পুনঃনির্বাচন
সিলেট-২ আসন: পুনঃনির্বাচনের দাবি চার প্রার্থীর
ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ তুলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সিলেট-২ আসনের ফলাফল বাতিল করে পুণরায় নির্বাচনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন চার প্রার্থী।
সোমবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে নগরীর পূর্ব জিন্দাবাজারের একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করে তাদের অভিযোগগুলো বিস্তারিত তুলে ধরেন।
এর আগে রবিবার দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে নিজেদের এজেন্টদের মারধর করে কেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ তুলে ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন তারা।
আরও পড়ুন: সিলেট-২ আসনে ত্রিমুখী লড়াইয়ের আভাস
তারা হলেন, গণফোরামের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান (উদীয়মান সূর্য), জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহইয়া চৌধুরী (লাঙ্গল), স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান (ট্রাক) এবং তৃণমূল বিএনপির মোহাম্মদ আবদুর রব (সোনালী আঁশ)।
সংবাদ সম্মেলনে এই চার প্রার্থী ভোট বাতিল করে আবারও ভোট গ্রহণের দাবি জানান। না হলে তারা আইনি লড়াইসহ আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, নির্বাচনের দিন রবিবার যেটি হয়েছে সেটি সম্পূর্ণ একটি প্রহসনের নির্বাচন। আমরা প্রধানমন্ত্রী ও ইলেকশন কমিশনের কথায় বিশ্বাস করে প্রতারিত হয়েছি। রবিবারের এটি কোনো নির্বাচনই ছিল না। তাই আমরা বর্জন করতে বাধ্য হয়েছি। আমাদের এজেন্টদের মারধর, জোর করে বের করে দেওয়া, কেন্দ্র দখল করে টেবিল কাস্টসহ ব্যাপক অনিয়মের কারণে আমরা নির্বাচনের দিন দুপুর ১২টার আগেই ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত নেই। পরে বেলা ২টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেই আমরা চারজন। আমরা সবাই রবিবারের সিলেট-২ আসনের সব কেন্দ্রের ভোট ও ফলাফল প্রত্যাখ্যান করছি এবং আবারও নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি। আমরা আমাদের আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে দু-এক দিনের মধ্যে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবো। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে পাশাপাশি আমরা আন্দোলনও চালিয়ে যাব।
আরও পড়ুন: সিলেট-৪ আসনে তৃণমূল বিএনপি প্রার্থীর ভোট বর্জন
গণফোরামের প্রার্থী মোকাব্বির খান বলেন, নির্বাচনের দিন আমরা পদে পদে বাধাগ্রস্ত হয়েছি। সরকারের বিভিন্ন পর্যায় ও ইলেকশন কমিশন থেকে আমাদের বার বার বলা হয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হবে। কিন্তু তাদের কথায়-কাজে মিল পাওয়া যায়নি, প্রহসনের নির্বাচন উপহার দেওয়া হয়েছে।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইয়াহইয়া চৌধুরী বলেন, আমাকে একটি সেন্টারে অবরুদ্ধ করে রেখে নৌকার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা টেবিল কাস্ট করেছেন। আমি বার বার ফোন করেও নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা প্রশাসনের কোনো সহযোগিতা পাইনি। আমি প্রায় দুই ঘণ্টা তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিলাম। এরপরই আমরা ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত নেই। আমাদের এজেন্টদের নৌকার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা অনেক কেন্দ্রে ঢুকতেই দেয়নি, অনেক কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছে। এই অবস্থায় নির্বাচন বর্জন করা ছাড়া আমাদের আর কিছু করার ছিলো না। তা ছাড়া প্রহসনের নির্বাচন দেখে আমি নিজেও ভোট দিইনি।
