহ আরও অনেক পুরস্কার পেয়েছেন।
১৯৮৩ সলে বাংলাদেশ টেলিভিশনে হুমায়ূন আহমেদ তার 'প্রথম প্রহর' নাটক দিয়ে আত্মপ্রকাশ করেন।
টেলিভিশনে তার সফল যাত্রা অব্যাহত ছিল জনপ্রিয় ধারাবাহিক নাটক 'এই সব দিন রাত্রি', 'বহুব্রীহি', 'অয়োময়', 'নক্ষত্রের রাত', 'আজ রবিবার' নাটক দিয়ে। তবে তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নাটক হলো 'কোথাও কেউ নেই'।
এ ছাড়া প্রবীণ অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূরের মুখ্য চরিত্র 'বাকের ভাই' দেশজুড়ে আলোড়ন তুলেছিল।
হুমায়ূন আহমেদ ১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেন। তার উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে মোট আটটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন।
তার দুইটি চলচ্চিত্র ‘শ্যামল ছায়া’ (২০০৪) ও ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ (২০১২) একাডেমি পুরস্কারের শ্রেষ্ঠ বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগের জন্য আনুষ্ঠানিক ভাবে পাঠানো হয়েছিল।
তিনি ‘শঙ্খনীল কারাগার’ (চিত্রনাট্যকার হিসেবে), ‘আগুনের পরশমনি’, ‘দারুচিনি দ্বীপ’ ও ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ চলচ্চিত্র বিভিন্ন বিভাগে সাতটি বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায়।
আরও পড়ুন: প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুনের জীবনাবসান
১ বছর আগে