তৃণমূল বিএনপির আব্দুর রব মল্লিক বলেন, আমি একটি সূত্রে জানতে পেরেছি, আগের রাতেই ৩৮টি কেন্দ্রের ব্যালট পেপারে নৌকায় সিল মারা হয়ে গিয়েছিল। আমরা এই চার প্রার্থী দীর্ঘ প্রবাস জীবন কাটিয়েছি। সেখানকার সুস্থ ধারার রাজনীতি চর্চা এখানেও করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। একটি প্রহসনের নির্বাচন আমাদেরকে উপহার দেওয়া হয়েছে। আমরা এ নির্বাচনে সিলেট-২ আসনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনঃভোটের আবেদন করছি। পাশাপাশি আমরা আইনি লড়াই চালিয়ে যাবো।
আরও পড়ুন: সিলেটে ভোটকেন্দ্রের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ, আগুন
উল্লেখ্য, ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী সিলেট-২ আসনে নৌকা প্রাতীকে ৭৮ হাজার ৩৮৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী শফিকুর রহমান চৌধুরী।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমান ট্রাক প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ১৬ হাজার ৬৬১টি।
জাতীয় পার্টির ইয়হইয়া চৌধুরী লাঙল প্রতীকে ৬ হাজার ৮৭৪, গণফোরাম প্রার্থী মোকাব্বির খান উদীয়মান সূর্য প্রতীকে ১ হাজার ৯২২টি এবং তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী আব্দুর রব মল্লিক সোনালী আঁশ প্রতীকে ৯৪৪টি ভোট পেয়েছেন।
আরও পড়ুন: বরিশাল-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের উপর হামলা-গুলির অভিযোগ
১০ মাস আগে
ঢাকা-১৭ আসনে পুনঃনির্বাচনের দাবি হিরো আলমের
ঢাকা-১৭ আসনে পুনঃনির্বাচনের দাবিতে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন করেছেন আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম।
তিনি বলেন, ‘উপনির্বাচনে ভোট কারচুপি হয়েছে এবং ভোট কারচুপির ভিডিও ফুটেজ আমার কাছে আছে। আমি এই নির্বাচনের শেষ দেখব।’
রবিবার (২৩ জুলাই) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) কার্যালয়ে আবেদন জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসক কথা বলেন।
ঢাকা-১৭ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাত ২৮ হাজার ৮১৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন এবং হিরো আলম পেয়েছেন ৫ হাজার ৬০৯ ভোট।
বিজয়ী প্রার্থী আরাফাতকে আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ পাঠ না করাতে স্পিকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন হিরো আলম।
আরও পড়ুন: হিরো আলমকে মারধর: পিকআপ মালিক সমিতির সভাপতি গ্রেপ্তার
ইসিতে আপিল খারিজ হলে কী করবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে হিরো আলম বলেন, ‘যেহেতু আমার কাছে উপনির্বাচনে ভোট কারচুপি ও অনিয়মের প্রমাণ আছে, আমি হাইকোর্টে যাব এবং এর শেষ দেখব।’
আবেদনে হিরো আলম লিখেছেন, ‘গত ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ উপনির্বাচনে আমি একতারা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। নির্বাচনের দিন আমি ই-মেইলের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) জানিয়েছিলাম যে নির্বাচনের এক ঘণ্টার মধ্যে আমার ৮৮ জন এজেন্টকে ১৯টি ভোটকেন্দ্র থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভোট কারচুপি ও অনিয়ম হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বিকাল ৩টায় আমি ভোটের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে বনানী বিদ্যানিকেতন ভোটকেন্দ্রে গেলে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা ইচ্ছাকৃতভাবে আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। দেশ-বিদেশের মানুষ ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে হামলা দেখেছে। এ ছাড়াও, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র থেকে আমার এজেন্টদের তাড়িয়ে দিয়ে ভোট গণনা শুরু করেছিলেন, যা নির্বাচনী আচরণবিধির পরিপন্থী।’
নির্বাচনী ফলাফল বাতিল, ঢাকা-১৭ আসনে পুনঃনির্বাচন এবং নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: আ. লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেব না: হিরো আলম
হিরো আলমের ওপর হামলা: পূর্ণ তদন্ত চেয়ে ঢাকায় বিদেশি মিশনগুলোর যৌথ বিবৃতি
১ বছর আগে